গল্পের মত বাস্তব - অধ্যায় ১২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-24738-post-1852135.html#pid1852135

🕰️ Posted on April 17, 2020 by ✍️ eklasayan (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 632 words / 3 min read

Parent
পাক্কা দশ মিনিট হয়ে গেল স্যারের ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে আছি | সারা রাস্তাও উনি একটাও কথা বলেন নি | কিছুই বুঝতে পারছি না, যে আজকের ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসাবে আমার কি করা উচিত আর উনি সেটাকে কিভাবে দেখবেন | এতক্ষন উত্তেজনা ধরে রাখা বেশ কষ্টকর হয়ে উঠছিল, তাই শেষমেষ থাকতে না পেরে বলেই ফেললাম..........  - আমাকে রাঘবের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কি বলে ধন্যবাদ জানাবো বুঝতে পারছি না | কিন্তু আমাকে এ বাড়িতে নিয়ে এসে বোধ হয় ঠিক করেন নি........ আসলে লোকজন ভুল ভাবতে পারে | কথাটা বলে ওনার চোখের দিকে তাকিয়েই বুঝলাম কত বড় ভুল করেছি | এত আহত ওনাকে আমি কোনো দিনও দেখিনি | দৃঢ় পায়ে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন..........  - নিজেকে খুব বড় বুদ্ধিমান বলে মনে করো, তাই না? এত বড় একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একবার বলার প্রয়োজন পর্যন্ত মনে করলে না | এমনিতে তো খুব বড় বড় কথা, স্যার আপনি আমার কাছে ভগবানের মত, খুব শ্রদ্ধা করি....... আর একবারও বললে না, এমন কি কলেজে দেখা হলেও এড়িয়ে যেতে???!!!!  সেদিন যদি রুপসার কথা গুলো আড়াল থেকে না শুনতাম, তাহলে কি যে হত ভাবতেই পারছি না | কি ভাবো কি নিজেকে, খুব মহান?? আমার সন্মান বাঁচাতে আত্মত্যাগ করতে চলেছিলে???!!!!!  - না মানে, আসলে কাকা বলেছিল আপনার ক্ষতি...... তাই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম | ওরা খুব খারাপ, আপনি তো ওদের চেনেন না | ওরা টাকার জন্য সবকিছু করতে পারে | - হ্যাঁ কে কি করতে পারে সবকিছু জানা আছে | তাই বলে তুমি সব জেনে বুঝে অন্যায়ের কাছে মাথা নিচু করবে? এটা তোমার কাছে আশা করিনি | - অন্যায়ের কাছে মাথা নত করতে আমি চাই নি কিন্তু....... আমার জন্য আপনার কোনো ক্ষতি যে আমি মেনে নিতে পারি না | শুধু শুধু আপনি এসবের মধ্যে জড়ালেন | আমাকে এখানে নিয়ে আসার কোনো প্রয়োজন ছিলো না | এখন কেউ যদি আপনার দিকে আঙুল তোলে, সেটা আমি কি বলে.........  - থাক অনেক হয়েছে, লোকের কথা কম ভেবে এবার একটু নিজের কথা ভাবো | আর আমি কি করবো না করবো, কাকে নিজের কাছে রাখব আর কাকে দূরে সেটা আমাকেই বুঝতে দাও | আঙুল যখন আমার দিকে উঠবে তখন উত্তর টাও আমিই দেবো, তোমার এসব নিয়ে না ভাবলেও চলবে | রাত হয়েছে, চুপচাপ কথা না বাড়িয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পরো | - কিন্তু ও ঘরে আমি গেলে আপনি কোথায় শোবেন, পাশের ঘরটা তো অপরিস্কার | - হুমম, আমি আজকের রাত টা সোফায় শুয়ে পড়বো | কোনো অসুবিধা হবে না | কাল কাজের মাসি এলে আমি পরিস্কার করিয়ে রাখবো | - কিন্তু আপনি এভাবে........  - কোনো কিন্তু না, কথা না বাড়িয়ে সোজা ঘরে যাবে | না হলে আমি কিন্তু..........  - আচ্ছা স্যার, একটা কথা বলবেন? আপনি হঠাৎ আমার জন্যে এতকিছু কেন করছেন??!!!  - এমন বিশেষ কিছুই আমি করিনি, সুস্থ শিক্ষিত মানুষ হিসাবে যেভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা উচিত সেটাই করেছি | শুধু তোমার জন্য কেন, সে জায়গায় অন্য যে কোনো কেউ থাকলেও আমি এই একই কাজই করতাম | ব্যাস আর কোনো কথা না, ঘরে যাও |  - হুমমমমম | ও: তার মানে উনি আমার চিঠিটা পান নি | আর পেলেই বা কি......... ঠিকই তো বলেছেন উনি, যে কোনো মানুষেরই উচিত অন্যায়ের প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ানো | আমার জায়গায় অন্য যে কেউ হলে কৃতজ্ঞতায় মাথায় নুইয়ে রাখত আর আমি কিনা উল্টো পাল্টা কি সব ভাবছিলাম | ওনার মত একজন মানুষ যে আমার মত একজন মেয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, এত সাহায্য করছেন এটাই অনেক | নাহ: !!! আজকের পর থেকে একদম এসব ভুলভাল কিছু ভাববো না | আমার ওপর উনি যে বিশ্বাস করেছেন তার মর্যাদা দিতে আমি পড়াশোনা শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াবই | আমার জন্য ওনার কোনো অসন্মান আমি হতে দেব না | উনি না ই বা আমায় ভালোবাসলেন, কিন্তু আমি তো বাসি | আর সারা জীবন এ ভাবেই দূর থেকেই না হয়......... কাল সকালের প্রথম কাজ হবে ওনার অলক্ষ্যে ওনার ব্যাগ থেকে ওই চিঠিটা সরিয়ে ফেলা | এসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে চোখের ক্লান্ত পাতা দুটো বুজে এল বুঝতেই পারি নি | আজ অনেক দিন পর নিরাপদে একটু ঘুমাবো |
Parent