কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৩০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3928117.html#pid3928117

🕰️ Posted on November 7, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1074 words / 5 min read

Parent
আমি অনাদির পেছনে বসলাম। নীপা আমার পেছনে। অনাদি বাইক চালাতে আরম্ভ করলো। বাজার ছেড়ে বেরিয়ে এলাম। আলো থেকে অন্ধকারে, কিন্তু না, জ্যোতস্নার আলোয় মাঠ ভরে গেছে, অনেকদূর পর্যন্ত দেখা যায়, আজ বোধ হয় ত্রয়োদশী, চাঁদটা বেশ বড়, নীপা আমার শরীরের সঙ্গে সেঁটে আছে, ওর হাত আমার থাইতে, মাঝে মাঝে আমার নুনুর কাছে এসে আবার সরে যাচ্ছে, ওর ডাঁসা ডাঁসা মাই আমার পিঠে হুল ফোটাচ্ছে, বাইকের আওয়াজ, চারিদিকের নিস্তব্ধতা ভেঙে এগিয়ে চলেছে, মাঝে মাঝে দুএকটা পোকা মাকড় ঠকাস ঠকাস করে চোখে মুখে লাগছে, নীপা ওর ঠোঁট দুটো আমার পিঠে ছোঁয়ালো, মাথা রাখলো, আমার পিঠটা যেনো ওর বালিশ। আমরা তিনজনেই চুপচাপ। মিনিট দশেকের মধ্যে আমরা সবাই পৌঁছে গেলাম, মনা কাকা চেঁচামিচি করছে। তোমরা ছেলেটাকে পাঠিয়ে দিলে, এখনো এলো না। ……..কে এলি রে। -স্যার আমি অনাদি । -ও অনাদি , দেখতো ছেলেটা হাটের দিকে গেছে, এখনো এলো না। -কে। -অনি। -এই তো আমি ওকে নিয়ে এসেছি। -নিয়ে এসেছিস, আয় আয়। ভিতরে আয়। অনাদি দাওয়ায় উঠে কাকাকে প্রণাম করলো। আমি এই সোনা ঝরা জ্যোৎস্নায় নীপার দিকে তাকালাম, ওর চোখে এখন অন্য কথা, আমি প্যাকেটটা ওর হাতে দিলাম। -কি এটা। -ভেতরে গিয়ে খুলে দেখো। -নীপা ভেতরে চলে গেলো। আসর ভাঙতে অনেক রাত হলো, খেতে খেতে আরো দেরি হলো, প্রায় এগারোটা। আমি কাকাকে চোখের ব্যাপারে বললাম, কাকা হাঁই হাঁই করে উঠলো, আমি খালি একটা কথাই বললাম, তাহলে কাল সকালে উঠেই আমি এখান থেকে চলে যাব, এজীবনে আমার সঙ্গে আর দেখা হবে না। কাকা কেঁদে ফেললেন, ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে। কিন্তু অনেক খরচ, সে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমার কন্ঠের দৃঢ়তা কাকাকে সব কিছু মেনে নিতে বাধ্য করালো, সম্পত্তির ব্যাপার নিয়ে কাকাকে বললাম, আমি একটা চিন্তা ভাবনা করে রেখেছি কাল তোমায় জানাবো। সুর মাসি বললেন, হ্যাঁরে অনি তুই একলা ও বাড়িতে শুতে পারবি। আমি বললাম কেনো পারবো না। -নীপা বলছিলো তোর ওখানে শোবে। আমি নীপার দিকে তাকালাম, ও মাথা নীচু করে আছে। -এমনি সময় এ বাড়িতে কে থাকে রাতে। -ভাট পাড়ার দুটো ছেলে আছে, ওরা এসে থাকে। -ও বাড়িতে। -আমি আর নীপা শুই। -তুমি কোথায় শোবে। -আমি এ বাড়িতে থাকবো। -ঠিক আছে। খাওয়া শেষ, আমি উঠে মুখ ধুয়ে ও বাড়িতে চলে গেলাম। বাইরের বারান্দায় দুটো ছেলেকে বসে থাকতে দেখলাম, আমাকে দেখে ওরা উঠে দাঁড়ালো, -তোমরা কার ঘরের ? -দাদা আমরা ভাটের ঘরে। -তোমাদের বাবার নাম কি। একজন বললো বিধান রায়, অপরজন বললো, বানু রায়। আমি অবাক হয়ে ওদের দিকে তাকালাম, এই ছোট ছোট দেখেছি, এখন সব সোমত্ত বয়স। নিজের ঘরে এলাম। ছোট একটা ডিম লাইট জ্বলছে, তার আলোয় যতটা দেখা যায়। আমি প্যান্ট গেঞ্জি খুলে পাজামা পাঞ্জাবী পরলাম, কতদিন এই ঘরে একা একা শুয়ে কাটিয়েছি। তখন কেউ আমার সঙ্গে শুতে আসতো না। ভানু থাকতো, হাঁড়িপাড়ার বিজন এসে থাকতো, একা থাকাটা আমার যেন জন্মগত অধিকার, সেই জন্য আমার কোন ভয়ডর নেই। রাতের অন্ধকার আমার কাছে ভীষণ প্রিয়। -উঃ তোমাকে নিয়ে আর পারা যাবে না। পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি নীপা এসে হাজির, এরি মধ্যে পোষাক বদল হয়ে গেছে, একটা হাতকাটা ম্যাক্সি পরেছে, ঘরের লাইটটা জ্বাললো, লো ভল্টেজ, টিম টিম করে জলছে। আমি ওর দিকে তাকালাম, -সত্যি অনিদা তুমি একটি লেডিস ফিঙ্গার। হাসলাম। -হাসছো। তোমার খাটের পাশটা দেখেছো। -না। -দেখো ওখানে তোমার রাতের পোষাক ভাঁজ করে রাখা আছে। -থাক কাল পোরবো। -দাঁড়াও আমি একটু আসছি। বলে নীপা চলে গেলো, কিছুক্ষণ পর একটা বড় টর্চলাইট আর একটা জলের মগ নিয়ে এলো। আবার বেরিয়ে গেলো, একটা টেবিল ল্যাম্প নিয়ে এলো। -এটা আবার কি হবে। -দেখতেই পাবে। এ তো আর তোমাদের শহর নয়। একটু পরেই লাইট ফুস হয়ে যাবে। -তাই নাকি। হ্যাঁ। আমরা সারারাত লাইট জ্বালালে তোমরা পাবে কি করে। নীপা বেশ টরটরি আছে, কটকট করে কথা বলে। এরি মধ্যে ও যেন আমার কতো আপন, আমাকে শাসন করছে। সোহাগ করছে। নীপা খাটটা ঝেরে দিয়ে নিচে রাখা বাক্স থেকে একটা চাদর বার করে বিছানায় পেতে দিল, চাদরটা চেনা চেনা মনে হলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি। -কার বলোতো চাদরটা। -কার। -মনে করে দেখো। -মনে পড়ছে না। -মনিমা বলেছিল, তুমি যখন স্কুল ফাইন্যালে স্টার পেয়েছিলে, সেই সময় মশাই তোমাকে এটা প্রেজেন্ট করেছিলো। চেয়ে চেয়ে দেখলাম, নীপা সত্যি কথা বলেছে। আমি মাদুর পেতে শুতাম, অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না, কাকা চাদরটা কিনে দিয়েছিলো। কিন্তু আমি এতে শুতাম না। সেটা যে এতো যত্ন সহকারে তোলা আছে, জানতাম না। চাদরের গায়ে নেপথালিনের গন্ধ ম ম করছে। -যাও শুয়ে পর। নীপা বললো। -তুমি কোথায় শোবে। -ভেতর বারান্দায়। -কেন। -সে তুমি বুঝবে না। নীপা নিজে থেকেই একটা আড়াল তোলার চেষ্টা করছে। কিছু বললাম না। -দরকার পরলে ডাকবে। আমি বিছানায় টানটান হয়ে শুলাম, আঃ কি আরাম, কলকাতায় আমার গদিওয়ালা বিছানার থেকে এ বিছানার মাধুর্য্যই আলাদা। মাথাটা ভীষণ যন্ত্রনা করছে। নিজে নিজেই মাথায় হাত বোলাতে লাগলাম, নীপা বাইরের বারান্দায়, বিছানা করছে, ঝুপ ঝাপ শব্দে । কিছুক্ষণ পর ও আবার ভেতরে এলো। -দরজা বন্ধ করবে না।………কি হলো……..মাথা যন্ত্রণা করছে। আমি ওর দিকে তাকালাম, ওর চোখ দুটো কেমন যেন হয়ে গেলো, আমার মাথার শিয়রে এসে বসলো। -আজ সারাদিন তোমার অনেক ধকল গেলো। -হ্যাঁ। -দাঁড়াও তোমার মাথায় একটু বাম লাগিয়ে দিই। -না, থাক। -থাক কেনো। -আমি ওসব লাগাই না। -ওঃ তুমি না……নীপা মাথা থেকে আমার হাতটা সরিয়ে দিয়ে নিজের হাত রাখলো, নরম হাতের ছোঁয়ায় আমার চোখ বন্ধ হয়ে এলো, নীপা আমার চুলের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে বিলি কাটছে। একটা পিন পরলেও এ ঘরে শব্দ হবে। এখনো কারেন্ট আছে, ডিম লাইটটা মিট মিট করে জ্বলছে, আমার মাথার শিয়রের জানলাটা খোলা, একফালি চাঁদের আলো, জানলার ফাঁক দিয়ে বিছানায় এসে পরেছে। -অনিদা। -উঁ। -তুমি আমার জন্য এত দাম দিয়ে ওটা কিনলে কেনো। -তোমার পছন্দ হয়েছে। -হ্যাঁ। যেদিন বাসুদা ওটা নিয়ে এসেছিল, আমি দেখেছিলাম, কিন্তু……… -কিন্তু কি। -তুমি তো জানো আমাদের অবস্থা। -একটা কাজ করবে। -কি। আমার বন্ধুগুলো……..উঃ তাড়াহুড়োয় আমার একটা ভুল হয়ে গেছে। কালকে তুমি এক ফাঁকে একবার বাসুর দোকানে যেতে পারবে। -তুমি বললে নিশ্চই যাব। -তুমি বাসুর দোকানে গিয়ে তোমার পছন্দ মতো, সুরমাসীর জন্য, কাকীমার জন্য আর কাকার জন্য বেশ কয়েকটা করে কাপড়, শায়া ব্লাউজ আর তোমরা যা যা পরো নিয়ে আসতে পারবে। নীপা মুচকি হাসল। -হাসছো কেন। -তোমার কথায়। -ঐ যে বললে…… -আরে ধ্যুত, আমিতো কোনো দিন কারোর জন্য কিনি নি। -জানি। -কি করে জানলে। -তোমার কথায়। তুমিও যাবে আমার সঙ্গে। -না। কাল আমার অনেক কাজ। -জানি। -কি করে জানলে। -মশাই বলছিলো। তুমি যা ডিসিসন দেবো তাই ফাইন্যাল। মশাই তোমাকে ছাড়া কাউকে পাত্তা দেয় না। জান। কাল দেখবে সবাই তোমার কাছে আসবে কত কাজ নিয়ে। সত্যি অনিদা তোমায় এতো দিন দেখিনি, আজ যত দেখছি তত অবাক হয়ে যাচ্ছি। -নীপা। -উঁ। -তোমার কোলে একটু মাথা রাখবো। -রাখো। -মনে কিছু করবে না। -ধ্যাত। আমার সৌভাগ্য। -কেনো। -আমার বন্ধুগুলোকে দেখেছিলে তখন। -হ্যাঁ। -ওদের দেখে তুমি কিছু বোঝো নি। -না। -সত্যি অনিদা তুমি কি। -আমি মানুষ। -আমি তাই বলেছি নাকি। -তুমি চাইলে এখুনি সকলকে পেতে পারো। -কি ভাবে। -যে ভাবে চাইবো। -হ্যাঁ। -তোমাকে যদি চাই। -ধ্যাত, আমি কি সিনেমা আর্টিস্ট। তা নয় তবে আমাদের কাছে তুমি তাদের থেকেও অনেক কিছু।
Parent