দেবলীনার সংসার জীবন by MANOJ M - অধ্যায় ৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-38668-post-3427913.html#pid3427913

🕰️ Posted on June 25, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags:
📖 415 words / 2 min read

Parent
পাঁচ দেখতে দেখতে একটা বছর কেটে গেলো। অনেকেই ভেবেছিলো এ মেয়ে নতুন নতুন ভাল হলেও, পরে ভাল হবে বলে মনে হয় না। এই বউ নিয়ে ঘর করা বেশী সুখের হবে না। ঠিক মানিয়ে চলতে পারবে না। তাছাড়া সব থেকে বড় কথা দেবলীনা ঠাকুর দেবতা মানে না। স্বর্ণময়ী ঠাকুর মানেন। তাঁর ঘরে ঠাকুর দেবতা আছে, তাই এ বউয়ের সঙ্গে তিনি কি করে মানিয়ে চলবেন। কিন্তু সকলে যা যা ভেবেছিলো এক বছরের মধ্যে সকলে দেখলো ফল হয়েছে তার উল্টো। বিয়ে হবার পর দেবলীনা আর কোনদিন ফুলপ্যান্ট পরে নি। কাপড়ই এখন তার একমাত্র পোষাক। প্রতিদিন সে শাশুড়ীর অনুমতি নিয়ে নিজের হাতে সব কাজ করে। লাল পেড়ে শান্তিপুরী শাড়ী, কপালে বড় করে সিঁদুরের ফোঁটা সিঁথিতে সিঁদুর আঁকা এগুলো দুবেলা সে যত্নের সঙ্গে নিজেই করে। স্বর্ণময়ী এসব দেখে আশ্চর্য হয়ে যেতেন। তিনি যেন এরকম একটি বউমাই মনে মনে আশা করেছিলেন, ভগবান তাঁর জীবনে তাই এমন বউ মিলিয়ে দিয়েছেন। দেবলীনা যে এমন খাঁটি বউ হবে, তা কে আগে ভেবেছিলো? স্বর্ণময়ীও ভাবতে পারেন নি। যখন তার ওপর ঠাকুর পজোর ভার পড়ে, তখন দেবলীনা যেন উল্লাসে নেচে ওঠে! কত সুন্দর ভাবে কত নিষ্ঠার সঙ্গেই না সে ঠাকুর পূজো করে যায়, স্বর্ণময়ী তাও বার বার লক্ষ করেছেন। এমন বউকে না ভালোবেসে কে থাকতে পারে? স্বর্ণময়ী যেন প্রথমে দেবলীনাকে একরকম আবছা কাচের চক্ষে দেখেছিলেন, কিন্তু সে কাচ স্নেহের ঘর্ষণে ক্ষয়ে যাওয়ায় এখন দেবলীনা শাশুড়ীর চোখে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ হয়ে এসেছে। দেবলীনাকে স্বর্ণময়ীর ভালোবাসতে হয়নি, দেবলীনাই স্বর্ণময়ীর মন প্রাণ চুরি করে নিয়েছে। দেবলীনার বিনয়, মহত্ত্ব, সরলতার কাছে ধরা না দিয়ে পারেন নি স্বর্ণময়ী। যে বউকে তিনি মনে মনে প্রথমে মেনে নিতে পারেন নি, সে বউকেই কি ভাবে যেন তিনি মনের গোপন দ্বার দিয়ে আজ আবার ভালোবেসে ফেললেন। সন্ধ্যার সুন্দর মলিন দক্ষিনা হাওয়ার মতো স্বর্ণময়ীর সমস্ত মনটুকুতে জুড়ে বসলো দেবলীনা। দেবলীনা নামে দুষ্টু মেয়েটি যেন কি যাদু জানে ! এখন ঠাকুর পূজোর ভার স্বর্ণময়ী বউমার হাতেই তুলে দিয়েছেন। এ বাড়ীর সকলের চেয়ে দেবলীনাই নাকি ঠাকুর পূজো ভাল করে, একথা একদিন স্বর্ণময়ী উৎফুল্ল হয়ে হাসতে হাসতে স্বামীকে বলে ফেলেছিলেন। সেই থেকে ঠাকুর ঘরের ভার দেবলীনার ওপর। দেবলীনা প্রতিদিন স্নান সেরে ধোয়া কাপড় পরে ঠাকুর সাজাতে আরম্ভ করে। যতক্ষন না তার মনের মত হয় ততক্ষন সে ঠাকুর ঘর থেকে বের হয় না। রোজ রোজ নতুন নতুন অর্ডার আসে বাবার কাছে। আজ ঠাকুরের জন্য এ চাই ও চাই। ঠাকুরের ঘাগরীটা পুরানো হয়ে গেছে। একটা নতুন ঘাগরী করে আনতে হবে। ঠাকুরের জন্য একসেট নতুন গয়না চাই। আগে কে ভাবতে পেরেছিলো, সেই দেবলীনার মধ্যেও এই দেবলীনার প্রাণ ছিল? নইলে যাকে নিয়মিত দেখা যেত পথে ঘাটে সাইকেলে ঘুরে বেরাতে বিয়ের পর থেকে আর তাকে একদিনও কেউ কোথাও দেখে নি। সে অমন সংসারী হয়ে পড়েছে।
Parent