কাজলদীঘি, শ্মশান ও পীরসাহেবের থান by Mamun Jafran - অধ্যায় ২৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-11060-post-707873.html#pid707873

🕰️ Posted on July 31, 2019 by ✍️ sagor69 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1814 words / 8 min read

Parent
পার্টঃঃ২৫ সুরমাসি বললেন, ওকে বালতিকরে জল এনে দে অনি, হরকা আছে কোথায় পরেযাবে। লাগবে এখন। লাগুক। তুই রাগ করছিস কেনো। মিত্রা বললো। আমি ওর দিকে তাকালাম। সুরমাসি হাসছেন। সখ হয়েছে যখন নামুক। কিরে নামবি ? হ্যাঁ। তুই হাতটা ধর। ওই নিচের ধাপিটায় উবু হয়ে বসতে পারবিতো। পারবো। দেখ ওইটুকু জায়গা। খুব স্লিপারি। আমি সাঁতার জানি। আমি মিত্রার হাত ধোরলাম, মিত্রা আস্তে আস্তে নামছে। জুতোটা খুলিস নি। কেনো। ওটা কি জলে ভেঁজাবি। খুলে আসি তাহলে। যা। তুই আয়। আমি কি তোর সঙ্গে ওপর-নিচ করবো। আয় না। চল। আমি কাছে আসার আগেই ওপরে উঠতে গিয়ে মিত্রা পা হরকালো, কাকীমা ওপর থেকে ধর ধর ধর করে চেঁচিয়ে উঠলেন, আমি কোন প্রকারে ওকে জাপ্টে ধরে টাল খেয়ে পুকুরে পরলাম। আমার হাঁটু পর্যন্ত জলে ভিজলো। ও চোখে হাত ঢেকে আছে। ভেতর থেকে সুরমাসি ছুটে এলো। নীপা ওপর থেকে তার স্বরে চেঁচাচ্ছে, বুদ্ধি দেখো, নিজে পুকুরে ঠিক মতো নামতে পারে না, মিত্রাদিকে সঙ্গে করে নেমেছে। সম্বিত ফিরতে পুকুর পারে তাকিয়ে দেখলাম, অনাদি বাসু চিকনা পচা পাঁচু সঞ্জয়। নিপা ঘাটে নেমে এসেছে। ওপরে দাঁড়িয়ে ওরা সবাই হো হো করে হাসছে। নীপা প্রথমে একচোট আমায় নিলো। তারপর মিত্রাকে আমার কাছ থেক ছিনিয়ে নিয়ে বললো, সত্যি অনিদা তোমার কোন বুদ্ধি নেই। মিত্রাদিকে নিয়ে কখনো এই পিছল ঘাটে নামে। আমি চুপচাপ। মিত্রার দিকে তাকালাম, ও চোখ মেরে হাসছে। মাথা নীচু করে, মুখ-হাত-পা ধুয়ে ঘাট থেকে উঠে এলাম। অনাদির দিকে তাকিয়ে বললাম, কখন এলি। অনাদি হাসছে। চিকনা বললো, তোর সারপ্রাইজটা জব্বর দিয়েছিস। বলে চোখ মারল। ঘাটের দিকে তাকালাম। নীপা মিত্রাকে নিয়ে শেষ ধাপিতে দাঁড়িয়ে। আমি বাড়ির ভেতরে এলাম। আমার পেছন পেছন ওরাও চলে এলো। বাইরের বারান্দায় এসে সবাই বসলাম। অনাদি বললো, তোর পেটেপেটে এতো কিছু ছিলো আগে জানাস নি কেনো। জানালে মজাটাই নষ্ট হয়ে যেতো। তা যা বলেছিস। তুই ম্যাডামকে পুকুরে নামাতে গেলি কেনো। আমি নামাতে গেছি, কাকীমা বারন কোরলো, আমি বারন কোরলাম, বোললাম বালতি করে জল তুলে দিচ্ছি, না আমি নামবো, নাম। মাঝখান থেকে.......। চিকনা চোখ মেরে হো হো করে হেসে ফেলল। তোরা সবাই চলেএলি ওখানটা সামলাচ্ছে কে ? লোক আছে। তোরা খবর পেলি কি করে বলতো ? চিকনা প্রথমে খবর পেয়েছে। চিকনা! হ্যাঁ। বাসুর দোকানের ছেলেটা ফোন করেছিলো চিকনাকে। বুঝেছি। তোরা। চিকনা নীপাকে নিয়ে রুদ্ধশ্বাসে মেলাথেকে বাইক নিয়ে বেরোল। বাসুকে ফোন করলাম কি হয়েছেরে। ও সব বললো। সবাই চলে এলাম। ডি এইচ এ এম এন এ বাসুর দিকে তাকিয়ে বললাম। বাসু হাসছে। অনাদি বললো, কি বললি। আমি বানান করে বললাম তুই উচ্চারণ কর। চিকনা ঢক করে আমার পায়ে হাত দিলো। গুরু একি শেখালে। হাসলাম। চিকনা আমার পা ধরেই বললো, গুরু আর একবার বলো। কি। ওইযে যেটা বললে। কি বলবিতো। ওই যে বাসুকে বললে না। ধ্যাত। আর একটা এখনো বলি নি। বাসু বললো। বাসুর দিকে কট কট করে তাকালাম। বাসু হাসছে। অনাদি বললো, কিরে বাসু। ওটা এখন বলা যাবে না। বলতেই হবে। না। চিকনা বাসুকে দুহাতে জাপ্টে ধরলো। পাঁচু পচা ওর পেন্টের বোতাম খুলতে আরম্ভ করেছে। সঞ্জয় বাসুকে কাতাকুতু দিচ্ছে। বাসু মাটিতে পরে গিয়ে ছটফট করছে। ওর প্রাণ যায় যায়। বুঝলাম বাসু আটকে রাখতে পারবে না। সে এক হুলুস্থূলুস কান্ড। বাধ্য হয়ে বাসু অনাদিকে কানে কানে বলে দিলো। অনি ওই কোম্পানীর একজন মালিক। অনাদি ছুটে এসে আমাকে কোলে তুলে নাচতে শুরু করেছে। ওদের পাগল প্রায় অবস্থা দেখে কাকা ওদিক থেকে চেঁচিয়ে উঠলেন, ওরে তোরা করছিসটা কি বলতো। তোদের বয়স দিনে দিনে বারছে না কমছে। অনাদি আমাকে মাটিতে নামিয়ে রেখে, কাকার কাছে ছুটে গেলো। কানে কানে কাকাকে বলতেই, কাকা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, আবার বসে পরলেন। নীপা ভেতর থেকে ছুটে এসেছে। কি হয়েছে গো চিকনাদা ? মিত্রাও নীপার পেছন পেছন এসেছে। তার পেছনে কাকীমা সুরমাসি। চিকনা নীপার কানে কানে বললো খবরটা। নীপা ছুটে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো। কানে কানে বললো তোলা থাকলো। আমি হাসলাম, তারপর ছুটে গিয়ে মিত্রাকে জড়িয়ে ধরে ওর গালে চুমু খেতে আরম্ভ করলো। কাকা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ওরে ও হচ্ছে নীলকন্ঠ। আমি কাকার কাছে গিয়ে প্রণাম করলাম, তোমার অপারেশনের দিন হয়েছে। আমি জানিরে জানি। নাহলে তুই ওই সময় আমাকে ছেরে যেতিস না। মিত্রা এবার ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে, ওর চোখে খুশির হাওয়া। ও আমার পাশে এসে দাঁড়ালো, কাকাকে প্রণাম করলো। কাকা আমাদের দুজনকে বুকে জরিয়ে ধরলেন। কাকীমা সুরমাসি ব্যাপারটা ধরতে পারেন নি। তবে কিছু একটা ঘটেছে, সেটা জানতে পারলেন। অনাদি মিত্রার কাছে গিয়ে বললো, এর জন্য আমরা কালকে একটা পার্টি দেবো। মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে। পান্তা খাওয়া নিয়ে নীপার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বাক বিতন্ডার পর মিত্রা হাসতে হাসতে বললো, নীপা আমি বুবুনকে বলেছিলাম, খাবো। নীপা মিত্রার কথা শুনে ব্যাপরটায় ইতি টানলো, তবু বলতে ছারলনা, তুমি আমাদের বাড়িতে প্রথম এলে, তোমায় গরমভাত না খাইয়ে পান্তা খাওয়াবো। মিত্রা হাসলো, আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি। এখনতো থাকবো কয়েক দিন। তাই। হ্যাঁ। এসেছি ওর ইচ্ছেয়, যাবো আমার ইচ্ছেয়। পান্তা খেতে বসলাম। মিত্রা বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে খেলো, তারপর সুরমাসির দিকে তাকিয়ে বললো, আর নেই। সুরমাসি লজ্জা পেয়ে গেলো। অভ্যাস নেই মা, বেশি খেলে শরীর খারপ করবে। মিত্রা হেসে ফেললো। খাওয়া শেষে আমি উঠে বাইরের বারান্দায় চলে এলাম, অনাদিরা বসে চা খাচ্ছে, কোন ফাঁকে নীপা এদের চা করে দিয়ে গেছে, বারান্দার ঘরিতে দেখলাম চারটে দশ। আনাদির পাশে বসে বললাম, মিত্রা এক পেটি বাজি নিয়ে এসেছে। তুই সব ষঢ়যন্ত্র করেই ব্যাপারটা ঘটিয়েছিস। বিশ্বাস কর, কাল শ্মশানে বসে মিত্রার সঙ্গে কথা হলো। ও আসতে চাইলো। বললাম আমিতো চশমা আনতে যাবই, তুই চলে আয়। বাজির ব্যাপারটা আমি আনতে বলেছি। কেনো ? ছোট বেলায় এই মেলাতেই বাজি ফাটানোর জন্য কত কথা শুনেছি, তাই মিত্রাকে আনতে বলেছিলাম। এখানকার জন্য কিছু রেখেদে, বাকিটা মেলায় নিয়ে গিয়ে বাচ্চাদের দিয়ে ফাটা। সকলে চুপ করে গেলো। অনাদি চুপ করে আছে। না জেনে তোকে হার্ট করে ফেলেছি। দূর পাগল। আমি এত সহজে হার্ট হই না। হলে বাঁচতে পারতাম না। ঠিক আছে ঠিক আছে, তুই যা বলবি তাই হবে। চিকনা। চিকনা কাছে এলো। অনাদি ওকে সব বুঝিয়ে দিলো। হ্যাঁরে যেতে হবেতো। মিত্রা নীপা গেলো কোথায়। ওবাড়িতে। পচা বললো। কোনদিক দিয়ে গেলো। পেছন দিক দিয়ে। নীপা নাচছে না কি করছে যেন। চিকনা বললো হ্যাঁ। কটায় আরম্ভ। বাঙালীর কথা ছটা বলেছে, সাতটায় শুরু হবে। শেষ হবে কখন। রাত একটা ধরে রাখ। শোব কখন। শুতেই হবে তোকে। আমি চিকনার কথা শুনে হেসে ফেললাম। নীপা বারান্দা থেকে আমার নাম ধরে তারস্বরে চেঁচাচ্ছে। আমি পচার দিকে তাকিয়ে বললাম, দেখতো কেনো চেঁচাচ্ছে। পচা গুম হয়ে ফিরে এলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, কি হলো। তোর জন্য ঝার খেলুম। আচ্ছা তোরা কিছু বলতে পারিস না। আমরা। কেনো। চিকনা হাসছে। হাসছিস কেনো। এখানে যে কটাকে দেখছিস, সেগুলো ছাড়া, সবাই কম বেশি ওর কাছে ঝাড় খায়, দিবাকরকে একদিন ত্থাপরই কষিয়েছিলো। কেনো। সে অনেক ব্যাপর। অনাদি গ্রামসভা ডেকে মিটমাট করে। নাহলে তো দিবাকরকে ও গ্রামছাড়া করে দিতো। আনাদি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, এখনি এই সব কথা আলোচনা করতে হবে। থাক না। আচ্ছা দাঁড়া আমি ঘুরে আসছি। আমি ওপরে গেলাম। নীপা মিত্রা দুজনে শাড়ি পরেছে। দুজনকে এত সুন্দর লাগছে চোখ ফেরাতে পারছি না। আমাকে দেখেই নীপা বললো, এই পেন্ট-জামাটা পরে ফেলো। আমি একটু আসছি। নীপা বেরিয়ে গেলো। আমি আজ কোন কথা বললাম না। মিত্রার দিকে তাকালাম, দারুন মাঞ্জা দিয়েছিস আজ রাতে তোকে চটকাবো। এখন চটকাস না, প্লিজ সাজগোজ নষ্ট হয়ে যাবে। দে কোনটা পরতে হবে। খাটের ওপর আছে। হঠাত হৈ হৈ শব্দ। কি হলো বলতো। ও তুই বুঝবি না। আমি কোন কথা না বলে পেন্টটা খুললাম, মিত্রা এগিয়ে এলো। একদম না। নীপা এখুনি চলে আসবে। আসুক আমার জিনিসে আমি হাত দেবো। খাটে বসে জিনসের পেন্টটা পরলাম, সেদিন মিত্রা গড়িয়াহাট থেকে যেটা কিনেছিলো, গেঞ্জিটাও লাগালাম। খারাপ লাগছে না, আসতে পারি। নীপার গলা। আসুন। ঢুকেই ফস করে আমার গায়ে কি ছিটিয়ে দিলো। ইস এটাও সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিস। কে দেখবে বলতো। দেখার অনেক লোক আছে। চলোনা মেলায়। নীপা বললো। তাড়াতাড়ি করো। ওরা বেচারা আমাদের জন্য বসে আছে। মেলায় ওদের অনেক কাজ। তুইযা পাঁচ মিনিটের মধ্যে যাচ্ছি। মিত্রা ভুরুতে শেষ টান দিচ্ছে। আমি নিচে চলে এলাম। চারিদিকে সেন্টের গন্ধ ম ম করছে। ওই জন্য তোরা তখন চেঁচাচ্ছিলি। তুই জানিস অনি, মেয়েটা আজ আমাদের মারবে। একটু ভালো করে কান পাত, শুনতে পাবি, নাম ধরে ধরে কেমন ডাকছে। কে আছে ওখানে। তুই চিনতে পারবি না, শান্তনু বলে একটা ছেলে আছে। পলাকে দায়িত্ব দিয়ে এসেছি। রথ কখন বেরোবে। এই সাতটা নাগাদ। অনেক দিন রথের দড়িতে হাত দিই নি, চিকনা ঠাকুরকে একটু মিষ্টি কিনে দিস। কেনো তুই যাবি না। আমি হেসে ফেললাম। মিত্রা নীপা নীচে নেমে এলো। ওদের চোখের পাতা আর নড়ছে না। সবাই অবাক হয়ে ওদের দেখছে। চিকনা আমার হাত ধরে দাঁতে দাঁত চিপে বললো, অনি আমি ম্যাডামের বডি গার্ড হবো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি কোথায় থাকবো। নীপা দেখে ফেলেছে। চিকনাদা কি বলছেগো অনিদা। তোমরা দারুন মাঞ্জা দিয়েছো তাই। নীপা একবার কট কট করে চিকনার দিকে তাকালো। চিকনা ইশারা করে দেখালো, মেলায় গিয়ে গলাটা কাট। নীপা হেসে ফললো। মিত্রা আমার পাসে এসে দাঁড়াল, বল ঠিক আছেতো। আমি হাসলাম। চল। আমরা রেডি। আমার ব্যাগ দুটো নিয়ে যেতে হবে। কিসের ব্যাগ! ক্যামেরা আর, সাজগোজের। কেনো ? আমি সিডি বানাবো। ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলে ? কেনো কারেন্ট নেই! মেলায় হ্যাচাক পাবি। কারেন্ট পাবি না। ও অনি থাক না। অনাদি বললো। দেখেছো অনাদি ও আমাকে কেমন করে। ঠিক আছে চলুন ম্যাডাম আপনার কোন অসুবিধে হবে না, সব ব্যবস্থা করে দেবো। চিকনা, মিত্রা আর নীপাকে নিয়ে তুই যা। আমি! চিকনা বললো। হ্যাঁ। না। তুই যা। আমি বরং ব্যাগ বই। ওরা আবার গেলো কোথায়। ভেতরে গেলো। সত্যি অনি তোর ধৈর্য আছে। বাসু বললো। আরও নিদর্শন পাবি, চল একবার মেলায়, দেখতে পাবি। অনিদা কি বলছে গো আনাদিদা। নীপা বললো। কিচ্ছু না। আমি মিত্রাকে বললাম, তুই অনাদির বাইকের পেছনে নীপাকে সঙ্গে করে চলে যা। মিত্রা কিছুতেই বাইকে উঠবে না। অগত্যা অনাদিকে বললাম, তোরা এগিয়ে যা। হ্যাঁরে ট্রলি পাঠাবো। যাবে। আমার বাড়ির সামনে থেকে যাবে। না থাক। তোরা যা। আমি হেঁটে যাচ্ছি। অগত্যা ওরা বেরিয়ে গেলো। আমি বাসু আর মিত্রা হাঁটতে আরম্ভ করলাম। বাসুর বাইক পাঁচু চালিয়ে নিয়ে গেছে। সন্ধ্যে হয় নি। তবে বেশি দেরি নেই। ঘরির দিকে তাকালাম। পাঁচটা পাঁচ। প্রায় আধ ঘন্টার পথ। তারমানে মেলায় পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। মিত্রাকে দেখাতে দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি। এইটা বড়মতলা, ওইযে সেই পেয়ারা গাছ। ওটা তাঁতীপারা ওটা চন্দ্রেপারা ওই দিকটা হাঁড়িপারা। ওই যে দূরে বোনটা দেখছিস, ওইটা দীঘাআড়ি। মিত্রা আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো। কাল আমায় নিয়ে আসবি। আসবো। তোর মুখ থেকে গল্প শুনেছি এতদিন, এবার চাক্ষুষ দেখবো। হ্যাঁরে কতোক্ষণ লাগবে যেতে। বাসুর দিকে তাকালাম, হ্যাঁরে বাসু, এভাবে হাঁটলে কতোক্ষণ লাগবে। আধঘন্টা। আমি বললে বিশ্বাস করতিস না। তুই সব সময় হেঁয়ালি করিস তাই বিশ্বাস করতাম না। বাসু হাসলো। হ্যাঁগো বাসু জানোনা তোমার বন্ধুটিকে। আমি দশ বছর ওর সঙ্গে মিশছি আমি জানি। দীঘা আড়ির কাছে আসতে একটা হৈ হল্লা শুনতে পেলাম, মিত্রাকে বললাম, ওই দূরে আলোর রোশনাই দেখতে পাচ্ছিস। হ্যাঁ। ওইটা মেলা। এতোটা যেতে হবে এখনো। হ্যাঁ। মেলায় গিয়ে একটা ঠান্ডা খাওয়াস। ঠান্ডা! বল সেটাও পাওয়া যাবে না। কঁত কঁত করে খালি জল গিলতে হবে। ঠিক আছে আপনি চলুন ব্যবস্থা করে দেবো। বাসু বললো। দেখ তোর মতো ঢেপস নয়। বাসু হাসলো। আমি ওর হাতটা একটু চিপে দিলাম। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মারলো। মেলার কাছাকাছি এসে সন্ধ্যে হয়ে গেলো। আমি টর্চ জাললাম, মিত্রা আমার হাত শক্ত করে ধরলো। উঃ। কি হলো। পায়ে কি জড়িয়ে গেছে। মিত্রা তারস্বরে চেঁচাচ্ছে আমাকে জরিয়ে ধরে। আমি ওর পায়ে টর্চের আলো ফেললাম, দেখি একটা খরের টুকরো। নীচু হয়ে জুতোর ফাঁক দিয়ে খড়ের টুকরো বার করলাম। বাসু হাসছে। তোকে নিয়ে আমর বড় জ্বালা। কি করবো। আমি ইচ্ছে করে জড়িয়েছি। খর না হয়ে যদি সাপ হতো। আমি ওর দিকে কট কট করে তাকালাম। ঠিক আছে চল। মিত্রা আমার বাম হাতটা চেপে ধরে আছে। ওর সুডৌল বুকের স্পর্শ পাচ্ছি। আস্তে করে বললাম, সামনে বাসু আছে। থাক। কি ভাবছে। ভাবুক। এরকম অন্ধকার রাস্তায় এলি কেনো।
Parent