কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২২৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4828786.html#pid4828786

🕰️ Posted on June 19, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 918 words / 4 min read

Parent
 ঘরে ঢুকেই ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকালাম। -ডাক্তার কোথায় আছে? -তুই বিশ্বাস কর আমি জানিনা। -রতন? -আমি জানিনা। -আবিদ? মাথা নীচু করে রইলো। -বল কোথায় আছে? -শেষ জানতাম রাজনাথ বাবুর বাড়িতে। -কোন বাড়িতে? -মুরারীপুকুরে। -তারপর? -আর জানি না। -মাসি জানতো। -মাসির কথা মতো ওইটুকু খোঁজ পেয়েছিলাম। তারপর আর জানি না। -তোর ফোন। মিত্রা ঘরে ঢুকলো। -হ্যালো। -কি হলো আমার এ্যাকাউন্ট নং। -সরি। হাত ধোয়া হলো? -হ্যাঁ। -যেটা বেঁচে আছে? -রাখলাম না। আই উইটনেস করে নিলাম থানার ওসিকে তারপর ঝেড়ে দিলাম। রাখলেই ঝামেলা। -ভাল করেছেন। নিন লিখে নিন। মিত্রা দাঁড়িয়ে আছে সব শুনছে। আমি ইচ্ছে করে ভয়েজ অন করে রেখেছি। আমি একে একে সব নম্বর বললাম। -গুড। এবার বলুন। -এ্যাকাউন্ট গুলো সব রঘুবীর যাদবের নামে আছে। নমিনি রাজনাথ। সব এ্যাকাউন্ট সিল করুন। যে কোনো সময় আপনাকে ডাকতে পারি। টিম নিয়ে রেডি থাকবেন। -আচ্ছা ওরা কি আপনাকে টার্গেট করেছিলো। -কে বললো আপনাকে? -যেটা বেঁচে ছিলো। -রেকর্ডিং করেছেন? -অবশ্যই। তবে ওরা আপনাকে চেনে না। আকিব বলে ছেলেটা ওদের চিনিয়ে দিতো। -কালকে রেকর্ডিংটা এবং একটা কপি আমাকে একটু জেরক্স করে পাঠান। -সকালে পাঠিয়ে দেবো। আর একটা অন্যায় করেছি। -আবার কি হলো। -বড়দা আপনার দাদা রিকোয়েস্ট করলো একটু হিন্টস দিয়ে ফেলেছি। -বেশ করেছেন। কালকে ব্যাঙ্ক খোলার আগেই সিজ করুণ। -কালকে কাজ সেরে বাড়ি যাবো। এখন অফিসেই ঘুমুবো। -কাগজ দেখুন। -বেরিয়ে গেছে ? -হ্যাঁ। -এখুনি আনিয়ে নিচ্ছি। -আচ্ছা। ফোনে কথা শেষ করে পেছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম। গেটের মুখে সব দাঁড়িয়ে আছে। -কি হলো তোমরা এখানে। -তোর মাথা ঠান্ডা হয়েছে। দাদা হাসতে হাসতে বললো। -আমার মাথা কখনই গরম নয়। -তখন যেরকম বাজখাঁই গলায় চেঁচিয়ে উঠলি। আর একটু হলে স্ট্রোক হয়ে যেতো। -ভেতরে এসে বোসো। -সাগির, অবতার কোথায় আছে। -আমার কাছে। মাসি বললো। -কাল যখন বলবো বার করে দেবো। এনকাউন্টার করাবো। -অনি! সবাই আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে। -আমার কথার কোনো দ্বিরুক্তি যেনো না হয়। কি কথা মুখার্জীকে বললাম শুনেছো। -শুনলাম। -ওরা অন্যায় করবেনা। -সামলাতে পারবে। -আমি কথা দিচ্ছি। মাসি আমার হাতটা চেপে ধরলো। -রতন। -বলো। -কাল সকালে ব্যারাকপুর লাটবাগানে যাবি। ভিখারী হবি। নুলো ভিখারি। পারবি। আমি পারবো দাদা, রতনদা পারবেনা। আবিদ বললো। -ছোটমা একটু চা খাওয়াতে পারবে। -এত রাতে। -অনি ঠিক কথা বলেছে। দাদা বললো। -যাওনা ছোট একটু নিয়ে এসো। ডাক্তারদাদা বললো। ছোটমা বেরিয়ে গেলো। -ঠিকানাটা লিখে নে। মাথায় রাখবি তোকে মার্ক করার জন্য আমার লোক থাকবে। -আমি ভুল করবোনা। -মাথায় রাখবি। -আজ বিকেল থেকে মাথায় রাখছি। সবাই হেসে ফেললো। -ঠিকানা বলো। আমি বললাম। আবিদ লিখলো। -এই বাড়িতে ডাক্তার লুকিয়ে আছে। দামিনী মাসি, বড়মা, ইসলাম ভাই সকলে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। -কে যাচ্ছে কে বেরোচ্ছে আমাকে জানাবি। আমি তোর সঙ্গে মিলিয়ে নেবো। -আচ্ছা। -মিত্রা। -বল। -কাল দশটায় দাদার সঙ্গে অফিসে যাবি। আমার ল্যাপটপ প্রিন্টার সঙ্গে নিয়ে যাবি। তোকে নিয়ে বিকেল বেলা বেরোবো। -কোথায় যাবি ? -প্রশ্ন করবি না যেখানে যাবো দেখতে পাবি। -ইসলাম ভাই। -বল। -কাল সারাদিন তুমি দামিনীমাসি রতন এই বাড়িতে থাকবে। আমি না বলা পর্যন্ত বেরোবে না। -আচ্ছা। ছোটমা ভজু চা নিয়ে ঢুকলো। আমাকে চা দিতে দিতে বললো -আমাকে বল ওদের কি বললি। -মল্লিকদার কাছ থেকে শুনে নেবে। -ওরকম গম্ভীর হয়ে কথা বলছিস কেনো। একটু ভালো করে বলনা। দেবো কান মুলে। হেসে ফেললাম। -এইতো আসল অনি বেরিয়ে পরেছে। সবার মুখ চওড়া হলো। -হ্যাঁরে অনি আজ তুই সেমিফাইন্যাল খেললি ফাইন্যাল কবে খেলবি। ডাক্তারদাদা বললো। -আগামীকাল, মিত্রাকে নিয়ে অত্যন্ত ভদ্রভাবে। -যাক শুনে আশ্বস্ত হলাম। -এবার খাওয়ার জায়গা করো। দামিনী মাসি আমাকে জড়িয়ে ধরলো। -কিহলো তোমার। -না কিছুনা। -যাও নিচে যাও। ছোটমা দামিনীকে নিয়ে নিচে চলে গেলো। মিত্রা খালি ঘরে দাঁড়িয়ে রইলো। -কি হলো তুই দাঁড়িয়ে রইলি! মিত্রার চোখ হাসছে। -কেনো তুই তাড়িয়ে দিবি। আমার কাছে পা টিপে টিপে এগিয়ে আসছে। -নিচে যা, খাবার ব্যবস্থা কর। তবু মিত্রা আমার চোখে চোখ রেখে পা টিপে টিপে এগিয়ে আসছে। চোখের হাসি এবার সারা মুখমন্ডলে ছড়িয়ে পরলো। -যাবোনা কি করবি ? -এখন একেবারে বিরক্ত করবিনা। আমাকে জড়িয়ে ধরলো। -কেনো আমাকে তুই এনকাউন্টারে মারবি। -পাগলের মতো কথা বলবিনা। -কেনো তুই এরকম করিস। -কি করলাম। -তোর জন্য সেই সন্ধ্যে থেকে কেঁদে মরছি সকলে। -কে কাঁদতে বলেছিলো। -আমাকে একটা ফোন করতে পারতিস। -তুই কথা রাখিস নি। -কি করবো। সবাই যদি আমাকে প্রেসার করে। -আমাকে টলাতে পারলো কেউ। -তুই আমি সমান। তোর কিছু হলে আমি কি করবো। -কারুর জন্য কোনো কিছু আটকে থাকে না। মিত্রা আমার মুখটা চেপে ধরলো। -প্লিজ তুই থাম। কেনো তুই দাদার ওপর ওরকম মুখ ঝামটালি। -বেশ করেছি। আমার কাজে কেউ ইন্টারফেয়ার করুক আমি তা চাইনা। -দাদা কি তোর খারাপের জন্য বলেছে। -যার যা কাজ তাকে সেই কাজ করতে দে। দাদা আজকের কাজটা করতে পারতো ? -তোর মোবাইল না দেখলে সেটা কেউ জানতে পারতোনা। -কেনো দেখতে গেছিস। -কেনো দেখাবি না। তুই রতনকে শেষ পর্যন্ত বলেছিস, কথা না শুনলে এনকাউন্টারে উড়িয়ে দিবি। সে বেচারা পরি কি মরি করে আমার কাছে এসে আমার পা ধরে বসে থাকলো আধ ঘন্টা। ইসলাম ভাই হাউ হাউ করে কাঁদছে। দামিনী মাসি কাঁদছে। তোকে ভালবেসে ওরা কি অন্যায় করেছে ? -আমি ন্যায় অন্যায় বুঝি না। আমার কাছে কাজটা কাজ। আমার একার জন্য হাজার জনের ক্ষতি হোক আমি তা চাইবো না। -অনি এই অনি। নিচ থেকে দাদা চেঁচিয়ে উঠলো। মিত্রা আমাকে ছেড়ে দিলো। -যা নিচে গিয়ে দেখ কি হলো। -তুই চল। -কেনো কি হয়েছে দেখ। -আমি পারবোনা। অগত্যা নিচে এলাম। দাদা মোবাইলটা হাতে দিয়ে বললো। -অফিসে গন্ডগোল হচ্ছে আরও কাগজ ছাপতে হবে। নাহলে হকাররা কাল থেকে স্ট্রাইক করবে। -তুমি কি বললে ? -তুই সার্কুলেশনে কথা বল। -আমি ফোন ধরলাম। -হ্যালো। -অনিবাবু আমি সামলাতে পারছি না। মিনিমাম একলাখ কাগজ ছাপার পারমিশন দিন। -প্রেসে কে আছে। -সবাই আছে আমি আটকে রেখেছি। -ছাপতে বলুন। আর এই একলাখ কাগজের যা দাম হবে তা আপনারা সমান ভাবে ভাগ করে নিন। এটা কোনো ক্রেডিট হবেনা। যদি রাজি হয় তাহলে ছাপবেন না হলে ছাপবেন না। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে। এইরকম একটা কথা যে আমি বলতে পারি ওরা বিশ্বাস করতে পারেনি। আমি দাদার হাতে ফোনটা দিয়ে সোজা গট গট করে ওপরে উঠে এলাম।
Parent