কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২২২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4828775.html#pid4828775

🕰️ Posted on June 17, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 748 words / 3 min read

Parent
আমি মল্লিকদার হাতে ফোনটা ধরিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। নিউজরুম এখন গিজ গিজ করছে। যাদের নটায় ডিউটি শেষ তারাও রয়ে গেছে। রাতের যারা তারাও আছে। আমি এরি মধ্যে অর্ককে ইশারায় ডেকে নিলাম। নিজের টেবিলে বসে কালকের ফলো আপটা করতে বললাম। এও বললাম খুব সাবধানে। ও মাথা নেড়ে গেলো। দ্বীপায়ন কাছে এসে দাঁড়ালো। -ছবিগুলো দেখে নাও, সবাই দেখেছে। -কি রকম হয়েছে। -খুব আপসোস হচ্ছে। -কেনো! -যদি তোমার সঙ্গে যেতে পারতাম। -সায়ন্তন কোথায়। -দাদার ঘরে। -হয়ে গেছে? অর্ক আমার মুখের দিকে তাকালো। -কিরে ওর আমাশার ধাত নেইতো। -বলতে পারবোনা। -তাহলে কি চুজ করলি। -তখন হাতের কাছে পেলাম নিয়ে চলে গেলাম। -যা যা ডেকে আন। -দাদা যদি রাগ করে। -রাগ করলে করবে। বল আমি ডাকছি। দ্বীপায়ন হাসছে। -তোমার সবদিকে চোখ। -না থাকলে তোরা মরে যাবি। ছবিগুলো দেখলাম। একেবারে লাইভ। -কাগজটা কেমন সাজিয়েছিস। -বেরোলে দেখবে। -প্রেসে চলে গেছে। -ছাপা শুরু হয়ে গেছে। -নিয়ে আয়। সায়ন্তন এলো। সঙ্গে অর্ক। -কিরে। -তোমার কথাই ঠিক ওর আমাশা আছে। -ট্যাবলেট দিয়ে দিস। আমার কাছে কাজ করতে গেলে আমাশা রুগী চলবেনা। সায়ন্তন মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে। -যা এবার কিছু খেয়ে নে। সায়ন্তন চলে গেলো। আজকের নিউজরুমের অবস্থাটা দেখে দারুণ ভালো লাগছে, সবাই এক সঙ্গে কাজ করছে, দারুণ চনমনে। দাদা আবার নিউজরুমে এলেন। দূর থেকে আমাকে লক্ষ্য করে পায়ে পায়ে এগিয়ে এলেন। মল্লিকদার দিকে তাকালাম। ফিক করে হেসে ফেললো। দাদার পেছন পেছন সন্দীপ অর্ক সায়ন্তন। কাছে আসতেই সন্দীপ চেয়ার এগিয়ে দিলো। দেখলাম মল্লিকদা চেয়ার ছেড়ে উঠে এলো। দাদা বসতে বসতে আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হাসছে। -লেখাতো ছেপে দিলাম, ডকুমেন্স দে। -কেনো সায়ন্তন দেয়নি। -ছবি দিয়ে কি হবে। এরা যে টেররিস্ট তুই কি করে জানলি। -যারা কেস করবে তারা প্রমাণ করবে। -সে বললে হয়। -তুমি কি সায়ন্তনের পেটে কিল মেরেছো। -একটু। -কিছু পাবেনা। ওটা নীরব দর্শক। -এই খেলাটা কবে থেকে খেলছিস। -জেনে কি করবে। তোমার কাগজ কালকে একমাত্র এই স্টোরিটা করছে। মাথায় রাখবে এক্সক্লুসিভ। -ওরা কেউ জানেনা। -জানবে না। আর কোনোদিন কেউ জানতেও পারবেনা। দাদা আমার দিকে হাসি হাসি চোকে তাকিয়ে। -তোমরা সরোতো এখানে ভিড় করে আছো কেনো কাজ নেই। বটা দা। -এটা খেয়ে নাও। চা নিয়ে আসছি। -আমার একার। -সবার গেলা হয়ে গেছে। -দাদার। -দাদা খাবেনা। -তুমি নিউজ পেয়ে গেছো। -তোমার জন্মের আগে থেকে আছি। সবাই হো হো করে হেসে ফেললো। ডিম পাঁউরুটি নিয়ে এসেছে বটাদা। দেখলাম অনেকগুলো করে নিয়ে এসেছে। সকলেরই হাতে। সার্কুলেসন থেকে কাগজ চলে এলো। একটা হৈ হৈ শব্দ। নিমেষে আমার এখান থেকে ভিড়টা পাতলা হয়ে গেলো। সন্দীপ দাদার হাতে একটা কাগজ দিয়ে গেলো। দাদার মুখটা খুশিতে ভরে উঠলো। মল্লিকদার হাতে কাগজ উল্টে পাল্টে দেখছে। -তুই কি করে নামালি বলতো ওই টেনসনের পর। -তুমি জিজ্ঞাসা করবে। -তোকে নিয়ে আমি রিসার্চ করবো। হাসলাম। -তোর বড়মাকে ফোন করেছিস। -না। -খুব কষ্ট পাচ্ছে। -আমার মতো ছেলে যার তাকে একটু কষ্ট পেতেই হবে। -চল এবার বেরিয়ে পরি। -না তোমরা যাও। আমার আর একটু কাজ আছে। -তাহলে বসি তোর কাজ শেষ কর তারপর যাবো। -কেনো! -তোর বড়মা তোকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে বলেছে। -এইতো গন্ডগোল করলে। -তুই ফোন করে বলেদে। -আমি বলে এসেছি। -আমার সামনে বল। -বোসো। দাদা হো হো করে হেসে ফেললো। উঠে দাঁড়ালাম। সন্দীপকে কাছে ডেকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। -চাবি কোথায় ? -কিসের চাবি! -গান্ডু। -খামকা গাল দিচ্ছিস। -মিত্রার ঘরের চাবি। সন্দীপ জিভ বার করলো। -সরি। -জেরক্স। -আমার ড্রয়ারে। -নিয়ে আয়। আমি করিডোরে দাঁড়িয়ে রইলাম। সন্দীপ নিজের ড্রয়ার থেকে চাবি নিয়ে এলো। -এই কদিন ঘর খোলা হয়নি ? -কে খুলবে। -তুই। -কেনো ? -এমনি। -শালা ঢেমনামো হচ্ছে। -চল দরজা খোল। -সন্দীপ গিয়ে দরজা খুললো। আমি সন্দীপ ভেতরে ঢুকলাম। -নে তাড়াতাড়ি ফাইলটা বার কর। -জেরক্সটা নে। -ফাইলটা বার কর। সন্দীপ একটা চেয়ার নিয়ে গিয়ে ফাইলটা বার করে নিয়ে এলো। আমি ধুলো ঝেড়ে নিলাম। ফাইলটা খুলে জেরক্সটা ভেতরে রাখলাম। -অরিজিন্যাল। -ফাইলের মধ্যে। -কেনো ? -জেরক্স করে ফাইলের মধ্যে রেখে দিয়েছি। -তার মানে তুই দ্বিতীয়বার ঢুকেছিলি। -হ্যাঁ। সেই রাতেই। -ভাল করেছিস। একবার উঁকি দিয়ে দেখে নে। ফেটে যাবো। সন্দীপ উঁকি দিয়ে দেখে নিলো। আমরা দুজনে বেরিয়ে এলাম। নিউজরুমে ঢুকলাম। দাদা মল্লিকদা খুব হাঁসা হাঁসি করছে। অর্ক কাছে এলো। -কিরে বাড়ি যাবিনা ? -পকেট খালি। আমি মানি পার্টস থেকে একটা হাজার টাকার নোট ওকে দিলাম। -আমার কাছে আর নেই। কাল আয় বিকেলে নিয়ে নিবি। কত খরচ হয়েছে। -অনেক। -এক না দুই। -একের একটু বেশি দুয়ের একটু কম। -এতো পেলি কোথায়। -সব ধারে। -কাল আয় তোর এ্যাকাউন্টে ফেলে দিতে বলবো সনাতন বাবুকে। -আচ্ছা। -আমি যতোক্ষণ তোকে না বলছি ততক্ষণ ওকে ছাড়বিনা। -আচ্ছা। -ডাক্তারের পাত্তা লাগা। এই কেসটা হয়ে যাবার পর, ডাক্তার জায়গা চেঞ্জ করতে পারে। -ঠিক আছে। -যা ভেগে যা। অর্ক নাচতে নাচতে চলে গেলো। আমি দাদার কাছে এলাম। -তোর বড়মা অস্থির হয়ে পরছে। আমাকে গাল দিচ্ছে। -ও তোমার সয়ে গেছে। -চলো। -এটা কিরে। -সব ব্যাপারে তোমার ইন্টারেস্ট কেনো বলোতো। -তুই নিজেই তো একটা ইন্টারেস্টিং পিপল। -চলো। দাদা উঠে দাঁড়ালো। সবাই একসঙ্গে বেরোলাম।
Parent