কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3901717.html#pid3901717

🕰️ Posted on November 1, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 607 words / 3 min read

Parent
সকালে ঘুম থেকে উঠতে বেশ দেরি হয়ে গেল। আজ অফিসে একটা জরুরি কাজ আছে অমিতাভদা বলেছিল একটু তাড়াতাড়ি আসিস তোকে এক জায়গায় পাঠাব। দূর, চেষ্টা করেও উঠতে পারলাম না। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আমার মুখ শুকিয়ে গেল, আজ নির্ঘাত অমিতাভদার কাছে ঝাড় আছে। মোবাইলটা বার করে বড়মাকে একবার ফোন করলাম। বড়মা ফোন ধরে বলল - কিরে এত বেলায়! ঘুমোচ্ছিলি নাকি? আমি বললাম- হ্যাঁ রাতে শুতে একটু দেরি হয়ে গেল -বলিস কিরে তোর বস তো সেই সাত সকালে চলে গেছে তোর নাকি কোথায় যাওয়ার কথা। তোকে ফোন করে নি? -করেছিল হয়তো আমি তো ফোন বন্ধ করে রাখি। -ভাল করেছিস তুই যা, আমি একবার ফোন করে দিচ্ছি। -এই জন্যই তো তোমাকে ফোন করা। -সেকি আমি জানিনা। -যা তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিস। আমি দুপুরের খাবার পাঠিয়ে দেবো। -ঠিক আছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে এলাম। ঘড়ির দিকে তাকালাম ১০টা বেজে গেছে। আমার ৯.৩০ মিনিটের মধ্যে অফিসে পোঁছানোর কথা। কি আর করা যাবে। অফিসে ঢুকতেই রিসেপসনিস্ট ভদ্রমহিলা আমার দিকে তাকিয়ে একবার মুচকি হাসলেন, আমিও হাসলাম। লিফটের সামনে দাঁড়াতেই আমাদের ফটোগ্রাফার অশোকদা বললেন, এই অনিন্দ তোকে অমিতাভদা খুঁজছিলেন, আমি হুঁ বলে লিফটের মধ্যে সেঁদিয়ে গেলাম, নিউজ রুমে ঢুকতেই মল্লিকদা বললেন কি হে বৎস আজ মনে হয় একটু বেশি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন, যান আপনার জন্য সমন অপেক্ষা করে আছে, আগে গিয়ে একটু মুখটা দেখিয়ে আসুন, তারপর না হয় মুখে চোখে জল দেবেন। -মল্লিকদা আজ একটু বাঁচিয়ে দিন। -হ তা ঠিক, ফাঁনদে পরলে মল্লিকদা, আর কচিগুলানরে নিয়ে যখন ঘোরাঘুরি কর, তখন মল্লিকদার কথা মনে পরে না। -আচ্ছা আচ্ছা এরপর তোমায় ভাগ দেবো তবে ছোটমার পারমিশন নিয়ে। -এই তো আবার ঘুটি বসালি । -ঠিক আছে ছোটমাকে বলবনা তুমি একটা ফোন করে দাও আমি এসে গেছি। মল্লিকদা ফোন থেকে মুখ তুলে বললেন- যে কাজে তোমার যাওয়ার কথা ছিল তা হয়ে গেছে তুমি এখন যেতে পার, আর একটি গুরু দায়িত্ব তোমার প্রতি অর্পন করা হবে তুমি এখন এডিটর রুমে যেতে পার। -আবার কি গো। -গেলেই জানতে পারবে। -ঠিক আছে। অমিতাভদা থাকেন বালিগঞ্জ প্লেসে আর আমি থাকি গড়িয়াহাটার কাছে অফিসের ফ্লাটে, মল্লিকদা থাকেন যাদবপুরে, আমার প্রত্যেক দিন ডিউটি অফিস থেকে ফেরার পর কিংবা আগে একবার বড়মার সঙ্গে দেখা করে আসতে হবে, নাহলে বিপদ আছে। আমি বিগত ১০ বছর ধরে এই অভ্যাস পালন করে আসছি। হরিদা অমিতদার খাস বেয়ারা গেটের সামনে বসে ঝিমুচ্ছিলেন আমি একটা ঠেলা মারতেই চোখ খুলে বললেন কিহল আবার -সাহেব আছেন? -হ্যাঁ, তুমি কোথায় ছিলে এতোক্ষণ? -কেন! -তোমার আজ পিট্টি হবে! -তোর খুব মজা তাই না? -হাসি দরজা খুলে ভেতরে এলাম, একরাশ ঠান্ডা হাওয়া আমায় গ্রাস করে বসলো, দেখলাম একটা চেয়ার দখল করে বসে আছেন আমাদের এ্যাড ম্যানেজার চম্পকদা, আর একটিতে চিফ রিপোর্টার সুনিতদা আমাকে ভেতরে আসতে দেখেই বলে উঠলেন এইতো ছোট সাহেব চলে এসেছেন। কি বাবা ঘুমিয়ে পরেছিলে, এমন ভাবে কথা বললেন আমার মাথা নত হয়ে গেল। অমিতাভদা এবার ওর একটা বিয়ে দেবার ব্যবস্থা করুন অনেক নামডাক হয়েছে। টাকা পয়সাও তো খুব একটা কম পায় না, দেখবেন বিয়ের পিঁড়িতে চরলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। অমিতাভদা মুচকি হসে বললেন, হ্যাঁ ওর মাকে কয়েকদিন আগে বলছিলাম সেই কথা তা বাবু বলে এসেছেন বিয়ের নাম ধরলেই ঐ বাড়িতে আর পদার্পন করবেন না উনি সন্ন্যাস নেবেন। সকলে হো হো করে হেসে উঠল| -আয় বোস তোর কথাই হচ্ছিল। আমি একটা চেয়ারে বসলাম। -তোর মা ফোন করেছিল ঘুম থেকে উঠেই চলে এসেছিস, কিছু খাওয়া দাওয়া করেছিস। -না। সঙ্গে সঙ্গে বেলের দিকে হাত চলে গেলো। এখন একটু চা আর টোস্ট খেয়ে নে। তারপর কয়েকটা কপি লিখে দিয়ে বাড়ি চলে যা, তোর মাকে বলা আছে, আজ তোকে ভাইজ্যাক যেতে হবে ইলেকসন কভারেজ, দিন পনেরো থাকতে হবে। সেরকম ভাবে গোছগাছ করে নিস। ওখানে তোর সমস্ত ব্যবস্থা করা থাকবে ৭.৩০টায় ট্রেন মাথায় রাখিস আবার ঘুমিয়ে পরিসনা। আবার সকলে হেসে উঠল। -ঘুমটা একটু কমা, অতো রাত জাগতে তোকে কে বলে, যতদিন আমার বাড়িতে ছিলি ঠিক ছিলি, যে দিন থেকে ঐ বাড়িতে গেছিস বিশৃঙ্খল হয়ে গেছিস।
Parent