কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১০৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4578544.html#pid4578544

🕰️ Posted on January 14, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 939 words / 4 min read

Parent
-হ্যাঁরে দাদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল ওই জায়গাটা নিয়ে কিছু ভাবলি। -কাগজপত্র রেডি করতে দিয়েছি, হয়ে যাক তারপর ভাববো। এখন অফিসের ঋণ শোধ। এটা আমার থেকে তোমরা দুজন ভালো করে জানো। সুনীতদা চম্পকদা মাথা নীচু করলো। -মাথায় রাখবে জিনিষটা আমার একার নয়, এই বটগাছটাকে বাঁচাতে পারলে, আমরা সবাই বাঁচবো। -তুই বিশ্বাস কর অনি তুই আমার ছেলের মতো, এখনো সেই দিনটার কথা মনে পরলে, রাতে ঘুম হয় না। -সুনীতদার ওই সব কিছু হয় না, সুনীতদার রাতে বেশ ভালো ঘুম হয়, সুনীতদার কিছু মনে থাকে না। সুনীতদা আমার দিকে তাকালেন, তুই এই ভাবে বলছিস কেনো। -তুমি ভেবে দেখো। সুনীতদা চুপ। -সুনীতদা এখনো সময় আছে, তোমায় নিয়ে আমার অনেক বড়ো কাজ করার স্বপ্ন আছে, তুমি এখনো শোধরাও নি। -না অনি বিশ্বাস কর ওরা আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলো। -আমার এখান থেকে অনেক বেশি মাইনের অফার আছে তোমার কাছে চলে যাও। তোমাকে কেউ ধরে রাখে নি। -আমি যাবো না বলে দিয়েছি। -না তুমি তা বলো নি। ঝুলিয়ে রেখেছো। সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, আবার কি হলো। -আবার বলি সুনীতদা তুমি যদি ভেবে থাকো অনি খুব দুর্বল তাহলে ভুল করবে। তোমাকে আমি ওয়াচে রাখছি। -কিরে সুনীত তোর লজ্জা করে না। চম্পকদা বললেন। -না তুই বিশ্বাস কর চম্পক। -তাহলে অনি যা বলছে তুই প্রতিবাদ করছিস না কেনো। ও তো তোর পেছনে বলছে না। সুনীতদা চেয়ার ছেড়ে উঠে চলে গেলো। -বুঝলে চম্পকদা সুনীতদার স্বভাবটা মনে হয় চেঞ্জ করতে পারবো না। -দাঁড়া আমায় একটু সময় দে। দাদার ফোন থেকে সনাতন বাবুকে ডেকে পাঠালাম। সনাতন বাবু এলেন। চেয়ারে বসলেন। -সুনীতবাবুর আবার কি হলো। সবার দিকে তাকালেন। -ও অন্যায় করেছে, অনি বললো। -আমরা শুধরে নিচ্ছি উনি পারছেন না। -দাদা একটু চা খাওয়াবে। -আমায় বলছিস কেনো, তুই হরিদাকে ডেকে বল। -তুমি বলো, তোমার বলা আর আমার বলার মধ্যে পার্থক্য আছে। সবাই মুচকি হাসলো। দাদা বেলে হাত দিলেন। হরিদা উঁকি মারলো। বুঝে গেলো। -সনাতন বাবুকে বললাম আমার কাগজপত্র রেডি। -না ছোটোবাবু, ওরা এখনো দেয় নি। -কেনো। -আপনি একটু বলুন। -তাহলে আপনি কি করতে আছেন। -আছি তো কিন্তু কতবার বলি বলুন তো। -মেমো দিন, কি উত্তর দেয় দেখুন। আমি এর মধ্যে ঢুকলে এ্যাকশন অন্য হবে। ফোনটা সনাতনবাবুর দিকে এগিয়ে দিলাম। -ডাকুন এখানে। কিছুক্ষণ পর অরিন্দম আর কিংশুকবাবু ঢুকলেন। আমাকে দেখেই চমকে গেলেন। আমিই বললাম বসুন। -আপনার কাগজ রেডি করেছি এখুনি দিয়ে দেবো। কিংশুকবাবু বললেন। -আমায় কেনো, ওটা সনাতন বাবুর টেবিলে পাঠানোর কথা। -এই সবে শেষ করলাম। -কেনো। কাজের চাপ বেড়ে গেছে। -না ….. -পার্টি ফার্টি বন্ধ করুন, আগে কাজ তারপর ফুর্তি। -না মানে…… -তোতলাবেন না। প্রফেসনাল হাউসে কাজ করছেন। আজকে কিছু বললাম না, এরপর দিন সনাতনবাবুকে মেমো ধরাতে বলেছি। -অনিবাবু! -আপনার কি খবর। অরিন্দমবাবুর দিকে তাকালাম। -ওরা কিছুতেই মানছেন না। -কলকাতায় আর লোক নেই, কালকে একটা টেন্ডার ফেলুন কাগজে। টেন্ডার জমা পরলে আমি ওপেন করবো। -না কয়েকদিন সময় দিলে……. -অরিন্দমবাবু, আমি ঘাসে মুখ দিয়ে চলি না, বকলমে ব্যবসা করবেন না। কেউ যেনো অরিন্দমবাবুর গালে ঠাস করে একটা চড় মারলো। -কি হলো চুপ করে গেলেন কেনো, অনি সব জেনে ফেলেছে, এতো কান্ড হওয়ার পরও আপনারা কি ভাবেন। আমি সব ভুলে গেছি। আপনাদের বলেছি না, বাহান্ন কার্ডের মধ্যে মাত্র ছটা কার্ড নিয়ে আমি গেম খেলছি। আপনারা পারবেন না, তা সত্বেও……. -অনি দূর কর এগুলোকে। অমিতাভদা চম্পকদা দুজনেই চেঁচিয়ে উঠলেন। অরিন্দমবাবু মাথা নীচু করে বসে আছেন। -আমি কাল বাইরে যাচ্ছি, দাদা আজ তাড়াতাড়ি বাড়ি যাবেন, কাগজ দাদার হাতে পৌঁছে দেবেন। আমি তিনদিন পর এসে আবার বসবো। -সনাতনবাবু এ সপ্তাহের স্টেটমেন্ট। -দাদার হাতে দিয়ে দেবো। হরিদা চা নিয়ে এলো, চায়ে চুমুক দিলাম, ফোনটা বেজে উঠলো, অদিতি। -তুমি কোথায়। -অফিসে। -কটা বাজে দেখেছো। -বেরোচ্ছি। চম্পকদা আমার দিকে তাকালেন, মুচকি হেসে বললেন, কিরে আবার দাঁও মারবি। -জানিনা। -তুই আমাকে চাকরি থেকে দূর কর। -কেনো। -তুই সব নিয়ে এলে আমি কি করবো। -আমার থেকে তুমি বেশি নিয়ে আসতে পারলে তুমি যাও। -না এখানে তোর সঙ্গে পারবো না। -জানো চম্পকদা কাগজের প্রতি তোমার ডেডিকেসন যদি ঠিক থাকে, কাগজ তোমার সব দায়িত্ব নেবে। একবার সুযোগ দিয়ে দেখো না। উঠি। -তোর আর্টিকেলটা। সবাই হেসে ফেললো। -উঃ, ঠিক আছে রাতে দিয়ে দেবো। দাদার ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। হরিদা বেরোতেই বললো -ছোটবাবু তোমার সঙ্গে একটা কথা আছে। -এখন। -হ্যাঁ। -দাদাকে বলে দিও, রাতে জেনে নেবো। -ঠিক আছে।   বেরিয়ে এসে একটা ট্যাক্সি ধরে সোজা চলে এলাম পার্ক স্ট্রীটে, এশিয়াটিক সোসাইটির তলায় দাঁড়ালাম। মিনিট খানেক দাঁড়িয়েছি, দেখি অদিতি গাড়ির কাঁচ খুলে ডাকছে। আমি তাড়াতাড়ি গাড়িতে উঠে বসলাম, ওমা দেখি মিলিও আছে, একটু অবাক হলাম, গাড়িতে বসে ওদের ভালো করে লক্ষ্য করলাম, দুজনে যা ড্রেস হাঁকিয়েছে আজকে, মাথা খারাপ করে দেওয়ার মতো, জিনসের প্যান্ট শর্ট গেঞ্জি, তাও আবার নাভির ঠিক ওপরের দু’ইঞ্চি আর নিচের চার ইঞ্চি উন্মুক্ত, আমি পেছনে হেলান দিলাম, লুকিং গ্লাস দিয়ে দেখলাম, অদিতি মিলিকে ইশারায় কি বলছে, আমি জানলার দিকে মুখ করে চোরা চাহুনি মারছি। অদিতি স্টিয়ারিংয়ে বসেছে। -অনিদা। -উঁ। -তোমায় কোথায় নিয়ে যাচ্ছি বলতো। -কি করে বলবো। -গেজ করো। -আমায় হাত ধরে তুমি নিয়ে চলো সখা আমি যে পথো চিনি না। ওরা দুজনেই খিল খিল করে হেসে উঠলো। সত্যি অনিদা তোমার সঙ্গ উপভোগ করা ভাগ্যের ব্যাপার। -কেনো। -তুমি খুব এনজয়েবল। চিয়ার লিডার। -সে কি গো শেষ পযর্ন্ত…… -ঠিক আছে বাবা উইথড্র করছি। -ক্যাঁচ করে ব্রেক মারলো অদিতি। সামনে একটা গাড়ি হঠাত ব্রেক কষেছে। আমি পেছনের সিটি একটু জবু থবু। -কি হলো। -ভাবছি। -কি। -জীবনের রূপ, রস, গন্ধ এখনো কিছুই উপভোগ করতে পারি নি, এরি মধ্যে যদি বেঘোরে প্রাণটা যায়। -হা হা হা। -হাসবেই, তোমরা তবু কিছু পেয়েছো। আমি এখনো মরুভূমিতে মরীচিকার মতো ঘুরছি। -তুমি কিন্তু চাইলেই পেয়ে যাবে। -এখানেই তো সব শেষ। -কেনো। -মুখ ফুটে আমি যে চাইতে পারি না। -কেনো মিত্রাদি। -সবাই তাই বলে, কিন্তু মালকিন বলে কথা, যতই হোক আমাকে মাসের ভাতটুকু দেয় তো। -তুমি এখন মালিক। -সেটা এখনো ভাবতে পারছি না। -সে কি গো। -হ্যাঁগো, তোমাদের মিথ্যে বলতে যাবো কেনো। হওয়ার পর থেকে যা ঝড় যাচ্ছে, ভাববার সময় পেলাম কোথায়। -তা ঠিক। তুমি বলে লড়ে গেলে, আমরা পারতাম না। গাড়িটা বাইপাস হয়ে স্প্রিং ভ্যালিতে ঢুকলো। আমি পেছনে বসে আছি। এই ছোটো গাড়িগুলোর এসিটা বেশ স্ট্রং একটুতেই ঠান্ডা লাগে আর শীত শীত করে।
Parent