কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৬৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4741581.html#pid4741581

🕰️ Posted on April 3, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1009 words / 5 min read

Parent
সন্দীপ উঠে চলে গেলো। আমি দাদার দিকে তাকিয়ে বললাম অনির সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে কোনোদিন জিততে পেরেছো। -হেরেছি কবে। -তারমানে। -তোকে দিয়ে লিখিয়েছি। কাগজের মান বাড়িয়েছি। -এ লেখা আমি লিখতে পারবোনা। হ্যাঁরে দ্বীপায়ন এটা কি কালার প্রিন্টার। -হ্যাঁ দাদা। -তোদের বুদ্ধি আছে। দ্বীপায়ন হাসলো। ছেলেদুটো আমার পেছনে খাটে বসেছে। -অনিদা নেট কানেকসন করে ফেলেছি। -দাঁড়া যাচ্ছি। আমি উঠে গেলাম নিজের মেইল বক্স খুলে কালকের পাঠানো তনুর মেলটা থেকে সমস্ত ডাউনলোড করলাম। ডেক্সটপে রেখে দ্বীপায়নকে বললাম ফটোশপে খুলে সব দেখেনে। তারপর সব প্রিন্ট কর তিন কপি করে। সন্দীপের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছে। -তনু তোকে এইসব পাঠিয়েছে। -হ্যাঁ। -কিরে সন্দীপ। -দেখবেন আসুন। দাদা ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে বসেছিলো। সন্দীপের কথায় তড়াক করে উঠে এলো। ভালো করে ডকুমেন্টসগুলো দেখে নিয়ে স্বগোতক্তির সুরে বললো। কেনো যে মেয়েটা চলে গেলো। -না গেলে আমি এইসব মালপত্র পেতাম কি করে। -তুইতো বলবি। কাগজের কতো ক্ষতি হয়েছে জানিস। -তোমরা তাড়িয়েছো। -আমি তাড়াইনি। -ওই হলো আরকি। ঘরের বেড়াল পরের ঘরে খেতে যাবে কেনো। -থাম বক বক করিসনা। সন্দীপ লেখাটার মধ্যে তানিয়ার নাম সৌজন্যে ঢুকিয়ে দিবি। -কেনো মেয়েটকে জেল খাটাবার ইচ্ছে হয়েছে। ও কি তোমায় বলেছে দাদা এতো খাটাখাটনি করলাম আমার নামটা একটু কার্টসিতে ঢুকিয়ে দেবেন। দাদা চুপ করে গেলো। মল্লিকদা চায়ের ট্রে নিয়ে ঢুকলো। ছেলেদুটো এগিয়ে গেলো। অনি কি বলছে রে সন্দীপ। -দেখবে এসো কি মাল অনি জোগাড় করেছে এতো মলের বাবা। মল্লিকদা ছুটে দ্বীপায়নের কাছে চলে গেলো। -তাড়াতাড়ি কর দ্বীপায়ন। এখুনি সব এসে পরবে এখনো অনেকগুলো স্ক্যান বাকি আছে। -খাম গুলো দেখা। দাদা বললো। -সহ্য করতে পারবেনা। -দেখানা। দাদার কাকুতি মিনতির ঢঙে নিরঞ্জনদা হাসছে। ওই দুটো ছেলে জানলার দিকে মুখ ফিরিয়ে মুখে হাত চাপা দিয়েছে। আমি একটা খাম এগিয়ে দিয়ে বললাম -ডাক্তার পাঁচটা বিয়ে করেছে। এই খামে তার ডকুমেন্টস আছে। দাদা শুনে থ। বলিসকি পাঁচটা বিয়ে। -মিথ্যে কথা বলছিনা। খামটা খোলো। দেখতে পাবে। মল্লিকদা দ্বীপায়নের কাছ থেকে ছুটে চলে এলো দাদার কাছে। দাঁড়া কচুরি আনাই। -এইতো ভদ্রলোকের মতো কথা। -আমিকি এতদিন অভদ্র ছিলাম। -আমি তোমায় অভদ্র বলিনি। -দাঁড়া তোর ছোটমাকে রিপোর্ট করছি। -পারবেনা। বলেছিনা তোমরা পাঁচজন আমি একা। গোল করবোই। মল্লিকদা হো হো করে হেসে ফেললো। -একটি ছেলেকে ডেকে বললো যাতো কচুরী নিয়ে আয়। বেসি করে নিয়ে আসিস। খিদে লেগেছে। দাদা আমার দিকে তাকালো। -কি বজ্জাত দেখেছিস। -তুমি দেখো। পকেট থেকে তনুর চিঠিটা বার করলাম। হাতে দিয়ে বললাম। -আন্ডারলাইন জায়গাগুলো পরবে আর এগোবে না। দাদা হাতে নিয়ে চশমাটা একবার ঠিক করলো। মল্লিকদা পেছন থেকে চিঠির ওপর চোখ রেখেছে। আমি তাকিয়ে আছি দাদার দিকে। নিরঞ্জন ঘুরে দাদার পেছনে দাঁড়ালো। সন্দীপও এসে দাঁড়ালো। সবাই চিঠির ওপর চোখ রেখেছে। প্রিন্টারের আওয়াজ হচ্ছে। তাকিয়ে দেখলাম প্রিন্ট বেরোচ্ছে। দাদার চোখের ভাষা বদলে যাচ্ছে। মল্লিকদার দাঁত কড় কড় করছে। দাদা চিঠি থেকে চোখ তুললেন। আমার দিকে তাকালেন। -মনে হচ্ছে হাতের সামনে পেলে এখুনি গলা টিপে মেরে দিতাম। মল্লিকদা বললেন। -ওই জন্যই তো কাল মার খেয়েছে। দাদা বললো। মল্লিকদা দাদার দিকে তাকিয়ে আছে। -এর বেঁচে থাকা উচিত নয়। সমাজের কলঙ্ক। -মেয়েটার কথা একবার ভেবে দেখো। মল্লিকদা বললো। -তুই আমার ওখানে নিয়ে চল। খালের জলে মাছের খাবার করে দেবো। নিরঞ্জনদা বললো। -সে ব্যবস্থা করার সুযোগ তুমি পাবেনা। -তোর বড়মা কাল বলছিলো। তোর দামিনী এটাকে বাঁচিয়ে রাখবেনা। -ডাক্তারকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে অনেক কাজ বুঝলে। -তোর কথা আমি বুঝিনা। -ধীরে ধীরে বুঝবে। এইবার এই চিঠির প্রমাণ দেখবে। -না আর দেখবোনা। গা গোলাচ্ছে। -দেখো উনি কিন্তু সমাজের উচ্চ বর্গের লোক। -তোর বড়মা হলে বলতো ঝাঁটা মারো অমন উচ্চ বর্গকে। -তুই এখনো চুপচাপ আছিস কি করে। মল্লিকদা দাঁত কড় কড় করতে করতে বললো। -ডাক্তারকে শিখন্ডি করে আরো চারটে পাখিকে মারতে হবে। -চারটে পাখি আবার কোথায় পেলি। -আছে আছে সব জানতে পারবে। তবে কথা দিচ্ছি অনি নিজে কাউকে মারবেনা। -ওরা কেউ জানে। -কেউ জানেনা। খবর লিক হলে বুঝতে পারছো এই ঘরের সব কটাকে ধরবো। দেখি কে কতদিন পেটে খবরটা ধরে রাখতে পারো। -তোকে কথা দিচ্ছি আমার পেট থেকে বেরোবেনা। দাদা বললো। -মল্লিকদা। -আমিও বলবোনা। নিরঞ্জনদা আমার বলার আগেই বললো। -তোকে কথা দিলাম। মরার আগের দিন পর্যন্ত মুখ থেকে রা করবো না। -মনে থাকে যেনো। -এবার তোমাদের আমাকে হেল্প করতে হবে। -বল কি করবো। -কলকাতা বাদে ডাক্তারের মোট ছটা নার্সিংহোম আছে আমাদের স্টেটে। -কলকাতাটা এরা দুজন কভার করবে। বাকি ছটা বিশ্বস্ত লোক খুঁজে বার করো। যারা কভার করবে। কচুরীর ঠোঙা নিয়ে ছেলেটা ঢুকলো। -দাঁড়া এখন কিছু বলিসনা। আমি ঝট করে নিচ থেকে প্লেট নিয়ে আসি। -মল্লিকদা আমি যাবো তোমার সঙ্গে। ছেলেটা বললো। -আয়। ওরা বেরিয়ে গেলো। -অনিদা প্রিন্ট গুলো দেখবে। -দে। দ্বীপায়ন প্রিন্ট গুলো নিয়ে এলো। দাদা সন্দীপ নিরঞ্জনদা হাতে তুলে নিয়ে দেখতে আরম্ভ করলো। দাদা দেখতে দেখতে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললো। -ওর আর কি বাকি আছে বলতো। -হিসেব করো। -বুঝেছিস নিরঞ্জন আমরা এই মালিকের আন্ডারে মাস ছয়েক আগেও কাজ করেছি। -এ যদি এই বিষ হয় সুনিতদা আর অতীশবাবু কতো বড়ো বিষ ছিল একবার ভেবে দেখো। -সুনিতদা আর বলিসনা সুনিত বল। -এটা তোমার রাগের কথা। -রাগ বলিস আর যাই বলিস। -কম জ্বালিয়েছে আমাদের। গোটা নিউজরুমটাকে ছাড়খাড় করে দিয়ে গেছে। সন্দীপ বললো। -শুরু করে দিয়েছিস। মল্লিকদা হন্তদন্ত হয়ে ঘরে ঢুকে বললো। -নাগো তুমি এসো তারপর শুরু করছি আবার। -সন্দীপ একটু হাত লাগা। সন্দীপ হাত লাগালো। আর একটা ছেলে উঠে এসে প্লেট সাজালো। -দাদা। -কি হোল। -ছগনলালকে চায়ের কথা বলে এলাম। -বেশ করেছিস। সবার প্লেট গোছানো হয়ে গেলো। কচুরীতে একটা কামড় দিয়ে কথা বলতে গেলাম। -দাঁড়া তোকে একটু ইন্টারাপ্ট করছি। মল্লিকদা বললো। -বলো। -কাউকে দরকার নেই তোর এই চেলা দুটোই সব করে ফেলতে পারবে। -স্টেইন পরে যাবে। -তোমাকে ভাবতে হবেনা অনিদা। তোমার কতদিনের মধ্যে চাই আগে বলো। -বাহাত্তর ঘন্টা সময় তোদের দেবো। -হয়ে যাবে। -তুই ডিস্ট্রিক্টগুলো বল। নিরঞ্জনদা বললো। আমি পর পর নাম বললাম। -তোকে চিন্তা করতে হবে না। আমি অবাক চোখে নিরঞ্জনদার দিকে তাকালাম। -তাকাসনা আমারও কিছু ক্ষমতা আছে। -বলো। -এই ডিস্ট্রিকগুলোর সভাধিপতিদের সঙ্গে আমার ভালো রিলেসন আছে। -তাতে নিউজের সুবিধে হবেনা। বরং কেঁচে যাবে। -কেনো। -তুমি কি ভাবছো ডাক্তার কাঁচা খেলোয়াড়। -টাকা খাওয়ার কথা বলছিস। -আলবাৎ। -দাঁড়া একটু ভাবতে দে। -তুমি ভাবো। -দেখ সর্বসাকুল্যে চারটে তোরা হাতের কাছে পেয়ে যাবি। কলকাতা থেক পঞ্চাশ কিলোমিটারের মধ্যে। বাকি তিনটে দূরে। দেখ কি করে কি করা যায়। -ঠিক আছে আমি স্কিম করে নিচ্ছি। মল্লিকদা বললো। ছগনলাল ঘরে ঢুকলো। নীচের গেটে কালকের বাবু এসেছে। মল্লিকদা বারান্দায় গেলো। আমার দিকে তাকিয়ে বললো। হিমাংশু। -কচুরী আছে রে। -অনেক। ছগনলাল যাওয়ার সময় বললো চা এখানে নিয়ে আসবো। -হ্যাঁ এখানে নিয়ে আয়। দাদা বললো। আমরা কচুরীতে মনোনিবেশ করলাম। দাদার ফোনটা আবার বেজে উঠলো। দাদা আমার দিকে তাকিয়ে বললো। তোর বড়মা। কি বলি বলতো। -কথা বলোনা। কি বলতে চায় দেখো। -হ্যালো।
Parent