বহ্নিশিখা by BOURSES_BRAQUE - অধ্যায় ৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-39386-post-3551310.html#pid3551310

🕰️ Posted on July 31, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 845 words / 4 min read

Parent
চার্লসের বাবা মা থাকেন রিট্টেনহাউস স্কোয়ারের বিশাল অট্টালিকায়। বাড়িটা তার নিজস্বতায় নিজেই একটা এই শহরের বিশেষ ল্যান্ডমার্ক। ট্রেসি অতীতে কত বার যে এই অট্টালিকার সামনে দিয়ে যাতায়াত করেছে। আর কিছুদিন পর এই অট্টালিকাই কিনা ট্রেসির জীবনে একটা অঙ্গ হতে চলেছে... ভাবলেই কেমন যেন একটা শিহরণ জাগে শরীরে। আজ ট্রেসি নার্ভাস। সত্যিই সে নার্ভাস। কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। কেমন ড্রেস করা উচিত তার আজকের জন্য? ফর্মাল? নাকি সিম্পল? তার একটা সেন্ট লরেন্টএর ড্রেস আছে বটে যেটা সে ওয়ান্নামেকার্স থেকে কিনেছিল, কিন্তু সেটা যদি সে আজ পড়ে যায়, তবে তাঁরা ভাবতে পারেন যে সে বেহিসাবী। ভাবতেই পারেন। আবার অন্য দিকে সে যদি পোস্ট হরন থেকে সেলে কেনা ড্রেসটা পড়ে যায়? তখন তাঁরা ভাববেন নাতো যে ইস, এ কাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এল চার্লস। উফফফফ। কি বিপদে পড়া গেল। অনেক ভাবে চিনতে ট্রেসি ঠিক করল সে আজ একটা ধূসর উলের স্কার্টের সাথে সাদা সিল্কের ব্লাউজই বরং পড়বে। সেটা না হবে খুব বেশি দামী আবার কম দামী একদম খেলোও নয়। আর সেই সাথে গলায় পড়বে মায়ের দেওয়া সোনার চেনটা যেটা মা খ্রিস্টমাসে তাকে দিয়েছিল। হ্যা। এটাই ঠিক হবে। তারপর তো চার্লস আছেই। ও পাশে থাকলে চিন্তা কিসের? ****** বিশাল অট্টালিকার সদর দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই উর্দিপরিহিত বার্টলার এসে দরজা খুলে সরে দাঁড়াল, ‘শুভ সন্ধ্যা, মিস হুইটনি!’ বাড়ির বার্টলারও আমার নাম জানে? এটা কি ভালো? না মন্দ? ব্যাপারটা খারাপ নয়তো? ‘আমি আপনার ওভারকোটটা খুলে নিতে পারি ম্যাডাম?’ ট্রেসি খেয়াল করল সে দামী পারসিয়ান কার্পেটের ওপর দাঁড়িয়ে রয়েছে, আর তার কোট থেকে বৃষ্টির জল ঝড়ে পড়ছে সেই কার্পেটের ওপর। তাড়াতাড়ি করে নিজেই গা থেকে ওভারকোটটা খুলে বার্টলারের হাতে তুলে দিল। বার্টলার ট্রেসিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে চলল অট্টালিকার অন্দরে। যেতে যেতে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ভাবতে লাগল ট্রেসি, ‘ইস, কি ভুল করেছি সেন্ট লরেন্টএর ড্রেসটা না পড়ে। এই রকম জায়গায় ওই ধরনের ড্রেসই পড়া উচিত ছিল আমার। তাকে নিয়ে বার্টলার লাইব্রেরিতে ঢুকতেই একদম চার্লস স্ট্যানহোপ সিনিয়রের মুখোমুখি। আর ঘটনা চক্রে তখনই তার যেন মনে হল পায়ে পরে থাকা প্যান্টিহোসটা একটু আলগা হয়ে সামান্য যেন নেমে গেছে গোড়ালির কাছটাতে। কঠোর সুদর্শন মধ্য ষাটের ভদ্রলোক। দেখলেই বোঝা যায় একজন সিদ্ধসনোরথ পুরুষ। আজ থেকে তিরিশ বছর পর তার ছেলেকে কি রকম দেখতে হবে সেটা এনাকে দেখলেই বোঝা যায়। বাদামী তীক্ষ্ণ চোখ, দৃঢ় চিবুক, মাথায় সাদা পক্ক কেশ। ট্রেসি প্রথম দর্শনেই ভদ্রলোককে ভালোবেসে ফেলল। একদম প্রকৃষ্ঠ ঠাকুরদাদা তাঁর হবু নাতি বা নাতনির জন্য। চার্লসের মাকেও বেশ হৃদয়স্পর্শী দেখতে। তিনি আবার একটু বেঁটে আর স্থুলো বলা চলে, কিন্তু তাঁর চারপাশটা একটা বেশ রাজকীয় আবহাওয়া ঘিরে রয়েছে যেন। দেখলেই বোঝা যায় এনাকে যে কোন ব্যাপারেই ভরসা করা চলে। ইনিও বেশ সুন্দর ঠাকুমা হবার যোগ্য। হাত বাড়িয়ে ট্রেসিকে আহ্বান করে বললেন, ‘এস ট্রেসি। আমরা চার্লসকে বলে একটু তোমার সাথে একা আলাপ করতে চেয়েছি, তোমার তাতে নিশ্চয় খারাপ লাগে নি?’ ‘না, না। ঠিক আছে!’ ‘বসো... ট্রেসি।’ ‘ইয়েস স্যর...’ মাথা নিচু করে উত্তর দিল সে। ওনারা দুজনে তার উল্টো দিকের সোফায় পাশাপাশি বসলেন। কেমন যেন তার মনে হচ্ছে সে যেন কোন ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে বসে আছে। সোফায় বসে একটা ঢোক গিলল সে। একটা দূর্বল হাসি মুখে ঝুলিয়ে রাখল ট্রেসি। সে ভালো মত উপলব্ধি করছে যে তার প্যান্টিহোসটা নেবে প্রায় হাঁটুর কাছে চলে এসেছে। মুখে হাসি রেখে চেষ্টা করল স্কার্টের ওপর দিয়ে প্যান্টিহোসটাকে খানিকটা ওপর দিকে টেনে তুলে সামাল দিতে। কানে এল মিঃ চার্লসের জলদগম্ভীর স্বর, ‘তো, তাহলে তুমি আর চার্লস, দুজনে বিয়ে করতে চাও?’ চাও – কথাটা কেমন যেন খট করে কানে লাগল ট্রেসির। চার্লস নিশ্চয়ই এঁনাদের বলেছে যে তারা বিয়ে করতে চলেছে। মাথা নেড়ে সে উত্তর দিল, ‘হ্যা’। পাশ থেকে মিসেস স্ট্যানহোপ প্রশ্ন করে উঠলেন, ‘তুমি আর চার্লস খুব একটা দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে চেনো না, তাই তো?’ ওনারা কি আমাকে অপনাম করছেন? অনেক কষ্টে ভেতর থেকে ঠেলে ওঠা অপমানবোধটাকে চেপে রাখার চেষ্টা করল ট্রেসি। সে ঠিকই ভেবেছে। এটা একপ্রকার ইন্টারভিউই হচ্ছে বটে। একটু থেমে সে উত্তর দিল, ‘ততদিনই যতদিনে আমরা বুঝেছি যে আমরা একে অপরকে ভালোবাসি।’ ‘ভালোবাসা!’ বিড়বিড় করে বলে উঠলেন মিসেস স্ট্যানহোপ। খানিক চুপ করে থেকে আবার বলতে লাগলেন মিসেস স্ট্যানহোপ, ‘সত্যি কথা বলতে কি জানো ট্রেসি, চার্লস যখন তোমাদের কথা এসে বোললো, আমি বা চার্লসের বাবা তো শুনে অবাক। রীতিমত আমরা দুজনেই শকড্।’ তারপর একটু স্মিত হেসে বলতে থাকলেন, ‘তোমাকে নিশ্চয়ই চার্লস চারলটের কথা বলেছে।’ চারলটের নামটা এই প্রথম শুনল ট্রেসি। তার চোখে বিস্ময় লক্ষ্য করে মিসেস স্ট্যানহোপ বলে উঠলেন, ‘ও, তুমি এখনও চারলটকে চেনো না! চার্লস বলে নি তার কথা? ঠিক আছে, হয়তো বলতো, বা বলবে বলে ভেবেছিল। যাই হোক। চারলট আর চার্লস ছোটবেলা থেকেই একসাথে বড় হয়েছে, বুঝলে। ওরা একে অপরের খুব কাছের, আর সত্যি বলতে কি আমাদের অত্মীয়সজন প্রত্যেকেই অপেক্ষায় রয়েছে কবে চার্লস আর চারলটের এঙ্গজমেন্টটা অ্যানাউস করা হবে। সবাই তো ভেবেছিল যে হয়তো সেটা এই বছরই শুনবে তারা।’ চারলটের সম্বন্ধে আর বিশেষ কিছু শোনার প্রয়োজন বোধ করলনা টেসি। কি হবে শুনে। এইটুকু শুনেই মোটামুটি একটা ধারনা তার হয়ে গিয়েছে চারলটের সম্পর্কে। নিশ্চয় খুব কাছেই থাকে। বড়লোক। চার্লসের সামাজিক প্রতিপত্তির মত তারও একই রকম প্রতিপত্তি আছে নিশ্চয়ই। ছোট থেকে সব থেকে ভালো স্কুলে পড়াশোনা করেছে। ঘোড়ায় চড়তে ভালোবাসে, হয়তো প্রচুর মেডেল কাপ জিতেছে নানা স্পোর্টসে। কানে এল মিসেস স্ট্যানহোপের গলা, ‘তা, তোমার পরিবার সম্বন্ধে কিছু বল ট্রেসি...’ উফ, এই মুহুর্তে যেন মনে হচ্ছে পুরো ব্যাপারটাই একটা লেট নাইট সিনেমা। ট্রেসির নিজেকে রিটা হেওয়ার্থ চরিত্র বলে মনে হচ্ছে। সে এখন যেন কেরি গ্রান্টের বাবা মার সাথে দেখা করতে এসেছে। এক গ্লাস জল দরকার।
Parent