কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3914645.html#pid3914645

🕰️ Posted on November 4, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1021 words / 5 min read

Parent
সকালে মিত্রা গরম গরম লুচি আর বাটি চড়চড়ি করেছে। ওঃ ঘ্রানেন অর্ধ ভোজনায়। -তুই এসব কি করেছিস। -কেনো। তুই খাবি না। ওর দিকে তাকালাম। মুখটা কেমন যেন হয়ে গেছে। বললাম, তুই জানলি কি করে আমি এই খাবার খেতে ভালবাসি। ওর মুখের রং বদলে গেলো। মা তোকে এই খাবার করে প্রয়ই খাওয়াতো, আমি জানি। -সে তো কলেজ লাইফের কথা। -কলেজ লাইফের কথা আমারও কিছু কিছু মনে আছে। হাসলাম। তোকে একটা কথা বলবো। -বল। -মনে কিছু করবি না। ও বিস্ময় ভরা চোখে আমার দিকে তাকালো। কালকের ব্যাপারটার জন্য তোর কাছে আমি ক্ষমা চাইছি। ও আমার দিকে তাকাল। চোখের তারা স্থির রেখে আমার চোখে চোখ রাখলো। আমরা কোন অন্যায় কাজ করিনি। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমি মাথা নীচু করলাম। -যদি আবার কখনো ইচ্ছে হয় আমি করবো তুই যদি বাধা দিস আলাদা কথা। মানুষের পেট যেমন আছে শরীরও তেমন আছে। আমার বরটা ধোয়া তুলসী পাতা নয়। আমি ওর চোখে আগুন দেখলাম। কথা ঘুরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম। -তোর দেবাকে মনে আছে। -কোন দেবা। -আরে পলসাইনসের সেই ফর্সা মতো ছেলেটা। তোর পেছনে প্রথমে লাইন মেরেছিল। তুই বলতিস বাবার বখাটে ছেলে। -ও হো হো করে হেসে উঠলো, হ্যাঁ হ্যাঁ এইবার মনে পরছে। কেনো বলতো। -ও এখন রিলায়েন্সের ইস্টার্ন জোনের চিফ এক্জিকিউটিভ। -বাবাঃ আমাদের ব্যাচটাতো দারুন। -সত্যি তাই। খাওয়া শেষ করে আমি উঠলাম । মিত্রাকে বললাম আমি অফিসে যাচ্ছি। তুই ফোন করিস। -ফোন নম্বরটা দে। ওকে নম্বরটা দিলাম। -আর শোন ঘরুইবাবুকে ইন্টিমেশন দিয়ে রাখ। -ওই কাজটা তুই কর। -না আমি এখন এসব কিছু করবো না। তাতে ব্যাপারটা খারাপ দেখাবে। -ঠিক আছে তুই যা বলবি। তাহলে আমি অফিসে এখন যাচ্ছি না। -না। ও আমাকে গেট পর্যন্ত এগিয়ে দিল। গাড়ির কথা বললো , আমি বললাম না। আমি বাসে চলে যাব।   ভেবেছিলাম অফিসে যাব গেলাম না। কালকে অনেক রাত পর্যন্ত জেগেছি। অফিসে যেতে ভাল লাগছিল না। সোজা ফ্ল্যাটে চলে এলাম, বড়মাকে একবার ফোন করে বললাম, আমি ফ্ল্যাটে যাচ্ছি, বিকেলে তোমার ওখানে যাব। বড়মা বললেন অফিসে যাবি না। আমি বললাম না। মোবাইল বন্ধ থাকবে, অতএব ফোন করে লাভ নেই। -দরকার পরলে। -দরকার পরবে না। ফ্ল্যাটে ঢুকেই ফ্যানটা জোড়ে ছেড়ে দিয়ে বাথরুমে গেলাম।   এসে জামা কাপড় খুলে পুরো উদোম অবস্থায় বিছানা নিলাম। প্রায়ই আমি এই অবস্থায় আমার ফ্ল্যাটে থাকি। (যারা ব্যাচেলর তাদের সঙ্গে আমার অবশ্যই মিল থাকবে বলে আমি আশা করি।)   কখন ঘুমিয়ে পরেছি, জানি না। কড়া নাড়ার খট খট আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো, ঘড়ির দিকে তাকালাম, ৫টা বাজে বাজে, মানে আমি প্রায় ৬ ঘন্টা ঘুমিয়েছি। বিছানা থেকে ধরফর করে উঠে পরলাম। কোন প্রকারে টাওয়েলটা কোমরে জড়িয়ে দরজা খুললাম, একটা দমকা হাওয়া আমার চোখে মুখে এসে লাগলো, বাইরে অঝরে বৃষ্টি পরছে, তানিয়া দাঁড়িয়ে, ওর পেছনে আমাদের এই হাউসিং-এর কেয়ারটেকার। -আরে বাবু বহুত খুন হো গায়া ম্যাডাম….. তনু কট কট করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভিজে চান হয়ে আছে। -এসো এসো। ঠিক আছে। যাও। তনু ভিতরে এলো। আমি দরজা বন্ধ করলাম। তনুর পরনে একটা টাইট জিনস আর গেঞ্জি। সেটাও ভিজে নেতা হয়ে গেছে। -সত্যি এইরকম নির্ভেজাল মানুষ আমি চোখে দেখি নি। তনু বললো। আমি মাথা নীচু করে বললাম, জামা প্যান্টটা খুলে নাও। গায়ে জল বসবে। -আমি কি ন্যাংটো হয়ে থাকবো। দরদি। হেসে ফেললাম। -তা কেন, পাজামা পাঞ্জাবী দিচ্ছি। -আর ঢঙ করতে হবে না। আধঘন্টা বাইরে দাঁড়িয়ে ভিঁজছি। -সরি। -সরি বললে সাতখুন মাপ। -তা না। একটা টাওয়েল ওকে দিয়ে বললাম, চুলগুলো মুছে নাও। আজ তোমায় চা করে খাওয়াচ্ছি। -সূর্য কোন দিকে উঠেছে। -পূর্ব দিকে। -হুঃ। আমি রান্না ঘরে চলে গেলাম। জল বসালাম, তনুকে ওখান থেকেই বলাম, চা না কফি। ও বললো কফি হলে ভালো হয়। -দুধ নেই। -ঠিক আছে, ব্ল্যাক কফি হলেই চলবে। আমি দুটো গ্লাসে কফি তৈরি করে নিয়ে এলাম। ঘরে ঢুকেই একটু অবাক হলাম, তনু খাটের এক কোনে বসে আছে, জমা-প্যান্ট একটা চেয়ারে ঝুলিয়ে রেখেছে। পরনে লাল রংয়ের ব্রা আর প্যান্টি। চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে। ঐ অবস্থায় ওকে দেখে মুচকি হাসলাম। -হাসছ কেন। -না তৈরি হয়েই বসে আছো কিনা। -শয়তান। খাটের ওপর ট্রেটা নামিয়ে রেখে। ওর দিকে তাকালাম। দুহাত ওপরে তুলে শরীরটাকে বেঁকিয়ে বুঁকিয়ে ও চুল আঁচড়াচ্ছিল। মাথার মধ্যে দুষ্টু বুদ্ধি খেললো, আমি ওর মাইটা একটু টিপে দিলাম, ও আঁই আঁই করে উঠলো, খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু। -কেনো। -জানিনা যাও। আর একবার টিপে দিলাম। ও হাত থেকে চিরুনিটা ফেলে দিয়ে আমার টাওয়েল ধরে টান মারলো। আমি টাওয়েল চেপে ধরলাম। এই বার কেমন বলো। আমি হাসলাম, ঠিক আছে আর হবে না। -খোলো খোলো। -না না। ভেতরে কিছু পরা নেই। -নেকু, ভেতরে কিছু পরা নেই। -ঠিক আছে ঠিক আছে, কফিটা পরে যাবে। ও আমার টাওয়েলটা ছেড়ে দিলো। -আমার ব্যাগটা একটু নিয়ে এসো। -কোথায়? -ঐ ঘরের টেবিলে আছে। আমি পাশের ঘর থেকে ওর ব্যাগটা নিয়ে এলাম। ও ব্যাগ থেকে একটা প্যাকেট বার করলো। ঠান্ডা হয়ে নেতা হয়ে গেছে। -কি। -মাটন কাটলেট। -ওঃ এই বরষায়……তবে তোমার কাটলেটটা গরম আছে তো। আগে ঠান্ডা খাই তারপর না হয় গরম খাওয়া যাবে। তনু কটমট করে আমার দিকে তাকাল। আমি হাসলাম। তনু কাটলেট, সস পিঁয়াজের কুচি পাশে রাখলো। দুজনে কফি আর কাটলেট খেতে আরম্ভ করলাম। -অনি । -উঁ। -আমি কলকাতা ছেড়ে চলে যাচ্ছি। -কোথায়। -লন্ডন। ওর দিকে ঘুরে তাকালাম। লন্ডন! কেনো? -বিবিসিতে চান্স পেয়েছি।   ওর মুখের দিকে তাকালাম। আমার মুখটা গম্ভীর। আমি মাথা নীচু করলাম। তারমানে তানিয়ার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। -কি হলো। গম্ভীর হয়ে গেলে। তুমি চাও না আমি যাই। ভেতর থেকে না বলছি কিন্তু মুখে বললাম, কনগ্রাটস। ও আমার মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকালো। তোমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না। -কবে যাচ্ছ। -কাল সকালে দিল্লী যাব। বাড়িতে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে দুপুরের ফ্লাইট। -ও। অফিসে জানে। -না। তুমি কিছু জানো না। -কোন ব্যাপারে? -অফিসের ব্যাপারে। -না। -কালকে অফিসে যা করে এসেছো। -আমি আবার কি করলাম। -তুমি তো তোমার কোন খোঁজ খবর রাখো না। -প্রয়োজন বোধ করি না। -তুমি কাল ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে যা করে এসেছো তাই নিয়ে অফিসে সারা দিন তোলপাড় হয়েছে। আজ তো অফিসে যাও নি। -না। -গেলে জানতে পারতে। -যা হবার তা হবে। -আমাকে দিল্লী ট্রান্সফার করেছিলো। -কে ? -কে আবার ঐ শালা। ওর মুখের দিকে তাকালাম। তনু এই প্রথম আমার সামনে শালা বললো। -রিজাইন দিলাম। তারপর এই চান্সটা পেয়ে গেলাম। -কার থ্রু দিয়ে। -আমার দিল্লীতে এক বন্ধু আছে। ওর থ্রু দিয়ে। -ও। কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলাম। আমি যেখানে থাকার সেখানেই পরে আছি। সত্যি আমার দ্বারা কিছু হবে না। কত স্বপ্ন দেখেছিলাম, ধুস। -কি চিন্তা করছো। -না। কিছু নয়। ওর দিকে তাকালাম। -হাঁ করো। ও নিজের কাটলেটে একটা কামড় বসিয়ে আমার মুখের কাছে এগিয়ে দিয়েছে, আজ কোন বাধা দিলাম না, আমি ওর কাটলেটে একটা কামড় দিলাম, ও আবার নিজেরটায় আর একটা কামড় দিল।
Parent