কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৪৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4711827.html#pid4711827

🕰️ Posted on March 10, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1967 words / 9 min read

Parent
আমি ঘরের বাইরে বেরিয়ে এলাম। আসার সময় মিত্রাকে বললাম টাওয়েলটা নিয়ে আসিস। মিত্রা তখন একটা ঠ্যাং মুখে তুলেছে। আমি ওর দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললাম। বাথরুম থেকে বেরিয়ে দেখলাম মিত্রা ঘাটের ধারে দাঁড়িয়ে আছে। ওর কাঁধে টাওয়েলটা। গাছের দিকে মাথা তুলে তাকিয়ে আছে। আমি পা টিপে টিপে ওর পেছনে এসে দাঁড়ালাম। ওর মতো মাথা তুলে তাকালাম। দেখলাম একটা টিয়া পাখি আর একটা টিয়া পাখির ঠোঁটে ঠোঁট রেখে টানাটানি করছে। মাঝে মাঝে একটা ট্যাঁও ট্যাঁও করে উঠছে। মিত্রা একদৃষ্টে ওইদিকে তাকিয়ে আছে। আমিও ওর পেছনে। পাখিদুটো হঠাৎ উড়ে গেলো। মিত্রা আপন মনে বলে উঠলো। যাঃ। ঘুরতে গিয়ে আমার গায়ে আছাড় খেয়ে পরলো। আমাকে জাপ্টে ধরলো। ফিক করে হেসে বুকে মুখ রাখলো। -দিলি তো ছুঁয়ে। -কেনো। -আমি পটি করে এসেছি। চল স্নান করবি আমার সঙ্গে। -এখন। -হ্যাঁ। -চল কি মজা হবে। ও ছুটে চলে গেলো। নীপাকে ডেকে জামাকাপড় আনতে বললো। আমি ততক্ষণে জলে নেমে গেছি। নীপা জামাকাপড় দিয়ে গেলো। বাঁকা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো। যতো দুষ্টু বুদ্ধি, দাঁড়াও বড়মাকে ডাকছি। নীপা চলে গেলো। মিত্রা নেমে এলো। -কাপড়টা কোমরে ভালো করে বেঁধে নে না হলে পায়ে জড়িয়ে যাবে। -তুই বেঁধে দিয়ে যা। আমি উঠে এসে ভালো করে পেঁচিয়ে বেঁধে দিলাম। দুজনে নেমে গেলাম জলে। সাঁতার কাটছি। -জানিস বুবুন এখানকার জলটা বেশ ভারি। আমাদের ক্লাবের সুইমিং পুলের জলটা হাল্কা। -ওটা পিউরিফায়েড ওয়াটার। এটা বাঁশবাগানের পাতা পরা জল। -অনেকদিন পর সাঁতার কাটছি। নীপাটা কিছুতেই জলে নামতে দেয় না। -তোকে ভয় পায়। -যাঃ। চল ওপারে যাই। -দম আছে। -তুই আছিস তো। এক্সপার্ট। হাসলাম। -হাসিসনা। -ওপারে কিন্তু দাঁড়ানো যাবে না। প্রচুর পাঁক। -ঠিক আছে। দুজনে ওপারে সাঁতরে চলে গেলাম। ফিরে তাকাতেই দেখি ছোটমা, বড়মা, নীপা, ইসলাম ভাই দাঁড়িয়ে আছে। -ওরে ফিরে আয় ঠান্ডা লাগবে। মিত্রা বড়মার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়লো। -কিরে ফিরে যেতে পারবি। না পিঠে উঠবি। -চল যতটা যাওয়া যায়। তারপর তোর পিঠে উঠে যাবো। আমরা সাঁতরাতে আরম্ভ করলাম। মাঝ পথে এসে সত্যি মিত্রা হাঁপিয়ে গেলো। -বুবুনরে এখানে কি গভীর টানতে পারছি না। -আমার গলাটা জড়িয়ে ধরে ভেসে থাক। দুজনে পারে উঠলাম। বড়মা হাসছে। -তুই সাঁতার কাটতে জানিস। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললো। -বুবুন ছিলো তাই নামলাম। নীপাটা নামতে দেয় না। -ঠিক আছে কালকে তুই নামিস। আমি থাকবো। আমি মিত্রার কোমরের দিকে তাকালাম। চকচক করছে কোমরাটা। আমি হাত দিতেই ও সরে দাঁড়ালো। -দাঁড়া দাঁড়া একটা জিনিস দেখাচ্ছি। নীপা দৌড়ে নিচে নেমে এসেছে ও বুঝতে পেরেছে। -তুমি নেবে না আমি নেবো। মিত্রা বুঝতে পারেনি। ও চেঁচিয়ে উঠলো কি বলবিতো। -দেখনা। নীপা মিত্রার কোমরে জড়ানো কাপড়টা থেকে একটা চারাপোনা বার করলো। -মাছ। মিত্রার চোখ চকচক করে উঠলো। -তুই সাঁতার কাটলি আবার কোঁচরে করে মাছও ধরে আনলি। এবার নীপা মিত্রা দুজনে লেগে পরলো। আমি স্নান সেরে উঠে এলাম। বড়মার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে বললাম। দুজনকে বলেছো ব্যাপারটা। বড়মা ইশারায় জানালো হ্যাঁ। ছোটমা মুচকি হাসছে। -হেসো না হেসো না, মেঘ গর্জন করে আবার বর্ষায়। -বুবুন এই দেখ। মিত্রা মাছটা ধরে রয়েছে। মাছটা ওর হাতের মধ্যে ছটফট করছে। -ছেড়ে দে। -উঁ। ভেজে খাবো। ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম। আজকে অনেকে এসেছে। বাঁশবাগানে জোর খাওয়া চলছে। চিকনারা অনেককে বসিয়ে দিয়েছে। আমি ওখানে একবার গেলাম। চিকনা এগিয়ে এলো। -গুরু সব ঠিক আছে। -এতো বিরাট আয়োজন। -মুন্নাভাই বলেছে টাকার জন্য কার্পণ্য করবে না। যা লাগবে নিয়ে এসো। সবাইকে পেট পুরে খাওয়াও। -মেনু কে ঠিক করেছে। -মুন্নাভাই দুটো আইটেম বলেছে। বাকি অনাদি বাসু। তোর জিলিপি আছে, ভাজা হচ্ছে। পইড়্যা ঘরের বুড়ো এসেছে। -যাই একবার দেখে আসি। আমি রান্নাঘরে এলাম। এবাড়ির রান্নাঘরটা মনে হয় অনেক দিন পর ব্যাবহার হলো। বাসু অনাদি পইড়্যা ঘরের বুড়োকে ইনস্ট্রাকসন দিচ্ছে সাইজ কত বড়ো হবে। আমি যেতে হেসে ফেললো। -তোর এতোক্ষণে সময় হলো। -আমার জন্য কি কিছু আটকে আছে। অনাদি হেসে ফেললো। -সিগারেট খাবি। -খিদে লেগেছে খেয়ে নিই। -একটা কাজ করবি অনাদি। -বল। আমি পইড়্যা ঘরের বুড়োর কাছে গিয়ে বসলাম। -কাকা। -বল। -তোমার তাবার মতো সাইজের পাঁচটা জিলিপি ভাজতে পারবে। -তুই বললে ভেজে দেবো। -তুমি ভাজো। অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বাসু হাসছে। -বুঝেছি তুই কি করবি। -পাঁচটা কেনো গোটা দশেক ভেজে নিই। -আবার মাখতে হবে। -দূর ও নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। -সঞ্জুকে দেখতে পাচ্ছিনা। -ও জেনারেটরটা একবার দেখতে গেছে। -এতো মেলা লোক দেখছি। পরিবেশন করবে কে। গামছাটা কোমরে বাঁধি। -তুই আর জালাস না বড়মা আস্ত রাখবে না। হাসলাম। -মিত্রাকে একবার ডাক কি করে জিলিপি ভাজা হয় দেখে যাক। -না। এসে ঝামেলা করবে। -বুবুন তুই এখানে! বাসু হাসছে। অনাদি মুখ ভ্যাটকালো। চিকনা মিত্রার পেছনে দাঁড়িয়ে হাসছে। -একটা দে। -অনাদি এই ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে। ওকে বল। -ও দেবে না। সকাল থেকে আমার ওপর গরম। মিত্রার কথা বলার ঢঙে অনাদি হেসে ফেললো। -কাকা দুটো দাওতো। দিই। নাহলে মাথার পোকা বার করে দেবে। মিত্রা হাসছে। -হেবি মাঞ্জা লাগিয়েছিস। -ছোটমার কাপড়। আমি ভাঙলাম। জিলিপি কামরেই বললো। মাত্র দুটো। -বেশি খেলে খেতে পারবি না। -ঠিক আছে। হিসেব করে খেতে হবে। বাসু হাসছে। অনাদি ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে হাসছে। -তাড়াতারি সার। বিকেলে নিরঞ্জনদা প্রোগ্রাম করেছে। -কোথায় রে। -চল দেখবি। -উনা মাস্টার তোকে একবার ডাকছে। চিকনা এসে বললো। অনাদি বললো কোথায়। -ও বাড়িতে। তিন মাস্টার বসেছে। -কে কে। -উনা, পোকা, মনা। -আরি ব্যাস। চল চল স্যারকে একবার পেন্নাম ঠুকে আসি। বাসু অনাদি আমি মিত্রা চিকনা এ বাড়িতে এলাম। বারান্দায় সবাইকে সারিবদ্ধভাবে বসে থাকতে দেখলাম। বড়মা জমিয়ে গল্প করছে। আমায় দেখেই বললো আয়। তোর উনা মাস্টারের সঙ্গে গল্প করছি। তোর গুণের কথা বলছে। আমি মাথা নীচু করলাম। সবাইকে একধারসে পেন্নাম ঠুকতে আরম্ভ করলাম। আমার পেছনে লাইন দিয়ে ওরা সবাই। উনা মাস্টার, পোকা মাস্টার আমার মিত্রার মাথায় ঠোঁট ছোঁয়ালেন। মিত্রা এতদিন গল্প শুনেছে। দেখে নি। ও অবাক হয়ে দেখছিলো। তারপর উনা মাস্টারের দিকে তাকিয়ে বললো। তুমি ওকে মারতে কেনো। -দালানশুদ্ধ সব লোক ওর কথা বলার ঢঙে হো হো করে হেসে ফেললো। উনা মাস্টার মিত্রাকে কাছে ডেকে নিয়ে ওর গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। বৃদ্ধের হাত থর থর করে কাঁপছে। -ওকে যদি না মারতাম মা তুমি পেতে কেমন করে। ও যে বয়ে যেতো। মিত্রা মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে। -তোমায় কথা দিচ্ছি ওকে আর কোনদিন মারবো না। মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো। -তুমি মারবে কি করে ও এখন বড় হয়ে গেছে। -ঠিক বলেছো। এবার আমার হয়ে তুমি ওকে মারবে। -দেখেছিস বুবুন স্যার অর্ডার দিয়েছে। মনে রাখিস। বড়মা নিরঞ্জনদা ইসলাম ভাই ছোটমা সবাই হাসছে। -যাও বেলা হলো খেয়ে নাও। -তোমরা খাবে না। -আমরা এ বাড়িতে তোমরা ও বাড়িতে। আমি স্যারের কাছ গেলাম। আস্তে করে বললাম আপনি খেয়ে নিন কিছু কথা আছে। -আমি সন্ধ্যা পর্যন্ত আছি। এক ফাঁকে বলিস। সবাই হৈ হৈ করে খেতে বসলাম। আজ মিত্রা আমার পাশে বড়মা আর এক পাশে তারপাশে ছোটমা। সবাই সারিবদ্ধভাবে বসেছি। কাঞ্চন, লতা, চিকনা পরিবেশন করছে ওরা আগে খেয়ে নিয়েছে। সঙ্গে নীপার তিন-চারজন বন্ধু আছে। বুঝলাম সবার আজ লক্ষ্য মিত্রা। সবাই টেরিয়ে টেরিয়ে মিত্রাকে দেখছে। ওকে আজ দেখতেও বেশ সুন্দর লাগছে। প্রথমে ফ্রাইড রাইস পরলো তারপর মাছের চপ তারপর মাংস চলে এলো। এইবার মিত্রার খেলা শুরু হয়ে গেলো। -কিরে তুই কম কম নিচ্ছিস। ওর দিকে তাকালাম। মুচকি হাসলাম। -বড়মা, কিছু ফন্দি এঁটেছে না। -তুইতো ছিলি ওর সঙ্গে সারাক্ষণ, তোকে কিছু বলে নি। -আমাকে বলে! -তাহলে। -আমিও কম কম নিই। -ঠকে যাবি। আমি বললাম। -ঠকলে ঠকবো। তুই কম খাবি আমিও কম খাবো। -রাতে পাবি না। -হুঁ চিকনাকে বলবো রেখে দিতে, বাকিটা রাতে খাবো। -রাতে অন্য মেনু। ইসলাম ভাই হাসছে। -নারে। অনি মিথ্যে বলছে। তুই খা। বিরিয়ানিটা কেমন হয়েছে বল? -দারুণ। অনি নেয়নি দেখেছো। খালি ছুঁয়েছে। -ও খানেওয়ালা লোক নয়। তুই খেতে পারিস। তোর জন্যই বানালাম। শেষে দই মিষ্টি এলো। ওদের সবাইকে মিষ্টি দই দিলো। আমাকে চিকনা একটা টক দই-এর হাঁড়ি বসিয়ে দিয়ে গেলো। -তাই বলি তুই কম কম খাচ্ছিস কেনো। আমাকে পেট পুরে খাইয়ে দিয়ে তুই এখন দই-এর হাঁড়িতে চুমুক দিবি। তোকে খেতে দেবো না। ওটা রাতের জন্য থাকবে। সবাই খাবো। -ঠিক আছে চিকনা। দই খাবো না। জিলিপিটা নিয়ে আয়। চিকনা জিলিপি নিয়ে এলো। কড়ার সাইজের এক একটা জিলিপি। বড়মা দেখে চোখ কপালে তুলেছে। নিরঞ্জনদা ইসলাম ভাই হাসছে। -ও বড়মা তুমি কিছু বলতে পারছো না সব একদিনে খাইয়ে দিলে হবে কি করে। বড়মা হাসবে না কাঁদবে এমন ভাবে মুখ করে রয়েছে। -নিরঞ্জনকে বল। -ও নিরঞ্জনদা তুমি কিছু বলতে পারছো না। নিরঞ্জনদা পাতের দিকে মুখ করে ফিক ফিক করে হাসছে। -দশটা জিলিপি আছে। নিরঞ্জনদার একটা বড়মা ছোটমার একটা করে মুন্নাভাই ভজুর একটা করে। বাকি সব তোর। বড়মা বললো আমি পুররো খেতে পারব না। ছোটমা একই কথা বললো। -ছোটমা বড়মার ভাগ আমার। বল এবার দই না জিলিপি। -দুটোই খাবো। চেঁচিয়ে উঠলো। চিকনা জিলিপিগুল রেখে দাও রাতে খাবো। ছোটমার হাফ আমার বড়মার হাফ তোর। -রাখা যাবে না। একটু নেচে নে। সবাই হো হো করে হেসে ফেললো। -তুমি কিছু বলতে পারছো না। বড়মার দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো। বড়মা আমার কান ধরে বললো তুই এতো বদমাশ কেনো। ওর পেছনে না লাগলে তোর ভাত হজম হয় না। সবাই হাসছে। -মনে রাখিস তোলা রইলো। এর শোধ আমি নেবো। -সে তুই নিস আগে দই-এর হাঁড়িটা দে। চুমুক দিয়ে খেতে হবে। -খাবো। বাধ্য হয়ে চিকনাকে বললাম যা গ্লাস নিয়ে আয়। চিকনা দে ছুট। মিত্রা হাসছে, কিরকম দিলুম বল। আমি একটু হেলে কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বললাম দেওয়াচ্ছি দাঁড়া। বড়মা শুনতে পেয়ে গেছে। মুচকি মুচকি হাসছে। ছোটমা আমারা কান ধরে সোজা করলো। বড়মা চেঁচিয়ে উঠলো ও ছোট ছার আমি একবার ধরেছি। চিকনা গ্লাস নিয়ে এলো। আমি ওকে বললাম। সবাইকে দে। বাকিটা মিত্রাকে দে ও খাবে। -ওমনি তোর রাগ হয়ে গেলো। যা খাবো না। -তোকে নিয়ে বড় বিপদ তুই খানা। যতটা পারবি খা তারপর আমি খাবো। -তুই খা তোরপর আমি খাবো। -পাবিনা। -দেখছো বড়মা কেমন করে। ছোটমা হাসছে মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি দই-এর হাঁড়ি তুলে চুমুক দিলাম। মিত্রার দিকে তাকাচ্ছি। ও আমাকে একদৃষ্টে দেখছে। ওর তাকানোতে হাসি পেয়ে গেলো। আমি কোন প্রকারে ঢোক গিলে হাঁড়ি নামিয়ে রেখে হেসে ফেললাম। -তুই ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থেকে কি দেখছিলি। -তুই আর একবার খা। -না তুই খা। -আমি ওই ভাবে পারবো না। -ডাব খাস না। -ওতো স্ট্র দিয়ে খাই। -এখানে স্ট্র পাবি কোথায়। -দে, চুমুক দিই। মিত্রা হাঁড়ি মুখে তুললো। বেশি খেতে পারলো না। নামিয়ে রেখে বললো। মুখটা কেমন করলো। পেট আঁই ঢাই করছে। তুই খা। -জিলিপি। -রাতে খাবো। -মিষ্টি। -রাতে খাবো। -কিরে শরীর গন্ডগোল করছে নাকি। -না। -উঠে পর। আমি ওকে ধরে তুললাম। ছোটমা বড়মার মুখ শুকিয়ে গেছে। বুঝেছে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমি ওকে নিয়ে বাড়ির ভেতরে গেলাম। মুখ ধুইয়ে ওপরের খাটে শোয়ালাম। -নে পেটের কাপড়টা ঢিলে করে দে। ও কাপড়টা ঢিলে করে দিলো। -ভেতরে কিছু পরা আছে। -ও ফিক করে হেসে মাথা দোলালো। তোকে এখানে কে দেখবে রে। খোল। মিত্রা খুলে দিলো। আমি আলনায় আমার পাঞ্জাবীর তলায় রাখলাম। টান টান হয়ে শো। সায়ার দড়িটা ঢিলে কর। -এবার বল বুকের ব্লাউজটা ঢিলে করতে। -এখুনি ওরা এসে হাজির হবে। -আমার কিছু হয় নি। -তখন মুখ ভেটকাচ্ছিলি কেনো। -বমি পাচ্ছিল। -লোভী। -তুই ওরকম বলিসনা। -তুই ওকে লোভী বলছিস কেনো। ছোটমা ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভেতরে এলো। পেছন পেছন সবাই। ঘর ভরে গেলো। বড়মা গিয়ে মিত্রার মাথার শিয়রে বসলো। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। -কি হয়েছিলো রে হঠাৎ। -গা গোলাচ্ছিলো। আমি ছোটমার দিকে তাকালাম। -কার্মোজাইম? -হ্যাঁ, নিয়ে এসেছো। নীপা ছুট লাগালো। -সকাল থেকে খালি খেয়ে যাচ্ছে। -তুই রাগ করছিস কেনো। না খেলে মানুষ বাঁচে। বড়মা আর ঠিক থাকতে পারলো না। ফিক করে হেসে ফেললো। নিরঞ্জনদা ইসলাম ভাই হাসছে। -রাতে খাওয়া বন্ধ। -ও বড়মা ওকে বলনা। -ঠিক আছে একটু শো। -এখন বমিভাবটা কমেছে -দইটা খেতে গেলি কেনো। -তুই খেলি কেনো। -আমার পেট আর তোর পেট। -কুত্তার পেটে ঘি সয়না বল। -এদিকে তো টনটনে জ্ঞান আছে। সবাই আমাদের তরজা গানে হাসছে। -তুই চুপ কর। ছোটমা বললো। -আমি কাল সকালে কলকাতা যাব। এখানে ঠিক করে থাকবি। আমায় যদি কাজ ফেলে আসতে হয়। দেখবি মজা। -আর খাবই না। সবাই মুখ টিপে হাসছে। নিরঞ্জনদা বললো যাওয়ার ব্যাপারটা তাহলে কি করবি। -চলো যাবো। ও থাকবে। শরীর খারাপ। পরে পরে ঘুমুবে। মিত্রা তড়াক করে উঠে বসলো। -না না আমি ঠিক হয়ে গেছি যেতে পারবো। আমি ওর দিকে কট কট করে তাকালাম। -আমি তোর সঙ্গে যাবো না। বড়মার সঙ্গে যাবো। বড়মা মুখ টিপে হাসছে। নীপা ওষুধ নিয়ে এলো মিত্রা খেলো। আবার শুয়ে পরলো। ঘন্টাখানেক বাদে আমরা দুটো গাড়ি করে সবাই রওনা হলাম। আমাদের সঙ্গে এক্সট্রা বলতে বাসু, চিকনা, অনাদি, সঞ্জু গেলো। আমি এর মধ্যে সঞ্জুর ব্যাপারটা নিয়ে উনা মাস্টারের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছি। উনি আমাকে না বলেন নি। বলেছেন তোর মাসীমার সঙ্গে কথা বলে তোকে জানাবো। কাকা বরং বলেছেন অনি যখন আছে তুমি নিশ্চিন্ত হতে পারো। ও বেগড়বাই করবে না। খবরটা চিকনার কান হয়ে সঞ্জুর কাছে পৌঁছে গেছে। অনাদি বাসু দুজনেই খুশি। জায়গাটা দেখলাম। সবাই খুশী জায়গাটা দেখে। আমি নিরঞ্জনদাকে বললাম। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্যবস্থা করো। আমি দাদাকে বুধবার নিয়ে আসছি। এখানে তিনদিন রাখবো। তুমি কাল চলে যাও বুধবার একবারে রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে আসবে। ওখান থেকে বাড়ি।
Parent