দেবলীনার সংসার জীবন by MANOJ M - অধ্যায় ৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38668-post-3427909.html#pid3427909

🕰️ Posted on June 25, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 470 words / 2 min read

Parent
চার যে ছিল এতদিন নির্লজ্জ শহুরে মেয়ে, সে হল আজ মোহিত গ্রামের বউদি, গ্রাম্য বউ। গ্রামের মেয়ে ছেলেরা সব দল বেঁধে নতুন বউ দেবলীনা বউদিকে দেখতে এলো। মংলীর মা, বিন্দুবালা, বিমলা এরাও সবাই এসেছে। যে মেয়ে দুদিন আগেও গ্রামের পাকা রাস্তা দিয়ে ফুলপ্যান্ট পরে সাইকেলে চেপে দৌড়িয়েছে, সে মেয়ে আজ কি পোষাকে স্বামীর ঘরে এলো, সকলের মনেই এই কৌতুহল এই প্রশ্নই নাড়াচাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেকে বলাবলি করছে সঞ্জীববাবুর এ কাজটা করা উচিত হয়নি। মেয়ে দেখে পছন্দ হলে কি হবে এ মেয়ে কি ঘরে থাকবে, না স্বামীর ঘর করবে। অমন ছেলের সঙ্গে অমন মেয়ের বিয়ে দেওয়াটা উচিত হয় নি। সঞ্জীববাবু সব জেনে শুনেও কেন এ কাজটা করলেন ? কেউ ভেবে ঠিক করতে পারে না। সৌরভের মাও এই বিয়েতে ঠিক মনের ভিতর থেকে মত দিতে পারেন নি। স্বামীর কোন কাজের বিরোধীতা করবেন না, এই মনে করেই তিনি সম্মতি জানিয়েছেন। কথাটা অবশ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে বিয়ের পর। সঞ্জীববাবু এজন্য এতটুকুও ভ্রুক্ষেপ করেন না, তিনি যা করেছেন তা ভালভাবে বিবেচনা করেই করেছেন। সকাল দশটার একটু পরেই বাড়ীর দরজায় ঘন ঘন শঙ্খ বেজে উঠলো। গাড়ীটা বর-কনে নিয়ে বাড়ীর দরজায় এসে দাঁড়ালো। সকলেরই নজর বউর দিকে। কেউ বলছে দেখনা কনের পোষাকটা কি! কাপড় না প্যান্ট ? আবার কেউ বলছে, দেখ তো ঘোমটা দিয়েছে নাকি ? মংলীর মা বললো - কপালে সিঁদুর আছে তো ? হাতে শাঁখা ? বলতে গিয়ে আর একজন আর একজনের ঘাড়ের ওপর দিয়ে মুখ তুলে দিলো। এসব ব্যাপার নিয়ে একটা যেন হৈ চৈ পড়ে গেলো। সঞ্জীববাবু এগিয়ে এলেন। ছেলে মেয়েকে ভিতরে নিয়ে যাবার জন্য। মেয়েরা সব সরে দাঁড়ালো। মুহুর্তে সকলের চোখের সামনে নতুন বউ বেড়িয়ে এলো। সকলেই বিস্ময়ে দেখলো নতুন বউর কপালে সিঁদুর আছে, পরনে বেনারসী শাড়ী, মাথায় ঘোমটা, হাতে শাঁখা। এমনটি যেন আর কারো বিয়েতে দেখেনি। সকলেই বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে পড়লো। যেমনটি তারা মনে মনে কল্পনা করেছিলো এ যেন সব তার উল্টো। বাড়ীর সমস্ত উঠানটায় বাড়ীর সব মেয়েরা সারাদিন বসে বসে আলপনা এঁকেছে। উঠানের মাঝখানে বিচিত্র বর্ণ পিঁড়ির ওপর বর-কনে এসে দাঁড়ালো। প্রথমে সৌরভের মা আশীর্ব্বাদ করলেন। সকলেই উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে রইলো, কনে শাশুরীকে প্রণাম করে কি না।একে মুহূর্তের জন্য কোলাহলমুখর সম্পূর্ণ বাড়ীটা যেন এ দৃশ্য দেখার জন্য নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। কিন্তু সকলের বিস্ময়ে বাদ সাধলো কনে। দেবলীনা আস্তে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে শাশুড়ীকে প্রণাম করলো। সকলের আর একবার কৌতুহল নিবৃত্ত হলো। এবার আশীর্ব্বাদ করলেন সঞ্জীববাবু। দেবলীনা শ্বশুরকেও তেমনি ভাবে নমস্কার করলো। এমনি করে সকল পূজনীয়গণকেই দেবলীনা প্রণাম করলো। এবার সকলেই বলাবলি করতে লাগলো, না মেয়ে রুপে-গুণে সমান হয়েছে। উকিলবাবুর রুচিজ্ঞান আছে। সেদিনকার দুয়ারের সানাইয়ের ধ্বনি এমনি করে সার্থক করে তুলেছিলো দেবলীনা কিন্তু মংলির মা, বিন্দুবালা, বিমলার মন কিছুতেই উঠলো না। যে মেয়ে একদিন প্রকৃতির সঙ্গে চলে ফিরে বেড়াতো সমাজ সেবা বক্তৃতা ইত্যাদি কাজের মধ্যে যে সবসময় নিজেকে ব্যস্ত রাখতো, সে মেয়ে আজ সৌরভের স্ত্রী হয়ে ঘরে এসেছে। সঞ্জীববাবু দেবলীনাকে বউমা হিসেবে মনেপ্রাণে চেয়েছিলেন তাই হয়তো এ মিলন একান্তভাবে সম্ভব হলো। দেবলীনা শুধু সৌরভের বউ নয় সঞ্জীববাবু স্বর্ণময়ীর পুত্রবধূ, মোটকথা এ বাড়ীর গৃহিণী। এ বাড়ীর জীবনের সঙ্গে তার জীবন মিলিয়ে চলতে হবে।
Parent