কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১০৬

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4578510.html#pid4578510

🕰️ Posted on January 10, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1717 words / 8 min read

Parent
ছোটমা এলো একটু দেরি করে, আমরা ছোটমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। -কিরে তোরা খেয়ে নিস নি কেনো। আমি ছোটমার দিকে তাকালাম, মুখের সেই হাসি হাসি ভাবটা কোথাও উধাও হয়ে গেছে, কেমন যেন ফ্যাকাশে। -কি হয়েছে তোমার। -কই কিছু না তো। -ওটা মুখে বলছো, তোমার মুখ অন্য কথা বলছে। -তোর সব সময়…..। চুপ করে গেলাম। বড়মা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে, মিত্রা আমার কথা বোঝার চেষ্টা করছে, ওর মুখ দেখে বুঝতে পারলাম। -ছোটো হাত মুখ ধুয়ে নে, ভাত বাড়ি। বড়মা বললেন। -হ্যাঁ দিদি আমি এখুনি রেডি হয়ে নিচ্ছি। সবাই একসঙ্গে টেবিলে বসলাম। বড়মা খাবার বেরে দিলেন, ছোটমা বড়মাকে সাহায্য করছেন। খাওয়া শুরু হলো, কিন্তু নিস্তব্ধে, ব্যাপারটা আমার ভালো লাগলো না, কোথায় যেন তাল কেটে গেছে মনে হচ্ছে। -ও বাড়িতে কেনো গেছিলে। -যাবো না। চার পাঁচদিন যাই নি, ঘরদোর একটু পরিষ্কার করার দরকার আছে তো। -ফিরে আসার পর তোমার মুখটা গম্ভীর দেখাচ্ছে, কিছু হয়েছে। -না। -তুমিও কি আমার মতো। ছোটোমা আমার দিকে তাকালো। চোখের ভাষা কিছু বলতে চায়। কিন্তু বলতে পারছে না। -জানো ছোটোমা আমার জীবনে কতগুলো মিশন আছে। বলতে পারো স্বপ্ন…. -বল। -যেমন প্রথম হচ্ছে, আমার যারা খুব কাছের মানুষ, আমি তাদের হাসি খুশি দেখতে চাই, জানি তাদেরও অনেক কষ্ট আছে, হয়তো সব কষ্টের সমাধান আমি করতে পারবো না, তবে আশি ভাগ চেষ্টা করলে পারবো। তোমার সমস্যা তোমায় বলতে হবে না, আমি জেনে নেবো। -অনি। -আমি ঠিক বলছি ছোটোমা। -না এ ভুল তুই করবি না, তাহলে আমার থেকে বড় কষ্ট আর কেউ পাবে না। আমি ছোটমার দিকে তাকালাম -আর একটা কথা আমার কাছের মানুষের কাজে ভুল হলে সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। কিন্তু কেউ যদি অপমান করে থাকে, তাহলে বুঝবে তাকে ওই মুহূর্তে জ্যান্ত পুঁতে ফেলবো। সেই সময় অনি ভীষণ হিংস্র। -তুই কেনো এই সব চিন্তা করছিস, আমার কিছু হয় নি। -একটা গল্প বলি এই প্রসঙ্গে, ভাল করে শোনো। তখন ক্লাস টেনে পড়ি, কৈশোর যৌবনের সন্ধিক্ষণে, চোখে অনেক স্বপ্ন, ডাক্তার হব বদ্যি হবো। প্রথম ব্যাঙ কাটা হবে স্কুলে। আগের দিন রাতে সারারাত ঘুমোলাম না, আমার কোনো বায়োলজিক্যাল বাক্স ছিলো না, অনাদির ছিলো আর বাসুর ছিলো। উনা মাস্টার সাইন্সের টিচার, টিফিনের পর ব্যাঙ কাটা হবে, চিকনা ব্যাঙ ধরে আনল পচা পুকুর থেকে। একটা কলাগাছের চোকলায় ব্যাঙ রেখে, পিন ফুটিয়ে হাত পা বেঁধে তাকে কাটা হলো। স্কুলে একটা মাইক্রোস্ক্রোপ ছিল তাকে আনা হলো, স্লাইডে ব্যাঙের কি সব তুলে উনা মাস্টার সবাইকে দেখাচ্ছেন, কেউ ঠিক বলছে কেউ ভুল বলছে, আমাকেও ডাকলেন, আমি গেলাম। সত্যি বলতে কি ছোটোমা, আমি শুনে শুনে একটা কিছু বলতে পারতাম, কিন্তু আমি সত্যিটা বললাম, সবাই যা বললো, আমি তার ঠিক উল্টোটা বললাম। বললাম আমি হিজিবিজি ছাড়া কিছু দেখতে পাচ্ছিনা, উনা মাস্টার গুনে গুনে দশটা বেতের বাড়ি মারলো। কাঁদিনি কেনোনা আমার মনের কথা বোঝার মতো উনা মাস্টারের মানসিকতা ছিল না, ল্যাবরেটরি থেকে বেরিয়ে এসে উনা মাস্টারকে প্রচুর গালাগাল দিলাম, মনে মনে। চলে গেলাম পীরসাহেবের থানে, ওখানে অনেকক্ষণ বসে থাকলাম, মনে মনে প্রার্থনা করলাম, সত্যি তুমি যদি থাকো, তুমি যদি সত্যি কেউ হও, তাহলে আমার চোখটাকে মাইকোস্ক্রোপ বানিয়ে দাও, আমি মানুষ চিনতে চাই, আর মানুষের ভেতরটা যেন দেখতে পাই, সত্যি বলতে কি কিছুক্ষণ পর হাওয়ায় ভেসে এলো একটা কথা, ওরে এতে অনেক বেশি কষ্ট, পারবি সহ্য করতে, তখন ছোটো ছিলাম, এখন হলে বলতাম না, তখন কিন্তু আমি বলে ফেলছিলাম, হোক কষ্ট তবু তুমি আমায় এই শক্তি দাও। সবাই চুপচাপ, বড়মা আমার মাথায় হাত রাখলেন, মিত্রা ছোটমা ভাতের থালা থেকে হাত তুলে আমার মুখের দিকে চেয়ে রয়েছে, আমি নিস্তব্ধে খেয়ে চলেছি। বুঝতে পারছি আমার চোখে মুখের চেহারায় পরিবর্তন ঘটেছে। -পাগল। বড়মা বললেন। কিছুক্ষণ সবাই চুপচাপ, যে যার নিজের মতো খাচ্ছে। -শোন অনি তুই আজ সকাল বেলা যেভাবে ওই মন্ত্রীটার সাথে কথা বললি, তোর দাদা আজ তিরিশ বছরে ওইভাবে কারুর সঙ্গে কথা বলেছে? এটা হচ্ছে উইল পাওয়ার, সবার থাকে না। পৃথিবীতে কজন মানুষের এরকমটা থাকে বল। বড়মা বললেন। আমি বড়মার দিকে তাকালাম। -একটা কথা তোমায় বলি বড়মা, বলতে পারো আবার রিপিট করছি, তোমাদের পাঁচজনের কাছে আমি আমার জীবনের না পাওয়া অনেক জিনিস পেয়েছি, যা মনা মাস্টার, কাকীমা সারাজীবনে দিতে পারেনি, কিন্তু তাদের দেওয়ার ক্ষমতা ছিল। আমার বাবারও কম ছিলো না। -জানি। -তোমাদের কাউকে কেউ যদি কোনো দিন অপমানসূচক কথা বলে থাকে, আর আমি আমার উপলব্ধি দিয়ে যদি বুঝতে পারি, সে ইচ্ছে করে এটা করেছে তার স্বার্থ সিদ্ধির জন্য, তাহলে মনে রাখবে, আমার কাছে তার শাস্তি, নৃশংস মৃত্যু, আমার হাত থেকে সে রেহাই পাবে না। তবে আমি তাকে নিজে হাতে কোনো দিন মারবো না। -অনি! ছোটমা এঁটো হাতে আমার কাছে উঠে এলেন। আমার গলা জড়িয়ে ধরলেন, বাঁহাতে আমার থুতনিটা ধরে মুখটা নিজের দিকে ঘোরালেন -শোন বাবা, তুই পাগলামো করিস না, সত্যি বলছি, আমার, তোর মল্লিকদার কিছু হয় নি। পারিবারিক সমস্যা সকলের থাকে, আমারও আছে। -আমি তোমার কাছ থেকে কিছু জানতে চাই নি। প্রয়োজন বোধ করলে জেনে নেবো। পরিবেশ থম থমে, আমি ছোটমাকে বললাম, ভাত দাও। ছোটমা আমার পাতে বাঁহাত দিয়ে দুহাতা ভাত দিলেন। -একটু মাছের ঝোল নে। -দাও। -মিত্রা নিবি। -দাও একটু। ছোটমা মিত্রাকে দিলেন। আমি বড়মার পাত থেকে একটা চিংড়িমাছ তুলে নিলাম, মিত্রা দেখলো। -কিরে তুই একলা একলা। -তুই খাবি। তারপর সারারাত পায়খানা করবি। -শয়তান। আবার জিজ্ঞাসা করছিস, লজ্জা করে না। -বড়মার তাহলে খাওয়া হবে না। -তুই খেলি কেনো। -তুই ছোটোর পাত থেকে নে। দুজনে ভাগাভাগি করি। দেখ বাটিতে সব ফুরুত। -তোর মতো রাক্ষস থাকলে। -আচ্ছা দাঁড়া দাঁড়া আমি দিচ্ছি। -বড়মা একটা চিংড়িমাছ মিত্রার পাতে তুলে দিলো। -তোর থেকে আমারটা সাইজে বড়। -তুই মালকিন, বড় হওয়া স্বাভাবিক। -মালকিন মালকিন করবিনা বলে দিচ্ছি। হাসলাম। খাওয়া চলছে। -জানো ছোটমা, তোমাদের আমার মানুষ দেখার কতকগুলো গল্প বলি, গল্পগুলো আমার বাস্তবে দেখা। তোমার এর নির্যাসটা বলবে, সবাইকে সাতদিন সময় দিলাম। তারপর আমার চিন্তা-ভাবনাটা তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো। -বল। একদিন অফিসে ঢুকলাম একটু দেরি করে, তখন আমি গণিকাপল্লীর বাসিন্দা, সারারাত ঘুম হয় না, ভোরের দিকে একটু ঘুমোই, তাছাড়া সারারাতের ফাইফরমাশ তো আছেই। সেদিন মনে হয় দাদার মন মেজাজাটা ভালো ছিল না। আমায় খুব বকাবকি করলো, তারপর বললো, এক কাজ কর, নিকোপার্কে এক ছোটদের কার্নিভাল চলছে, একজন ফটোগ্রাফার গেছে, তুই লেখাটা রেডি করে দে। আমি অফিসের গাড়ি জীবনে খুব কম ব্যবহার করেছি। সেদিনও বাসে করে চলে গেলাম, সারাদিন পার্কে বাচ্চাদের সঙ্গে থাকলাম, শেষ হলো প্রায় রাত আটটা। দাদাকে ফোন করে বললাম, লেখাটা কি আজকেই লাগবে, দাদা বললো কেনো, আমি বললাম, প্রোগ্রাম এই শেষ হলো বেরোচ্ছি, তাহলে এক কাজ কর কাল সকালে দে, সানডে চিলড্রেন্স পেজে দিয়ে দেবো। আর বাসে উঠতে ইচ্ছে করলো না, ওখান থেকে হাঁটতে আরম্ভ করলাম, চিংড়িহাটার মুখে যখন এসে পরেছি, দেখি একটা পাগলী তাড়াতাড়ি করে রাস্তা পার হচ্ছে, চোখ মুখটা কেমন ভয় ভয়। আমি থমকে দাঁড়ালাম, ওমা দেখি, ওর পেছন পেছন একটা পাগল, হাসতে হাসতে আসছে, বেশ ধীর পায়ে রাস্তা পার হলো, আমার খুব উৎসুক হলো, আমি ওদের পেছন পেছন গেলাম, রাস্তা পার হয়ে একটা কালভার্ট পরে, পাগলীটা দেখি ওই কালভার্টের পাশে এসে শুয়ে পরলো, একটু অন্ধকার অন্ধকার, রাস্তার আলোয় যতটা আলো আসছে। ঠিক ততটা আলো চারদিকে ছড়িয়ে পরেছে। আমি একটু দূরত্বে দাঁড়িয়ে ওদের লক্ষ্য করছি। পাগলটা পাগলির পাশে এসে বসলো, এ ওর মুখ দেখে, ও এর মুখ দেখে, বেশ কিছুক্ষণ পর পাগলিটা উঠে দাঁড়ালো, ছুটে পালাতে চাইলো, পাগলটা ওকে ধরে ফেলে আবার পাশে বসালো, গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো, বিশ্বাস করবে না, আমি প্রায় একঘন্টা ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, ওরা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হলো। বাসে আস্তে আস্তে অনেক ভাবলাম, গণিকাপল্লীতে ঢুকে সঙ্গম দেখলাম। বিশ্বাস করবে না ছোটমা দুটোই সঙ্গম, একটার মধ্যে প্রাণ খুঁজে পেলাম, একটার মধ্যে পেলাম না। সেদিন সারারাত ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কেটে গেছিলো। ভোররাতে কি খেয়াল হলো কার্নিভালের লেখাটা লিখে ফেললাম। লেখাটা বেরোবার পর দাদা আমাকে ডেকে একটা ফাউন্টেন পেন দিয়েছিলো। আমি পেনটাতে এখনো লিখি নি রেখে দিয়েছি। ওরা সবাই আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। ছোটমার গালদুটো ফোলা। -ভাতটা গিলে ফেলো। বিষম লেগে যেতে পারে। মিত্রা হেসে ফেললো, ছোটমা গোঁত করে ভাতটা গিলে ফেললো। -দ্বিতীয়টা শুনবে। -বল। বড়মা বললো। -শিয়ালদা ক্যাফের অপজিটে। মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো, ছোটমা হাসলো, মিত্রার দিকে তাকাবার পর, যখন মিত্রা ইশারায় কালকের কথাটা স্মরণ করিয়ে দিলো। -তোরা হাসছিস কেনো। -কালকে, মোগলাই পরাটা। বড়মা বললেন ও হরি। -আচ্ছা তোর মাথায় কি কুবুদ্ধি ছাড়া কিছু নেই। -শুনলেই না ওমনি বলে দিলে কুবুদ্ধি। দাও শেষ চিংড়িটা। -না একেবারে দেবে না, বড়মা ওটা তুমি খাবে। -খাক না ওরকম করিস কেনো। -সব সময় তুমি…….। -ঠিক আছে মল্লিককে বলবো কালকে বেশি করে আনতে। বল তোর গল্পটা। -সেদিন শ্যামবাজার হয়ে অফিসে আসছি। শেয়লাদার জ্যামে বাসটা দাঁড়িয়ে, এখনো বুঝলে বড়মা আমার একটা বদ অভ্যাস আছে, আমি জানলার ধার ছাড়া বাসে বসি না, তার থেকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে যাবো সে ভালো। -এটা ভালো অভ্যেস বেশ রাস্তা দেখতে দেখতে যাওয়া যায় না, তাই বল। -ওপাশে তাকিয়ে বলো। -মিথ্যুক তুই কোনোদিন আমাকে জানলার ধারে বসতে দিস নি। কতো বোঁটকা গন্ধওয়ালা লোক পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, কি বলেছে জানো, তুই তো সেন্ট মেখেছিস লোকটা একটু শুঁকুক না, তাহলে তোর সেন্টেরও মহিমা ছড়িয়ে পরবে। সবাই হো হো করে হেসে উঠলো। -বাসটা থামতেই, মুখটা বার করে দেখলাম, জ্যাম কতটা, দেখলাম পুলের ওপর পযর্ন্ত, তারপরি রাস্তায় চোখ চলে গেলো। দেখি একটা পাগল বসে আছে। -আবার পাগল। -ভেটকি কোথাকার, আগে শোন, তোরতো ঘটে বুদ্ধি নেই, কি বলছি তার উত্তর দেওয়ার, অন্তঃত চুপ করে শোন। -তা বলে তুই ভেটকি বলবি। ছোটমা বললো। -কেনো চুমা দেবো। সবাই হেসে উঠলো, বড়মা আমার কানটা ধরে নেড়ে দিলেন। -তুমি ওকে মারতে পারো না, খালি হাত বোলাও। বড়মা পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বললেন, কত অভিজ্ঞতা বলতো, এই টুকু বয়সে। -হুঁ। -রাস্তায় অনেকে সিগারেট খেতে খেতে যাচ্ছে, বাস এসে গেছে, সিগারেটটা ফেলে দিয়ে ছুটে বাসে উঠে পরেনা। -হ্যাঁ। -সেরকম একটা সিগারেট টানছিলো পাগলটা। ফুটপাথের ধাপিতে একটা ল্যাম্প পোস্টে হেলান দিয়ে। তুমি যদি তার সিগারেট খাওয়াটা দেখতে তাহলে বুঝতে যেন কোন রাজবাড়ির ছোটবাবু। ঠেংয়ের ওপর ঠ্যাং তুলে, যেন সেটা সিগারেট নয় পাইপ, আমি তাকিয়ে আছি। হঠাত দেখি কোথা থেকে একটা পাগলি এসে হাজির, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলো, তারপর পাগলটার কাঁধে একটা টোকা দিয়ে সিগারেটটা চাইলো, পাগলটা একবার পাগলিটার দিকে তাকালো, পাগলিটার চাইবার চাহুনি, আর পাগলটার চাহুনি তুমি যদি দেখতে, আমি ঠিক তোমায় ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না, টোটাল ব্যাপারটা অনুভূতি সাপেক্ষ, তারপর পাগলটা আস্তে আস্তে উঠে চলে গেলো, পাগলিটা ওর পেছন পেছন হাঁটলো। বাসটা ছেড়ে দিলো। বাকিটা দেখতে পেলাম না। ছোটমা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। -দুটো খন্ড চিত্র। কিন্তু একটু ভেবে দেখো, তোমাদের জীবন দর্শনের সঙ্গে অনেক কিছুর মিল খুঁজে পাবে। বড়মা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছেন। -কি দেখছো। -তোকে। -আমি কি সুন্দরী মেয়ে। -না। পুরুষ। তোর চোখ দিয়ে সেই পাগল পাগলীকে দেখছি। -সিনেমা শেষ। ঘড়ির দিকে একবার তাকাও। এরপর আর বলতে পারবে না। অনি তুই এখানে আসা ভুলে গেছিস। -আর একটু বোস না। -কেনো। -তুই যে বললি আর একটা বলবি। -সব একদিনে বললে হজম করতে পারবে না। বড়মা আমার কানটা ধরলেন। আমি উ করে উঠলাম। -আমার কথা আমাকে ঘুরিয়ে বলা। -আঃ কি আনন্দ, এবার জম্পেশ দিয়েছো বড়মা। বড়মা কান ছাড়লেন। -শোন শেষ গল্পটা বলছি। -বল। -দুরাত ঘুমোই নি, আজ তুমি ছোটো আর মিত্রা এক ঘরে, মল্লিকদা দাদা এক ঘরে, আর আমি একা দরজা লাগিয়ে রসুন তেল নাকে দিয়ে ভস ভস। ডোন্ট ডিস্টার্ব। -শয়তান। মিত্রা চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো।
Parent