কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১০৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4505018.html#pid4505018

🕰️ Posted on January 5, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 809 words / 4 min read

Parent
সবাই আমার কথা শুনে থ। মল্লিকদা আমার চোখ মুখ দেখে ভয় পেয়ে গেছে, বুঝতে পারছে, অনি এবার একটা কেলোর কীর্তি করবে, এটা মল্লিকদা অনেকবার টের পেয়েছে। আবার ফোনটা বেজে উঠলো। দাদা ধরলেন। -হ্যাঁ বলো। -এ্যাঁ। হ্যাঁ ও আমাদের নতুন মালিক। নিজেই লিখেছে। আমি কি বলবো বলো, আমি একজন সম্পাদক, ও লেখা দিলে আমাকে ছাপতে হবে, মালিক বলে কথা। একটা কাজে কাল এসেছিলো। ধরো। -হ্যাঁ বলুন। -আরে ভাই, তুমি মাথা গরম করছো কেনো। -কি হলো আপনার ক্ষমতা শুকিয়ে গেলো। -না। মানে। -নেগোশিয়েসনে আসুন। -বলো। -এ মাসে আপনার দপ্তর থেকে ৩ কোটি টাকার এ্যাড বেরোচ্ছে, ২ কোটি আমার কাগজের নামে পাঠিয়ে দেবেন আজকের মধ্যে। না হলে কাল থেকে সিরিয়াল চলবে, আর আপনার চেয়ারটা পাওয়ার জন্য যে ওঁত পেতে রয়েছে, তার নামে ভালো ভালো কথা বলে, চেয়ারটা পাইয়ে দেবো। -ঠিক আছে, ঠিক আছে। -আর কিছু। -কোনো ফোনটোন যেন করতে না হয়। ধরুন। আমি অমিতাভদার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বাথরুমে গেলাম।   আমি বাথরুম থেকে শুনতে পাচ্ছি অমিতাভদার কথা, মন্ত্রীমহাশয় পারলে এখুনি এসে অনির কাছে ক্ষমা চাইবেন, কিন্তু আমি যেন আর না লিখি ওনার সম্বন্ধে। এটা অমিতাভদাকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমি যা বলেছি উনি মেনে নেবেন। ডাক্তারবাবু বললেন, এডিটর ছেলেটা খাঁটি ইস্পাত খুব সাবধানে ব্যবহার করো, না হলে হাত কেটে ফালাফালা হয়ে যাবে। কি আগুন দেখেছো। একটা মন্ত্রীকে পযর্ন্ত ঠুসে দিলে। -বলনা বলো, এবার সামন্তর কথার উত্তর দাও। বোবার মতো বসে আছো কেনো, বোবার শত্রু নেই, মনে রাখবে ও আমার ছেলে একটাও ভুল কাজ করবে না, প্রয়োজনে ভুল কাজ করবে, আবার স্বীকারও করে নেবে। এতদিন হলো এইভাবে কোনোদিন কোনো মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছো। কি বল মিত্রা। মিত্রা কি বললো, শুনতে পেলাম না। বাথরুম থেকে চোখে মুখে জল দিয়ে বেরোলাম। -বাবা। তুই সকাল বেলা ভালো সওদা করলি তো। মল্লিকদা এমন ভাবে বলে উঠলেন, আমিও না হেসে পারলাম না। -যাই বল মল্লিক অনির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে, কিরে অনি মন্ত্রী পুত্রের কেলাঙ্কারিটা দে, ছেপে দিই। -মরণ। বড়মা এমনভাবে বললেন, সকলে হেসে ফেললো। -অফিসে যাও আজই যদি এ্যাডের ব্যাপারটা কনফার্ম না করে কাল দেবো। আমার অনেক টাকার দরকার। -একটা নিউজের দাম দু কোটি, তুই তো চম্পকের চাকরি খেয়ে নিবি। -তোমরাইতো বাঁচিয়েছো চাকরিটা, কালকে ও বলছিলো। -শুধু আমায় একা দোষ দিও না। -লক্ষণও বুঝি দোসর ছিলো। ছোটমা ফিক করে হেসে ফেললো। মল্লিকদার মাথা নীচু। -চলো আমরা বুড়ো বুড়িরা এখন নিচে যাই। ডাক্তারবাবু বললেন। -ওকে এখন কি দেবো। বড়মা বললেন। -ডিমটোস্ট বা বাটার টোস্ট, ভালো করে সেঁকে, আর দুধ না হলে হরলিক্স বা বোর্নভিটা। -অনি, ওকে হাতমুখ ধুইয়ে দে নিয়ে আসছি। ছোটমা বললেন। কিছুক্ষণ পর ছোটমা ফিরে এলেন, হাতে মিত্রার কাপড় শায়া ব্লাউজ। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললেন -ওগুলো ছেড়ে রাখিস, লন্ড্রীর ছেলেটা আসবে দিয়ে দেবো। মিত্রা ছোটমার দিকে তাকালো। -আর তাকাস নি ওই ভাবে, খালি একা একা মজা নিয়ে যাচ্ছিস, আমরা ফাঁকে পরে যাচ্ছি। ছোটমা বেরিয়ে গেলো। আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। - কিরে ছোটমা কি বলে। -শুনলি তো। -তার মানে, আমার প্রেসটিজে পুরো গ্যামাকসিন। -বেশ করেছি। -ভালো। ওঠ। -দরজাটা বন্ধ কর। -কেনো। -কাপড়টা কাল পরিয়েছিস! খালি জড়িয়ে দিয়েছিলি। -ও। বাইরের দরজাটা বন্ধ করলাম। -ধর একটু। -কেনো। -সব কেনোর উত্তর দেওয়া যায়। -এগিয়ে আয়। ও বিছানা থেকে এগিয়ে এলো। আমি ওর হাতদুটো ধরে দাঁড় করালাম, ও আমার বুকে ঢলে পরলো। আমি ওকে শক্ত করে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলাম। -মিত্রা! -উঁ। -কি হলো। -মাথাটা কেমন ঘুরে গেলো। -একটু খেয়ে নিয়ে আবার ঘুমিয়ে পর। মিত্রা বুক থেকে মাথা তুলছে না, কিরে বাথরুমে যেতে পারবি, না এখানে এনে দেবো। -না যাবো। -দাঁড়া। আমি ওকে কোলে তুলে নিয়ে বাথরুমের দরজার সামনে নিয়ে গেলাম, এখানে বোস। -না, কমে গেছে। আমি ভেতরে যাই, তুই দরজাটা ভেজিয়ে দে। আমি দরজাটা ভেজিয়ে দিলাম। -কি রে হলো। -হ্যাঁ। -দেখলাম ও বসে আছে। দাঁড়া। -উঠতে পারছি না। আমি ওকে তুলে ধরলাম। উঃ কি ভারী রে বাবা। মিত্রা হেসে ফেললো। -নে দাঁত মাজ। আমি ডাক্তারবাবুকে তোর নতুন উপসর্গটা বলি। -ও কিছু না, বলতে হবে না। -ও দাঁত মাজলো, মুখ ধুলো আমি ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছি। -তোর এতো রাগ। -তুই বল মানসিক পরিস্থিতি এরকম, সাত সকালে ফোন, মাথাটা গরম হবে না। -ভালোই হলো। দেবে। -ওর বাপ দেবে, অমিতাভদা অফিসে পৌঁছলে ওর সচিবকে পাঠিয়ে দেবে। -তাই বলে দু কোটি! -ওটা তোর। -শুধু আমার একার। -থাক এখন এসব আলোচনা। -কাল নীপা ফোন করেছিলো। -কখন। -যখন পেয়ারা পারছিলাম, তুই রবীনের সঙ্গে কথা বলছিলি তখন। -কি বললি। -বোললাম, তোর শরীর খারাপ। জিজ্ঞাসা করলো সব বললাম। -তোরটা আমার ঘারে চাপিয়ে দিলি। -কি মজা বলতো, আজ ওরা চলে আসবে। -ঠিক আছে, তাড়া তাড়ি কর। ছোটমা এসে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। -থাকুক। -থাকুক কিরে। তুই তো আমাকে ফুল ঢিলে করে দিচ্ছিস। -বেশ করছি। ওকে ঘরে নিয়ে এলাম। -ওদিকে মুখ করে দাঁড়া। -আমি ফিরে দাঁড়ালাম। ও শায়া ব্লাউজ পরে নিলো। দরজা খুললাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই ছোটমা এলেন, দুজনের জন্য খাবার নিয়ে। -তুই মুখ ধুয়েছিস। -আমি! কেনো! -মুখ ধুবি না। -কাল রাতে ঘুমিয়েছি! -না ঘুমলে মুখ ধুতে নেই। পিচাশ। বেরো আগে। ছোটমার ধমকানিতে ব্রাশ নিয়ে গেলাম। -তুমি মুখে বললে কেনো, পিঠে দুচারঘা দিতে পারলে না। -ছোটমাকে বল, ডাক্তারবাবু এখনো যান নি। আমি বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম, ছোটমা নেই। -কিরে ছোটমা গেলো কোথায়? -তুই বলতে বললি, আমি বললাম, ছোটমা দৌড়ে নিচে চলে গেলো। -ও। ঘড়ির দিকে তাকালাম, আটটা বাজে। -খেয়ে নে।
Parent