কাজলদীঘি, শ্মশান ও পীরসাহেবের থান by Mamun Jafran - অধ্যায় ৩০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-11060-post-747375.html#pid747375

🕰️ Posted on August 11, 2019 by ✍️ sagor69 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 2368 words / 11 min read

Parent
পার্টঃঃ২৮ টেস্ট রিলিফের বাঁধের ওপর ওরা বসেছে। প্রায় আধঘন্টা ধরে কি কথা হলো বুঝতে পারলাম না। কোন চেঁচামেচি নেই। দিবাকর অস্বীকার করছে মনে হয়। বাসু এগিয়ে আসছে স্কুল বাড়ির দিকে। বুঝতে পারলাম আমার সঙ্গে কথা বলবে। বাইরে বেরিয়ে এলাম। বাসু আমায় বললো বল তুই কি করবো। ও সব অস্বীকার করছে। হ্যাঁ। এক কাজ কর। ওর মোবাইলটা রেখে দে। আর আজ ওকে বাড়ি যেতে দিবি না। ওকে এখানে কোথাও নজর বন্দি করে রাখ। কাল ৯ টায় আমার ঘরে নিয়ে আয়। তারপর দেখি কি করা যায়। আচ্ছা। আমার কথা মতো কাজ হলো। এক চোট চেঁচা মেচি হলো। তারপর কয়েকজন দিবাকরকে নিয়ে চলে গেলো। আমি তাদের চিনতে পারলাম না। চেহারা দেখে খুব ভাল লোক মনে হচ্ছে না। অনাদি এলো। তুই সত্যি মহান। কেনো। এই মোবাইলটা নিয়ে কি করবো। আছে অনেক কাজ আছে। সঞ্জয় কোথায়। বাসুর ফোন বেজে উঠলো। বাসু আমার দিকে তাকিয়ে বললো নীপা। কথা বল। কি হয়েছে নীপা। চিকনাদাকে ফোন করলাম, ধরে ছেড়ে দিল। ওখানে কিসের চেঁচামিচি হচ্ছে বাসুদা। চিকনা মোবাইল বার করে দেখে কল হয়ে পরে আছে। এক হাত জিভ বার করে ফোনটা কাটলো। কই কিছু হয় নি তো। হয়েছে। তুমি মিথ্যে বলছো। সত্যি নীপা তুমি বিশ্বাস করো। অনিদা কোথায়। ওর মোবাইল স্যুইচ অফ কেনো। তাতো বলতে পারবো না, ওতো তোমাদের কাছে গেলো। না। অনিদার কিছু হয়েছে। চিকনাদা কাকে মারছিলো। চিকনা কাউকে মারে নিতো। না। তুমি সত্যি কথা বলো। আমি প্রচন্ড চেঁচামিচির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। আমি এখানে তোমাদের কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। তোমরা কোথায়। তুমি বিশ্বাস করো। দেখো মিত্রাদি মন খারাপ করছে। ও সব শুনেছে। আমার খুব খারাপ লাগছে। তুমি পাঁচ মিনিট সময় দাও আমরা যাচ্ছি। আচ্ছা। ঠিক পাঁচ মিনিট। চিকনার দিকে ফিরে বললো, গা.... মোবাইলটা বন্ধ করতে পারিস না। সত্যি বলছি তখন উদম কেলাচ্ছিলাম দিবাকে। অনেক দিন হাতের সুখ করি নি, খান.... ছেলের ওপর অনেক রাগ জমে ছিল। বিশ্বাস কর খেয়াল ছিল না, শুয়োরের বাচ্চার কি গরম, আমায় থানা দেখাচ্ছে। আমি চিকনার কথায় কান দিলাম না সঞ্জুকে বললাম, তুই আমার একটা উপকার কর। ওর মোবাইল যা আছে আমার মোবাইলে কপি কর। দাঁড়া কপি কর বললেই হবে, মালটা আগে দেখি। অনাদি আমার দিকে তাকলো, বুঝলো দিবাকরের সেট নিয়ে আমি কি করবো। সেটটা ওর হাতে দিল। আরে শালা এই সেট পেল কোথা থেকে! এতো ই সিরিজের মাল। ওর এলজির মাল ছিল। আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বললো। তুই জানলি কি করে ওর সেট থেকে কপি করা যাবে। কাল সব বলবো। তুই কপি করে নিয়ে আয়। অনাদি বাসু আমি এগিয়ে যাচ্ছি তোরা পেছনে আয়। আচ্ছা। বাসুর দিকে তাকিয়ে বললাম, নীপাকে একবার ফোন কর, ওরা কোথায় আছে। বাসু ফোন করলো। বললো স্টেজের সামনে আছে। আমরা তিনজনে এলাম। মিত্রা নীপা ছাড়াও আরো দুচারজন মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমায় দেখে মিত্রা মুখটা ঘুরিয়ে নিলো। নীপা গম্ভীর। কথা বলছে না। আমি লজ্জাসরমের মাথা খেয়ে কাছে গিয়ে মিত্রার কাঁধে হাত রাখলাম। রাগ করিস না তুইতো......। একবারে কথা বলবিনা। মাথাটা নীচু করে নিল। তুই তোর মতো এনজয় করলি। আমি আমার মতো এনজয় করলাম। কত স্বপ্ন ছিল.....। গালাটা ধরে গেলো, মাথাটা নীচু করলো। দুজনে একসঙ্গে এনজয় করতে পারলাম না। ওর চোখের পাতা ভারি হয়ে এলো। আমি ওর থুতনিটা ধরে তুললাম, এইতো আমি চলে এসেছি, চল। মিত্রা মাথা তুললো। ওর ভাসা ভাসা চোখের ভাষা বদলে গেলো। তোর কি হয়েছে! মুখটা এরকম লাগছে কেনো! কোথায় ? না তোর কিছু একটা হয়েছে। তুই বিশ্বাস কর। না তোর মুখ বলছে কিছু একটা হয়েছে। নীপা আমার দিকে তাকালো। তারপর চিকনার দিকে। চিকনাদা। চিকনা ত ত করছে, বিশ্বাস কর কিছু হয় নি। অনাদিদা। অনাদি মুখ ঘুরিয়ে নিল। ওখানে ভাকু নিয়ে একটা......। চিকনা বললো। ভাকু মানে! মিত্রা নীপার দিকে তাকালো। নীপা মিত্রার কানে কানে কি বললো, মিত্রা মুচকি হাসলো। এখানে এসেও তোর গন্ডগোল করার ইচ্ছে জাগলো। না মানে.....আমরা তিনজনে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। চিকনার মালটা খেয়ে গেছে। যাক এই যাত্রায় রক্ষাপেয়ে গেলাম। সবাই মিলে ঘন্টা খানেক মেলায় মজা করে ঘুরলাম। ছোলার পাটালি পাঁপড় ছোলাসেদ্ধ জিলিপি কখনো নীপা ব্যাগথেকে টাকা বার করে দাম মিটিয়েছে। কখনো মিত্রা দিয়েছে। আমার পারদপক্ষে কোনো খরচ হোলো না। চিকনা নীপার পেছনে সব সময় টিক টিক করে গেলো। মাঝে মাঝে সঞ্জয় আর চিকনার দ্বৈরথ হলো। মাঝে তো চিকনা খিস্তিই দিয়ে দিল সঞ্জয়কে। মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো। তারপর মিত্রার অনুরোধে, চিকনা আর সঞ্জয় নীপা আর মিত্রাকে ভাকু কি জিনিষ দেখাতে নিয়ে গেলো। ডাবুর বোর্ড দেখিয়ে নিয়ে এলো। বাড়ি ফিরলাম রাত প্রায় বারোটার সময়। অনাদিকে বললাম, কাল সকাল সাড়েনটায়, আসামিকে হাজির করিস। হ্যাঁরে ওরা আবার ছেলেটাকে মারধোর করবে নাতো ? আরে না না, ওর বাড়িতেই নিয়ে গেছে। কাল নিয়ে আসবে। তোকে ওসব নিয়ে ভাবতে হবে না। মাঝখান দিয়ে কালকের পার্টিটা নষ্ট হয়ে গেলো। কিচ্ছু নষ্ট হয় নি। কালকেই হবে। এবার পাওয়ার গেম খলবো। কালকে দেখতে পাবি। সঞ্জুর দিকে তাকিয়ে বললাম, সব কপি করেছিস ঠিক ঠিক করে। হ্যাঁ। গুরু একটা ভুল কপি হয়ে গেছে। কি বল। শেলির সঙ্গে দিবাকরের একটা সেক্স সিন লোড হয়ে গেছে। কিছুতেই ডিলিট করতে পারলাম না। অনাদি হেসে বললো, শালা এতোক্ষণ বলিসনি কেনো। বলার সময় দিলি কোথায় ? অনাদি মোবাইলটা তোর কাছে রেখে দে। অবশ্যই খোলা রাখবি। সব ফোন রিসিভ করবি। কোনো কথা বলবি না। এই ফোনের রেকর্ডিং থেকে আরো মশলা পাবো। আর কাল অতি অবশ্যই মোবাইলটা নিয়ে আসবি। অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। ওরা চলে গেলো। নীপা আজ আমাদের ঘর ছেড়ে দিয়েছে। নীপা বলেছে, ওবাড়িতে শোবে। ঘড়টা টিপ টপ করে গোছানো। একটা নতুন চাদর পাতা হয়েছে। নীপা ওবাড়ি থেকে মিত্রাকে এবাড়িতে পৌঁছে দিয়ে গেলো। অনিদা নিচটা বন্ধ করে দিয়ে যাও। আমি নিচে গিয়ে খিল দিলাম। নীপা চলে গেলো। আমি ওপরে এলাম। মিত্রা চুল আঁচড়াচ্ছে। আমি খাটের ওপরে বসে লক্ষ্য করছি। সেই থেক মিত্রা গরম খেয়ে রয়েছে। মুখে হাসিখুশি থাকার একটা অভিনয় করে যাচ্ছে। কিরে এবার নাইট গাউন পোরবো ? না কাপর পরেই থাকবো। আমি কোন কথা বললাম না। চুপ করে আছিস কেনো ? কি বলবো বল। এখানে তুই যা বলবি তাই হবে। আমি উঠে গেলাম। জানি মান ভাঙাতে আমাকেই হবে। কাছে গিয়ে পেছন থেকে ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম। মিত্রার হাত থমকে গেলো। আমার মুখের দিকে কট কট করে ঘার ঘুরিয়ে তাকালো। আমার গায়ে হাত দিবি না। ওকে আরো শক্ত করে কাছে টেনে নিলাম। কানের কাছে ঠোঁট রাখলাম। এতো রাগ করলে চলে। কতো লোক আমাদের দিকে জুল জুল করে চেয়ে আছে দেখেছিস। বুঝতে আর কার বাকি আছে শুনি। কেনো। কারা কারা বুঝতে পেরেছে। সবাই। এমনকি আজ তোর ওই বন্ধুটা কি যেন নাম, দিবাকর না কি সেও কথা প্রসঙ্গে তোর সঙ্গে আমার একটা এ্যাফেয়ার আছে সেটা বলে দিলো। আমার চোয়াল শক্ত হলো। চোখের ভাসা বদলে গেলো। মিত্রা বুঝতে পেরেছে। হাত দুটো আস্তে আস্তে আলগা হয়ে ওর শরীর থেকে খসে পরলো। কিরে বুবুন! না কিছু না। মিত্রা ঘুরে দাঁড়ালো। কি হয়েছে বল। তুই ওর নামটা শুনে ওই রকম করলি কেনো। বললামতো কিছু নয়। মিত্রা আমার গলা জড়িয়ে ধরলো। তোর কিছু একটা হয়েছে। সেই কোলড্রিংকস খাওয়ার পর থেকেই তোর কোনো পাত্তা নেই। তোর মধ্যে যে একটা দিলখোলা হাসিখপশি মানুষ সব সময় লুকিয়ে থাকে তাকে আমি দেখতে পাচ্ছি না। আমাকে নিয়ে কোন ব্যাপার। না। তাহলে। পরে বলছি। বিছানায় ফিরে গেলাম। একটা সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছিল। মিটসেফের কাছে এলাম। সিগারেটের প্যাকেটে হাত দিতেই, মিত্রা হাতটা চেপে ধরলো। চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দিলো এখন খাবি না। প্যাকেটটা রেখে চলে এলাম। বিছানায় এসে জানলার পাল্লাটা পুরো হাট করে খুলে দিলাম। আজকে চাঁদের আলোর ঝাঁঝ অনেক বেশি। নিওন আলোকেও হার মানায়। গাছের মগ ডালের পাতা গুলোও পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। চারিদিকে অবিশ্রান্ত ঝিঁ ঝিঁ পোকার তারস্বর ডাক। এক স্বপ্নিল পরিবেশ তৈরি করেছে। বুবুন। ফিরে তাকালাম। মিত্রা ব্রা আর শায়া পরে আমার দিকে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। একটু কাছে আয়। বিছানা ছেড়ে উঠে ওর কাছে গেলাম। হুকটা খুলে দে তো। আমি নীচু হয়ে ওর ব্রার হুকটা খুলে দিলাম। বুক থেকে ব্রাটা খসে পরলো। ও ঘুরে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। ওর নরম বুক আমার বুকে। বকের মতো গলা উঁচু করে আমার ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে এলো। আমি ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম। খোলা চুলে একটা ক্লিপ লাগিয়েছে। হাল্কা একটা পারফিউমের গন্ধ ওর শরীর থেকে ছড়িয়ে পরছে। চোখ আবেশে বন্ধ। আমি ওর মুখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছি। আজ ঠিক মন চাইছে না। তবু মিত্রাকে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে না। ও বলাকার মতো নীল আকাশে ডানা মেলতে চায়। দেখতে গেলে জীবনে ও কিছু পায় নি। আবার সব পেয়েছে। ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরিয়ে আমার দিকে তাকালো। ওর শরীরটা ইষদ উষ্ণ। চোখ দুটো সামান্য ঘোলাটে। আমার বুকে ও ঠোঁট ছোঁয়ালো। ইশারায় বললো। চল বিছানায় যাই। আমি ওর কথা মতো বিছানায় এলাম। ও আমাকে বিছানায় ঠেলে ফেলে দিয়ে বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো। ফোনটা বেজে উঠলো। আমি বিছানা ছেড়ে উঠে গেলাম মিটসেফের দিকে। ফোনটা তুলে নিলাম। সন্দীপ। বল। সব এই মুহূর্তে ঠিক ঠাক আছে। রাত দশটা পর্যন্ত সনাতনবাবুর ঘরে কেচাল হয়েছে। তারপর ওরা হালে পানি না পেয়ে দান ছেড়ে দিয়েছে। শুনলাম, ম্যাডাম নাকি সনাতনবাবুকে যে পাওয়ার দিয়েছেন সেটা সনাতনবাবু শো করাতেই ওরা চুপ চাপ হয়ে গেছে। সব ঠিক ঠাক ছেড়েছিস তো। হ্যাঁ। আজকে মনে হচ্ছে টাইমলি বেরোবে। কাল এগারোটার পর একবার আসবি। লাস্ট আপডেট নেবো। ঠিক আছে। গুড নাইট। গুড নাইট। ফোনটা রাখলাম। মিত্রা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ও বুঝতে পেরেছে কোনখান থেকে ফোন এসেছে। আফটার অল বিজনেসটা বোঝে। ডান হাতটা মাথায় দিয়ে বিছানায় হেলে পরেছে, উদ্দাম বুকটারদিকে চোখ পরতেই চোখ নামিয়ে নিলাম। আমি কাছে গিয়ে ওর পাশে বসলাম। ও একটু শোরেগেলো, আমি ওর পাসে শুলাম, ও আমার বুকে উঠে এলো। ফোনটা অফিস থেকে এসেছিলো ? মিথ্যে কথা বলতে পারতাম। বললাম না। ঘাড় দুলিয়ে বললাম হ্যাঁ। কে। আমার একজন ইনফর্মার। সামথিংস রং মনে হচ্ছে। তুই খুব অফ মুডে আছিস। ওকে কাছে টেনে নিলাম। কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম, সব বলবো তোকে। এখন একটু তোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। না। তুই কষ্ট পাবি আরি আমি আনন্দ করবো তা হয় না। সেই আনন্দটা পরিপূর্ণ নয়। ঠিক আছে সব বলার পরে আমাকে ফিরিয়ে দিবি না। ও আমাকে চুমু খেয়ে বললো, তোকে কোনো দিন ফিরিয়ে দিয়েছি। সব কষ্টের মধ্যেও তুই যখনি ডেকেছিস আমি চলে এসেছি। উঠে গিয়ে মোবাইলটা নিয়ে এলাম। ওকে পঙ্খানু-পুঙ্খরূপে সব বললাম। মোবাইল থেকে রেকর্ডিং গুলো সব শোনালাম। এমনকি দিবাকরের মোবাইল থেকে যে রেকর্ডিং কপি করেছিলাম, তাও শোনালাম। মিত্রার চোখর রং বদলে যাচ্ছে। ওর শরীরের ভাষা বদলে যাচ্ছে। সব শোনার পর মিত্রা রুদ্রমূর্তি ধরলো। চেঁচামেচি শুরু করে দিলো। এখুনি আমি কলকাতায় যাবো। রবীনকে ফোন কর। এতোবড়ো সাহস স্কাউন্ড্রেল গুলোর। ওরা সাপের পাঁচ পা দেখেছে। এক একটাকে লাথি মেরে দূর করে দেবো। ওরা ভাবে কি মিত্রা বাঁজা মেয়ে। এই নিশুতি রাতে ওর গলা গাঁ গাঁ করে উঠলো। কাকারা জেগে উঠলে একটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে, আমি ওর মুখ চেপে ধরলাম। ওকে থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না। তুই ছাড় বুবুন, সব কটাকে দূর করবো। বাধ্য হয়ে বিছানায় জোড় করে শুইয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলাম। রাগে ও ফুলে ফুলে উঠছে। তারপর ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফেললো। আমার বুকে মুখ লুকিয়ে ফুলে ফুলে কেঁদে উঠছে। ওর ফোঁপানি কিছুতেই থামাতে পারছি না। আমার জন্য তোকে কতো অপমান সইতে হলো। তোর এই ছোট্ট বুকে কতো ব্যাথা তুই গোপন করে আজ সন্ধ্যায় আমাকে আনন্দে ভাসিয়ে দিলি। নিজে এক কোনে পরে থাকলি কাউকে কিচ্ছু বুঝতে দিলি না। কেনো তুই এরকম করলি বল। আমি কি তোর কেউ নয়। আমাকে তুই কেনো জানালি না। মিত্রা কেঁদে চলেছে চোখ বুঁজিয়ে। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। ওর উদ্দাম শরীরটা আজ কোন নেশা জাগাচ্ছে না। পূব আকাশে ভোরের আলোর ক্ষীণ পরশ লেগেছে। মিত্রা। উঁ। চল দীঘাআড়ি থেকে ঘুরে আসি। ও আমার মুখের দিকে তাকালো। চোখ দুটো জবা ফুলের মতো লাল, চোখের কোল দুটো কেঁদে কেঁদে ফুলিয়ে ফেলেছে। ওঠ। ঝপ করে কাপর পরে নে। ঘুরে আসি দেখবি মনটা ভালো লাগবে। খোলা আকাশের নীচে বসে অনেক কিছু সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। মিত্রা উঠে পরলো। কাপর পরে নিলো। দুজনে বাড়ির দরজা ভেজিয়ে বেরিয়ে এলাম। তোর মোবাইলটা নিয়েছিস। হ্যাঁ। চল। আমরা দুজনে বেরিয়ে এলাম। খামাকে এসে একবার পেছন ফিরে তাকালাম। না কেউ আমাদের দেখছে না। সবাই ঘুমোচ্ছে। মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাঁটছে। খামার পেরিয়ে বড়মতলার কাছে এসে দাঁড়ালাম। এখনো আকাশে জ্যোতস্না আছে। কিন্তু সূর্যের আলোও ফুটে উঠছে। আমার কাছে সব চেনা দৃশ্য। মিত্রার কাছে নয়। ও যেন সব গোগ্রাসে গিলে খাচ্ছে। অনাদির বাড়ি ছাড়িয়ে যখন ফাঁকা মাঠটায় এসে পরলাম তখন পূব দিক লাল হয়েছে। ইস ক্যামেরাটা আনলে ভাল হোতো। মোবাইলে তোল। দাঁড়া। ও পূব আকাশের দিকে মোবাইলের ক্যামেরাটা ঘুরিয়ে ঠিক করলো। সবুজ ধান খেতে শিশিরের পরশ। কেউ কেউ এরি মধ্যে মাঠে নেমে পরেছে। ও প্রায় পাঁচ সাত মিনিট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছবি তুললো। বুবুন এদিকে আয়। আমি কাছে গেলাম। তুই এটা ধর। আমি ধরলাম। ও ছুটে ধান ক্ষেতে নেমে পরলো। আমি বললাম বেশি দূর যাস নি। সবে ধানগাছ গুলোর বুকে দুধ এসেছে নষ্ট হয়ে যাবে। ও আমার কথা মতো বেশি দূর গেলো না। মনের খেয়ালে নানা পোজ দিলো। আমি ধরে আছি। কাছে এসে আমার কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে আমার গালে গাল ঘসে ক্যামেরা তাক করলো। একবার চকাত করে চুমুও খেলো। মোবাইল অফ করলো। আবার হাঁটা। ধান ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে শরু আইল পথে আমরা এসে পৌঁছলাম। মিত্রা দুচারবার হোঁচোট খেলো। আমাকে জাপ্টে ধরলো। কখনো খুনসুটি করলো। আমি আমার সেই চেনা জায়গায় এলাম। ওআও। মিত্রার মুখ দিয়ে এক অদ্ভূত শব্দ বেরিয়ে এলো। কিহলো। এতো সুন্দর জায়গা আমি আগে কখনো দেখি নি। বিশ্বাস কর বুবুন। একবার ছুটে দীঘির পারে চলে গেলো তারপর ছুটে এসে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে আদর করে নাচতে আরম্ভ করলো। যেন ময়ূরী আকাশে কালো মেঘ দেখে পেখম তুলে নাচতে শুরু করেছে। তুই সেদিন এখানে বসে ছিলি! হ্যাঁ। তোর টেস্ট আছে। বলছিস। তুই পাখির ডাক শুনতে পাচ্ছিস। দাঁড়া রেকর্ড করি। আবার মোবাইল চালু। নীপা আস্তে আস্তে দূরে চলে যাচ্ছে। আমি নিমগাছের একটা নরম ডাল ভেঙে দুটো দাঁতন বানালাম। হঠাত বুবুন বুবুন চিৎকারে ফিরে তাকালাম। মিত্রা রুদ্ধশ্বাসে দৌড়চ্ছে। আমি দৌড়ে ওর কাছে গেলাম। ও আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পরে জড়িয়ে ধরলো। কামার শালের হাপরের মতো ওর বুক ওঠা নামা করছে। আমার বুকে মুখ লুকিয়েছে। হাত দিয়ে খালি ওই দিকটা দেখাল। দেখলাম কয়েকটা শেয়াল লেজ নাড়তে নাড়তে চলে গেলো। আমি পাঁজা কোলা করে তুলে এনে ওকে ঘাসের বিছানায় শুইয়ে দিলাম। তখনো ওর বুক ওঠানামা করছে। আমি ওর বুকে কান পাতলাম। লাবডুব শব্দের তীব্রতা একটু কমে এসেছে। আমি দীঘির বুকে ভেসে থাকা পদ্মপাতা ছিঁড়ে তাতে করে জল নিয়ে এলাম। ওর চোখে মুখে ছিটিয়ে দিলাম। জলের স্পর্শে ও চোখ মেলা তাকালো। মুচকি হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু খেলো। আস্তে আস্তে কানে কানে বললো। তোকে কেমন ভয় পাইয়ে দিয়েছিলাম বলতো। খুব আদর খেতে ইচ্ছে করছিলো। হাসলাম। ওগুলো শেয়াল। ও আবার চোখ বন্ধ করলো। কিরে দাঁত মাজবি না। আমি দাঁতন বানিয়ে রেখেছি। ও চোখ খুললো, উঠতে ইচ্ছে করছে না। তুই আমাকে জড়িয়ে ধরে থাক। শিশিরের জলে কাপর ভিঁজে গেলো যে। যাক। এরকম ভেঁজা কজনের ভাগ্যে ঘটে। দাঁত মেজে চল একজনের বাড়িতে গিয়ে একটা সারপ্রাইজ দিই। যাবি। কার বাড়িতে। সে বলবো না। গেলে দেখতে পাবি। সেই শয়তানটার বাড়িতে। উঃ ওই নামটা উচ্চারণ করে এই মুহূর্তটা নষ্ট করিস না। ঠিক আছে। সরি। দাঁতন নিয়ে দুজনে দাঁত মাজলাম। দীঘির টল টলে কাঁচের মতো স্বচ্ছ জলে মুখ ধুলাম, মিত্রার আঁচলে মুখ মুছলাম। কটা বাজে বলতো ? মিত্রা জিজ্ঞাসা করলো। আমি মোবাইলের ঘরিটা দেখে বললাম, ছটা দশ। মাত্র! আমরাতো এখানে অনেকক্ষণ এসেছি। হুঁ। কখন বেরিয়েছি বাড়ি থেকে। চারটে হবে। আজ দুজনে সারারাত ঘুমোলাম না। কি করবি কিছু ভাবলি। সব ভেবে রেখেছি। ঘরে চল সব জানতে পারবি। ঠিক আছে চল।
Parent