কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২২৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4828781.html#pid4828781

🕰️ Posted on June 18, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 639 words / 3 min read

Parent
রবীন গাড়ি ড্রাইভ করছে। আমি সামনে বসলাম। দাদা মল্লিকদা পেছনে। আস্তে আস্তে দেখলাম, ধর্মতলায় কাগজ নিয়ে মারপিট হচ্ছে। দাদার দিকে তাকালাম। -কিরে অনি। -একটু বেশি ছেপেছো। -পঞ্চাশ হাজার। -সামাল দিতে পারবেতো। -আমি কি করে জানবো। যদি রিটার্ন হয়। মল্লিকদা হো হো করে হেসে ফেললো। -তুই হাসলি কেনো। -অনি এক লাখের কথা বলেছিলো। -তুই বলেছিলি। -তখন তোমার প্রিন্ট অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে। -তাহলে ছাপতে বলে দিই। -না থাক। আমি বললাম। ভবানীপুর রাসবিহারী হাজরাতেও একি অবস্থা। আমরা বাড়ির গেটে এসে দাঁড়ালাম। ছগনলাল দরজা খুললো। দেখলাম বারান্দায় লাইন করে সবাই দাঁড়িয়ে। ইসলাম ভাই, ছোটমা, বড়মা, ভজু, কবিতা, নীপা, মিত্রা, ডাক্তারদাদা। -নাও তোমার ছেলে সবাইকে কাঁদিয়ে বিশ্বজয় করে এলেন। মিত্রা ক্যাট ক্যাট করে উঠলো। আমি হাসছি। -হাসিসনা। এই মানুষগুলোর মুখের চেহারা দেখেছিস। -এদেরটা প্রকাশ পাচ্ছে না তোরটা প্রকাশ পাচ্ছে। -দেখি তোর মোবাইলটা। -না। -তোকে দিতেই হবে। -আচ্ছা দিচ্ছি দাঁড়া। মিত্রা আমার পকেট থেকে জোড় করে মোবাইলটা বার করে নিলো। বড়মার মুখের সামনে গিয়ে ধরলো। -দেখো স্যুইচ অফ কিনা। বড়মা ছোটমা দামিনী মাসি ইসলাম ভাই-এর চোখ ছল ছল করছে। বারান্দার এক কোনে দেখলাম রতন আবিদ নেপলা বসে আছে। আমি বড়ামার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। -ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমাকে পেতে গেলে একটু টেনসন নিতে হবে সবাইকে। ইসলাম ভাই দাদার হাত থেকে কাগজটা নিয়ে নিলো। চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেছে। আকিবের ছবি ছাপা হয়েছে। আমাদের দিকে তাকালো। চোখ যেনো ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে। -তাহলে এডিটর অনিবাবু টাইমের আগেই কাজ সারলো। ডাক্তারদাদা বলে উঠলো। -তুমি জানো আর অনিবাবু জানে। আমাকে কিছু বলেনি। আমি মাথা নীচু করে। -চলো ভেতরে চলো। -তোমরা যাও আমি আসছি। -মুন্নাদা। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো। -কিরে মামনি। -এদিকে এসো। -বুঝলাম মিত্রা লাস্ট ম্যাসেজটা খুঁজে পেয়ে গেছে। আমি রতনদের কাছে এলাম। -কিরে তোরা কখন এসেছিস। -সেই তখন থেকে, যখন তুমি আকিবকে তুলে নিয়ে গেলে। -তোরা দেখেছিস। -পাশের ঝুপরিতে ছিলাম। দামিনীমাসি ইসলাম ভাই আমাকে এসে জড়িয়ে ধরে ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফেললো। -একি তোমরা কাঁদছো কেনো। রতন নেপলা আবিদ উঠে দাঁড়িয়েছে। -রতন আজ অনির জন্য বেঁচে গেলাম। এদের হাত থেকে আমিও হয়তো বাঁচতাম না। -কি বলছো দাদা তুমি! রতনের গলা কাঁদো কাঁদো। আবিদের চোখ ছল ছল। নেপলা বুঝে উঠতে পারছেনা। রাগে ফুঁসছে। -আরে কাঁদলে হবে। -ওরা অনিকেও ছাড়তো না। -কি বলছো কি তুমি। -ওরা কেউ এখানকার নয়। মিত্রা এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। একে একে সবাই এগিয়ে আসছে। -তোর কিছু হলে আমি কি নিয়ে থাকবো। মিত্রা ঝড় ঝড় করে কেঁদে উঠলো। দামিনী মাসি আমাকে ছেড়ে ওকে জড়িয়ে ধরলো। -এই দেখো সবাই মিলে পাগলামো করে। আমার কিছু হয়েছে নাকি। ছোটমা বড়মা চোখ মুছছে। দাদা আমার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। মল্লিকদা পুরো ফিউজ। -তোমরা কাঁদলে কিছু হবে না। ওর মুখের কোনো বিকার দেখেছো। ও বৃহস্পতিবার থেকে ফলোআপ করছে। ডাক্তারদাদা বললো। -তুমি জানতে। -না। -তাহলে বললে কি করে। -ও ঘন ঘন নিজেকে চেঞ্জ করেছে। আমি বড় বান্ধবীকে বলেছি। তুমি একবার অনিকে চেপে ধরো। -তুমি আমাকে বলোনি কেনো। -কি করে জানবো এরকম ঘটনা ঘটতে চলেছে। -মুন্না তুমি। -বিশ্বাস করুন দাদা। মামনির সাহায্যে ওর মোবাইলটা চুরি করে যতটুকু জানতে পেরছি। তাও ও জানতে পেরে গেছে। লাস্ট ম্যাসেজটা ওর মোবাইলে টাইম পাঁচটা পঁয়তাল্লিশ। -হ্যাঁ তুমি ঠিক বলছো। ঠিক তার ঘন্টা খানেকের মধ্যে অর্ক সায়ন্তন কাউকে কিছু না বলে অফিস থেকে বেরিয়ে গেছে। -ও আজকে যাদের সঙ্গে নিয়ে গেছে তারা সবাই এনএসজির লোক। আমি ধোপে টিকবোনা। -কি বলছো! -ও দুপুর থেকে ছটফট করছিলো। -কে ঘটনাটা ঘটাচ্ছে। -রাজনাথ। -দাঁড়াও আমি ফোন করছি। -একবারে করবেনা ওটা আমার খাবার। ফোন করলে অনিকে পাবেনা। -তুই যা বলবি শুনতে হবে। -শুনতে হবে নাহলে অনিকে ছাড়তে হবে। সবাই চুপ করে গেলো। -সবাই ভেতরে যাও। -ইসলাম ভাই। -বল। -তুমি আবিদ রতন ওপরে এসো। সবাই আমার গলার স্বরে চমকে গেছে। -খাবার ব্যবস্থা করো। অনেক রাত হয়েছে। -মিত্রা। -বল। -এই ফাইলটা রাখ। একটু আগে আমার রূপ আর এখন এই মুহূর্তে আমার রূপ দেখে সবাই থতোমতো খেয়ে গেছে। আমি সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে এলাম। আমার পেছন পেছন ইসলাম ভাই আবিদ রতন দেখলাম দামিনীমাসি পেছন ধরেছে। ঘরে চলে এলাম। -তুমি এলে। তোমাকে আসতে বলিনি। -আমি থাকবো। -তুমি থাকবে না। -থাকবো। -কোনো কথা বলতে পারবেনা। -ঠিক আছে শুনবো। -কাঁদতে পারবেনা। দামিনী মাসি মাথা দোলালো।
Parent