কাজলদীঘি, শ্মশান ও পীরসাহেবের থান by Mamun Jafran - অধ্যায় ১৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-11060-post-637753.html#pid637753

🕰️ Posted on July 11, 2019 by ✍️ sagor69 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 2114 words / 10 min read

Parent
পার্টঃঃ১৬ স্যারের নামে। ওর যে কিছু কাগজপত্র চাই। কি লাগবে। ভোটার আইডি, এ্যাড্রেস প্রুফ। সে তোমাকে অনাদি দিয়ে দেবে। ঠিক আছে। সেট। কলকাতা থেকে আসছে। কেনো। আমার কাছে তো আছে, কলকাতার দামেই.....। যে সেট ওর দরকার তা তোমার কাছে নেই। কি। ব্ল্যাক বেরি। আমার কাছে নেই। এ্যাকটিভেসন কি আজ হয়ে যাবে। আমি বললাম। হ্যাঁ রাতের দিকে আপনি একটা ম্যাসেজ পাবেন। ঠিক আছে। কাজ শেষ হতে হতে প্রায় পাঁচটা বেজে গেলো, চকে এসে পৌঁছলাম পৌনে ছটা নাগাদ। পরিদার দোকানে আড্ডা। পরিদার সঙ্গে দেখা হলো। সেই ছেলেটি আজ আমায় দেখে চিনে ফললো। আরো অনেকে এলো। যারা আমার লেখার ফ্যান। বেশ উপভোগ করছিলাম ব্যাপারটা। ওখানে বসে কাল সকালের সমস্ত ব্যাপার চক আউট করে নিলাম। দুটো গাড়ি তিনটে বাইক। আমি অনাদির হাতে টাকা দিলাম। তেল কেনার জন্য। সঞ্জীব তেরে খিস্তি করলো, টাকা ফেরত নিয়ে নিলাম। সঞ্জীব আমার কানের কাছে এসে বললো, খবর এলো, তোর বাড়িত টিভি লাগানো হয়ে গেছে। আমার পোলাটা এখনো ঘন্টা খানেক তোর ওখানে থাকবে। ট্রেনিং পর্বো চলছে। আমি সঞ্জীবের দিকে তাকালাম। তুই এতো প্রম্পট জানতাম না। ও হাসলো। তোর টাকাটা। তোর কাজ শেষ হোক, তারপর দিস। ঠিক আছে। সবাই এক সঙ্গে বেরোলাম। আমি অনাদির বাইকে উঠলাম। চারিদিক অন্ধকার, জ্যোতস্না রাত বিশেষ কিছু অসুবিধা হচ্ছে না। অনাদি আমাকে টেস্ট রিলিফের বাঁধের কাছে নামালো। আমি অনাদির গাড়ি থেকে নামলাম। সারাদিন তোর সঙ্গে থাকলাম, তুই একটা কথা আমাকে বললি না। কি। সকালে তুই আমার বাড়ি গেছিলি। হ্যাঁ। লজ্জা পেয়ে গেলাম। তুই কাঞ্চনকে চিনতে পারিস নি। কাঞ্চন! শালা, সামন্ত ঘরের কাঞ্চন। উনামাস্টারের কাছে পোরতো। হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পোরেছে, আমাদের থেকে কয়েক ক্লাস জুনিয়র ছিল। হ্যাঁ। তুই এককাপ চাও খাস নি। অনাদিকে জড়িয়ে ধরলাম, আমি কাকাকে কথা দিয়েছি, একদিন গিয়ে চা খেয়ে আসবো। হ্যাঁ বাবা বলেছেন। বাবা তোর আগেকার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেছিলেন। আমি মাথা নীচু করলাম। তোকে এই গ্রামের সকলে ভালবাসে। দেখছি তাই। আমি কি সেই ভালবাসার মর্যাদা রাখতে পারবো। কেন পারবি না। তুই আমাদের গর্ব। সঞ্জীব তখন মিথ্যে কথা বলে নি। আমি অনাদির চোখে চোখ রাখলাম। কাঞ্চনকে একটু যত্ন নে। মরচে পরে গেছে। তুই বলিশ গিয়ে। হাসলাম। হ্যাঁরে তুই বললে কাজ হবে। আচ্ছা কাকার ব্যাপারটা মিটুক। যাব। অনাদি চলে গেলো। সন্ধ্যে হয়ে গেছে। দূরের ঘর গুলোয় এখনও লম্ফ জলে। কারুর কারুর ঘরে লাইট জলছে। তাও মিট মিট করে। জ্যোতস্না রাতটা দারুন সুন্দর লাগছে। আগামী সপ্তাহে পূর্ণিমা। কাকা যদি পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে পায় তাহলে আমার এই পরিশ্রম সার্থক। আরো কত কথা মনে পরছে, সত্যি কলকাতা আমায় এই ভাবে কখনো আপন করে নেয় নি। নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু কলকাতাই আজ আমাকে এই আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে, আর অমিতাভদার কথা মনে পরছে, উনি না থাকলে আজ কোথায় ভেসে যেতাম। বড়মা আমার মায়ের থেকেও বড়। কাকে বাদ দিয়ে কাকে ছাড়ব। কখন যে বাড়ির গেটের কাছে পৌঁছে গেছি জানি না। দরজাটা হালকা করে ভেজানো। একটু টানলে খুলে যায়। আমি খুব সন্তর্পনে দরজাটা খুলে ভেতরে এলাম। মনে হচ্ছে ওপরে কেউ আছে। ঘরের লাইটটা জ্বলছে। আমি আস্তে আস্তে সিঁড়ি দিয়ে উঠলাম। ঘরের ভেতরে উঁকি মারতেই অবাক হলাম। নীপা আমার জিনসের পেন্ট গেঞ্জি পরে বড় আলমারির সামনে যে আয়নাটা আছে, তার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নাচ প্রেকটিশ করছে। নীপাকে দেখতে দারুন সুন্দর লাগছে, আমার গেঞ্জিটা ওর বুকে বেশ টাইট। আমি কোন শব্দ করলাম না, নীপা গুণ গুণ করে গান গাইছে। কোন একটা পপুলার হিন্দী গানের সুর। মনে হচ্ছে ছুটে গিয়ে ওকে জাপ্টে ধরে একটু চটকা চটকি করি। সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে সামলে নিলাম, অনি কেনো তুমি এসব কথা চিন্তা করছো। এটা ঠিক নয়, লোভ সংবরণ কর, নিজেকে সেই উচ্চতায় নিয়ে যাও। আমি ঠায় দাঁড়িয়ে আছি, মাঝে মাঝে নীপা হাতদুটো ওপরে তুলে শরীরে হিল্লোল তুলছে। গেঞ্জিটা কোমর থেকে সামান্য উঠে যাচ্ছে। অনাবৃত অংশে ভাঁজ পরছে। ঘরের মধ্যে এলাম। আমাকে দেখে নীপা ভীষণ লজ্জা পেয়ে গেলো। ও বুঝতে পারে নি আমি এই সময় হঠাত চলে আসতে পারি। হাত দিয়ে মুখ ঢাকছে। ও আলমারীর পাশে গিয়ে লুকোনোর চেষ্টা করলো। নীপা এই নীপা, নীচে এক মহিলার কন্ঠস্বর পেলাম। কি হয়েছে মা। অনিকে দেখেছিস। অনিদাতো সেই দুপুরে বেরিয়েছে। সেতো আমি জানি। ফিরে এসেছে ? হ্যাঁ। দিবাকর এসেছে। কি দরকার। তাহলে দেখো আবার কোন বোন বাদারে গিয়ে বসে আছে। তুই কি করছিস ওপরে। নাচ প্র্যাকটিস করছি। অনি এলে ওকে একবার ওবাড়িতে পাঠাস। আচ্ছা। নীপা খাট থেকে নেমে কোমরে হাত দিয়ে আমার দিকে কট কট করে তাকালো। আমি খিল খিল করে হাসছি। এখুনি একটা বিপদ ডেকে আনছিলে। আমি ওর দিকে তাকালাম। শোন সামনের দরজা দিয়ে নয় পেছনের দরজা দিয়ে বেরোও। তারপর বাকিটা তুমি ম্যানেজ করবে। বারান্দায় অনেক লোকের ভিড়। সবাই তোমার কীর্তি কলাপ দেখছে। আমার কীর্তি কলাপ। হ্যাঁ। কাকা বলেছে, আর টিভি চলে এলো। হাসলাম। আমি নীচে নেমে এসে খিড়কি দরজা দিয়ে বেরোলাম। চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার। স্টেশনের ওখান থেকে দু’প্যাকেট সিগারেট কিনে এনেছি। চাঁদের আলো বাঁশ ঝাড়ের ফাঁক ফোঁকর দিয়ে নীচে এসে পরেছে। জানাকি গুলোর আলো নিভছে জ্বলছে। একটা স্বপ্নিল পরিবেশ। পানা পুকুরের ধারে একটা বাঁশঝাড়ের তলায় শুকনো পাতার ওপর বসলাম। একটা সিগারেট ধরালাম। ঝিঁ ঝিঁ পোকার তারস্বর ডাক। আকাশটা পুকুরর জলে হুমড়ি খেয়ে পরেছে। পুকুরের স্থির জলের দিকে তাকিয়ে আমি তারা গুনলাম। কলকাতার আকাশে এত তারা দেখা যায় না। হঠাত একটা স্বর স্বর আওয়াজে চমকে তাকালাম। একটা সাপ বাঁশ গাছ থেকে নেমে পাশ দিয়ে চলে গেলো। একটু ভয় পেয়ে গেলাম। যতই আমি গ্রামের ছেলে হই আজ দশ বছর কলকাতায় আছি। না থাকাটা ঠিক নয়। পায়ে পায়ে পেছনের পথ ধরে বারান্দায় এলাম। ওখানে তখন তারস্বরে টিভি চলছে। একটি ছেলে টিভির সামনে বসে আছে। বাকি সবাই টিভির দিকে মুখ করে। ওখানে তখন হুলুস্থূলুস কান্ড একদিকে টিভি, আর একদিকে দিবাকরকে সবাই গাল মন্দ করছে। এমন কি নীপাও ছেরে কথা বলছে না। দিবাকার বার বার বোঝাবার চেষ্টা করছে। ও অনাদির সঙ্গে এসেছে। তবু কে বোঝে কার কথা। অনাদিরও শ্রাদ্ধ শান্তির ব্যবস্থা চলছে। আমাকে দেখে সকলে চুপ। নীপা গলা চড়িয়ে বললো কোথায় যাওয়া হয় শুনি। বাড়িতে লোকজন বলেতো কিছু আছে। আমি আস্তে আস্তে বেঞ্চের ওপর এসে বসলাম। দেখছিসতো আমার অবস্থা। কি হয়েছে। তুই ফিরিস নি। কাকা কোথায়। তোকে খুঁজতে খামারে গিয়ে বসে আছে। আমি উঠে গেলাম, খামারে গিয়ে কাকাকে নিয়ে এলাম। কোথায় গেছিলি ? হারুজানার কালাতে। ওখানে কি করতে গেছিলি। দেখতে। এই রাতর বেলা! জায়গাটা ভাল নয়। ঠিক আছে আর যাবো না। কাকা বারান্দায় এসে নিজের চেয়ারে বসলেন। দেখেছো আমার ভাইপোর হাল, কোথায় দীঘাআড়ি কোথায় হারু জানার কালা, এই সব করে বেরাচ্ছে সকাল থেকে। আমি কাকার কথায় কান দিলাম না। কাকীমার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটু চা খাওয়াবে। কেন কাকীমা বুঝি চা দেন, এইবার থেকে কাকীমাই দেবেন। নীপা বললো। আমি চুপচাপ থাকলাম। দিবাকরকে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছেরে। একটু খামারে চল। আমি ওর সঙ্গে পায়ে পায়ে এলাম। তোকে একটা কথা বলি, মনে কিছু করিস না। কি হয়েছে বলবিতো। কাল আমি যেতে পারবো না। ঠিক আছে, তাতে কি আছে, ওরাতো আছে। আচ্ছা। দিবাকর চলে গেলো। আজকের আসরটা তাড়াতাড়ি ভেঙে দিলাম। সঞ্জীবের ছেলেটি সব গুছিয়ে তুলে রাখলো। বললাম কাল আসিস একটু সন্ধ্যে বেলায়, লাগিয়ে দিস। কাকা বললো, না ঘরেরে ভেতর জায়গা করেছে তোর কাকীমা এখুনি লাগিয়ে দিক। আমি ওকে ইশারায় তাই করতে বললাম, ও সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে গেলো। রাতে খাওয়ার সময় কাকাকে সব বললাম, কাকা বললেন দু’দিন পরে করলে হোতো না। আমি বললাম না। আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি। কাকীমা বললেন হ্যাঁরে অনি তুই সবার জন্য অতো জামাকাপড় কিনেছিস কেনো। আমি কাকীমার দিকে তাকালাম। পছন্দ হয় নি। হ্যাঁ। তাহলে। অতো দাম দিয়ে কিনতে গেলি কেন। জীবনে এই প্রথম তোমাদের কিছু দিলাম। দামের কথা জানি না। নীপা আমার দিকে তাকালো। কালকে একটা পরে যেও। কেনো। আমার ভালো লাগবে। ঠিক আছে। নীপা বলেদেবে কোনটা পরে যাবে। কাকীমা কোন কথা বললো না। সবাই চুপচাপ। কাকীমা সকালের সেই চিংড়িমাছের টক একটু পাওয়া যাবে। কাকীমা আমার দিকে তাকালেন, নীপার জালায় কিছু রাখার জো আছে। নীপা গম্ভীর হয়ে গেলো। আমি হাসলাম। তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠে পরলাম। ওঠার আগে বললাম, কালকে অনেক সকালে উঠতে হবে ওখানে সাতটার মধ্যে পোঁছনোর কথা। কাকা বললেন, বাড়িতে কে থাকবে ? তোমাকে ও নিয়ে ব্যস্তহতে হবে না। আমি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। বেশ। তাই হবে। আমি মুখ ধুয়ে চলে এলাম। নীপা প্রায় একঘন্টা পরে এলো। আজ ওর পরনে সালোয়ার কামিজ। যেটা পরে খেতে বসেছিল সেটাই পরা রয়েছে। একটু অবাক হলাম। আমি আজ নীপার কথা মতো খাটের এক কোনে রাখা একটা পাটভাঙা ধুতি আর গেঞ্জি পরেছি। জানিনা এটা কার। তবে কাকার নয় এটা বুঝলাম। আমি পাশ ফিরে শুয়ে পরলাম। নীপা কোন কথা বললো না। বুঝলাম নিশব্দে ও কিছু কাজ করছে। বাইরে বেরিয়া গেলো। নীচের দরজায় ছিটকিনি দেওয়ার শব্দ পেলাম। সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসারও শব্দ পেলাম। বাইরের বারান্দায় বিছনা করারা শব্দ পেলাম। আমি শুয়ে আছি। কি বাবু ঘুমিয়ে পরলেন নাকি। আমি কোন কথা বললাম না। মাথাটা আজও যন্ত্রনা করছে। না নীপাকে বলা যাবে না। আমিও একটা মানুষ। তনুর সঙ্গে একবার ভুল করে ফেলেছি। আর নয়। কিন্তু কেন বার বার আমার সঙ্গেই এরকম ঘটনা ঘটবে। আমিতো চাই না। জীবনের শুরু সৌমি পূনিকে দিয়ে। তাদেরও আমি চাই নি। দূর যত সব বাজে চিন্তা। অনি তুমি ঘুমিয়ে পরো। সারাদিন বেশ ধকল গেছে। নীপার কোনো সাড়াশব্দ নেই। লাইটটা নিভে গেলো। ঘরটা আধো অন্ধকার। কারেন্ট চলে গেলো নাকি। বুঝতে পারলাম না। সাত পাঁচ ভবতে ভাবতে পাশ ফিরলাম। ডিমলাইটটা মিটি মিটি জলছে। নীপা মিটসেফের কাছে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে। একটা নাইটি পরেছে, অপূর্ব মানিয়েছে। মিত্রাকে এই ধরনের একটা নাইটি পরতে দেখেছি। কিন্তু মিত্রা নীপা দুজনে এক নয়। নীপাকে এই মুহূর্তে রাত পরির মতো লাগছে। এই আবঝা অন্ধকারেও বেশ পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি নীপার কপালে চাঁদের মতো বিন্দির টিপ। গাঢ় মেরুণ কালারের। ঠোঁটে লিপস্টিকের প্রলেপ। তাও আবার হাইলাইট করা। চোখের পাতায় রং। চোখগুলো স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ বর লাগছে। নীপা সাজেনি তবু যেন সেজেছে। পরনের নাইটিটা ওকে এই মুহূর্তে স্বপ্নিল করে তুলেছে। এলো চুলের রাশি পিঠময় ছড়িয়ে পরেছে। দুটো ফিতের ওপর নাইটিটা ওর কাঁধ থেকে ঝুলে পরেছে। বুকটা প্রায় অনাবৃত। আমার চোখের পলক পরছে না। কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না। নীপা এই কানা রাতে সাজতে গেলো কেনো। তাও আমার ঘরে দাঁড়িয়ে। তাহলে কি আজকে ও জোড় করে! মেয়েদের মন বোঝা সত্যি মুস্কিল। লাইটটা হঠাত জলে উঠলো। বুঝলাম সত্যি কারেন্ট গেছিলো। একটু আগে ডিম লাইটের আধা অন্ধকারে নীপার রূপ দেখেছি, এখন পূর্ণ আলোয়, নীপার রূপ যেন ঠিকরে বেরোচ্ছে। কি কিছু বলছো না যে। চুপ করে রইলাম। আমার চোখের ভাষা নীপা বোঝার চেষ্টা করছে। ভাবছো নীপাটা কি পাগল। এই কানা রাতে....ধ্যুস। তোমরা নাকি লেখক, মানুষের মন নিয়ে কারবার করো। মনে পরে গেলো আমার এক সিনিয়ার লেখকের কথা, খিস্তি দিয়ে আমাকে বলেছিলেন, কটা মেয়ের সঙ্গে রাত কাটিয়েছিস। কটা মেয়ের সঙ্গে সঙ্গম করেছিস। নিত্য নতুন মেয়ের সঙ্গে সঙ্গ কর। তাদের সঙ্গে মেশ। ওদের মনের গভীরে ডুব দে। পারলে সঙ্গম কর। মেয়েরা যতক্ষোণ তোর উরুর তলায় ততক্ষণ তোর। যেই তোর উরুর থেকে উঠবে তোর নয়। ওরে ওরা মায়াবিনী সমুদ্রের মতো তল খুঁজে পাবি না। তখন দেখবি লেখা আপনা থেকেই তোর হাত থেকে বেরোচ্ছে। তুই লিখছিস না। লেখা নিজে থেকেই লিখছে। না নীপা আমি লেখক নই, সাংবাদিক। ওই হলো। লিখতে গেলেও ফিলিংস লাগে। অস্বীকার করছি না। এই নাইটিটা আজ তোমার পয়সায় কিনে এনেছি। ওর দিকে তাকালাম। অনেক দিনের সখ ছিল। পছন্দ। আস্তে আস্তে ঘার দোলালাম। হঠাত মিত্রার মাথায় এরকম ভূত চাপল কেনো ? তাহলেকি কালকের ব্যাপারটা ও ঠিক মেনে নিতে পারে নি, আমার সামনে প্রলভনের হাতছানি ? আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। ও আস্তে আস্তে মিটসেফের কাছে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ালো। মিট সেফে হেলান দিয়ে কোমর ভেঙে দাঁড়ালো। আমার দিকে তাকালো। নীপা চোখ দিয়ে হাসছে। অনিদা আজ আমার জন্ম দিন। আজ আমি সাবালক হলাম। এতদিন আমার কেউ জন্মদিন পালন করে নি। বলতে পারো সে সুযোগ বা সামর্থ আমাদের ছিল না। কাল তোমার কথা শোনার পর লোভ সামলাতে পারলাম না। আমি নিজে হাতে এগুলো কিনে এনেছি। মা জানে না। নীপা মাথা নীচুকরল। ধরা গলায় বললো, অনিদা তুমি রাগ করনিতো। নীপার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পরছে। আমি শুধু বিস্মিত নই, কয়েক সেকেন্ড স্থানুর মতো বসে রইলাম। দাঁড়াও বলে আমি মিটসেফের কাছে এগিয়ে গেলাম। পেন্টেরপকেট থেকে সিম কার্ডটা বার করলাম। আমার মোবাইলটা খুলে ফেললাম। নতুন সিম কার্ডটা ভরে অন করতেই সুন্দর একটা গান বেজে উঠলো। ম্যাসেজ ঢুকলো তার মানে নীপার কার্ডটা এ্যাকটিভেট হয়ে গেছে। নীপা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার কীর্তিকলাপ দেখল। আমি ধীর পায়ে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম। এই নাও আমার তরফ থেকে তোমার ক্ষুদ্র উপহার। হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ। নীপা ফুঁপিয়ে ফুঁফিয়ে কাঁদছে। আমি ওর মাথায় হাত রাখলাম। কাঁদে না। আজ আনন্দের দিন। আমি তোমার বার্থডে সেলিব্রেট করছি। নাও ধরো। যাঃ। সত্যি। তোমার মোবাইল আমি নেবো কেনো। এটা আমার নয়, আজ থেকে তোমার। সত্যি বলছো। হ্যাঁ। ওকে সমস্ত ঘটনাটা বললাম, ওর চোখের পাতা আরো ভারি হয়ে এলো। তুমি আমাদের জন্য এতো ভাবো। এতদিন ভাবিনি। এখন ভাবছি। নীপা আমাকে জড়িয়ে ধরলো, জানো অনিদা তুমি আমাদের কাছে দেবদূত। কেনো। মশাই ভাবতে পারে নি তিনি চোখে আবার দেখতে পাবেন। আমি অনেক ভুল করেছি নীপা বিশ্বাস করো। এই ভুলের কোনো ক্ষমা নেই। আমাকে আমার এই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। নীপা আমার বুকে মাথা রেখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। অনেকক্ষণ পর কান্না থামিয়ে, কান্নাহাসি মাখা সুরে বললো। আজ তুমি সকালে কি করেছো। কখন। সকাল বেলা। না কিছু না। দুপুরে এক দঙ্গল বাচ্চা এসেছিলো তোমায় খুঁজতে। ওরা সব হাঁড়িপাড়া, কামারপাড়া, ভাটপাড়ার ছেলে। কেনো। তোমায় আঁখ খাওয়াতে এসেছিলো। হেসেফেললাম, সকালের কথাটা মনে পরে গেলো। বুড়ো বয়সে যদি হাত-পা ভাঙতে কে দেখতো। তুমি। নীপা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি হাসলাম। আবার ম্যাসেজ এলো দেখো। নীপা মোবাইলটা আমার সামনে তুলে ধরলো। ভালোইতো তুমি এখন মোবাইল মেন। আমাকে একটু শিখিয়ে দেবে না। দেবো। টিভির ব্যাপারটা। কি! টিভিটা নেকু। ওইতো ঠিক আছে। এক ঢিলে সব পাখি মারলাম। জানো অনিদা, এই সঞ্জীবদাকে মশাই আজ থেকে একবছর আগে টিভির কথা বলেছিলো। মশাই বলেছিলো আস্তে আস্তে পয়সা দিয়ে দেবে। তারপর থেকে সঞ্জীবদা এই বাড়ির চৌকাঠ পর্যন্ত মারায় নি। জানি।
Parent