কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২১৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4828756.html#pid4828756

🕰️ Posted on June 14, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 817 words / 4 min read

Parent
আমি অর্ককে ফোন লাগালাম। -কোথায় আছিস? -দাদা আমি অফিসে। মাল এখন তার জায়গায়। সারাদিন টেনসন গেলো রিলাক্স করছে। তুমি ঠিক আছো? -ঠিক আছে অফিসে থাক, আমি যে কোনো সময় ফোন করতে পারি। -আচ্ছা। ট্যাক্সি ধরলাম। সোজা নিজাম প্যালেসে চলে এলাম। মুখার্জীর ঘরে ঢুকলাম। আমাকে দেখেই মুখার্জী বলে উঠলো। -আরে সাহেব আমার ঘরে! কি সৌভাগ্য আমার। -এক গ্লাস জল খাওয়াবেন। -এ কি কথা বলছেন। বেল বাজালেন। একটু গরম চা। -হলে খারাপ হয় না। -আপনার কাজ করে দিয়েছি। কিন্তু কোনো নিউজ হলো না। -দরকার ছিলো। -আর দরকার নেই। লেবু বেশি নিংরোলে তেঁতো হয়ে যাবে। -আপনার পাওনা গন্ডা কি হলো ? -ফাইল প্রসেস হলো। এবার দেখি কি হয়। -আর একটা কাজ আজ রাতের মধ্যে ঝেড়ে দিতে পারবেন। -কি কাজ। -আবার কি! এনকাউন্টারে যেতে হতে পারে। হাতে সেরকম মাল আছে? না ঘোষকে বলবো। -এইতো এখানে এসে ঘোষের কথা বলেন, ঘোষের কাছে গিয়ে আমার কথা বলেন। -আপনি না পরলে ঘোষকে বলবো। -আমি কি আপনার কোনো কাজ করে দিই নি। -সাতটা টেররিস্ট আছে ফুরফুরা শরিফের কাছে। ইউপি থেকে এসেছে। -দাঁড়ান দাঁড়ান হজম হচ্ছে না। -ঢক ঢক করে একগ্লাস জল কোঁত কোঁত করে খেয়ে নিলেন। -আমার ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ খবর পেলো না, আপনি! -তাহলে ছেড়ে দিন। -একি মশাই বাঘকে চিতল হরিণ দেখালেন, আবার কেড়েও নেবেন। -কি করবো। -আমি এখুনি একটা খবর নিই। -নিতে পারেন, কিন্তু পাবেন না পলিটিক্যালি ব্ল্যাক আউট করা আছে। -কি বলছেন আপনি! -যা বলছি সত্যি। কাজ হয়ে যাবার পর সব আপনাকে বলবো। আমার লোক যাবে আপনার সঙ্গে। -সত্যি! মুখার্জীর চোখ চক চক করে উঠলো। কজন আছে? -সাতজন। সঙ্গে প্রচুর আর্মস। মুখার্জীর মুখটা গম্ভীর হয়ে গেলো। -কি হলো। -আমার এনকাউন্টারের ছেলেগুলোকে একটু দেখে নিই আছে কিনা। -না থাকলে এখুনি ডেকে নিন। দেরি করা যাবে না। -একটু সবুর করুন। -খবরটা আমি কাল ছাপবো। খালি একটা লোককে বাঁচিয়ে রাখতে হবে যে আপনাকে নিয়ে যাবে। তাও প্রয়োজন হলে। -আমি প্রমিস করছি। -আমার একজন সাংবাদিক, একজন ফটোগ্রাফার যাবে আপনার সঙ্গে, আমিও যেতে পারি। -তাহলে তো কোনো চিন্তাই নেই। -চলুন বেরিয়ে পরি। -দাঁড়ান। মুখার্জী ফোন ঘোরালেন, নীচু স্বরে কার সঙ্গে কথা বললেন, আমি টেবিলের এপার থেকে শুনতে পেলাম না। ফোনটা রাখলেন। -আমি বুলেট প্রুফ গাড়িতে বসবো। সাদা কাঁচ থেকে ছবি তুলবো। -সব কটা বুলেট প্রুফ গাড়ি থাকবে। -আর একটা ব্যাপার। -বলুন। -আজ রাতেই এক জায়গায় নীল ছবির স্যুটিং হবে সেখানে বড় বড় রাজনৈতিক চাঁই জড়িয়ে আছে ধরতে পারবেন। -টাফ ব্যাপার খুব সেন্সেটিভ। -তাহলে এই দায়িত্বটা অন্য কাউকে দিই। -এইতো, এক যাত্রায় কি পৃথক ফল হতে পারে? -তাহলে বলুন। -আমাকে মিনিট দশেক সময় দিন। -ওখানে একটা টিমকে ঘাপটি মেরে থাকতে বলুন। বামাল সমেত তুলবেন। -তাই হবে। -আমি দেরি করছিনা শান্তি নিকেতন বিল্ডিং-এর সামনে দাঁড়াচ্ছি। আপনি আপনার কাজ গুছিয়ে চলে আসুন। -আমি আপনাকে ফোন করবো। -আচ্ছা। আমি ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। মোবাইলটা স্যুইচ অফ করা ছিলো খুললাম। দেখলাম অনেক মিসড কল। তার মধ্যে বড়মা, ছোটমা, মল্লিকদা, মিত্রা, ইসলাম ভাই সকলে আছে। ইসলাম ভাইকে ফোন করলাম। -তুই কোথায়। -আমাকে খুঁজে পাবে না। -তুই এরকম করিসনা। তোর পায়ে পরছি। -কোনো কথা বলবেনা। রতনদের যেখানে দাঁড়াতে বলেছিলাম, সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। -আমি ওখানে চলে এসেছি। -নেক্সট যখন ফোন করবো তুমি ওদের নিয়ে ওখান থেকে সরে যাবে। মনে থাকে যেন। -প্লিজ তুই আমার কথা শোন। এই কাজ তোর নয়। -শেষ বারের মতো বললাম কোনো কথা বলবে না। মনে থাকে যেনো। আমার কাজ আমাকে করতে দাও। সবাইকে ফোন করে দাও, আমাকে যেনো ডিস্টার্ব না করে। -তুই এসব কি করতে যাচ্ছিস। -যা করছি ভালোর জন্য করছি। -প্লিজ অনি তুই আমার ভাই। তোর কিছু হলে বড়মা, ছোটদি, মামনির কাছে মুখ দেখাতে পারবোনা। -দেখাতে হবেনা।   ফোনটা কেটে দিলাম। অর্ককে ফোন লাগালাম। -হ্যাঁ দাদা বলো। -তুই এখুনি একজন ফটোগ্রাফারকে নিয়ে চলে আয়। আমি শান্তি বিল্ডিংয়ের তলায় দাঁড়িয়ে আছি। -সন্দীপ দাকে বলে যাবো। -না। চুপকে ফেটে আয়। ট্যাক্সি করে। -আচ্ছা। আমি একটা সিগারেট ধরালাম। মিনিট দশেকের মধ্যে অর্ক চলে এলো। -কিরে কেউ জানে নাতো। -না। আমি মুখার্জীকে ফোন লাগালাম। -রেডি স্যার, বেরোবো। -হ্যাঁ চলে আসুন। আমি আমার ফটোগ্রাফার আর সাংবাদিক আপনার গাড়িতে বসবো। -ঠিক আছে। -কিগো অনিদা। -কোনো কথা বলবিনা। চুপচাপ দেখে যা। তুই যা যা লিখেছিস সব সত্যি। -সব সত্যি। -ঠিক আছে। ওখানে কাউকে ফিট করে এসেছিস। -না। -জায়গাটা চিনতে পারবি। -পারবো। -চুপ চাপ যা বলবো করে যাবি। তোমার নামকি ভাই। -সায়ন্তন। -কতোগুলো রিল আছে। -আনলিমিটেড এমনকি মুভি পর্যন্ত করা যাবে। -হেসে ফেললাম। ডিজিট্যাল। -হ্যাঁ। -গুড।   মুখার্জীর গাড়ি আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। ধবে ধবে সাদা জিপসি। পেছনে দেখলাম আরো আটটা। আমরা প্রথমে আকিবের ডেরায় এলাম। আসার সময় ফোন করে ইসলাম ভাইকে বলে দিলাম তোমরা ওখান থেকে সরে যাও। ধারে কাছে কেউ যেনো না থাকো। ফোনটা কেটে দিলাম। -কাকে ফোন করলেন। -টিপারকে রেখে এসেছি। ওটাকে তুলতে হবে। ওকে সঙ্গে নিয়ে যাবো। তাছাড়া এই ভেঞ্চারের সমস্ত কিছুর ইনফর্মেশন এই ছেলেটা দিয়েছে। আমার মতো তৈরি করছি। নাম অর্ক। মুখার্জী পেছন ফিরে তাকালো। -নিউজটা কোথায় পেলিরে বাবা। -বলা যাবেনা। তবে ঘটনাটা সত্যি। -বাবা তুইতো অনিবাবুর থেকে এক কাঁটা ওপরে। -গাড়ি এসে ঠিক জায়গায় থামলো। অর্ককে বললাম যা তুলে নিয়ে আয়। ওর ঝুপরিতে বেঁধে রেখে এসেছি। -তুমি এসেছিলে এখানে। -হ্যাঁ। অর্ক সায়ন্তন গাড়ি থেকে নামলো। একটা গাড়ি ওদের ভেতরে নিয়ে গেলো। সবার হাতেই এসএলআর। ফুল ড্রেস করা। আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে ওরা আকিবকে তুলে নিয়ে চলে এলো। সায়ন্তনকে বললাম -জায়গাটার ছবি তুলেছিস। -হ্যাঁ।
Parent