কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৬১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4734314.html#pid4734314

🕰️ Posted on March 25, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 831 words / 4 min read

Parent
চারিদিক নিস্তব্ধ। সামান্য বিন্দু বিন্দু ঘাম আমার কপালে। ঝিমলি আমার বুকে মুখ ঘষছে। আমি বুক থেকে ওর মুখ তুলে ঠোঁট ছোঁয়ালাম। ঝিমলির মুখে পরিতৃপ্তির হাসি। আমি হাসলাম। -সত্যি তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছে করেনা। -সব সময় এসব করা ভালো নয়। -রাখোতো তোমার ধর্মের কথা। হাসলাম। -হাসছো কেনো। -খারাপ অভ্যাস। -আর কোনোদিন আসবোনা! -এটা তোমার রাগের কথা। আমি ঝিমলির দিকে তাকিয়ে আছি। ঝিমলির ঠোঁট থিরি থিরি কাঁপছে। ওর গায়ের উষ্ণতা সামান্য কমে এসেছে। ঝিমলি আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। -এবার কফি হবে। ও চোখের পাতা কাঁপিয়ে বুঝিয়ে দিলো খাবো। আমি উঠে দাঁড়ালাম। বাথরুমে গেলাম। ঝিমলি আমার পেছন পেছন এলো। আমি ভালো করে পরিষ্কার হয়ে বের হতে গিয়ে দেখলাম ঝিমলি আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে। -কি হলো। আমার সৌভাগ্য তোমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পেরেছি। -এটা বাড়িয়ে বললে। -ঠিক আছে তোমায় একদিন নিয়ে যাবো। -আগের থেকে বলো। -আচ্ছা। বাথরুম থেকে বেরোবার মুখে ঝিমলি আমাকে জাপ্টে ধরলো। -আবার কি হলো? -তোমাকে ছাড়তে ইচ্ছে করছেনা। আমি ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম। ঝিমলি কলকলিয়ে উঠলো। ঘরে এসে প্যান্ট গেঞ্জি চাপালাম। বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। জিনসের জ্যাকেটটা আলমারি থেকে বার করলাম। ট্রেটা নিয়ে রান্নাঘরে গেলাম। ঝিমলি এখনো বাথরুম থেকে বেরোয়নি। আমি কাপ-ডিস ধুয়ে কফি বানালাম। এসে দেখলাম ঝিমলি ব্রেসিয়ারের ফিতে লাগাচ্ছে। আমাকে দেখে ফিক করে হেসে ফেললো। আমি খাটের ওপর ট্রেটা রেখে রান্না ঘরে গেলাম। বিস্কুটের কৌটো নিয়ে এলাম। ঝিমলি রেডি। ওর ব্যাগ থেকে চিরুনিটা বার করে আমার আলমারির সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে। -কোথায় গেছিলে? -বিস্কুটের কৌটাটা নিয়ে এলাম। -তুমি সত্যি এক্সপার্ট। -তুমি? -আমার কথা ছাড়। তোমার কাছে আমি ফাউ। -চলে এসো। -অনিদা তুমি কি তন্ত্র-টন্ত্র পড়ো নাকি। -কে বললো। -বইটা দেখলাম। -ওই একটু আধটু পড়ি। জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করি। ঝিমলি একটা বিস্কুট তুলে দুই ঠোঁটের মাঝখানে রেখে মিষ্টি করে ভাঙলো। আমি কফির কাপে চুমুক দিলাম। -তোমার মা আমাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করছেনা। -আমার মা!। -হ্যাঁ। -কি রকম। -আমাদের কাগজে এ্যাড না দিয়ে অন্য কাগজে বেশি করে দিচ্ছে। ঝিমলি হো হো করে হেসে ফেললো। -হাসছো। -আজই মাকে গিয়ে বলছি। অনিদা তোমার নামে এই কথা বললো। -আমি সত্যি বলছি। গত তিনমাসে তোমার মার দপ্তর মাত্র দুটো এ্যাড দিয়েছে। কিন্তু অন্যান্য কাগজ অনেক বেশি টাকার এ্যাড পেয়েছে। -ঠিক আছে বাবা ঠিক আছে তোমাকে দুঃখ করতে হবে না। এমাস থেকে তোমার কাগজে বেশি করে এ্যাড পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। -তুমি তাড়াতাড়ি ডাক্তারিটা পাশ করে নাও তোমাকে আমার দরকার আছে। -সত্যি। -সত্যি। -আমাকে তোমার কিসের দরকার। রিপোর্টারি করাবে। -না তোমাকে তোমার ফিল্ডেই রাখবো। -বাঃ পড়ার আগেই চাকরি পাকা হয়ে গেলো। -তোমার পড়া শেষ হোক দেখতে পাবে। -আমাদের বাড়িতে কবে যাবে। -দিন পাঁচেক ভীষণ ব্যস্ত থাকবো। তুমি একটা ফোন করো। বলে দেবো। -তোমাকে ফোন করলে পাওয়া যায়। -এইতো তোমার সঙ্গে কথা বলছি আমার মোবাইল সুইচ অফ। গত দেড় ঘন্টা সুইচ অফ হয়ে পরে আছে। -তার মানে!। -সত্যি তুমি দেখো। -তার মানে তুমি যার সঙ্গেই কথা বলবে ফোনটা সুইচ অফ থাকবে। -প্রায়শই এটা করে থাকি। নাহলে কথা বলে মজা পাইনা। -তুমিতো ট্রিমেন্ডাস। -নাহলে যার সঙ্গে কথা বলছি সেও বিরক্ত হয় আমারও কথা বলার রিদিম কেটে যায়। এই জন্য আগে মোবাইল ব্যবহার করতাম না। ইদানীং করছি। ঝিমলি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে। -তুমি সত্যি অদ্ভূত মানুষ। জীবনে প্রথম এইরকম একজন মানুষ দেখলাম। -চলো এবার উঠি। অনেক কাজ আছে। -ট্রেটা হাত দিতেই ঝিমলি বললো তুমি গোছাও আমি ধুয়ে দিচ্ছি। -না না তুমি আমার গেস্ট। -ঠিক আছে আজকে করে দিই আর করবো না। ঝিমলি রান্নাঘরে চলে গেলো। আমি সব গুছিয়ে একটা ব্যাগে ঢোকালাম। ঝিমলি বেরিয়ে এলো। -রেডি? -হ্যাঁ। -দাঁড়াও একটু খানি। ঝিমলি ওর হাত ব্যাগটা থেকে একটা লিপস্টিকের স্টিক বার করলো। ঠোঁটটা রাঙিয়ে নিলো। আমার দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় হাসলো। -ঠিক আছে? -আমি বুঝিনা। -ঝিমলি হো হো করে হেসে ফেললো। ঘরের দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে এলাম। কথা বলতে বলতে গেটের বাইরে এলাম। -তুমি এখন কোথায় যাবে? -বাড়ি। -চলো তোমায় নামিয়ে দিয়ে চলে যাই। -না তুমি যাও আমি চলে যেতে পারবো। আমি ঝিমলিকে ছেড়ে দিয়ে রাস্তার এপারে এলাম। একটা ট্যাক্সি ধরে সোজা দাদার বাড়িতে চলে এলাম। ছগনলাল গেটের মুখে টুল পেতে বসে আছে। আরো দুচারজন দেশওয়ালী ভাইকে দেখতে পেলাম। জমিয়ে গল্প করছিলো। আমাকে দেখে উঠে দাঁড়ালো। -ছোটোবাবু। -ঘরের চাবি কার কাছে। -আমার কাছে। -দাও। ছগনলাল নিজের ঘরে গেলো। চাবি নিয়ে এলো। ফোনটা অন করলাম। অনেকগুলো মিসকল দেখতে পেলাম। হু হু করে ম্যাসেজ ঢুকলো। আমি কোনো দিকে না তাকিয়ে রতনকে ফোন করলাম। -অনিদা বলো। -কোথায় আছিস? -হোটেলে। তোমায় অনেকক্ষণ থেকে ফোন করছি সুইচ অফ। -ঠিক আছে। তুই সব নিয়ে দাদার বাড়িতে চলে আয়। চিনিস তো? -হ্যাঁ। -আমি পৌঁছে গেছি। অবতার কোথায়? -ওই ডেরায়। -ওখানে কে আছে? -আবিদ আছে। -ওকেও তুলে নিয়ে চলে আয়। -ঠিক আছে। ফোনটা কেটে দিলাম। হিমাংশুকে ফোন দিলাম। -দাদার বড়ি চলে আয়। এখানে বসেই সব হিসেব করবো। -আমার একটু যেতে দেরি হবে। -দেরি করিসনা। ওরা আধাঘন্টার মধ্যেই চলে আসবে। -দেখছি যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব যাচ্ছি। -আচ্ছা। ছগনলাল চাবি এনে দিলো। -চা খাবে। -খাবো। শোনো অনেকে আসবে এলে আমায় ডাকবে। আমি আমার ঘরে থাকবো। -আচ্ছা ছোটবাবু। আমি বাগান পেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে ওপরে চলে এলাম। ঘর খুললাম। বেশ টিপটপ। দাদাকে একটা ফোন করলাম। -হ্যালো তুই কোথায়। -বাড়িতে। কেনো? -তুই বললি ছটার সময় আসবি। -অফিসে আর যাবোনা। -বুঝেছি। -রাখছি। -আচ্ছা। বাথরুমে গেলাম। ব্যাগ থেকে সমস্ত কিছু বার করে টেবিলের ওপর রাখলাম। বাথরুমে গেলাম। হাতমুখ ধুয়ে বেরোতেই দেখি ছগনলাল ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে। -কি হলো। -চা নিয়ে আসি। -এসো। ছগনলাল অদৃশ্য হয়ে গেলো।
Parent