কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ১৮৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4783085.html#pid4783085

🕰️ Posted on May 9, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 857 words / 4 min read

Parent
-ওদিকে মারা মারি লেগে গেছে। অনাদি ওই ভিড়ে হারিয়ে গেছে। -ও অনি আমাকে বাঁচা, এরা আমাকে শুদ্ধু খেয়ে ফেলবে। -কি এনেছিস। বড়মা বললো। -মিষ্টির পেটি আর আলু পরোটা। মিত্রা ছুটে এলো। -হাঁ করো। হাঁ করো। -কি বলবিতো? বড়মা বললো। -উঃ, হাঁ করোনা। বড়মা হাঁ করলো। মিত্রা নলেন গুড়ের কাঁচা সন্দেশ বড়মার মুখে গুঁজে দিলো। তারপর ছোটমা তারপর ইসলাম ভাই শেষে নিজের মুখে কিছুটা ঢুকিয়ে বললো -কেমন বলো? বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো -কোথা থেকে আনলি? -ও আনবে কি গো। সকাল বেলা মাসিকে ফোন করেছিলাম। মাসি পাঠিয়েছে। -দামিনী সকালে এসেছিলো! আমি মাথা দোলালাম। -ওকে দিলি না। -সকাল থেকে অনেক খেয়েছে। এবার আমরা খাবো। দেখলাম কাকা, নিরঞ্জনদা, মল্লিকদা, ডাক্তার দাদা, দাদা একসঙ্গে বাসুর দোকানে ঢুকলো। -আরি বাবা, ডাক্তার দেখো, এখানে হাট বসে গেছে। আমি উঠে গিয়ে সকলকে প্রণাম করলাম। -কিরে কাগজের খবর কি? -দেখছো, দেখছো, মরণ। ছেলেটা এখনো বাড়ির চৌকাঠে পা দেয়নি ওর কাগজের খবর জানতে হবে। বড়মা চিবিয়ে চিবিয়ে বললো। ইসলাম ভাই শেরওয়ানীর ওরনাটা মুখে চাপা দিয়েছে। -তুমি কাগজ পরোনি। -পরেছি। বেশ করেছে সন্দীপ। কখন এলি। -এইতো আধঘন্টা। ঘরে আর বসার জায়গা নেই। বাসু পাশের দোকান থেকে চেয়ার নিয়ে এলো। ওরা সবাই বসলো। -বুঝলে বড়ো, ডাক্তার হাট শুদ্ধু কিনে নিলে। -বেশ করেছে। খেতে পায়না ওখানে, কি করবে। -এটা ঠিক কথা নয় বান্ধবী। আমি হাসছি। মল্লিকদার দিকে তাকালাম। গম্ভীর থাকার চেষ্টা করছে। মিত্রা মিষ্টি এনে সকলের হাতে দিলো। -এটা কিরে মামনি। ডাক্তার দাদা বললো। -খাওনা। মাসি পাঠিয়েছে। ডাক্তার দাদা মুখে তুলেই বললো -এ নিশ্চই উত্তর কোলকাতার। না হলে এরকম স্বাদ আসবেই না। -যত্তো সব। বড়মা বললো। -যাই বলো বান্ধবী কাঁচা সন্দেশটা নলেন গুড়ে বেশ ভালো পাক দিয়েছে। -খাওতো ডাক্তার, আর বক বক করোনা। কাল থেকে খালি খাই খাই। -তুমি খাওনি। আমি যা যা বলে কয়ে সুরকে দিয়ে রাঁধিয়েছি তুমিও খেয়েছো। তখন তো না বলোনি। -এইবার প্যাঁচে পরেছে। দাদা বললো। -শুঁরির স্বাক্ষী মাতাল। বড়মা চিবিয়ে চিবিয়ে বললো। আমি আর থাকতে না পেরে হো হো করে হেসে ফেললাম। আমার হাসির আওয়াজে মিত্রারা ফিরে তাকালো। -কি হলোরে। -তরজা গান শুনছি। -দেখো বান্ধবী, ওরাও খাচ্ছে। এর জন্যই বেঁচে থাকা। নার্ভগুলোকে খাবার দিতে হবেতো। -এই ডাক্তারী শুরু করলে। মল্লিকদা ছোটমা মাথা নীচু করে মিটি মিটি হাসছে। -মামনি। মিত্রা ফিরে তাকালো। -আর কিছু দিবিনা। -আলুপরোটা মুরগীর ঠ্যাং, খাবে। -নিয়ে আয় নিয়ে আয়। বিকেলের টিফিটনটা সেরে নিই। ভালোই হবে। -দাদা? -হলে খারাপ হয়না। -সব এক গোয়ালের গরু। -কিগো এডিটর বান্ধবী শেষ পর্যন্ত গরু বানিয়ে দিলে। কাকা এককোনে চুপচাপ বসে সব দেখছে। মিটি মিটি হাসছে। ওরা এরি মধ্যে সব জোগাড় করে নিয়েছে। প্লেটে প্লেটে সবাইকে দিলো। টিনা মিলি অদিতি এগিয়ে এগিয়ে দিচ্ছে। -ওমা এরাও এসেছে দেখছি। ডাক্তার দাদা হাসতে হাসতে বললো। টিনারাও মিটি মিটি হাসছে। বড়মাকে এনে দিলো। বড়মা নিলো। ছোটমাও খাচ্ছে। ডাক্তার আবার বড়মার দিকে তাকিয়ে হাসলো। -এডিটর। -বলো। -আমরা তাহলে সকলেই গরু। -এতো তুমি অনির মতো কথা বলছো। -কেনো। -ভীষণ চালাক। সুযোগের অপেক্ষা করে। -কিরে তুই খাবি। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো। -আমি না বললাম। -বাঁচা গেলো। তোর ভাগেরটা আমি খাবো। সকলের মুখ চলছে। -তুই কি অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিয়ে এসেছিস। ইসলাম ভাই বললো। -না। -সেদিনের থেকে প্রিপারেসনটা বেশ ভালো করেছে। -চিকনা আমার পাটালি। -ম্যাডাম খেয়ে নিয়েছে। দেখলাম চিকনা একটা মুরগীর ঠ্যাং চিবোচ্ছে। বাসুও খাচ্ছে। মিত্রা একটা প্লেটে করে হাফ আলুর পরোটা আর তড়কা নিয়ে এলো। -একটু খা। -ভালো লাগছে না। -একটু। ওর বলার ঢঙে হেসে ফেললাম। -অনিবাবু আমার বউ আমাকে এরকম করে কোনোদিন সাধেনি। ডাক্তার দাদা খেতে খেতে খুব গম্ভীরভাবে বললো। -আ মরন, বিয়ে করলে কবে। যে বউ হবে। -ইস সব কেঁচিয়ে দিলো গো এডিটর। -যত্তোসব মস্করা।   আমি আর থাকতে পারলাম না হো হো করে হেসে ফেললাম। ইসলাম ভাইও হো হো করে হাসছে। ঘরটা গম গম করে উঠলো। দেবারা এবার ওপাশ থেকে সবাই এপাশে এসে আমাদের ঘিরে ধরলো। টিনা ইশারায় জিজ্ঞাসা করছে। কি হয়েছে গো অনিদা। আমি ইশারাতেই ওকে বললাম দাঁড়াও দেখতে পাবে। -আচ্ছা এডিটর, বান্ধবী কি তোমায় এখনো ভালোবাসে? -তোমার জেনে দরকার। বড়মা খেঁক খেঁক করে উঠলো। দাদা ফিক করে হেসে ফেললো। -উত্তর পেলে। আমি নিরঞ্জনদার দিকে তাকালাম। -কি অনিবাবু তুমি সভাধিপতির দিকে তাকাচ্ছ কেন? -এমনি। -ওর সরকার যেমন ও ঠিক তেমনি তার সাগরেদ। -সরি সামন্তদা, আর কোনোদিন হবেনা। -আরে রাখো তোমার হবেনা। মেরে পোস্টমর্টেম করে পুড়িয়ে দিলে। আর হবেনা। এইযে অনিরা আনলো। তুমি খাওয়াতে পারতে না। -আপনি তো খেতে চাইলেন না। -কোথায় হে। বুড়ো হয়েছি দুদিন পরে মরে যাবো। তুমি কি না খাইয়ে মারতে চাও। -মল্লিক এটা কি হচ্ছে। -আমাকে দলে ভেড়াচ্ছ কেনো। তোমায় জিজ্ঞাসা করেছে তুমি উত্তর দাও। -হ্যাঁ রে মামনি মিষ্টি আর নেই? -আছে। রসগোল্লা। খাবে ? -নিয়ে আয় নিয়ে আয়। কেউ খাক আর না খাক, তুই আমি খাই। -কিছুক্ষণ আগে একপেট ভাত খেয়ে এলে। ভাত কি কম খেয়েছিলে। বড়মা আবার একইভাবে কথা বললো। টিনারা আর থাকতে পারলো না এবার হো হো করে হেসে ফেললো। পাঁচু পাটালি আর ছোলা সেদ্ধ নিয়ে এসে আমার হাতে দিলো। -এটা কিরে অনি। -পাটালি। -হাটে ঢুকেই মামনি খাওয়ালো। বেশ খেতে তোর থেকে একটু দে। -আ দেখ কিরকম আদেখলা পনা করে। বড়মা বললো। -অনি আমাকেও একটু দিস। দাদা বললো। -ও পাঁচু, হাটে যতো পাটালি আছে নিয়ে আয়তো বাবা। আজ রাতে পাটালি খাইয়ে রাখবো। আমি বড়মাকে জাপ্টে ধরে বললাম -তুমি এরকম করছো কেনো। -তুই জানিস না। আজ সকাল থেকে পেসেন্ট দেখছে আর বলছে এই শাকটা নিয়ে আয় ওই শাকটা নিয়ে আয়। ডাক্তার আর তোর দাদা দশ রকম শাক ভাজা খেয়েছে। -জানো বান্ধবী কলকাতায় পয়সা দিলেও তুমি খুঁজে পাবেনা। -তা বলে এরকম হ্যাংলামো। -ইস ছি ছি ছি এডিটর বান্ধবী আর প্রেসটিজটা রাখবেনা। সবাই হাসতে হাসতে এ ওর গায়ে ঢলে পরছে।
Parent