কাজলদীঘি, শ্মশান ও পীরসাহেবের থান by Mamun Jafran - অধ্যায় ২১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-11060-post-681928.html#pid681928

🕰️ Posted on July 23, 2019 by ✍️ sagor69 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 2102 words / 10 min read

Parent
পার্টঃঃ২০ আগামী সপ্তাহে কমপ্লিট করে ফেলবো ভাবছি। শেষকর আমি তোর সঙ্গে বসবো। কতগুলো স্ট্রাটিজি নিয়ে। ঠিক আছে। তুই কবে যাচ্ছিস। তোর এখান থেকে বেরিয়ে বড়মার সঙ্গে একবার দেখা করবো। তারপর চলে যাব। ফিরবি কবে। দেখি। তুই অফিসের সম্বন্ধে সব জানিস তো। হ্যাঁ। মিত্রা কিছু কিছু বলেছে। তুই ঠিক ডিসিসন নিচ্ছিস। মিত্রা একা পরে গেছে। বুঝতে পেরেছি। তুই ওদিকটা সামলা আমি এদিকটা সামলে দেবো। এখন যারা আছে সব বিষ মাল। জানি। খালি ধান্দা বাজি। তবে ঘুঘুর বাসা পরিষ্কার করতে তোকে হিমসিম খেতে হবে। জানি। তবে ওটা সামলাতে আমার বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। তোর সময় নষ্ট করব না। তুই যা। কলকাতায় ফিরলে আমায় একবার নক করিস। ঠিক আছে। হিমাংশুর ওখান থেকে বেরিয়ে এসে, বড়মার কাছে এলাম। মিত্রা আসতে চাইছিল না। আমিই ওকে জোর করে নিয়ে এলাম। বড়মা প্রথমে মিত্রাকে দেখে একটু অবাক হয়েছিলো। ছোটমা ক্যাজুয়েল। সবাই একসঙ্গে খেতে বসলাম। তারপর আমরা চারজনে মিলে ঠিক করলাম পরবর্তী স্ট্রাটেজি। অমিতাভদার পাকা মাথা কয়েকটা ভাল ডিসিসন নিলো। আমি মেনে নিলাম। বুঝলাম মেন অপারেটর হবে সনাতন ঘরুই। দাদা সেরকমই ছক করলো। মিত্রা আমি মেনে নিলাম। আমি একটা প্রস্তাব রাখলাম। আমি যেমন আছি তেমনই থাকবো। আমার জায়গার পরিবর্তন হবে না। মিত্রা প্রথমে মানতে চাইছিল না। ওকে ব্যাপারটা বোঝালাম। ও বুঝতে পারল। ফাইন্যাল ডিসিসন হল। আগামী সপ্তাহে শুক্রবার মিটিং কল হবে। সেখানে মিঃ সনাতনের হাত দিয়েই সকলকে যার যার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সাইনিং অথরিটি এই মুহূর্তে মিত্রার হাতেই থাকবে। মিত্রাই সোল পাওয়ারের অধিকারী। মিত্রা মেনে নিলো। এই কদিন মিত্রা দাদার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলবে। প্রয়োজন পরলে আমায় ডাকবে। আমি চলে আসবো। আমার দেখা মিলবে সেই শুক্রবার। মল্লিকদা ছোটমা বড়মা এতোক্ষণ নিরব দর্শক ছিল। কথা শেষ হতে ছোটমা বললেন, হ্যাঁরে অনি, তোর মা-বাবার কোন ছবি তোর কাছে নেই। ছোটমা এ ভাবে কোনদিন কথা বলেন নি আমি স্থির দৃষ্টি নিয়ে ছোটমার দিকে তাকালাম। আছে। তোর মনে পরে ওনাদের। না। আবঝা আবঝা। আমাকে ছবিটা দিবি। কেনো। আমি বাঁধিয়ে ঠাকুর ঘরে রাখবো। হাসলাম। তোর মতো ছেলের যিনি জন্ম দেন তিনি মহাপ্রাণ। খাওয়ার টেবিলে সবাই নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। ঠিক আছে তোমায় দেবো। তুই ওই ফ্ল্যাটটা ছেড়ে দে। কেনো। এখানে চলে আয়। এতো বড় বাড়ি এতোগুলো ঘর। আবার তাকালাম ছোটমার দিকে। তোকে নিয়ে এই কদিন আমি আর দিদি খালি ভেবেছি। আমিও কি মহাপ্রাণ। এমন ভাবে কথাটা বললাম, সবাই হেসে ফললো। মল্লিকদা চেঁচিয়ে উঠলেন, বলছিলাম না, অনির বিকল্প অনি নিজেই। ওর মাথার মধ্যে আরও দশটা মাথা আছে। আবার শুরু করলে। বলবো ছোটমাকে। আচ্ছা তোর সঙ্গে কি আমার কোন প্রাইভেট টক থাকতে পারে না। তাহলে এখন শুধু চিংড়িমাছের কালিয়া খেয়ে যেতে হবে। মল্লিকদা হো হো করে হেসে বলে উঠলেন ঠিক ঠিক, কিহে দাও। ছোটমা মৃদু হেসে বললেন, তোমার ভাগেরটা শেষ হয়ে গেছে, খালি আনি আর মিত্রার ভাগেরটা আছে। বড়মা ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললেন, যা না ওবলার জন্য রাখতে হবে না। ছোটমা রান্নাঘরের দিকে গেলেন, বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, কবে আসবি। বৃহস্পতিবার রাতে। এতদিন কি করবি। অনেক কাজ আছে। একেবারে শেষ করে আসবো। বড়মা চুপ করে রইলেন। আমি উঠে গেলাম বড়মার কাছে, বড়মা মিত্রা পাশাপাশি বসে আছে। আমি বড়মার গলা জড়িয়ে ধরে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম, কেনো মিত্রাকেতো রেখে যাচ্ছি। মিত্রা আমার কথা শুনতে পেয়েছে। আর কেউ শুনতে পায় নি। বড়মা আমার দিকে তাকালেন। চোখ দুটো জলে ভরে উঠেছে। ছোটমার আনা চিংড়িমাছ সকলে ভাগ করে খেলাম। খাওয়া শেষ হতে বড়মার ঘরে গিয়ে বললাম। টাকা দাও। বড়মা আমার দিকে তাকালেন। এই প্রথম বড়মার কাছে টাকা চাইলাম। এতদিন বড়মা আমাকে দিয়েছেন। কখনো নিয়েছি কখনো নিইনি। বলেছি আমার কাছে আছে। লাগবে না। বড়মা আমাকে বুকে টেনে নিলেন। আমার শান্তির নীড়। জীবনে প্রথম বড়মার কাছে মুখ ফুটে টাকার কথা বললাম। বড়মা আলমারি খুলে টাকা দিলেন। সেদিন নিয়ে গেছিলাম। তুই রাগ করবি বলে তোকে দিতে সাহস পাই নি। তাই নিয়ে তোর দাদা বাড়িতে এসে আমার ওপর কি হম্বিতম্বি। ছোটও নিয়ে গেছিলো। আমি হাসলাম। কখন যে ছোটমা পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল জানি না। আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। কি বাবুসাহেব মচকেছেন না ভেঙেছেন। ছোটমার কাছে এগিয়ে এলাম, দুটো কাঁধে হাত রাখলাম, কোনটা হলে তোমার ভালো লাগবে। দুটোই। ঠিক আছে। এবার থেকে তাই হবে। ছোটমার চোখ দুটো টল টল করছে। তোমরা সবাই এরকম করলে আমার পক্ষে লড়াই করা মুস্কিল হয়ে পরবে। অনি আমরা সবাই এতোদিন মাঝ সমুদ্রে ভাসছিলাম। এখন একটা নৌকায় উঠতে পেরেছি। সেটাও যদি ফুটো হয়ে যায়। সেই ভয়ে আমরা সব....। নীচু হয়ে ছোটমার বুকে মাথা রাখলাম, অনি সেই অন্যায় কোনদিন করবে না। জানি বলেই হারাবার ভয়টা বেশি। কিচ্ছু হারাবে না। ওই মেয়েটার চোখ দুটো দেখেছিস। দেখেছি। সব তোমায় বলবো সময় আসুক। তুই কি বলবি আমি জানি। ছোটমার চোখে চোখ রাখলাম। সবাই আশ্রয় চাইবে। তুই আশ্রয় দিতে পারবি না। থাকর জায়গা দিবি এইতো। হয়তোবা তোমার কথা ঠিক, হয়তোবা নয়। ঠিক আছে, আমায় এখন যেতে হবে। নাহলে অনেক রাত হবে পৌঁছতে। ছোটমা বড়মাকে প্রণাম করে বাইরে এলাম, মল্লিকদা অমিতাভদা মিত্রা বসে কথা বলছে। আমি প্রণাম করলাম। মিত্রাকে বললাম, আমাকে একটু স্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দে। ও উঠে দাঁড়ালো। বড়মা এগিয়ে গেল মিত্রার দিকে, চিবুকে হাত দিয়ে বলল একদিন তুমি একবার করে এসো না। ভাল লাগবে। মিত্রা আমার দিকে তাকালো। আমার চোখের ইশারা ও বুঝতে পেরেছে। ও নীচু হয়ে বড়মা ছোটমাকে প্রণাম করলো। অমিতাভদা মল্লিকদাকে প্রণাম করলো। ওরা আজ কোন বাধা দিলো না। অমিতাভদার বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলাম। ইসমাইল গাড়ি চালাচ্ছে। তোর কটায় ট্রেন। আড়াইটের পর এক ঘন্টা অন্তর। আমায় ঘন্টাখানেক সময় দে। মিত্রার দিকে তাকালাম, ওর চোখ কিছু বলতে চায়। আচ্ছা। ইসমাইল, গড়িয়াহাটমে উস দুকানসে চলিয়ে। জি ম্যাডাম। কিছুক্ষণের মধ্যে গড়িয়াহাটের একটা জামাকাপড়ের দোকানের সামনে এসে দাঁড়ালাম। মিত্রা আমাকে নিয়ে নামলো। আমি ওর পেছন পেছন দোকানের মধ্যে ঢুকলাম। ও নীপার জন্য একটা লং-স্কার্ট আর খুব সুন্দর একটা গেঞ্জি কিনলো। আমার দিকে তাকিয়ে বললো, কিরে নীপা পরবেতো ? তুই যখন দিচ্ছিস নিশ্চই পরবে। মিত্রা ওর জন্য একটা সাদা হাতের কাজ করা সালোয়ার কিনলো। সেদিন ও যেরকম একটা পরেছিলো। কাকার জন্য ধুতি পাঞ্জাবি। আর কাকীমা আর সুরমাসির জন্য কাপড় কিনলো। আমি কোন বাধা দিলাম না। আমায় বললো তোর জন্য একটা জিনস আর গেঞ্জি কিনবো তোর কোন আপত্তি আছে ? কেন ? ঠিক আছে থাক। অমনি মুখটা ভারি হয়ে গেলো। আমি নিয়ে যাব না, ফিরে এসে তোর বাড়িতে উঠবো। শুক্রবার ওই পেন্ট গেঞ্জি পরব। ও আমার দিকে গভীর ভাবে তাকালো, মিটি মিটি হাসলো। হাসছিস যে। ঠিক আছে। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তোর কোন পছন্দ আছে। না। তুই যা কিনে দিবি তাই পরবো। ও নিজের মনের মতো করে একটা জিনসের পেন্ট গেঞ্জি কিনলো। দেখলাম বিল প্রায় বিশ হাজার টাকা হয়ে গেছে। আমি কিছু বললাম না। আমাকে বাড়ির জন্য কেনা জামা কাপড়গুলো ধরিয়ে দিলো। এইগুলো নিয়ে যা। আমি বললাম নিয়ে আমি যাচ্ছি, তবে তুই একটা কাজ কর, কাকার নাম করে একটা চিঠি লিখে দে। ও কাউন্টার থেকে একটা প্যাডের কাগজ নিয়ে খস খস করে কাকার নাম করে একটা চিঠি লিখে দিলো। দেখতে দেখতে তিনটে বেজে গেলো। দুজনে মিলে কফি সপে বসে এককাপ করে কফি খেলাম। এখন আমি কি করি বলতো। কেনো! ক্লাবে যা। দিন সাতেক হলো ক্লাবের দরজা মারাই নি। কেনো! ভালো লাগেনা। বাড়ি যা। পরাশুনো কর। কি পরবো। বই পর। এখন আর ভাল লাগে না। সব কিছুতেই ভাল লাগে না ভাল লাগে না বললে চলে, ভাল লাগাতে হবে। তুই মাস্টারি করিস না। আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। তোকে ছাড়া আমি একমুহূর্ত চলতে পারছি না। ঠিক আছে, আমায় দিন কয়েক সময় দে। ওই দিকটাওতো দেখতে হবে। বুঝি। কিন্তু মন মানে না। মিত্রা আমার হাতটা চেপে ধরলো। জানিস বুবুন, তুই আমাকে এই কয়দিনে একটা নতুন জীবন দিয়েছিস। আমি আর অতীতে ফিরে যেতে চাই না। গতো সাত বছর জীবনটা যন্ত্রের মতো চালিয়েছি। তুই এই কদিনে আমার জীবনটাকে একেবারে ওলোট পালট করে দিয়েছিস। সেতো বুঝলাম। কিন্তু তোর ওপর অনেক দায়িত্ব। সেটা বুঝতে পারছিস তো। পারছি। তুই অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিস। সেটাতো তোর স্বার্থে। জানি। ঠিক আছে। তুই যদি মনে করিস অফিসে যা। মনে রাখবি তোর ওপর একটা প্রেসার তৈরি করা হবে। তুই ওটা রিকভার করতে পারবি তো। পারবো। ঠিক আছে। কাল থেকে তুই অফিসে যা। কিছু হলে আমাকে একবার জানাবি। তুই মন থেকে বলছিস। মন থেকে বলছি। কবে আসবি। তিনটে দিন অন্ততঃ আমায় সময় দে। তারমানে তুই মঙ্গলবার আসবি। হ্যাঁ। স্টেশনে এসে মিত্রাকে ছেড়ে দিলাম। মিত্রার চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো। আমি একবার তাকিয়ে আর ওর দিকে ঘুরে তাকালাম না। টিকিট কাউন্টারে এসে টিকিট কাটলাম। ট্রেন মিনিট পনেরো পর। তিন প্যাকেট সিগারেট নিলাম। অনাদিকে একটা ফোন করে বলে দিলাম, আমি ট্রেনে উঠলাম। তোরা স্টেশনে কাউকে পাঠা। অনাদি ওপ্রান্ত থেকে বললো, ঠিক আছে। ট্রেনে যেতে যেতে মিত্রা তিনবার, নীপা একবার, অনাদি দুবার, চিকনা বাসু একবার করে ফোন করেছে। লোকাল ট্রেনে খুব একটা যাওয়া অভ্যাস নেই। যাইও না তবু নিজেকে মানিয়ে নিলাম। দেখতে দেখতে দুটো ঘন্টা কেটে গেলো। স্টেশনে নামতেই দেখলাম, চিকনা আর সঞ্জীব দাঁড়িয়ে আছে। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে পরেছে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে। স্টেশনে নামতেই চিকনা আমার কাছ থেকে ব্যাগটা নিয়ে নিলো। সঞ্জীবকে জিজ্ঞাসা করলাম, কিরে সব ঠিক আছে। চিকনা খেঁকিয়ে উঠলো, ও শালা কি জানে, সকাল থেকে ওর দেখা পাওয়া গেছে। অনাদি ফোন করতে বাবু এলেন। সঞ্জীব কিছু বলতে যাচ্ছিলো, আমি বললাম, ঠিক আছে ঠিক আছে আর কেউ আসে নি। বাসু এসেছে। কোথায়। বাইরে আছে। স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে এলাম। আসার সময় চিকনা টিটিকে বললো, কি বলেছিলাম না এই হচ্ছে অনি। ভদ্রলোক বুকের কাছে হাত তুলে নমস্কার করলেন। আমিও প্রীতি নমস্কার করলাম। চা খেতে খেতে বড়মাকে একবার ফোন করলাম। জানালাম আমি পৌঁছে গেছি। মিত্রাকে ফোন করলাম, বললো বাড়িতে আছে, গলাটা ভীষণ ভারী ভারী। কি করছিস। একটা সিনেমা দেখছি। কি সিনেমা। শুনবি। মিত্রা মোবাইলটা টিভির কাছে ধরলো, এক দুজেকে লিয়ে। আমি মিত্রা দুজনে জীবনে প্রথম রূপবাণী সিনেমা হলে কলেজ কাট মেরে সিনেমাটা দেখেছিলাম, মিত্রাই দেখিয়েছিলো। হাসলাম। কিরে শুনলি। হ্যাঁ। তোর কিছু মনে পরে। প্রথম কলেজ কাট মারার কথা মনে পরছে। বাড়িতে এসে ভেবেছিলাম ক্লাবে যাব, টিভিটা খুলতেই দেখলাম সিনেমাটা শুরু হয়েছে বসে গেলাম। ভাল করেছিস। যে টাস্কগুলো দিয়ে এসেছি মন দিয়ে করিস। ফিরে গিয়ে ধরবো। মিত্রা হো হো করে হেসে ফললো। মেঘ কাটলো। আমি বাসুর পেছনে বসলাম, ঘন্টা খানেক লাগলো বাড়িতে পৌঁছতে। আস্তে আস্তে সবার মুখেই মিত্রার প্রশংসা ঝরে পরছে। অতো পয়সা যার তার কোন দেমাক নেই। ওরা জানতো না এই নার্সিংহোমটা মিত্রার হ্যাজবেন্ডের। দূর ছাই আমিও কি জানতাম। জানলাম সেই দিন। চিকনাতো বলেই ফেললো, গুরু আমার জন্য তোমার ওখানে একটা কাজ দেখো না। যদি টেবিল মোছার চাকরিও থাকে তাতেও কোন আপত্তি নেই। আমি খালি বললাম, আফটার অল তুই আমার বন্ধু, আজ নয় কাল কেউ না কেউ জানতে পারবে। তখন। ও প্রায় আমার হাতে পায়ে ধরে, আমি বললাম একটু সবুর কর, সব ঠিক হয়ে যাবে। চিকনা ধাতস্থ হলো। বাড়ি পৌঁছলাম সন্ধ্যা মাথায় নিয়ে। রাস্তায় কোথাও দাঁড়াই নি। খামারে গাড়ি রেখে আমরা চারজন ঢুকলাম। বাইরের বারান্দায় টিভি চলছে। অনেক লোক বসে দেখছে। কাকাও আছে। আমি আসাতে কাকা চেয়ার ছেড়ে উঠে এলেন। আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, তুই যা বলেছিস সব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছি। নীপা গেটের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। চেঁচিয়ে উঠলো, বলবো অনিদাকে সকালের কথা। না না বলিস না। ওইটুকুতো খালি অন্যায় করেছি। নীপার দিকে এতোক্ষণ খেয়াল করিনি। কয়েকদিন আগে দেখা নীপার সঙ্গে আজকের দেখা নীপার অনেক পার্থক্য। বিশেষতঃ নিজেকে সাজিয়ে তোলার ক্ষেত্রে। শহুরে মেয়েরা বিকেল বেলা যেমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে, পরিষ্কার জামা কাপর পরে নিজেকে সাজিয়ে তোলে সেইরকম। আমার চোখের চাহুনি নীপা ধরে ফেলেছে। নীপা মুখ টিপে হাসলো। কি করেছো। একটু জল নিয়ে মাথায় দিয়েছি। খুব অন্যায় করেছো। ডাক্তার তোমায় বারন করেছে। চোখে যায়নিতো। না। ওষুধ গুলো ঠিক ঠিক দিয়েছো। ওইতো নীপাকে জিজ্ঞাসা কর। ওঃ যেন ডাক্তারনী। কাকা এমন ভাবে কথা বললো সবাই হেসে ফেললো। চিকনার দিকে তাকিয়ে বললাম, ওটা নীপার হাতে দে। চিকনা নীপার হাতে ব্যাগটা দিল। এটা আবার কি। ভেতরে গিয়ে খুলে দেখো। কাকীমা সুরমাসির সঙ্গে কথা বলে আমি কাকাকে বললাম ও বাড়িতে যাচ্ছি। কাকা বললো আচ্ছা। নীপাকে বললাম, একটু বেশি করে চা করে নিয়ে এসো। নীপা মুখ বেঁকিয়ে ভেতরে চলে গেলো। অনাদি কই। আমি বললাম। পচা বললো, একটু বাজারের দিকে গেছে। এখুনি এসে পরবে। ওদের দিকে তাকিয়ে বললাম, আয়। ওরা আমার পেছন পেছন আমার দোতলার ঘরে এলো। ঘরটা বেশ চকচকে। আগের দিনের থেকে মনে হয় কিছু একটা পরিবর্তন হয়েছে। খাটটা ঠিকই আছে। খালি আলমাড়িটা জায়গা বদল করেছে। তাতে ঘরের জায়গাটা অনেক বেরেগেছে। একটা বসার সোফা ঢুকেছে দেখছি। মনেমনে হাসলাম। পচা পাঁচু ভানু আর যারা ছিল তাদের সবারই এক কথা, মিত্রার মতো মেয়ে হয় না। আমি ওদের কথায় মুচকি হাসলাম, ভানু একধাপ এগিয়ে বললো, হ্যাঁরে অনি ও কি তোর বউ। বউ হলে ভালো হতো না। পাঁচু বললো। ভানু হেসে ফেললো। চিকনা চেঁচিয়ে উঠলো, শালা তুমি কি কালীচরণের ঝি পেয়েছো। আবার কালীচরণের ঝির কথা আসছে কেনো। আমি বললাম। আরে এখনও সময় পেলে এককাট লাগিয়ে চলে আসে। আমি ভানুর দিকে তাকালাম। ভানু হাসছে। নারে অনি, ওরা মিছে কথা বলছে। চিকনা আরো গলা চরিয়ে বললো, ওর বাচ্চা গুলো তোর না ওর বরের বোঝা মুস্কিল। থাম। আমি চিকনাকে বললাম। সত্যি তোদের কোন জ্ঞান বুদ্ধি নেই। ছেলেটা অতোদূর থেকে এলো একটু বসতে দিবি। একটু থিতু হতে দিবি। না কালীচরণের ঝি....। সঞ্জয় বললো। কেরে সতী। চিকনা বললো। দেখলি অনি দেখলি, তুই এর বিচার কর। আমি ওদের কীর্তি কলাপ দেখে হাসছি। বাসু স্পিকটি নট। অনাদি এলো। কি তোরা শুরু করেছিস বলতো। নীচ থেকে শোনা যাচ্ছে। এটা কি তেঁতুলতলা। তেঁতুলতলা আমাদের আড্ডার ঠেক। সবাই যখন এক সঙ্গে ওখানে বসতাম, আশপাশ দিয়ে বড়রা কেউ যেতো না। অনাদি এসে আমার পাশে বসলো। কখন এলি। এইতো আধঘন্টা হবে। কালকের এ্যারেঞ্জমেন্ট কিছু করেছিস। হ্যাঁ গোরাকে বলে রেখেছি। একটু বেলায় বেরোবো। কটার সময় ? এই আটটা নাগাদ। কটা গাড়ি বলেছিস। একটা বলেছি, ফালতু লোকজন বেশি গিয়ে লাভ নেই। ঘন্টা খানেকের ব্যাপার। হ্যাঁ।
Parent