Come in, এসো! --- রাখাল হাকিম - অধ্যায় ৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-50735-post-5006462.html#pid5006462

🕰️ Posted on October 29, 2022 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 534 words / 2 min read

Parent
আমি অপ্রস্তুত হয়েই বললাম, সাইকেল? আমাকে সাইকেলে উঠতে বলছিস?মিমি আবারো খিল খিল করে হাসতে থাকলো। এত সুন্দর দাঁত মিমির? আমি কিছুক্ষণ তার হাসিটাই শুধু দেখতে থাকি। আমি আবারো বলি, আমার একটা প্যানিক সময়, আর তুই হাসছিস? মিমি হাসি থামিয়ে বললো, হাসবো না তো, কি কাঁদবো? তোর প্যানিক সময়! গাড়ী নষ্ট হয়ে গেছে! শ্বশুর এর জন্যে শোক প্রকাশ করতে যেতে হবে! হেঁটে হেঁটে যেতে গেলেও তো অনেক সময় লাগবে! তারচে বরং আমার সাইকেলে উঠ। একটু হলেও তাড়া তাড়ি পৌঁছুতে পারবি। আমি বললাম, তাহলে তুই নাম। তোর সাইকেলটা আমাকে দে। মিমি খিল খিল হাসিতেই বললো, তাহলে আমি কাজে যাবো কি করে? আমি বললাম, তুই পেছনে বস, আমি চালাচ্ছি। মিমি আহলাদ করেই বললো, না, আমার সাইকেল আমি চালাবো। মা খুব শখ করে কিনে দিয়েছে। তুই পেছনে বোস। অগত্যা আমি মিমির সাইকেলের পেছনেই বসলাম। মিমি প্রাণপনেই সাইকেলটা চালাতে থাকলো। পাবলিক মিলনায়তন এর সামনে এসেই সাইকেলটা থামালো, যেখানে অম্মৃতার বাবার শোক সভাটা হবার কথা ছিলো। অথচ, চারিদিক তাঁকিয়ে দেখি, কেউ নেই। আমি আর মিমি শুধু মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকলাম। তারপর, মিমিকে লক্ষ্য করে বললাম, তোর জন্যে। তোর জন্যে আমার দেরীটা হলো। মিমি অন্যত্র তাঁকিয়ে মুচকি হাসলো। বললো, ভাইয়া, তোকে একটা কথা বলি। আমি বললাম, কি? মিমি বললো, এত সহজে মানুষকে দোষ দিস না। আমি তো কম চেষ্টা করিনি। একটা মেয়ে, তোর মতো একটা ভারী পুরুষকে সাইকেলের পেছনে বসিয়ে এত দূর নিয়ে এলাম, কোথায় প্রশংসা করবি, তা না। তুই আমাকে দোষারূপ করছিস। আমি বললাম, হ্যা করছি। আমি তো বলেই ছিলাম, সাইকেলটা আমাকে দে। তুই তো দিলি না। আহলাদ করে বললি, তোর মা তোকে কিনে দিয়েছে। আমাকে চালাতে দিলি না। আমি চালালে কি তোর সাইকেলটা নষ্ট হয়ে যেতো? মিমি বললো, নষ্ট হতো কি হতো না, জানি না। কিন্তু আমার ধারনা, তুই নিজেও যদি এত দূর সাইকেল চালিয়ে আসতি, তাহলে বড় জোড় দশ কি পনেরো মিনিট আগে এখানে এসে পৌঁছুতি। কিন্তু ওখানে তাঁকিয়ে দেখ, শোক সভাটা আধা ঘন্টা আগেই শেষ হয়ে গেছে। পারলে তোর গাড়ীটাকে গিয়ে আরেকটু দোষারূপ করে আয়। মিমির সাথে আর কথা বাড়াতে ইচ্ছে করলো না। আমি রাগ সামলাতে না পেরে ধপাস করে সিঁড়িটার উপর বসলাম। আর ভাবতে থাকলাম, অম্মৃতা কিংবা অম্মৃতার বাবার যতই দোষ থাকুক, কোন মৃত মানুষের দোষ থাকতে পারে না। মানুষ মৃত্যুর আগে সব পাপ ধুয়ে মুছেই পরপারে বিদায় নেয়। অম্মৃতার বাবাও হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করে সব পাপ ধুয়ে মুছেই মৃত্যু বরণ করেছে। অথচ, তার শোক সভায় আমি থাকতে পারিনি? মিমি সামনের গেটের দেয়ালটার বাইরে থেকে মুখটা বাড়িয়ে আবারো তার চক চক করা সাদা দাঁত গুলো বেড় করে হাসতে থাকলো। এমন দাঁতের হাসি দেখলে কেনো যেনো আমার দেহটা খুব উষ্ণ হয়ে উঠে। আমি রাগ করেই বললাম, তুই সব সময় অমন করে হাসিস কেনো? তোর হাসি দেখলে আমার মেজাজ খারাপ হয়। মিমি হাসতে হাসতেই বললো, মানুষ শুধু আনন্দেই হাসে না। অনেক কষ্টেও হাসে। এখন হাসছি, তোর কষ্ট দেখে। ভাবীর বাবার মৃত্যুতে যদি এতই কষ্ট লাগে, তাহলে শ্মশানে চল। বোধ হয় এতক্ষণে পুড়িয়ে ফেলেছে। তারপরও পুড়া ছাই নিয়েও তো একটু প্রণাম করতে পারবি! আমি উঠে দাঁড়ালাম। বললাম, থাক লাগবে না। চল, বাড়ী চল। মিমি বললো, বাড়ী চল মানে? শ্মশানে না হয় না যাবি, অফিসে তো যাবি! আমি বললাম, তোর কি আসলেই মন বলে কিছু আছে? আমার শ্বশুর মারা গেছে, আর অফিসে আমার মন টিকবে বলে ভাবছিস? মিমি বললো, মন আমার ঠিকই আছেরে ভাইয়া। কিন্তু মনটা মরে গেছে। এই বলে মিমি আবারো সাইকেলটাতে চড়ে বসলো। তারপর বললো, উঠ।
Parent