অন্ধকারের গান --- রাখাল হাকিম - অধ্যায় ২৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-54659-post-5205676.html#pid5205676

🕰️ Posted on April 15, 2023 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 510 words / 2 min read

Parent
মিনাকে ঘুম পারিয়ে দিয়ে, এক ঢোক মদ গিলে নিলাম। তারপর হন হন করে এগুতে থাকলাম উর্মিদের বাড়ী। উর্মিদের বাড়ীতে যাইনা, ধরতে গেলে অনেকদিন। এতগুলো বছরেও, উর্মির মা ফরিদা বেগম একটুও বদলায়নি। আমাকে দেখা মাত্রই মুচকি হেসে বললো, খোকা তুমি? আমার কথা মনে পরলো তাহলে? আমি গম্ভীর গলায় বললাম, রিমি কোথায়? ফরিদা বেগম ঈষৎ ক্ষুন্ন হয়ে বললো, রিমির কাছে তোমার কি? এতগুলো বছর রিমিকে আমি বুকে আগলে রেখেছি। ওর সব ব্যাপার আমি গোপন রেখেছি। সাবধান, সব সম্পর্ক আমার সাথে। রিমির সাথে তোমার কোন সম্পর্কই নেই। রিমি শুধু আমার মেয়ে। আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম, না চাচী, আমি সেই অধিকারে রিমির সাথে দেখা করতে চাইছি না। রিমি ওর ক্লাশ মেইট যে আমার বাড়ীতে এখন আশ্রিতা, তাকে অপমান করেছে। ফরিদা বেগম গম্ভীর গলায় বললো, ঠিক আছে, আমি বলে দেবো। আমি বললাম, আপনি বুঝতে পারছেন না। মিনা একটা নিষ্পাপ মেধাবী মেয়ে। ফরিদা বেগম বললো, রিমিও কম মেধাবী না। ফরিদা বেগম এমন স্বার্থপর কেনো? আমি বললাম, জানি, রিমিও খুব মেধাবী। কখনো ক্লাশে সেকেণ্ড হয়নি। কিন্তু মিনা বোর্ডে স্ট্যাণ্ড করা মেয়ে। একটা বস্তিতে থেকে সারা জীবন লেখাপড়া করেছে। ফরিদা বেগম চোখ কুচকেই বললো, একটা বস্তির মেয়ের পক্ষ নিয়ে আমার মেয়েকে শাসন করতে এসেছিলে? রিমি তো তোমারই মেয়ে! আমি আমতা আমতাই করতে থাকলাম। বললাম, না মানে, মিনা কলেজে পরে। তার অধিকাংশ পোশাকই ছেড়া, মলিন। আমি কিছু ভালো পোশাক কিনে দিয়েছিলাম শুধু। অথচ, রিমি মিনাকে কি বিশ্রী বিশ্রী কথা! ফরিদা বেগম বললো, রিমি এতটুকুন মেয়ে, বয়স আর কতই হয়েছে? এই বয়েসে মেয়েরা কত কথাই তো বলে! ওসবে কান দিতে আছে নাকি? অনেক দিন পরে এলে। বসো, চা করছি। চা খেয়ে মাথা ঠাণ্ডা করো। আমি বললাম, না, চা খাবো না। ফরিদা বেগম বললো, চা না খাও, ঠিক আছে। শান্ত হয়ে বসো। আমার কথা শোনো। আমি বসলাম নিজের অজান্তেই। বললাম, কি কথা? ফরিদা বেগম বললো, বুড়ী হয়ে গেছি। এখন কি আমার কথা শুনার ধৈর্য্য তোমার আছে? আমি ফরিদা বেগম এর দিকে তীক্ষ্ম চোখেই তাঁকালাম। কিছু কিছু মেয়েই বুঝি আছে, তারা জীবনে কখনো বুড়ী হয়না। চল্লিশ পয়তাল্লিশ পেরিয়ে গেলেও নুতন যৌবনে পা দেয়। ফরিদা বেগমও তেমনি এক মহিলা। ফরিদা বেগম মেঝের উপর বসার উদ্যোগ করে, হাত দুটি মাথার পেছনে ঠেকিয়ে, বুকটা খানিক উঁচু করে ধরে বললো, যৌবনে অনেক মস্ত ভুল করে ফেলেছি। শেষ বয়সে নিসংগতা সত্যিই কষ্টের। আমি বললাম, কি যে বলেন চাচী? শেষ বয়স হবে কেনো? আপনার দেহে এখনো যা ভরা যৌবন! যে কোন উঠতি বয়সের যুবক ছেলেও কিন্তু আপনার প্রেমে পরে যেতে পারে। ফরিদা বেগম আফশোস করেই বললো, তারপর, দুদিন পর সব কিছু লুটে পুটে খেয়ে আমার কথা ভুলে যাবে। আমি আহত হয়েই বললাম, সে সব দিন গুলোর কথা ভুলিনি চাচী। আসলে ইউনিভার্সিটি ভর্তি হবার পর, সব কিছু কেমন যেনো উলট পালট হয়ে গেলো। উর্মিরও বিয়ে হয়ে গেলো, শর্মিরও। ফরিদা বেগম বললো, উর্মির মেয়েটাও অনেক বড় হয়েছে। ক্লাশ নাইনে পড়ছে। আমি মনে মনেই ভাবলাম, দিনগুলো বুঝি এমনি করেই খুব তাড়াতাড়ি কেটে যায়। মাঝে মাঝে মনে হয়, এই সেদিনই বুঝি আমি ক্লাশ নাইনে পড়তাম। উর্মিও নুতন করে ক্লাশ নাইনে ভর্তি হয়েছিলো। নুতন করেই দুজনে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎই সব কিছু কেমন যেনো উলট পালট হয়ে গিয়েছিলো। আমি বললাম, তাই নাকি? কেমন আছে উর্মি? ফরিদা বেগম মন খারাপ করেই বললো, উর্মিও সুখে আছে, শর্মিও সুখে আছে। সুখে নেই শুধু আমি।
Parent