কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3907229.html#pid3907229

🕰️ Posted on November 2, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 519 words / 2 min read

Parent
আমি ওপরে এসে সোজা নিউজ রুমে চলে গেলাম। সন্দীপনের সঙ্গে দেখা হলো। -কখন এলি। -এইতো এই মাত্র। -শুনেছিস কিছু। -কি বলতো। -অফিসের হাল চাল। -না। কথা বলতে বলতে নিজের টেবিলে এলাম। মল্লিকদার চেয়ারটা ফাঁকা পরে আছে। অপজিটের চেয়ারে কয়েকজন নতুন ছেলে মেয়েকে দেখলাম। দুএকটা ভাল চামকিও চোখে পরলো। আমি আমার টেবিলে গিয়ে বসলাম, সন্দীপ আমার পাশে বসলো। টেবিলের ওপর রাশিকৃত চিঠি। নিউজরুম এখন বেশ হাল্কা, অনেকে এসে এখনো পৌঁছায় নি। সন্দীপ আমার দিকে তাকিয়ে বসেছিল, আমি চিঠিগুলো একবার দেখলাম। কয়েকটা চিঠি পরিচিত জনের বাকিগুলি আমার লেখার ওপর, এগুলো চিঠিপত্র বিভাগে পাঠিয়ে দিতে হবে। আমি সন্দীপের দিকে তাকালাম। সন্দীপ বললো চল একটু ক্যান্টিনে যাই। -চল। আমি আর সন্দীপ ক্যান্টিনে এলাম। বটাদাকে ডেকে ডিম টোস্ট আর চায়ের কথা বললাম। সন্দীপের দিকে তাকিয়ে বললাম, হ্যাঁ বল, কি বলছিলি। -আমার চাকরিটা মনে হয় গেলো। -কেনো। -তুই কিছুই জানিস না। -না। -দাদা তোকে কিছু বলে নি। -না। -তুই কলকাতায় কবে এসেছিস। -ঘন্টাখানেক হবে। তাপস গেছিল আনতে বললো, সুনীতদা অফিসে আসতে বলেছে। -ও। -কেনোরে। -যা তাহলে সব জানতে পারবি। -কেন কি হয়েছে বলনা। -ফোনটা বেজে উঠলো। বড়মার ফোন। হ্যালো বলতেই অমিতাভদার গলা পেলাম, মাথা ঠান্ডা রাখিস। -তুমি, বড়মা কোথায়। -বড়মা রান্নাঘরে। -তোমার ফোন কোথায়। -ব্যবহার করছি না। -ও। -তা হঠাত মাথা ঠান্ডা রাখব কেন। -সন্দীপ আছে শুনে নে। -অফিসে আসনি কেনো। -সে অনেক কথা। -আমি এখানে এটা কে বললো। -খবর এলো। -বাবাঃ নেটওয়ার্কিংতো বেশ ভালো, তাহলে এই অবস্থা কেনো। -কপাল। -সাংবাদিকতা করতে করতে চুল পাকিয়ে ফেললে, এখন এই কথা বললে হবে। -সে তুই যা বলিস। -মল্লিকদা কোথায়। -বাড়িতে। তুই কখন আসছিস। -দেখি , কাজ শেষ হলেই চলে যাব। ফোনটা পকেটে রাখলাম। হ্যাঁ কি বলছিলি। -আমার চাকরিটা মনে হয় যাবে। -কেনো। -সুনীতদা এখন পাওয়ারে। তাতে কি হয়েছে। -তুই সত্যি একটা গান্ডু। -হেসে ফেললাম। -হাসিস না। তোর ঐ হাসিটা দেখলে গা জলে যায়। -আচ্ছা আচ্ছা হাসবনা। -তোর চাকরিটা থাকবে। -যাক তাহলে রক্ষে। -অমিতাভদা এবং মল্লিকদাকে এখন ছুটিতে। যেতে বলা হয়েছে। -তাই। এককেবারে ছুটি। -ন্যাকামো করিস না। অমিতাভদার ঘরে এখন সুনীতদা বসছেন। -ও তাহলে এডিটর। -ঐ রকমি বলতে পারিস। এখনো খাতা কলমে নয়। তবে বকলমে কাজ চালাচ্ছে। -ও। -সব নতুন নতুন ছেলে মেয়ে আমদানি করেছে। -বেশ ভালো তো। -সন্দীপ কট কট করে আমার দিকে তাকালো। একজন উর্দি পরা ভদ্রোলোক এসে বললেন, আপনাকে সুনীতদা ডাকছেন। ভদ্রলোকের মুখের দিকে তাকালাম। উনি চলে গেলেন। সন্দীপের দিকে তাকালাম। -এখন অনেক সিকুরিটি গার্ড এসেছে। এরাই এখন অফিসের দেখভাল করে। -হরিদা নেই এখন। -না। অমিতাভদা যেদিন থেকে আসা বন্ধ করেছেন, হরিদাকে প্রেসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। -ওখানে কি করছে। -কাগজ বইছে। -ঐ বুড়ো মানুষটা কাগজ বইছে। -হ্যাঁ। না হলে কাজ থেকে ছুটি নিতে বলা হয়েছে। বেচারা।   আমি অবাক হয়ে সন্দীপের কথা শুনছিলাম। বাকিটা নিজে নিজেই আঁচ করে নিচ্ছিলাম। এই অফিসের মালকিন আমার পূর্ব পরিচিত এটা এখানকার কেউ জানে না। একমাত্র অমিতাভদা, মল্লিকদা ছাড়া। তবে মল্লিকদার স্ত্রীই যে আমার ছোটমা, আর অমিতাভদার স্ত্রী আমার বড়মা এটা সংঘমিত্রা জানে না। তারমানে অনেক জল এই পনেরো দিনে গড়িয়ে গেছে, এই বয়সে এত লাঞ্ছনা গঞ্জনা সহ্য করেও ওরা কেউ কোন কথা বলে নি। খালি আমার ফিরে আসার অপেক্ষা করেছে। এই বয়সে এটা ওদের প্রাপ্য ছিল না। আমি নিজে খুব ভাল করে জানি এই কাগজটাকে আজ কলকাতায় শীর্ষে তোলার জন্য ওরা কি না করেছে। -কি ভাবছিস। -না কিছু না। চল ওঠা যাক। নতুন সাহেবের সঙ্গে কোথায় দেখা করবো। -অমিতাভদার ঘরে।
Parent