দেবলীনার সংসার জীবন by MANOJ M - অধ্যায় ১৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38668-post-3431117.html#pid3431117

🕰️ Posted on June 26, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 434 words / 2 min read

Parent
দশ সঞ্জীববাবু এ ঘটনা কোনদিন ভুলতে পারবেন না। ভোলা সম্ভবও নয়। সমস্ত ঘটনা ওলট পালট করে দেখতে গেলে বিমলা, বিন্দুবালা, মংলীর মায়ের মতো মেয়েরা কি না করতে পারে। জ্যান্ত মানুষকে মরা, মরা মানুষকে জ্যান্ত করতেও এদের কোন অসুবিধা হয় না। রাধারাণীর মতো মেয়ের নামে যারা অপবাদ দিতে পারে, দেবলীনার মতো মেয়েকে তারা অপবাদ দেবে এ আর বেশী কথা কি ? এদের কথার ওপর বিশ্বাস রেখে এ বিয়ে ভেঙে দেওয়া উচিত হতো না। সঞ্জীববাবু এ কথাটা কেবল ভেবেছেন। তাছাড়া মেয়ের দোষটাই বা কি? মেয়ে যদি প্রকৃতই চঞ্চল বা আধুনিকা হয়, এটা কি একটা অপরাধ ? এসব কথায় কেনই বা আমি আমার সিদ্ধান্ত নড়চড় করবো? এসব প্রশ্ন নানাভাবে সঞ্জীববাবুকে নাড়াচাড়া দিয়ে তুলেছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি বিয়ে দেওয়াটাই সমীচীন বলে মনে করেছিলেন। আজ সঞ্জীববাবুর মনে পড়ে দেবলীনাকে ঘরে না আনা একটা কতো বড় ভুল হতো।লোকের কথা বিশ্বাস করাটা তাঁর কতো বড় শাস্তি হতো। দেবলীনা এসেই নিজেকে কি সুন্দর মিশিয়ে দিয়েছে এ বাড়ীর সঙ্গে। যারা ওকে নির্লজ্জ আধুনিকা বলতো এ মেয়ে ঘরে থাকবার মতো নয়, তারা কত বড়ো মিথ্যাবাদী। সংসার ছাড়া সে ত আর কোন কথাই চিন্তা করে না। তার কথা চলাফেরায় কোনদিন কোন অসংলগ্ন বা খারাপ কিছুর আভাষ পান নি। দেবলীনার প্রতি এখন তার যে ভালোবাসা জন্মেছে, তারই উদ্বেলিত ধারা সঞ্জীববাবুকে এই বৃদ্ধ বয়সেও আর এক নতুন ধরনের মানুষ করে গড়ে তুলেছে। এ বয়সে সংসারের মধ্যে আবার তিনি এত সজীব হয়ে পড়বেন সংসারকে আবার এত সুন্দর চোখে দেখবেন তা কোনদিন কল্পনাও করতে পারেন নি। এই দুবছরে গ্রামের অবস্থারও অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে। গ্রামের লোকেরা সব দেখে শুনে এখন আর দেবলীনার নিন্দা করে না। আজ কোথায় গেছে সে সব জনরব। হঠাৎ যেন বৃষ্টির জলের মতোই ধুয়ে মুছে নিয়ে গেছে সে সব। এ দুবছরে আজ আবার এক নতুন মানুষ হয়ে ধরা দিয়েছে দেবলীনা এই গ্রাম্যমানুষদেরই চোখে। যারাই একদিন ওকে অতি আধুনিকা বেহায়া শহুরে বলে আখ্যা দিয়েছিলো তাদের এখন সে সব কথা মুখেই ওঠে না। মনে পড়লেও যেন পাপ হয়। আজ শত মুখে তারা দেবলীনার প্রশংসা করে। গ্রামের যে মেয়ে বউরা একদিন নিভ নিভ রৌদ্রে ঘাটে জল নিতে এসে দেবলীনাকে নিয়ে ভালো মন্দ মিলিয়ে নানান আলোচনা করতো তারাই আবার আজ সেই স্যাঁতসেঁতে ঘাটে এসে সুর পাল্টে বলে - অমন মেয়ে হয় না। রামায়ন মহাভারতেও ওর তুলনা মেলে না। সকলেই অবাক হয়ে শুনতো। কথাটা মন্দ বলে নি। বীণা এদের সবার কথা শুনে একটা মুচকি হাঁসি দিতো। যে দেবলীনাকে একদিন পথেঘাটে দেখা যেতো, এ পুকুর ঘাটের পাশের চওড়া রাস্তাটা দিয়ে যে মেয়ে ঠিক এমনি সময় রোজ প্যান্টুল পরে সাইকেল চালিয়ে হু হু করে বেরিয়ে যেতো, সে মেয়ের কিনা দু বছরের মধ্যে তারা কেউ একদিনও মুখ পর্যন্ত দেখতে পায় নি। অমন মেয়ে যে এমন সংসারী হবে তা আগে কে বুঝেছিলো। নতুন পুরানো সকলেই বলাবলি করতে লাগলো, ধন্যি মেয়ে। অমন মেয়ে হয় না।
Parent