কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২০৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4824522.html#pid4824522

🕰️ Posted on June 3, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 769 words / 3 min read

Parent
আমরা চলে এলাম এবাড়িতে। একসঙ্গে সকলের জায়গা হয়েছে। যে যার সঠিক জায়গায় বসলাম। -তোরা দুজনে আজ কোনো ঝামেলা করবিনা। বড়মা চোখ পাকিয়ে বললো। -তারমানে! তুমি কি বলতে চাও আমি ঝামেলা করি। -মিত্রা, তুইনা... -ও তুমি বলবেই, করলেও বলবে, না করলেও বলবে। তাইনা ছোটমা। মিত্রা ক্যাজুয়েলি বললো। ছোটমা ফিক করে হাসলো। খাবার পরতেই মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো। -সুরমাসি বুবুন স্পেশাল। -আজ করিনি। -কেনো। -অনি বারণ করলো। আমার দিকে তাকিয়ে। -কিরে। -ঝামেলা করিসনা, যা দিয়েছে খা না। -তুই বারণ করেছিস কেনো। -কখন করলাম। এ বাড়িতে আমি সকাল থেকে এসেছি। -ঠিক। মিত্রা চুপ করে গেলো। খাওয়া শুরু করলো। খাওয়া চলছে। চারিদিক নিস্তব্ধ। দুবার জোরে জোরো নিঃশ্বাস নিয়ে, মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেললো। -কিরে সর্দি হয়েছে। -না হবে এখুনি। আমিও হাসলাম। সবাই চুপচাপ।  ছোটমা বড়মা মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। -কিরে মিত্রা হাসলি কেনো। ছোটমা বললো। -একটু অপেক্ষা করো, দেখতে পাবে। ছোটমা আমার দিকে তাকালো। -সুরমাসি। -কিরে। -তেল লঙ্কা একটু বেশি করে দেবে। যাতে ভাগ দিতে না হয়। -হ্যাঁ। মিত্রা দিলো আমার পিঠে গুম করে। -বড়মা গো। -এ কি রে! -সকাল থেকে আমি এবাড়িতে এসেছি। মিত্রা ভেঙিয়ে ভেঙিয়ে বললো। -তা বলে তুই! -থামো তুমি। সুরমাসির সঙ্গে ওর টেলিপ্যাথি আছে? বড়মা হাসবে না কাঁদবে। ওরাও সকলে হাসছে। -সুরমাসি বাটিটা আমার পাতে বসাবে। কি গন্ধ ছেড়েছে বুঝতে পারছো। রসিয়ে মাখা হচ্ছে। -মামনি তুই আর আমি এখানে খানেওয়ালা, আর সবাই খেতে জানেনা বল। ডাক্তার দাদা বলে উঠলো। -তোমাকেও দেবোনা। এতোক্ষণ তুমি আমাকে সাপোর্ট করোনি। -তুমি আগুনে আর ঘি ঢেলোনা। দাদা বললো। -সুরো। -আমি সবার জন্য মেখেছি দাদা। -তাহলে দরকার নেই কি বলো এডিটর। -তোমাকে দিলে তো। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো। -তুই আমারটাও নিয়ে নে। আমি বড়মা ছোটমারটা মারি। -বড়মা তোর, ছোটমা আমার। মাথায় রাখবি। -একি গো এডিটর! ভাগাভাগি আছে নাকি ? -আরো অনেক কিছু আছে, দেখতে পাবে। সুরমাসি বাটি বসিয়ে দিয়ে গেলো। মিত্রা বাটির দিকে একবার তাকালো তারপর আমার দিকে। ছোট মা মুখ টিপে হাসছে। -কিরে কোনটা ভালো। -বুবুনেরটা। -তাহলে বাটি দুটো অদল বদল করে নে। -না। দেখি সুরমাসি সকলকে দেয় কিনা, তারপর বুবুনেরটা সবাই ভাগ করে নেবো। -তোরটা। -ওটা আমি একা খাবো। -কি স্বার্থপর তুই। -খাওয়ার সময়। আবার চেঁচালো, সুরমাসি। -আর নেইরে মা। -এই যে বললে সবার জন্য। সুরমাসি হাসছে। -কি বুঝলে, এটা হচ্ছে ঘরের ছেলে। দিলো আমার কোমরে চিমটি। আমি কি বানের জলে ভেসে এসেছি। -তুই খা বাপু বক বক করিসনা। বড়মা বললো। -দেখেছো, কেনো প্রথমেই বলেছিলাম বুবুন স্পেশাল। বড়মা মিত্রার দিকে হাসি হাসি মুখে তাকালো। আমি আমার বাটিতে হাত চাপা দিলাম। -দে দে, হাতচাপা দিয়ে লাভ নেই, সকলকে দিতে হবে। বুঝুক সকলে কেনো দুম করে বসিয়েছিলাম। মিত্রা ঝগরুটে, না। আমি হাসছি। মিত্রা আমার বাটি নিয়ে সকলের পাতে ভাগ করে দিলো। সবার হলো না। নিজের বাটি থেকে আবার দিলো। -মিত্রাদি তুমি আর একটা দুম করে দিলে, আরো কিছুটা বেরোতে পারে। মিলি চেঁচিয়ে উঠলো। -বড়মাকে বল। বড়মার ভালো ছেলে বলে কথা। -মামনি আর একটু হবে। ইসলাম ভাই বললো। -আর নেই, এটুকু আমার আর বুবুনের। সবাই হেসে ফেললো। -দেখেছো এডিটর সকলকে দেওয়া হয়ে গেছে। যেটুকু আছে দু’জনের। একজনকে না দিয়ে আর একজন খায়না। তাহলে কি প্রমাণ হলো। -খাওনা খালি বক বক। বড়মা বললো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে। তোরটা থেকে একটু দে। -অ্যাঁ-এ কত খায়। -আচ্ছা আমরা তিনদিন এই জিনিষটা পেলামনা কেনো। মিত্রা ঠিক আদায় করলো। নাহলে তো এর স্বাদই পেতাম না। দাদা বললো। -আ মরণ! চব্বচোষ্য খাচ্ছ তবু নোলা কমে না। সবাই হাসছে। খুব এনজয় করে খাওয়া শেষ হলো। ঠিক হলো বিকেল বেলা সবাই মিলে বুড়ো শিবের থানে যাওয়া হবে।   আজকের দলটা অনেক ভারী এবং জমজমাট। সবাই দেখলাম বেশ পরিষ্কার জমা-কাপড় পরেছে। বাইক এবং ট্রলির মেলা। অনাদি, বাসু পুরো পরিবার সমেত এসেছে। সঞ্জু বাইক নিয়ে এসেছে। ইসলাম ভাইও বললো আমি বাইক নিয়ে যাবো। আমি আপত্তি করলাম না। আমি অনাদিকে বললাম তুই পাঁচু পচা ওদের সবাইকে নিয়ে আয়। আমি বাসু চিকনা আগে যাচ্ছি। বড়মা একটু আপত্ত করেছিলো। দেবাও বললো তুই আমাদের সঙ্গে চল না। আমি বললাম তোরা আয় আমি হয়তো তোদের পৌঁছবার আগেই চলে আসবো। মিলি, টিনা, অদিতি তিনজনেই আজ শাড়ি পরেছে। ওদের শাড়ি পরা আবস্থায় আগে দেখিনি। বেশ লাগছিলো। তারিয়ে তারিয়ে দেখছিলাম। মিলি কাছে এসে বললো অনিদা চোখ খারাপ হয়ে যাবে এইভাবে দেখলে। আমি বেরিয়ে এলাম চিকনা আর বাসুকে নিয়ে। মোরাম রাস্তায় আসতে বাসু বললো, তুই কোথায় যাবি বলতো? -একটু গাড়িটা দাঁড় করা। আমি কয়েকটা ফোন করে নিই। একটা সিগারেট দে। বাসু পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা দিলো আমি একটা বার করে ধরিয়ে ওকে ফিরিয়ে দিলাম। ওদের থেকে একটু দূরে চলে গেলাম। প্রথমে অর্কর সঙ্গে ফোনো কথা বললাম, তারপর হিমাংশুকে এখানকার কথা বলে শনিবার সকালের দিকে আসতে বললাম। ও রাজি হলো। আমি ওদের কাছে ফিরে এলাম। -কিরে কার ওপর রাগারাগি করলি। -না। একটা কাজের দায়িত্ব দিলাম একজনকে। -এবার বল কোথায় যাবি। -উনা মাস্টারের বাড়ি। -উনা মাস্টারের বাড়ি! -হ্যাঁ। তোদের যেতে অসুবিধা আছে। -এই সময় উনা মাস্টারের বাড়ি! -একটু দরকার আছে। -তোকে বোঝা মুস্কিল। বাসু হাসলো। আমিও হাসলাম। আমি বাসুর পেছনে বসলাম। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম স্যারের বাড়ি।
Parent