জীবনের অন্য পৃষ্ঠা - কামদেব - অধ্যায় ৪২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-5079-post-516634.html#pid516634

🕰️ Posted on June 2, 2019 by ✍️ stallionblack7 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1151 words / 5 min read

Parent
উশ্রী লক্ষ্য করেছে উমা বেশি কায়দা কানুন জানে না। কতরকম চোদনের কথা শুনেছে। কিন্তু ওর একই কায়দা পাছার কাছে বসে, দু কাধ ধরে। মাই টিপতে পারে কিস করতে পারে। মেয়ে হয়ে কি করে। এসব বলে? পাঁচ-সাত মিনিট পর বেরিয়ে যায়। কোনো কোনো দিন তার বেরোয় না।   অফিস এসপির বাংলো লাগোয়া, পিছনের দরজা দিয়ে বাংলো যাবার পথ। সকাল বেলা চা টিফিন খেয়ে খুশবন্ত পোশাক পরেই অফিসে আসে। খাতা পত্তর দেখে রাউণ্ডে বের হবে। ফোন করে খবর নিল হাসপাতালে আহত কনস্টেবল কেমন আছে। রাউণ্ডে বেরিয়ে একবার দেখতে যাবে। টেবিলে চাপা দেওয়া স্লিপে চোখ বোলায়, উমানাথ ঘোষ। চেয়ার থেকে উঠে বাইরে বেরিয়ে এল। উমানাথ উঠে দাড়ালো। উশ্রী এই প্রথম খুশবন্তকে পুলিশী পোশাকে দেখল। দারুন লাগছে দেখতে। খুশবন্ত জিজ্ঞেস করে, কতক্ষন? এটা অফিস, বাংলোয় যাবে তো। বেশিক্ষন না। এসো ভিতরে এসো। এই দরজা দিয়ে চলে যাও। রতিকে ডাকবে। আমি আসছি।   উমানাথ ভিতরে গিয়ে ইতস্তত করে, একজন মহিলা এসে জিজ্ঞেস করল, কুছু বলবেন? উমানাথ বলল, রতি আছে? পিছন থেকে ততক্ষনে দলজিৎ এসে কিছুক্ষন দেখে জিজ্ঞেস করেন, উমা আছে না? উমানাথ চিনতে পারে বলল, হ্যা আণ্টি আমি। দলজিৎ গলা চড়িয়ে ডাকলেন, পুত্তর তোমার দোস্ত এসেছে। রতি লিখছিল, আম্মীর গলা পেয়ে বেরিয়ে এসে বলল, আরে উমাদা? এসো ভিতরে এসো। উশ্রী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে। দুজনকে ভিতরে নিয়ে বসালো। জিজ্ঞেস করল, মুন্নি মানে খুশী জানে তোমরা এসেছো? আম্মী আপনি উমাদাকে চেনেন না? আণ্টী তো তোকে ডাকলেন। উমানাথ বলল। কান্তা একটু চা বানাও। কেমন আছেন বৌদি? ভাল আছি।  আপনি স্থির হয়ে বসুন। উশ্রী বলল। ইতিমধ্যে খুশবন্ত এসে পড়ে। একটা চেয়ারে বসে জিজ্ঞেস করল, কবে এসেছো? দিন পাঁচেক হয়ে গেল। কদিন আছো তো? ছোটা জিলা তোমাকে সব ঘুরে দেখাবো। ছুটি শেষ, কাল সন্ধ্যেবেলার ট্রেনে ফিরব। তাহলে আজ এখানে খাবে। উমানাথ উশ্রীর দিকে তাকায়, উশ্রী বলল, অবশ্যই এসপির আমন্ত্রন বলে কথা। তোমরা গল্প করো, এসপি একটা রাউণ্ড দিয়ে আসছে। খুশবন্ত তুমি কেমন আছো? রতির দিকে তাকিয়ে বিষন্ন গলায় বলল, ভাল না, বিয়ে করে খুব অশান্তিতে আছি। উশ্রী আড়চোখে রতিকে দেখে, এমনভাব করে বসে আছে যেন এসবের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। উমানাথ উশ্রী দুজনেই ধ্বন্দ্বে পড়ে যায়। রতিকে ডেকে অন্য ঘরে নিয়ে গেল খুশবন্ত। মাথা ধরে চুমু খেয়ে বলল, দেখো ওদের যত্নে যেন ত্রূটি না হয়, শেষে পাড়ায় গিয়ে বদনাম করবে। ফিরে এসে বলল, আসি উমানাথ, আসি ম্যাডাম। উমানাথ শুভ সোমলতা বঙ্কা সবার কথা একে একে বলে। চ্যারিটির সভা সেখানে ড. ব্যানার্জী কি বলছেন সব কথা। সুরঞ্জনা মুখার্জির মৃত্যুর কথাও বলতে ভোলে না। রতি চুপ করে শুনে যায়। রঞ্জনা আণ্টী বেচে নেই। নিশ্চয়ই পলি মলিরা এসেছিল। বঙ্কা এখন কম্পাউণ্ডারি করছে বাড়ি ছেড়ে বস্তিতে ভাড়া থাকে শুনে ব্যথিত হয়। আচ্ছা উমাদা বঙ্কা তো ওষূধের নামটাম এখন শিখেছে। একটা ওষূধের দোকান করতে পারেনা? ওষুধের দোকান করতে কম করে লাখ খানেক টাকার ধাক্কা। রতি নীরবে কি যেন ভাবে। বেড়াতে এসে এইসব কথা বলে ঠাকুর-পোর মন খারাপ করে দিলে। উশ্রী বলল। রত্নাকর উশ্রীর দিকে তাকিয়ে হাসল। কান্তা চা সঙ্গে স্যাণ্ড উইচ নিয়ে ঢুকে বলল, সাহেব আপনাকে শুধু চা দিলাম। রত্নাকর উঠে দাঁড়িয়ে বলল, তোমরা চা খাও, আমি এখুনি আসছি। রতি চলে যাবার পর উশ্রী বলল, হোটেলে খেয়ে তৃপ্তি হত না। ভালই হল কি বলো? বউয়ের কথা উমানাথের কানে ঢোকেনা। সে খুশবন্তের কথা ভাবছে। বিয়ে করে খুব অশান্তিতে আছি তাও আবার বলল রতির সামনে? রত্নাকর এক কপি "যে কথা বলা হয়নি" নিয়ে ঢুকল। সোফায় বসে মলাট খুলে লিখল, যার সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগে সেই মনীষা বৌদিকেরতি। বইটা উমাদাকে দিয়ে বলল, বৌদিকে দিও। উমানাথের হাত থেকে বইটা নিয়ে উশ্রী কি লিখেছে দেখল, হেসে বলল, আর কাউকে দেবেন না? সবই যদি বিলি করে দিই তাহলে আমার চলবে কি করে?   শোন রতি একটু এ্যাডজাস্ট করে চলতে শেখ। গম্ভীরভাবে বলল উমাদা। -মানে? তারপর হেসে বলল, তুমি মুন্নির কথা বলছ? ঐ পাগলের কথা আমি ধরি না। ও হল তিস্তা নদীর মত খেয়ালী। তুমি তো জানো কেমন ডাকাবুকো? যতক্ষন বাইরে থাকে খুব দুশ্চিন্তা হয়, বাসায় না ফেরা অবধি শান্তি পাইনা। বউকে আপনি মুন্নি বলেন? উশ্রী জিজ্ঞেস করল। ওর ডাক নাম মুন্নি, ওর মা ওকে এইনামে ডাকে। উমাদা তুমি ঠিকানাটা লিখে দিও। আমি পঞ্চাশ হাজার টাকা পাঠাবো, বাকীটা ম্যানেজ করে বঙ্কাকে একটা দোকান করে দিও। সে না হয় ব্যাঙ্ক লোন-টোন করে ম্যানেজ করা যাবে। তুই পঞ্চাশ হাজার দিবি? কেন দেবোনা বল? দুরবস্থা কাকে বলে জীবন দিয়ে শিখেছি। মুন্নি না থাকলে আমার যে কি অবস্থা হত। উশ্রীর সব তালগোল পাকিয়ে যায়। এদের স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কটা কিছুতেই বুঝতে পারে না। আত্মীয় স্বজন নয় একজন বন্ধুর জন্য এককথায় এতগুলো টাকা? উপলব্ধি করে রতি আর পাচজনের থেকে স্বতন্ত্র। মেয়ে মহলে কেন তাকে নিয়ে এত কৌতুহল? উশ্রী জিজ্ঞেস করে, পারমিতার বিয়ে ঠিক হয়েছে জানো? তাই? কোথায় বিয়ে হচ্ছে? বোম্বে থাকে ছেলে। রত্নাকর উদাস দৃষ্টি মেলে কি যেন ভাবে। উশ্রী ভাবে পারমিতার বিয়ে শুনে হয়তো রতির মন খারাপ। জানো বৌদি মেয়েদের আমি কেন এত শ্রদ্ধা করি? পারু বোম্বে চলে যাবে। বাবা-মাকে ছেড়ে নতুন পরিবেশ স্বামী শ্বাশুড়ি ননদ দেওর সব আলাদা আলাদা মেজাজ সবার সঙ্গে ঠিক মানিয়ে নেবে। শিক্ষার উদ্দেশ্য বইতে পড়েছি এ্যাডজাস্টমেণ্ট বাংলায় বলে সঙ্গতি সাধন। মেয়েরা এই শিক্ষা নিয়ে জন্মায়। অথচ সংসারে তারা কোনো দাম পেল না। সব চেয়ে বড়কথা সে জন্য তাদের কোন অভিযোগ বা অভিমান নেই, এটাই তাদের মহত্ব। রতির চোখের পাতা ভিজে যায়, চোখ মুছে লাজুক হেসে বলল, উমাদা জানে আমার কথায় কথায় চোখে জল এসে যায়।   খুশবন্ত ঢুকে বলল, অনেক দেরী হয়ে গেল। কান্তা। দলজিৎ এসে বললেন, কান্তা স্নানে গেছে। রান্না কতদুর? হয়ে গেছে, আমিই করেছি। দলজিৎ বললেন। ওরা স্নান করেই বেরিয়েছিল। রতি স্নানে গেল। কান্তা টেবিল গোচ্ছাছে। উমানাথ উশ্রী টেবিলে বসে দলজিতের সঙ্গে কথা বলছে। স্বামীর কথা বলতে বলতে দলজিতের চোখে জল এসে গেল। রতি বাথ্রুম থেকে বের হল। উমা জিজ্ঞেস করে, আণ্টি আপনার জামাই কেমন হল? দলজিৎ উঠে রতিকে বুকে চেপে ধরে বলল, আমার বেটা মানি আছে মানি। খুশবন্ত বিরক্ত হয়। আদর করে নাম দিয়েছে মানি। মানি আগে কি করেছে জানে না তো। চেয়ার টেনে বসে বলল, আম্মী ভুখ লেগেছে। রতিকে ছেড়ে দিতে ঘরে গিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে। মুন্নির আচরণ রতির নজর এড়ায় নি। আম্মীকে নিয়ে মুন্নির মনোভাব রোগে না দাঁড়িয়ে যায়।   মানিকে মতলব কি জানো? শিউজী আছে। দলজিৎ আপন উচ্ছ্বাসে বললেন। কান্তা চারটে প্লেট দিয়ে গেল। রতি এসে মুন্নির পাশে বসল। তরকারি মিশ্রিত ভাত দেখে উশ্রী জিজ্ঞেস করে, এটা কি? রতি বলল, আলু গোবি পোলাও। আম্মী বানিয়েছে খেয়ে দেখুন। রতি বলল। খেতে খেতে আরেকবার বঙ্কার কথা বলল, উমানাথ। খুসবন্ত বিস্ময় প্রকাশ করে। বঙ্কার এই আচরণ প্রত্যাশিত নয়। রতি বলল, অবস্থা পরিবেশ মানুষকে চালিত করে। খুশবন্ত আড়চোখে দেখল রতিকে। উমানাথ বলল, দোকান করার জন্য রতি টাকা দেবে। খুশবন্ত বলল, ও টাকা কোথায় পাবে? উমানাথ রতির দিকে তাকালো। রতি মাথা নীচু করে খেয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি পদ খুব তৃপ্তি করে খেলো ওরা। কথা হল কাল সন্ধ্যেবেলা খুশবন্ত স্টেশনে পৌছে দেবে। উমানাথ মৃদু আপত্তি করল। পরের দিন সন্ধ্যেবেলা জিপে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌছে দিল। মালপত্তর তুলে উমানাথ প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে কথা বলছে। নিজের জায়গায় বসে উশ্রী জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে রতির সঙ্গে কথা বলছে। খুশবন্ত মাঝে মাঝে আড়চোখে দেখে। ট্রেনের হুইশল বাজতে উমানাথ ট্রেনে উঠে পড়ল। খুশবন্ত পকেট থেকে একটা খাম বের করে উমার হাতে দিল। ট্রেন ছেড়ে দিল। প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে হাত নাড়ে। জায়গায় বসে উমানাথ খামটা খুলল, পঞ্চাশ হাজারের চেক তার নামে। সঙ্গে একটা চিরকুট। চিরকুট খুলে চোখের সামনে মেলে ধরল। "উমানাথ, রতি ছিল না ভাল ছিলাম কোনো চিন্তা ছিলনা। বিয়ের পর চিন্তা পয়দা হল, এই বুঝি হারিয়ে গেল? কলকাত্তা গেলে দেখা হবে। খুশবন্ত সোম কাউর।" [সমাপ্ত]
Parent