কাজল নদী Written By Tumi_je_amar - অধ্যায় ৩৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-28266-post-2145083.html#pid2145083

🕰️ Posted on July 6, 2020 by ✍️ Kolir kesto (Profile)

🏷️ Tags:
📖 1063 words / 5 min read

Parent
(#০২) এর মধ্যে সৃজা গ্রাজুয়েশন পুরো করে। মানসী খুশীতে আটখানা। ভেবে পায় না কি করবে। সেদিন বড়দাকে বলে ও বাজারে যাবে। সৃজা যা যা খেতে ভালবাসে সব কেনে। স্কুলে যায় না। সারাদিন সৃজার জন্যে রান্না করে। দুপুরে নিজের হাতে করে সৃজাকে খাইয়ে পার্লারে যায়। পার্লারে সেদিন যত গ্রাহক এসেছিল সবাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। সব গ্রাহক একই প্রশ্ন করে। গ্রাহক – কিসের জন্যে মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন ? মানসী – আমার মেয়ে বি.এ. পাস করেছে তাই গ্রাহক – আপনার তো বিয়েই হয়নি  মানসী – আমার দাদার মেয়ে, কিন্তু বৌদি মারা যাবার পর থেকে আমিই বড় করেছি। তাই ও আমারও মেয়ে। পরের রবিবার সৃজার পাস করার খুশীতে একটা ছোট পার্টি আয়োজন করা হয়। বড়দাই সব খরচ করেন। বড়দার খুব একটা ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু বাকি সবার চাপে পড়ে করতে হয়। বড়দার সব বোনের ফ্যামিলি নিমন্ত্রিত ছিল। স্বপন আর নিহারিকাও গিয়েছিল। সবাই একসাথে বসে হই হই করে গল্প শুরু করে।  এর মধ্যে শ্রেয়সী আর শ্যামলের একটা ছেলে হয়েছে। বাচ্চারা সবাই অন্য ঘরে ছিল। আর বড়দা তখনও এসে পৌঁছান নি, কোন একটা মিটিঙে গিয়েছেন। সবাই মন খুলে ইয়ারকি করছিল। মানসীর আরেক দিদির বর ছিলেন শ্রদ্ধা জামাইবাবু। খুব রসিক মানুষ। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – শ্রেয়সী তোমার বাচ্চা হলে কি খাওয়াতে ? শ্রেয়সী – কেন দুধ খেত শ্রদ্ধা জামাইবাবু – তোমার দুধ না গরুর দুধ ? শ্রেয়সী – এটা আবার কি রকম প্রশ্ন ? সব বাচ্চা যা খায় আমার ছেলেও তাই খেত। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – না তোমার কাছে তো দুধ রাখার বেশী জায়গা নেই, ছেলের পেট ভরত ? শ্যামল – হ্যাঁ হ্যাঁ দাদা ট্যাঙ্ক দেখতে ছোট হলে কি হবে ভেতরে জায়গা আছে। শ্রেয়সী – জামাইবাবুর ঘরের ট্যাঙ্ক যেন অনেক বড় ! মানসী – তোমরা সবাই এই বাচ্চা মেয়েটার সামনে কি গল্প শুরু করলে ? স্বপন – বাচ্চা মেয়ে আবার কে ? মানসী – ওই যে তোমার কোলে বসে আছে, সৃজা। স্বপন – একটা মেয়ে ১৮ বছর বয়েস হয়ে গেছে, বি. এ. পাস করে গেছে, তাও কি করে বাচ্চা থাকে ! মানসী – বাচ্চা নয় তো তোমার কোলে বসে কেন ? সৃজা – আমি আমার পিসের কোলে সারা জীবন বসব। আমি বাচ্চা বেলাতে বসেছি, এখন বসি আর বুড়ি হয়ে গেলেও বসবো। তোমার কি ? হিংসা হচ্ছে ? মানসী – আমার কেন হিংসা হবে ! সৃজা – তুমি কি ভেবেছ আমি কিছু বুঝি না ? স্বপন – আমরা সবাই মেনে নিচ্ছি তুমি বড় হয়ে গেছ। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – সেদিন দীপ্তি কি করেছে জান ? দীপ্তি – আমি আবার কি করলাম ? শ্রদ্ধা জামাইবাবু – তোমাদের বাস স্ট্যান্ডের সামনেই তো আমার অফিস। সেদিন দুপুরবেলা দেখি দীপ্তি এসে বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়ালো। তখন ওখানে শুধু আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল, আর কেউ ছিল না। ছেলেটা দীপ্তিকে বলে যে বৌদি আপনি খুব সুন্দর দেখতে। দীপ্তি বলে তোমার বাড়িতে মা বোন নেই, আমার পেছনে কেন লাগছ। ছেলেটা বলে বাড়িতে আজ মা আর বোন দুজনেই নেই। দীপ্তি বলে তবে আর এখানে সময় নষ্ট করছ কেন, তোমার বাড়িতেই চলো। দীপ্তি – জামাইবাবু মতেই ভাল হবে না বলে দিচ্ছি। সেদিন ওই ছেলেটা একটা বাড়ির ডিরেকসন জানতে চেয়েছিল।  শ্রদ্ধা জামাইবাবু – তাতে ওর সাথে যেতে কেন হবে ? দীপ্তি – একটা বাচ্চা ছেলে, মাসির বাড়ি খুঁজে পাচ্ছিল না। আর আমি যা বলছিলাম সেটাও বুঝতে পারছিল না, তাই একটু দেখিয়ে দিতে গিয়েছিলাম। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – এখন তুমি রাস্তা দেখাতে গিয়েছিলে না অন্য কিছু দেখা দেখি করতে গিয়েছিলে সেটা আমরা কি করে জানব। স্বপন – দীপ্তি ফিরে আসার পড়ে আপনার চেক করা উচিত ছিল। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – আমার তো আর সেই লাইসেন্স নেই ভাই। থাকলে কবেই চেক করে নিতাম। লেখা – আপনি চেয়ে দেখুন না, দীপ্তি কিছু মনে করবে না। দীপ্তি – তোমরা সবাই মিলে আমার পেছনে কেন লেগেছ ? স্বপন – তোমার পেছন টা সব থেকে সুন্দর দেখতে তাই। দীপ্তি – আমি আপনাদের কার সাথে কথা বলবো না। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – শুধু পেছন টা দেখিয়ো তবেই হবে। সৃজা – আমি না তোমাদের এই গল্পটা ঠিক বুঝলাম না স্বপন – আগের টা বুঝেছিলি ? সৃজা – হ্যাঁআআআ, সেতো শ্রেপির একদম সমান তাই। স্বপন – তুই এখনও পুরো বড় হসনি।  শ্রদ্ধা জামাইবাবু – না রে তুই বড় হয়ে গিয়েছিস, এবার তোর বিয়ে দিতে হবে। বিয়ে হলেই পরের গল্পটা বুঝতে পারবি।  স্বপন – এটা আপনি একদম ঠিক বলেছেন। সৃজা – আমি রাঙ্গাপির বিয়ের আগে বিয়ে করবোই না।  স্বপন – সৃজা তোমার কোন ছেলে পছন্দের আছে ? সৃজা – না পিসে সে আর পেলাম কই। আমার পছন্দের মত মানুষ ভগবান এক পিসই বানিয়েছেন, আর সেটা অনেক আগেই দখল হয়ে গেছে। শ্রদ্ধা জামাইবাবু – সে আবার কে ? সৃজা - এই যে আমার স্বপন পিসে। আমার ঠিক এইরকম একটা ছেলে চাই, তবে বিয়ে করবো।  মানসী – আমরা সবাই তোর পছন্দের ছেলে খুজে দেব সৃজা – তুমি পারবে না। মানসী – কেন পারবো না ! সৃজা – তুমি নিজের জন্যেই পেলে না, তো আমার জন্যে ! মানসী – আমি তোর জন্যে সব করতে পারি। স্বপন – সৃজা এভাবে কথা বলে না। রাঙ্গাদিদি তোমার মায়ের মতন, আর মা মেয়ের জন্যে সব পারে। মা কে দুঃখ দেবে না। সৃজা – না মানে আমি এমনি বলছিলাম। সৃজা স্বপনের কোল থেকে উঠে গিয়ে মানসীর কোলে বসে আর ওকে জড়িয়ে ধরে রাখে। এমন সময় বড়দা ফিরে আসেন। বড়দা – কি গল্প হচ্ছে ? শ্রদ্ধা জামাইবাবু – সৃজা বিয়ে দেবার কথা হচ্ছে সৃজা – বাবা আমি রাঙ্গাপির বিয়ের আগে বিয়ে করবো না বড়দা – সেসব নিয়ে তোমাকে চিন্তা করতে হবে না সৃজা – কেন চিন্তা করবো না ? বড়দা – আমিও ঠিক করেছি তোমার এবার বিয়ে দিয়ে দেব মানসী – হ্যাঁ দাদা ওর একটা ভাল ছেলে দেখে বিয়ে দিয়ে দাও। বড়দা – আমার ছেলে দেখা হয়ে গেছে। আমি আর শ্রদ্ধা গিয়ে দেখে এসেছি। মানসী – তাই ? কি আনন্দের কথা। জামাইবাবু আমাদের বলেন নি কেন ? শ্রদ্ধা জামাইবাবু – এই তো বড়দা বলে দিলেন।  এর পড়ে আড্ডা আর সেই ভাবে হয় না। একটু সিরিয়াস হয়ে যায়। বড়দা আবার বলেন যে একটা ছেলে মোটামুটি পছন্দ করেছেন। শ্যামবাজারের কাছে একটা কলেজের ভূগোলের প্রোফেসর, নাম মানব। পরের রবিবার মানবরা সৃজাকে দেখতে আসবে। সৃজা – পিসে তুমি আসবে কিন্তু। তোমার পছন্দ না হলে ওই মানব হোক বা দানব হোক, আমি বিয়ে করবো না।  বড়দা – হ্যাঁ হ্যাঁ সেতো বটেই। স্বপনকে তো আসতেই হবে। পরের রবিবার মানব আসে সৃজাকে দেখতে। মানব আর ওর বাবা মা সবারই মেয়ে পছন্দ হয়। স্বপন আসেনি সেদিন। স্বপনের মনে হয়েছিল বড়দা চান না ও থাকুক এর মধ্যে। মেয়ের কথায় আসতে বলেছিলেন। সৃজা একটু কিন্তু কিন্তু করছিল। কিন্তু বড়দার ডিসিসনের ওপর বেশী কথা বলতে পারেনি।  একটা শুভ দিন দেখে বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। বিয়েও হয়ে যায়। বিয়েতে স্বপন আর নিহারিকা গিয়েছিল। মানব ছেলেটাও বেশ ভাল ছেলে। বেশ ভদ্র আর অমায়িক ছেলে। ওদের বিয়ের মাস তিনেক পড়ে স্বপন আর নিহারিকা ওদের বাড়ি যায়। সৃজা আর মানব সুখেই সংসার করছে।
Parent