কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৪১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4704870.html#pid4704870

🕰️ Posted on March 1, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 935 words / 4 min read

Parent
নদী বাঁধ ধরে কিছু দূর যাওয়ার পর পদ্মপুকুর পরে। -বুবুন এদিকটা তো নদী, এদিকের এই ফাঁকা মাঠটা। -বিকেল বেলা যে বিলটার ওপর দিয়ে পীরবাবার থানে গেছিলাম, এটা তার শেষপ্রান্ত। -এত বড়ো। -এই বিলটার চারদিকে পাঁচটা গ্রাম। তার মধ্যে আমাদের একটা গ্রাম। -এই বিলটা কাদের। -খাস। -খাস মানে। -কারুর নয় সকলের অধিকার আছে। -এরকম হয় নাকি। -শহরে হয় না, গ্রামে হয়। দাঁড়া এখানে। ওদিকটা ভালো করে দেখিস কেউ আসছে কিনা। -কেনো পটি করবি? -ছাগল। এটা ধর। -তুই এই পেঁপে ডালটা নিয়ে কি করবি বলতো, তখন থেকে সঙ্গে রেখেছিস। -এত কথা বলিস কেনো। আমি বাঁধ থেকে নেমে গেলাম, ওদিক থেকে কেউ এলে ইচ্ছে করে কাশবি। -কেনো? -যা বলছি করবি। -ঠিক আছে। আমি খেঁজুর গাছটার কাছে এলাম, পেছন ফিরে দেখলাম বাঁধের ওপর মিত্রা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আমার দিকে দেখছে, আমি চাদরটা গা থেকে খুলে কোমরে বেঁধে নিলাম। জুতোটা খুলে তর তর করে গাছে উঠে পরলাম। ছোট হাঁড়ি নামাতে অসুবিধা হলো না। নামিয়ে নিয়ে মিত্রার কাছে এলাম। মিত্রা মিটি মিটি হাসছে। তুই চুরি করলি। -কে গো আমার সাধু পুরুষ। আমি মাটিতে হাঁড়িটা রেখে, পেঁপের ডালটা দু টুকরো করলাম -পারলে খা, এখুনি এটা আবার ঝুলিয়ে রেখে আসতে হবে। আমি পেঁপের নলটা হাঁড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে নিস্তব্ধে চোঁ চোঁ টানতে আরম্ভ করলাম, মিত্রা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দেখলো, তারপর পেঁপের নলটা ঢুকিয়ে টানতে আরম্ভ করলো, আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো, চোখের ইশারায় বললো দারুণ। আমি ওকে ইশারা করে বললাম যতটা পারিস তাড়াতাড়ি খেয়ে নে। বেশি দেরি করা যাবে না। ও অনেকটা খেলো আমিও খেলাম। আবার ছুটে গিয়ে হাঁড়িটা যথাস্থানে রেখে এলাম। -কিরকম খেলি বল। -দারুণ। -এবার একটু নেচে নে। -কেনো? -নিচের দিকে নেমে যাবে। তাহলে হাঁটতে অসুবিধা হবে না। -ধ্যাত। -পেটটা নাড়া, দেখ ঘট ঘট আওয়াজ হবে। ও আমার কথা মতো নাড়ালো সত্যি খালি পেটে পেট পুরে জল খেলে যেমন আওয়াজ হয় তেমন হলো। ও হো হো হো করে হেসে ফেললো। -একটু নাচি। -নাচনা কে দেখবে আমি ছাড়া। ও একটু ধেই তা ধেই করে নাচলো। -কিরে একটু ভালো লাগছে। -হ্যাঁ। এক নিঃশ্বাসে তখন যেভাবে খেয়েছিলাম, যেনো গলার কাছে চলে এসেছিলো, পেটে আর জায়গা ছিলো না। -কিরে এখনো ভোর হচ্ছে না কেনো। অনেকক্ষণ হলো। -তুই ঘড়ি দেখে বেরিয়েছিলি। -হ্যাঁ। মিটসেফের ওপর তোর ঘড়িটা দেখে বেরিয়েছি। মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো। -হাসছিস কেনো। -ওটা বন্ধ রে গাধা। -সব্বনাশ। আমি পৌনে পাঁচটা দেখে বেরোলাম। -ওটা গত কালের টাইম। -মোবাইল নিয়ে আসিস নি। -দূর। তুই? -আমিও রেখে এসেছি। -ধুস। এখন কটা বাজে বলতো। -দাঁড়া শুকতারা উঠেছে নাকি দেখি। আকাশের দিকে তাকালাম, হ্যাঁ উঠেছে, মিত্রা দেখতে চাইলো ওকে দেখালাম, বেশি দেরি নেই এবার ভোর হবে। -কি করে বুঝলি। -শুকতারাটার পজিশন দেখে। -আমাকে বুঝিয়ে দে। -বুঝতে গেলে ঘিলু লাগে। -বুবুনরে! -বল পটি পেয়েছে! -সত্যি -আমি জানতাম, কুত্তার পেটে ঘি সইবে না। -তুই আমাকে কুকুর বললি। -না তা নয়, খাঁটি জিনিষ তো তোর হজম হবে না। জল মিশিয়ে দিলে, ঠিক ছিলো। -তুই আগে বল কোথায় করবো। -নদী সামনে আছে, নীচের দিকে নেমে যা আমি ওদিকে ফিরে আছি। -জামাকাপড় খুলে! -না ওপরটা খুলতে হবে না, নিচটা খুলে যা। -প্যান্টিটা। -আবার প্যান্টিও পরে এসেছিস। কে দেখবেরে তোকে এই অন্ধকারে। -নে খুলে যা আমি এখানে বসছি, কাশলে উঠে দাঁড়াবি। -আচ্ছা। মিত্রা কামিজটা খুলে ফেললো -প্যান্টিটা পরে যাই ওখানে সামনে খুলে রাখবো। -যা পারিস কর। ও নদীর চড়ায় নেমে গেলো। আমি একবার পেছন ফিরে তাকালাম, হ্যাঁ ঠিক ঠিক যাচ্ছে, ঠিক মতো বেগ পেলে ভূতের ভয়, মানুষের ভয়, শেয়ালের ভয় সব চলে যায়। লোভী। কতটা রস চোঁ চা করে খেলো, পটি পাবে নাতো কি হবে। সিগারেটের প্যাকেটটাও নিয়ে এলাম না। এই সময় একটা সিগারেট খাওয়া যেতো। বসে বসে আমি মাটির ঢেলা ছুঁড়তে আরম্ভ করলাম। পূবদিকের আকাশটা সামান্য ফরসা হয়েছে। -বুবুন। ফিরে তাকালাম। -হাত ধোবো কি করে। মিত্রা ওখান থেকে চেঁচালো। -নদীর কাদা মাটি নিয়ে হাতে ঘষে নে, মনে কর ওইটা ডাভ সাবান। ও কিছু একটা বললো, আমার কাছে এসে পৌঁছলো না, বুঝলাম গজ গজ করছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি, নীচু হয়ে হাত ধুলো, জলশৌচ মনে হয় হয়ে গেছে। হাত ধুয়ে পা ধুলো, পা ঝাড়ছে, বুঝলাম পায়ে কাদা লেগেছে। আমি হাসছি। ঠেলার নাম বাবাজীবন। ধীরে ধীরে উঠে এলো, হাতে প্যান্টি। আমি হাসছি। -হাসিসনা। -কিরে ওটা পরিসনি। -ভিঁজে আছে না, আগে তোর পাঞ্জাবীটা দিয়ে মুছি। -কেনো তোর ওতো বড়ো ঝুল জামাটা। -পেছনটা ভিঁজে গেছে। -ঠিকমতো ধুয়েছিস তো। না দেখতে হবে। -ধ্যাত। আমার কাছে এসে সত্যি সত্যি পাঞ্জাবী দিয়ে পাছু মুছলো, দিলাম এক চিমটি। -উ। হাসছি। -আমাকে ধর। -কেনো? -পরতে গিয়ে যদি উল্টে যাই। আমি ওকে ধরলাম। ও প্যান্টিটা পরলো, কামিজটা পরলো মিটি মিটি হাসছে। -হাসছিস কেনো? -কি আরাম। -নতুন জায়গা ঘুরলি আবার খাজনাও দিয়ে গেলি। -যাঃ অসভ্য কোথাকার। দেবো না একটা ঘুসি। মিত্রা কিল তুললো। আমি হাসছি। -ওই দেখ সানরাইজ। দূরে আকাশটা যেখানে ঝুপ করে নীচু হয়ে মাটির সঙ্গে মিশেছে, সেখান থেকে কমলা রংয়ের গোল বলটা উঁকি মেরে আমাদের দেখলো। -ইস মোবাইলটা থাকলে তোলা যেতো। -আর একদিন এসে তুলিস। চল, সামনে পদ্মপুকুর, কতো পদ্ম ফুটে আছে দেখবি। আমি মিত্রা বাঁধের রাস্তা ধরে হাঁটতে আরম্ভ করলাম। গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে আমরা হেঁটে চলেছি। সামনে একজনকে আসতে দেখছি, কাছাকাছি আসতেই বললো -কে গো অনিনা? আমি মুখের দিকে তাকালাম, ঠিক চিনতে পারছি না। -কাল তোমার বাড়িতে গেছিলাম, তোমার দেখা পেলাম না, জেলা সভাধিপতিকে একটা প্রণাম করলাম। আমি মুখের দিকে তাকিয়ে আছি ঠিক চিনতে পারছি না। -আমি রামপুরার শশধর শাসমল, তোমাদের ক্ষেতটা ভাগে চাষ করি, তুমি দেখেছো, মনে করতে পারছ না, মনা মাস্টার জানে। -তুমি এত সকালে কোথায় যাচ্ছ? -কয়েকটা গাছে রস দিয়েছি নামাতে যাচ্ছি। -কোথায় গো! -ওই নদী ধারে। মিত্রা আমার হাতটা চেপে ধরলো। আমিও ওর হাতটা চেপে ধরে উত্তর দিলাম। -বাবা পারোও বটে তোমরা। পারলে একটু রস খাইও। -হ্যাঁ গাছ থেকে পেরে নিয়ে তোমার ঘরেই যাবো, জেলা সভাধিপতি খেতে চাইলেন। -যাও। আমরা এগিয়ে গেলাম, মিত্রা একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে আর রাখতে পারলো না, হো হো করে হেসে ফেললো। -বুবুনরে তুই সত্যি কত ছলনা করতে পারিস। -চুপ কর। শুনতে পেলে খারাপ ভাববে। -দাঁড়া আজ গিয়ে তোর হচ্ছে। বড়মার ভালো ছেলে। -কোনোদিন নিয়ে আসবো না। -আচ্ছা আচ্ছা, বলবো না। -মনে থাকে যেনো।
Parent