কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3906348.html#pid3906348

🕰️ Posted on November 2, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 567 words / 3 min read

Parent
দেখতে দেখতে ১৫টা দিন যে কোথা দিয় কেটে গেল ঠিক বুঝতে পারলাম না। বড়মা এর মধ্যে দু’তিনবার ফোন করেছিলেন, ছোটমাও, অমিতাভদা রেগুলার সকালে একবার বিকেলে একবার ফোন করতেন, মল্লিকদাও, তনু মাঝে কয়েকবার ফোন করেছিল ঠিক, তবে ওর কথাবার্তা শুনে কেমন যেন একটু খটকা লাগলো। বললাম ঠিক আছে কলকাতায় গিয়ে সব শুনবো। আসার সময় আমাকে প্লেনের টিকিট ধরানো হলো। কলকাতার অফিসে আমার জরুরি দরকার আছে, তাই। এয়ারপোর্টে ঢোকার আগে বড়মার ফোন পেলাম, কন্ঠে উৎকন্ঠা আমাকে বললেন, তুই এখন কোথায়। আমি বললাম এই নামবো মিনিট পনেরর মধ্যে। -ঠিক আছে, প্রথমে একবার এ বাড়িতে আসিস। -একটু ভয় পেয় গেলাম, বললাম কেনো। -আয়না এলে জানতে পারবি। -তুমি আগে বলো, দাদার কিছু হয়েছে। -নারে বাবা না। -তাহলে। -তোর জন্য আমি ছোট সকাল থেকে রান্না চাপিয়েছি। তুই এলে একসঙ্গে খাওয়া হবে। -সত্যি কথাটা বলো, তাহলে যাবো নাহলে যাবো না, যেমন বিকেল বেলা যাই তেমন যাবো। -না তুই এখুনি আসবি। -ঠিক আছে। বুঝলাম গুরুতর একটা কিছু হয়েছে। যার জন্য বড়মা’র তলব, এয়ারপোর্টে নেমে অনেক পরিচিত মুখের দেখা পেলাম, কাজের তাগিদে এখানে প্রায় আসতে হয়, তাছাড়া সাংবাদিক মানুষ তাই একটু খাতির তো আছেই, তাছাড় কলকাতা মার্কেটে আমার পরিচিতি খুব একটা খারাপ নয়, সমীরনদা কলকাতারই এক অন্য কাগজের এয়ারপোর্ট কোরেসপন্ডেন্স, আমাকে দেখে বললো, কোথায় ছিলে বাবা কদিন দেখা সাক্ষাত হয় নি, বললাম কোথায় গেছিলাম, একটু অবাক হয়ে বললেন করেছিস কি, সম্পূর্ণটা তুই একলা করেছিস। -হ্যাঁ। -চ একটু ক্যান্টিনে যাই কফি খাব, তোর কোন তড়াহুরো নেই তো। -এই তো সবে কলকাতায় নামলাম। সমীরনদা হাসল, আমি তোর সমস্ত নিউজ গুলো পরেছি। দারুন লিখেছিস। তোর স্পেকুলেসন সব মিলে গেছে। -হ্যাঁ, আজকে রেজাল্ট। আমি তো সকালের ফ্লাইটে বেরিয়েছিলাম, দিল্লী হয়ে আসছি। সকাল থেকে কাগজটা দেখা হয় নি। -তাই। সমীরনদা ব্যাগথেকে ওদের হাউসের কাগজ আর আমাদের হাউসের কাগজটা বার করলেন, আমি ওপর ওপর একবার চোখ বোলালাম, কফি আর চিকেন পাকোরা এলো, সকাল থেকে কিছু পেটে পরে নি, খিদেও পেয়েছিল, কয়েকটা চিকেন পাকোরা গলধোকরন করে, কফি মুখে দিলাম, অমৃতের মতো লাগলো, সমীরনদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন। -তারপর কলকাতার হাল হকিকত বলো। -যেমন ছিল তেমনি আছে। তাপস এলো হাঁপাতে হাঁপাতে, -তুমি এখানে। তাপস আমাদের হাউসের একজন গাড়ির ড্রাইভার। -হ্যাঁ। -ওঃ তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে হয়রান হয়ে গেলাম। -কেনো তুই আসবি আমাকে কেউ তো বলে নি। -আমার কি আসার ঠিক ছিলো, এই তো ঘন্টা খানেক আগে বললো। -ও। -কেনো কি হয়েছে। -তোমাকে অফিসে ফেলেই আবার রাইটার্সে যেতে হবে। -আমি তো এখন অফিসে যাবো না। -যা বাবা, সুনীতদা বললো তোমাকে নিয়ে অফিসে যেতে। -দাদা কোথায়। -দাদাতো কয়েকদিন হলো অফিসে আসছে না। -মল্লিকদা। -মল্লিকদাও আসছেন না। আমি তাপসের দিকে তাকালাম। সমীরনদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছু পরার চেষ্টা করছে। -ও। ঠিক আছে, তুমি কফি খাবে। -না। -গাড়ি কোথায় রেখেছো। -পার্কিংয়ে। -ঠিক আছে তুমি যাও আমি আসছি। বুঝলাম কিছু একটা গড়বড় হয়েছে নাহলে কাগজের দুই স্তম্ভ নেই, কাগজ বেরিয়ে যাচ্ছে। আমার একটু অবাক লাগলো। ঘরের কথা বাইরে প্রকাশ করতে নেই, সমীরনদা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। কিছু একটা বোঝার চেষ্টা করছে। সমীরনদা ওর হাউসে একটা ভাল জায়গায় আছে। -কি রে কি ভাবছিস। -না এমন কিছু নয়। পনেরো দিন ছিলাম না। -হ্যাঁ তোদের হাউসে বেশ গন্ডগোল চলছে। -তাই। সে তো আমাদের হাউসে লবি বাজি আছেই। ঠিক আছে দাদ , আজ আসি কাল দেখা হবে। সমীরনদার কাছে বিদায় নিয়ে লাউঞ্জ পেরিয়ে গেটের বাইরে এলাম, তাপস আমার জন্য অপেক্ষা করছিল। -কি ঠিক করলে। -আরে অফিস গাড়ি পাঠিয়ছে। আগে অফিসে যাই তারপর দেখা যাবে। মনে হচ্ছে ঝড়ের একটা পূর্বাভাস দেখতে পাচ্ছি। তাপস আমাকে অফিসে লিফ্ট করেই ওর কাজে চলে গেল। আমি আমার লাগেজটা রিসেপসন কাউন্টারে রেখে সোজা লিফ্টের কাছে চলে এলাম, সবাই কেমন ইতি উতি তাকাচ্ছে। ভারি অবাক লাগলো।
Parent