কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১১৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4631349.html#pid4631349

🕰️ Posted on January 30, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1038 words / 5 min read

Parent
-কিরে আবার নিজের মধ্যে ডুবে গেছিস। মিত্রার দিকে তাকালাম। চোখের পাতা ভেঁজা ভেঁজা। আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। হাসলাম। -তোর এই বিচ্ছু হাসিটাই সকলকে হিপনোটাইজ করে দেয়। -তোকেও! -হ্যাঁ, আমাকেও। তোর প্রতি ভীষণ রাগ হয়, মনে হয় তোকে আঁচড়ে কামড়ে…… -বেড়ালের মতো। মিত্রা হেসে ফেললো, বুকে মুখ লুকিয়ে বললো যখনই তুই হেসে ফেলিস আর কিছু বলতে পারি না। -এই হাসিটুকু ছাড়া আমার কি আছে দেবার বল। আমি পরিবারের মধ্যে বড় হয়ে উঠি নি, আমার মধ্যে কিছু প্রবলেম থাকবেই, এটা তোদের মেনে নিতে হবে। -আমরা সকলে তোকে মেনে নিয়েছি, মানিয়ে নিয়েছি। তুই তো খারাপ ছেলে নোস। -নারে মিত্রা সেটা বলতে পারবো না, নিজের আয়নায় নিজের মুখ দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নি। এবার সেটা চেষ্টা করবো। একদিন মন খারাপ হলে আমি দীঘা আড়িতে গিয়ে সময় কাটিয়েছি, পাখিদের সঙ্গে কথা বলেছি, গাছের সঙ্গে কথা বলেছি, না হলে শ্মশানে গিয়ে বসে থেকেছি, মনে মনে কাউকে খোঁজার চেষ্টা করেছি, সব শেষে পীর সাহেবের থানে। একসময় তোর মতো কতো কেঁদেছি, আমার কান্নার মূল্য কেউ দেয়নি এই পৃথিবীতে, একদিন নিজেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম, কেঁদে কিছু লাভ নেই, চোখটা পাথরের মতো করতে হবে। দেখিস না, দেবতার চোখে জল নেই, সব সময় হাসি হাসি মুখ। ওখানে বসে থাকলে ভারী মনটা অনেক হাল্কা হয়ে যেতো, নিজের মনকে বোঝাতাম অনি তুই পৃথিবীতে একা, তোকে লড়ে উঠতে হবে। এক ফোঁটা জমি বিনা যুদ্ধে কাউকে ছাড়বি না, হকের জিনিষ কোনো দিন আপোষ করবি না। কলেজ লাইফে তোকে পেলাম, তোকে আঁকড়ে ধরে অনেক স্বপ্ন দেখলাম, তুই হারিয়ে গেলি, তারপর খড়কুটোর মতো ভাসতে লাগলাম, অমিতাভদা আমার মধ্যে কি দেখেছিলেন জানি না, আমাকে ওনার বাড়িতে স্থান দিলেন, কিন্তু ভালো লাগলো না, চলে গেলাম, তারপর আবার তুই ফিরে এলি, আমার জীবনটাকে একেবারে ওলোট পালট করে দিলি, তুই আসার পরই দেখলাম বড়মা ছোটমাও আমাকে একটু একটু করে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছে। এরকম সিচুয়েশনে কোনোদিন পরিনি, তারপর দেখলাম, তোকে বড়মাকে ছোটমাকে মল্লিকদাকে দাদাকে আঘাত করার জন্য সবাই মুখিয়ে আছে, আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না, দাদা মল্লিকদা না বললে হয়তো ইসলাম ভাই আমার কথায় ওদের দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দিতো, কেউ কোনো দিন হদিস পেতো না। -অনি কি বলছিস তুই। -আমি ঠিক কথা বলছি মিত্রা, আমি মলের খোঁজ খবর দিন পাঁচেক রাখি নি, যদি এর মধ্যে ও সত্যি কিছু করে থাকে, গেমটা আমার হাতের বাইরে চলে যাবে, ইসলাম ভাই ওকে রাখবে না। আমি হয়তো ওকে রাখতে চাই, ওদের থিয়োরি আলাদা, যে ওদের পথের কাঁটা তাকে ওরা গোড়া থেকে উপরে ফেলে দেয়। -অনি তুই থাম আমি আর সহ্য করতে পারছি না। -বিশ্বাস কর মিত্রা তোকে তোর প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে গেলে কিছু নোংরা খেলা খেলতেই হবে। একে এককথায় বলতে পারিস রাজনীতি। এইজন্য তোদের কিছু বলি না, আমি জানি তোর মতো বড়মা, ছোটমা, মল্লিকদা, দাদা একই কথা বলবে। তোরা বস্তুবাদে বিশ্বাসী, সাধারণ গেরস্থ, এ সব সহ্য করতে পারবি না, তার থেকে নিজের টেনশন নিজের কাছেই রাখি। এই টেনশন তোদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে কেনো তোদের আনন্দটুকু শুষে নেবো। -তুই কি করে জানলি বড়মা ছোটমা কিছু বোঝে না। -বোঝে তবে ওপর ওপর, ভেতরের ব্যাপারটা বোঝে না। দেখলি না সেদিন কাজ শেষ হয়ে যাবার পর নিজেকে কনফেস করলাম। আমি আগে যদি সব ব্যাপারটা তোদের বলতাম, তোরা কাজটা করতে দিতিস। মিত্রা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। -আমি জানি বলেই তোদের কিছু বলিনি, আমার একটা বদ অভ্যাস আছে মিত্রা, জানিষ আমি যে মাটির ওপর দাঁড়িয়ে সাধনা করি সেই ভূমি পযর্ন্ত জানবে না আমি কি করছি। এটাকে তন্ত্র সাধনা বলে। তন্ত্র পড়েছিস। -না। তুই পড়েছিস। -সম্পূর্ণ নয়, যতটা পড়েছি তার থেকে এটুকু শিক্ষা নিয়েছি। -আমাকে পড়াবি। -চাইলে পড়তে দেবো। -কোথায় আছে। -আমার ফ্ল্যাটে। -তোর ফ্ল্যাটে একদিন নিয়ে যাবি। -যাবো। -ফিরে এসে যাবো। মিত্রা আমার চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। -জানিস বুবুন, জ্যোতিষি ভদ্রলোকেরও প্রচুর পড়াশুনা। দাদা মল্লিকদা অনেকভাবে ক্রস করেছে, উনি কিন্তু সব অঙ্ক করে করে বলে দিচ্ছিলেন। -দাদাদের সম্বন্ধে কি বলেছেন। -ওটা তোকে বলবো না, ওরাই তোকে বলবে। আমি আমারটা তোকে বলতে পারি। -তোকে কি বললো -আমার জীবনে যে ঝড়টা গেলো, সেটা আর এজীবনে আসবে না, শুধু তোর জন্য, আমার এখন সুখের জীবন। মিত্রার চোখ মুখটা চিক চিক করে উঠলো। -সবার সামনে বললো। -না, আমি বড়মা ছোটমা ছিলাম। -আচ্ছা আমি যদি তোদের প্রয়োজনে কোনো খারাপ কাজ করি তোরা মেনে নিবি। -এটাও বলেছে, তুই নিজের জন্য কোনোদিন কিছু করবি না, যা করবি সবই আমাদের দিকে তাকিয়ে। -তোরা বিশ্বাস করিস। -করতাম না এখন করছি। তুই যে মলেদের ব্যাপারটা ঘটিয়েছিস সেটাও ও বলেছে। -দাদাদের সামনে। -হ্যাঁ, দাদা ডিটেলস জানতে চেয়েছিলো, উনি তোর গ্রহ নক্ষত্র বিচার করে বললেন। আরো বললেন তুই ধূমকেতুর মতো কামিং আঠারো মাসে আরো অনেক কাজ করবি, তারপর তুই থামবি। আমাদের শত বাধাতেও তুই থামবি না। হাসলাম। মিত্রা আমার নাকটা টিপে নাড়িয়ে দিয়ে বললো, আবার বিচ্ছু হাসি। -আমার আঠারো মাসের কাজের দিনক্ষণ ঠিক করে দিয়েছে, জ্যোতিষ মশাই। -আবার শয়তানি। -না এতো যখন বলে দিলো, এটাও বলে দিতে পারতো। -তোর কি একটুও বিশ্বাস নেই। -আমি তো বিশ্বাস অবিশ্বাসের কোনো কথা বলি নি। -তাহলে তুই এরকম বলছিস কেনো। আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে আছি। -জানিস ভদ্রলোক আর একটা কথা বলেছে। -কি। -না থাক ওটা তোকে পরে বলবো। -খারাপ না ভালো। -তোর কোনো খারাপ নেই। তোকে সাহায্য করার জন্য প্রচুর লোক বসে আছে, তুই চাইলেই পেয়ে যাবি। ঘড়িতে ঢং ঢং করে ঘন্টা বাজলো। তাকিয়ে দেখলাম, সাড়ে তিনটে। -কটা বাজলো দেখেছিস। -দেখেছি। -আর মাত্র এক ঘন্টা বাকি তারপর দরজায় কড়া নাড়বে। -থাক আর ঘুমবো না, একটু করি। -খেপেছিস। আমার দম নেই। -কাকে করেছিস। আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, চোখে হাসির রেখা। -দেখেছিস তুই কি শয়তান, কোনোদিন সত্যি কথা বলবি না। -বললে কষ্ট পাবি তাই বলি না। -একটুও কষ্ট পাবো না, বল। -ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে, তোকে। -শয়তান। আমি মিত্রাকে আরো বুকের কাছে টেনে নিলাম, ওর ঠোঁটে চুমু খেয়ে বললাম, একটু ঘুমিয়ে পর। -ভালো লাগছে না, কাল যেতে যেতে গাড়িতে ঘুমুবো। -বড়মা কিছু বলবে না, ছোটমা ছোট ছোট ভাষন দেবে। -দিক, একটু কর না। -না মন চাইছে না। -কেনো। -জানিনা আজ তোকে জড়িয়ে শুয়ে থাকতে ভালো লাগছে। -তাহলে তোর ওপর উঠে শুই। -শো। -আমার ভার বইতে পারবি। -পারবো। -আবার বলবি নাতো দেড়মনি বস্তা। -না। মিত্রা আমার ওপর উঠে এলো। আমার গলা জড়িয়ে কাঁধের কাছে মুখ রাখলো, ওর গরম নিঃশ্বাস আমার ঘাড়ে পরছে, আমার একটা হাত ওর পিঠে, একটা হাত ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। -বুবুন -উঁ। -তুই আমায় খুব ভালো বাসিস, না। আমি চুপ চাপ রইলাম। -কিরে বল। আমি চুপচাপ। আমার কাঁধ থেকে মুখ তুলে, আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখলো, চুপ করে আছিস কেনো, বলবি না। -সব ব্যাপার মুখে বলা যায় না, অনুভূতি দিয়ে বুঝতে হয়। -তোর অনুভূতিটা কোথায় এখানে, না এখানে। মিত্রা আমার বুকে হাত দিলো, আর কোমর দুলিয়ে আমার নুনুর ওপর দুবার ঘষলো। -আবার দুষ্টুমি করছিস। -বেশ করছি। তোর কিছু করার আছে।
Parent