বন্ধু (As collected from Net) - অধ্যায় ২৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-11115-post-675952.html#pid675952

🕰️ Posted on July 22, 2019 by ✍️ dweepto (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1018 words / 5 min read

Parent
২০  সেই রাত প্রায় জেগেই কাটিয়ে দিলাম। তিনবার খেচার পরেও মনে হল বাড়া ঠান্ডা হচ্ছে না আর মাথা ক্লিয়ার হচ্ছে না। পরে শেষ রাতে ঘুমিয়ে পরলাম। পরের দিন শনিবার, সেদিন ক্লাস নাই। দেরি করে উঠে নাস্তা করলাম। এরপর আস্তে আস্তে বসলাম পড়ার টেবিলে। কিছুদিন কিছুই পড়া হয় নি। দেখি এখন কি অবস্থা। পড়তে পড়তে আবার আগেরদিন বাসের ঘটনা মাথায় চলে আসল। স্মৃতিতে নরম সেই স্পর্শ কিছুতেই যাচ্ছে না। আর চিন্তা করলেই যেন বাড়া খাড়া হয়ে যাচ্ছে। বই বন্ধ করে উঠে পড়লাম। খেয়াল করেছি অনেক সময় হাটলে মাথা খুলে। চিন্তা করতে সুবিধা হয়। তাই এই প্রায় ভর দুপুরে হেটে হেটে রমনার দিকে রওনা দিলাম। পাঁচ মিনিট হেটে আস্তে আস্তে রমনা পার্কে ঢুকে পরলাম। ভিতরে চুপচাপ। কিছু ফেরিওয়ালা এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। সকাল আর বিকাল বেলা রমনা পার্ক হল ঢাকা শহরের মানুষের শরীর চর্চার স্থান আর দুপুর থেকে বিকাল হল মন চর্চার স্থান। এই সময় স্কুল কলেজ আর ভার্সিটিগামী প্রেমিক প্রেমিকাদের শান্তিতে কথা বলবার জায়গা হল এই রমনা পার্ক। ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিউটের সামনের গেট দিয়ে ঢুকে ভিতরে হাটতে থাকলাম। বাইরে যত গরম হক ভিতরে ঢুকলে একটা ঠান্ডা হাওয়া পাওয়া যায়। চারপাশের এত ইট কংক্রিটের জঞ্জালের ভিতর এক টুকরো সবুজ। ভিতরে লেকও আছে। ফলে অন্তত চারপাশে থেকে পার্কের তাপমাত্রা সবসময় দুই তিন ডিগ্রি কম থাকে। হাটতে হাটতে মাথায় ভিতর কথা গুলো ঘুরতে থাকল। আসলে ব্যাপারটা কি হল। প্রথমে একদিন আমি বাসের ভিতর সুযোগ পেয়ে মিলির পাছায় থাপ মারলাম। আর একটু অবাস্তব শোনালেও মিলি কালকে আমাকে থাপ মারল। কিন্তু মিলির সাথে ব্যাপারটা যায় না। খটকা এখানে। আবার যাওয়ার সময় মিলি যে টিট ফর ট্যাট কথাটা বলল এর মানেই বা কি? মানে কি মিলি তার আগে ঘটে যাওয়া ঘটনার শোধ নিল। আসলে এভাবে চিন্তা করে আগে দেখিনি। মিলির মধ্যে একটা জেদি ভাব আছে। ওকে যত দূর্বল আর শান্ত মনে হোক না কেন ওর মনের ভিতর একটা জেদি মানুষ আছে আগেও খেয়াল করেছি। যদি কোন কারণে ওর মনে হয় ওকে ঠকানো হচ্ছে তাহলে ও এতে শোধ নিবেই। টিট ফর ট্যাট এর মানে কি এই শোধ নেওয়া? তাহলে শেষে এই মুচকি হাসির রহস্য কি? সব মিলিয়ে আবার মনে হল জট পাকিয়ে যাচ্ছে। হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে এক বেঞ্চে বসলাম বিশ্রামের জন্য। এই সময় এমনিতেই লোকজন কম। তাই হঠাত করে জোরে ছাড় শব্দ টা শুনে কৌতুহলি হয়ে উঠলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি পিছনে এক ফুল গাছের সারির পিছনে মাথা দেখা যায়। কান খাড়া করতেই শুনি মেয়ে কন্ঠ বলছে কি কর? ছেলে কন্ঠ বলে খেলি সোনা। মেয়ে বলল এইসব বাদ দাও, কোথায় হাত দিচ্ছ? মেয়ের কন্ঠে প্রশ্ন কিন্তু ঠিক বাধা দিচ্ছে বলে মনে হল না কথা শুনে। ছেলে কন্ঠে শুনা গেল আমি খেলছি সোনা। তুমিও খেল। মেয় বলল তুমি খালি বাজে কথা বল, আর দুষ্টমি কর। এইরকম কথা চলল আর কিছুক্ষণ। বোঝা গেল দুই পক্ষের সম্মতি আছে তাই আমিও চুপচাপ বসে বিশ্রাম নিতে থাকলাম। বসে থাকতে থাকতেই মাথায় একটা বুদ্ধি আসল, দুষ্ট বুদ্ধি। মনে হল আই হ্যাভ টু ট্রাই মাই লাক।  মাথায় আইডিয়া আসার পর থেকে একটু নির্ভার লাগল। বাসায় যেতে যেতে ফোন দিলাম মিলি কে। ফোন ধরল, জিজ্ঞেস করলাম বিকেলে বের হবে কিনা। বাকিরা আসবে কিনা জানতে চাইল। আমি বললাম জিজ্ঞেস করি নি। মিলি বলল সবাই বের হলে ও বের হবে। আমি বাকিদের ফোন দিলাম। সাদিয়া আর সুনিতি আসতে রাজি হল। মিলি কে বললাম। সবাই বিকাল পাচটার দিকে লাইব্রেরির সামনে থাকব কথা হল। গত এক সাপ্তাহে আজকে দুপুরের খাবার টা একটু শান্তিতে খেলাম। বিকাল বেলা সোয়া পাচটার দিকে ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখি বাকিরা বসে আছে। জুলিয়েট আসবে না বলেও এসেছে। কয়েকদিন কই ছিলাম বাকিরা জিজ্ঞেস করল। মিলি আমার সাথে যে ওর গতকাল দেখা হয়েছিল বেমালুম চেপে গেল। এই কথা সেই কথায় অনেক কথা হল। সবাই মিলে পানিপুরি, ফুচকা এইসব খাওয়া হল। সাতটার দিকে জুলিয়েট আর সুনিতি চলে গেল, বাসায় যেতে সময় লাগবে তাই। মিনিট দশেক পর সাদিয়াও উঠে গেল ওর হলে যাবে বলে। ওর হল আবার সুফিয়া কামাল হল। তাই আগেই রিক্সা করে চলে গেল। মিলির রোকেয়া হল। একদম লাইব্রেরির সামনে। তাই ও রয়ে গেল। সবাই যাবার পর টের পেলাম আমাদের মাঝে একটা নীরবতা। মাথার ভিতর একটা লাইন ঘুরছে। আই হ্যাভ টু ট্রাই মাই লাক। তাই আমিই জিজ্ঞেস করলাম কিরে কালকে টিট ফর ট্যাট বললি কেন। মিলি উত্তর দিল তুই এর আগে যা করেছিস তার শোধ নিলাম তাই। আমি নিষ্কুলুশ ভাব নিয়ে প্রশ্ন করলাম কি করলাম আবার আমি। মিলি বলল শোন মাহি আমি বোকা না। সেইদিন বাসে তুই যা করছিলি আমার বুঝতে একটু সময় লাগলেও আমি বুঝেছি। আমি এক কথা শোনার পর ভয়ে কুকড়ে গেলাম। সন্ধার আলো আধারিতে আমি আমতা আমতা করে বললাম শোন ঐদিন যে কি হল বাসের ভিতর ভীড়, তোর গায়ের গন্ধ আর বাসের ধাক্কায় তাল সামলাতে পারি নি। স্যরি, আমি আসলে এরকম কিছু করতে চাই নি। মিলি হাত তুলে থামিয়ে দিল। বলল শোন আমি কিছুটা হলেও বুঝি। যা করেছিস ভাল কিছু করিস নাই। অন্য মেয়ে হলে হয়ত মেনে নিত তবে আমি আমার মত করে প্রতিকার করছি। তুই বাসে গায়ে হাত দিছিস আমি তোর গায়ে হাত দিছি। এই কথাতে বুঝলাম আমার একটা হাইপোথিসিস সত্য। আমি বললাম আর কখনো এমন হবে না। এরপর আমি সকালের প্ল্যান টা বের করলাম। বললাম তুই যে এমন করলি এটা ঠিক হল? তুই আর আমি তো এক সমান হয়ে গেলাম। মিলি বলল তখন তোর কেমন লেগেছিল? আমি বললাম এক রকম হেল্পলেস। কথা অবশ্য মিথ্যা না আমার মনে হচ্ছিল মিলি কে জাপটে ধরে বাসের মধ্যে করতে না পারায় হেল্পলেস মনে হচ্ছিল। মিলি অবশ্য অন্য মানে করল। ও বলল বুঝ আমার কেমন লেগেছিল। এইবার মিলি চোখের দিকে তাকিয়ে বেশ শক্ত করে বলল তুই যদি আবার এমন কিছু করিস তাহলে আমিও তোকে এমন কিছু করে সোধ নিব। জুলিয়েটের চ্যাট করবার সময় মিলি সম্পর্কে বলা একটা কথা মনে পরে গেল, মিলি নাকি ওর ব্রেকাপের পর থেকে নারী পুরুষের সমতাতে খুব বেশি নজর দিচ্ছে। কোন একদিনে বেশি নজর দিলে অন্যদিক এড়িয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। আমার কথার প্যাচ মিলি তাই খেয়াল করল না। আমি একটু হাসি দিয়ে বললাম আমি যদি আবার এমন কিছু করি তাহলে? কাউকে বলবি না? মিলি বলল আমরা মেয়েরা নিজেদের দূর্বল ভাবি তাই দূর্বল। আমার সমাধান আমি নিজেই করব। আমি পরের চাল দিলাম। বললাম পারবি না। মিলি জেদের স্বরের বলল আমি আমার সমাধান আমাদের কার সাহায্য ছাড়াই করতে পারব। সেইদিন এর পর আর বেশি কথা হল না। যার যার মত চলে আসলাম। তবে আমার প্ল্যানের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়ে গেল মিলির সামনে কিন্তু অর অজান্তে। সেই রাতে খেচতে খেচতে মিলির জেদি চোখে তাকিয়ে থাকা মুখটা সামনে আসতে থাকল। মনে হল আই হ্যাভ টু ট্রাই মাই লাক। 
Parent