কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ২২৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4843943.html#pid4843943

🕰️ Posted on June 21, 2022 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1333 words / 6 min read

Parent
গেঞ্জিটা খুলে প্যান্টটা খুললাম। টাওয়েলটা আলনা থেকে টেনে নিলাম। পরতে যাবো মিত্রা ছুটে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। -প্লিজ একটু। -একবারে বিরক্ত করবিনা মন মেজাজ ঠিক নেই। -ও তুই তোর কাজের লোকদের দেখাস। আমাকে দেখিয়ে লাভ নেই। -সরে যা। আমাকে বাথরুমে যেতে দে। -একবার। আমাকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁট তুলে ধরেছে। বাধ্যে হয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়ালাম। চোখ দুটো খুশিতে কল কল করে উঠলো। আমাকে ছেড়ে দিলো। -জানিস তোর কথায় নিচের রিপার্কেসন! তোর একটুও দেখতে ইচ্ছে করেনা। কোনো কথা বললাম না। আমি বাথরুমে গেলাম। ভালো করে মুখ হাতপা ধুয়ে। বেরিয়ে এলাম। মিত্রা আলমারি খুলে আমার পাজামা পাঞ্জাবী বার করে রেখেছে। -কিরে এটা পরবি তো। -দে। -ছোটমা এসে দুবার ঘুরে গেলো। তুই না গেলে কেউ খেতে বসবে না। -তোরা কি পেয়েছিস বলতো। -ডাক্তার দাদাকে বলনা, বলতে পারছিস না। -ডাক্তার দাদা এখনো আছে ? -যায় কি করে। তোর কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনতে হবেনা। -আজ কিছু হবেনা। -আমি নয় পেট পাতলা। তোর সায়ন্তন কি করেছে। -কেনো! -দাদার কাছে বসে পেট খালি করে দিয়েছে। -ওহ স্যাট। যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই। ছাগলটাকে দিয়ে হবেনা। -আজ প্রথম ? -হ্যাঁ। চুলটা আঁচড়ে নিলাম। দুজনে নিচে নামলাম। সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে গল্প করছে। দাদারা সোফায় গোল হয়ে বসে। আমি ঘরে ঢুকতেই দাদা বলে উঠলো। -তোর কথা মতো বলে দিয়েছি। রিটার্ন হলে আমায় কিছু বলবিনা। -কালকে বাইরের কাগজে এই লেখাটা এডিট করে ছাপিয়ে দেবে। নাহলে তুমি ঝামেলা পোহাবে। -তার মানে। -যা বললাম তাই। -সে কি করে হয়। তোর টিভি নিউজ এখনো ধরতে পারে নি। খালি ব্রেকিং নিউজ বলে ক্লিপিংস দিয়ে চলেছে। -মোবাইলটা পকেট থেকে বার করে সায়ন্তনকে ছোট্ট একটা ম্যাসেজ লিখে দিলাম। আমার পারমিশন ছাড়া, একটিও ছবি এবং ক্লিপিংস যেন বাইরে না যায়। এটা মাথায় রাখবি। -কিরে তোর কাজ শেষ হয়নি। কথাটা কানেই ঢোকালাম না এমন ভান করলাম। -বড়মা সবাই কি করে বসবো। -তোকে চিন্তা করতে হবেনা। -দিয়ে দাও। আমি কোথায় বসবো ? -টেবিলে। -ভজু কোথায় মাসি ? -ঘুমোচ্ছে। -কোথায় ? -ছোটর ঘরের মেঝেতে। -খাওয়া হয়ে গেছে ? -না। -ওকে খাইয়ে দিতে পারতে। -তুই না এলে ও খাবেনা বলে ওপরে চলে গেছে। -ডাকো। কবিতা বেরিয়ে গেলো। -টেবিলে আবার নিচে করে লাভ কি, সবাই নিচে বসলে হতো না ? -তোর মন চাইলে হবে। বড়মা রান্নাঘর থেকে বলে উঠলো। আমি উঠে দাঁড়ালাম। -ইসলাম ভাই ধরো টেবিলটা একটু ধারে সরিয়ে দিই। -তোকে করতে হবে না। রতনকে বলে দিচ্ছি। গোল করে আসন পাতা হলো। আজ আমি, ডাক্তার দাদা আর দাদার মাঝখানে। দাদার পাশে মল্লিকদা, ডাক্তার দাদার পাশে ইসলাম ভাই। ওদিকে ছোটমা বড়মার মাঝখানে মিত্রা বড়মার পাশে নীপা দামিনী মাসি কবিতা ভজু। সবাইকে খাবার বেড়ে দেবার পর মাঝখানে সব হাঁড়ি বসানো হলো যার লাগবে মিত্রা কিংবা কবিতা উঠে উঠে দেবে। আমাদের অপজিটে রতন আবিদ নেপলা। কারুর মুখে কোনো কথানেই, সবাই গম্ভীর। খাওয়া শুরু হলো। মেনু লিস্টে শুধু বিরিয়ানী, চিকেন। অনেক ক্ষণ পর ডাক্তারদাদা বলে উঠলেন। -বড়ো ভালো রেঁধেছো। দারুণ স্বাদ। -কিনে এনোছো না বাড়িতে করেছো। আমি বড়মার দিকে তাকিয়ে বললাম। -উঁ কতো খায়। আমি বানিয়েছি। মিত্রা বললো। -তোর দ্বারা এ জন্মে হবে না, হলে আগামী জম্মে। -জিজ্ঞাসা কর মাসিকে। -বুঝে গেছি, হেল্পার। -আমার মতো তাই না অনিদা। ভজু বললো। সবাই হেসে ফেললো। -কাল সকালে হবে, মনে রাখিস। -আর বলবোনা। আবার সবাই চুপচাপ। বেশ কিছুক্ষণ পর। -কিরে তোর এখন আবার তাড়াহুড়ো নেইতো। ডাক্তারদাদা বললো। -না। -তোর নেক্সট ভেঞ্চার। -বলা যাবেনা। মোবাইলটা পকেটে ভাইব্রেসন মুডে ছিলো। কাঁপছে। বুঝলাম কেউ ফোন করছে। বার করলাম। ডাক্তারদাদা দাদা আমার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে। দেখলাম মুঃ মুখার্জী। -কি হলো। -আরে রঘুবীর যাদব না রঘুবীর প্রসাদ। -কেনো কি নাম দেখছেন। -রঘুবীর প্রসাদ। -নমিনি। -মিলে যাচ্ছে। -তাহলে আবার কি, ওইটাই হবে। এ্যামাউন্ট কি দেখছেন। -বিশাল। -আজ কিছু তোলা হয়েছে। -হ্যাঁ। কলকাতার সাতটা এটিএম থেকে। -কতো ? -এক। -কোকা না খোকা ? -কোকা। -এ্যামাউন্টগুলো একটু নোট ডাউন করে নিন। পারলে প্রিন্ট আউট। -ঠিক আছে। -কালকে সকালে কাগজগুলো একটু পাঠিয়ে দেবেন। মুখে গালা আটকে দেবেন। -ঠিক আছে। ফোনটা পকেটে রাখলাম। দাদা ডাক্তারদা আমার মুখের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে। আমার কথা শুনেছে। কিন্তু এতোক্ষণ কার সঙ্গে কথা বলছিলাম, বুঝতে পারে নি। মল্লিকদা নীচু হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে। -কি দেখছো ? -তোকে। -সেতো দেখতেই পাচ্ছি। -তুই কি আজকাল কোড ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলছিস কেউ বুঝতে পারবোনা বলে। ফিক করে হেসে ফেললাম। -হাসলেই সাত খুন মাপ। সারারাত জাগতে হয় জাগবো। কি ঘটনা ঘটালি বলবি। নাহলে উঠছিনা। তখন অনেক তোড়পেছিস আমার ওপর। একটা কথাও বলিনি। ঘরটা ঘম গম করে উঠলো দাদার গলার শ্বরে। সকলে চমকে তাকালো। খাবার থালায় হাত থেমে গেছে সকলের। হো হো করে আমি হেসে উঠলাম। সবাই গম্ভীর। আমি হাসছি। -তোকে আমি এবার কান ধরবো। -সেতো তুমি থাপ্পরও মেরেছো। হাসতে হাসতে। -অনেকদিন পরেনি। তাই ধরাকে সরা জ্ঞান করছিস। -চেঁচিয়োনা ছগনলাল ছুটে চলে আসবে। -বল আগে। -বললে সহ্য করতে পারবে ? -বলেই দেখ। আবার চুপ চাপ। আমি খেতে শুরু করলাম। সবাই খাওয়া থামিয়ে আমার কথা বলার অপেক্ষায়। -রতন। -বলো দাদা। -তুই তখন ম্যাডামের পা ধরে কেঁদিছিলি কেনো। -তখন তোমার কথা না শুনলে তুমি ছট্টুর মতো আমাকে মেরে দিতে। -শুনলে কথাটা। এই ছট্টুকে একদিন আমি বুকে করে আগলে রেখেছি। সাক্ষাত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছি। আজ কুকুরের মতো চোখের সামনে গুলি খেয়ে মরতে দেখেছি। বলতে পারো আমার কথামতো গুলি করা হয়েছে। -কেনো। দাদা ঝাঁজিয়ে উঠলো। -আমার কথা শোনেনি। বেইমানি করেছে। সবাই বসে আছে আমি খাচ্ছি। -ওকে কিন্তু আমি ভালোবাসতাম। আজ ওর একটা কথায় অবিশ্বাস করলাম। তুড়ন্ত ডিসিসান নিলাম ওর পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার নেই। আর আমি যদি বিচার বুদ্ধি দিয়ে একবার মনে করি আমি ঠিক কাজ করতে যাচ্ছি। তোমরা কেউ আমাকে আটকাতে পারবেনা। আমার কাছে ছয় থেকে সাত রকমের অপসন থাকে। একজন না বললে আর একজনকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেবো। -কেনো তুই এই কাজ করলি। এখনো দাদার গলায় সেই ঝাঁজ। -নিরূপায় হয়ে। -আর কোনো পথ ছিলোনা। -না। -তার মানে! এইবার দাদার গলাটা বুঁজে এলো। সরাসরি দাদার চোখে চোখ রাখলাম। -তাহলে তোমাদের সকলকে আমাকে হারাতে হতো। মিত্রা পর্যন্ত বাদ যেতোনা। আমি খাচ্ছি, সকলের হাত থেমে গেছে। পিন পরলে ঘরে শব্দ হবে। বুঝতে পারছি সকলে আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে। -কিহলো বসে রইলে কেনো, খাও। আর শুনবে, না এখানে থামিয়ে দেবো। দাদা আমার দিকে তাকিয়ে। চোখের পলক পরছেনা। -তুমি যাকে ফোন করে আমার জন্য সাহায্য চাইবে মনে করেছিলে, তার হাত পা বাঁধা। সে কিছু করতে পারবেনা। দাদা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। আবার সবাই চুপচাপ। নিস্তব্ধে খেয়ে যাচ্ছে। -যে ছেলেটা আমার গ্রামের বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করতে পারে, তাকে কোন সাহসে বাঁচিয়ে রাখবো বলো। দাদার পিঠে কে যেনো চাবুকের বাড়ি মারলো। আমার দিকে সড়াসরি তাকালো। -তুই কি করে জানলি। -পরিদা। -পরিদা! ইসলাম ভাই আমার দিকে তাকালো। -হ্যাঁ। পরিদা। চকে দাঁড়িয়ে তোমরা যখন সবাই চা খাচ্ছিলে। পরিদা আমাকে আলাদা ডেকে নিয়ে গিয়ে বললো। তোকে একজন খুঁজতে এসেছিলো। তাকে দেখতে এই রকম। সব খোঁজ খবর নিলো। লোকটাকে দেখে আমার তেমন সুবিধার মনে হলোনা। তাই বাড়িতে ঢুকেই সময় নষ্ট করতে চাই নি। আবার চুপচাপ। -রতনকে জিজ্ঞাসা করো, ওর পেট থেকে আমি কথা বের করেছিলাম কিনা। কিরে রতন আমি ঠিক বলছি। রতন হ্যাঁ বলতে গিয়ে কেঁদে ফেললো। -খেতে বসে কাঁদতে নেই রতন। আমি বলতে চাইনি, তোরা সবাই শুনতে চেয়েছিস। দামিনীমাসি বড়মা নিজেদের পাত ছেড়ে উঠে এসে, এঁঠো হাতে আমার সামনে এসে বসলো। বাঁহাতে কাপরের খোঁট দিয়ে চোখ মুছছে। -কিহলো! তোমরা উঠে এলে কেনো। যাও আমি বলছিতো। -তোর মুখটা একটু দেখবো। -দেখে লাভ নেই। -ঠিক আছে, বল। আবার খাওয়া শুরু করলাম। -তখন আমার মধ্যে একটা হিংস্র পশু কাজ করছিলো। তোমরা কেউ সামনে এসে দাঁড়ালে, তারও অবস্থা ছট্টুর মতো হতো। একটু থেমে। -রতন চাক্ষুষ দেখেছে, লাইভ দেখেছে অর্ক সায়ন্তন। তুমিতো সায়ন্তনের মুখ থেকে সব শুনেছো। ফোনটায় ম্যাসেজ এলো। পকেট থেকে বার করলাম। দেখলাম অর্ক ম্যাসেজ করেছে। “দাদা লাটবাগানের বাড়িতে একটা কালো গাড়ি ঢুকলো। নম্বর এই। ব্যাপারটা বুঝতে পারছিনা। আমি বাড়িতে, আমার চেলুয়ারা খবর দিলো। নম্বরটা দেখেই বুঝলাম স্পেশাল নম্বর।” সঙ্গে সঙ্গে মুখার্জীকে ফোন করলাম। ইচ্ছে করে লাউড স্পিকারে দিলাম। মিঃ মুখার্জীর গলা ভেসে এলো। -আপনাকে নিয়ে আর পারা যাবে না! -কেনো? -এই কানা রাতে ওখানে আপনার লোক আছে! -গাড়ি কেনো বাড়িতে ঢুকলো? -আমাকে বাঁচতে হবে তো। -আমার প্রতি বিশ্বাস নেই। -এ আপনি কি বলছেন অনিবাবু! -আমার খাবারে আপনি ভাগ বসাবেন না। আপনারটা আপনাকে দিয়েছি। ওটা আমার। -না না আমি খালি খবরটা পৌঁছে দিচ্ছি। ওখানে থেকে বেরোবার চেষ্টা করলে, এনকাউন্টার করতে বাধ্য হবো। -আপনি অর্কর পেট থেকে কথা বার করেছেন। -ঠিক। -আপনার সঙ্গে অর্ককে আলাপ করিয়ে দেবার পরই অর্ককে এই কাজ থেকে অফ করে দিয়েছি। -সত্যি! -ফোন করে দেখতে পারেন। -ব্যাটা নম্বরটা ভুল দিয়েছে। -মাথায় রাখবেন ওই পাড়ায় সাত বছরের একটা ভিখারীর ছেলে আমার ইনফর্মার হিসাবে কাজ করছে। -সত্যি! এক কাজ করুন, আপনি আমাদের দপ্তরে জয়েন করুন। -টাকা দিতে পারবেনা। ফোনটা কেটেই অর্ককে ফোন করলাম।
Parent