কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৩৪

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3933318.html#pid3933318

🕰️ Posted on November 9, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1343 words / 6 min read

Parent
নীপা চা নিয়ে এলো, হাসি ঠাট্টা ইয়ার্কি ফাজলামো কত কি হলো, সবার মধ্যমনি, নীপা আমাদের আড্ডায় কিছুক্ষণ অংশগ্রহণ করলো। চিকনা ধমকে বললো বড়দের আড্ডায় ছোটদের থাকতে নেই। -আমি এখন এ্যাডাল্ট। নীপা এমনভাবে কথা বললো সবাই হেসে উঠলো, সঞ্জীবের দিকে তাকিয়ে বললাম, হ্যাঁরে তোর দোকানে টিভি আছে। আনাদি বললো আছে মানে কি চাই বল। -দেখলি ব্যবসার কথা হলেই কেমন টোকে। -উঃ সব কথা গায়ে মাখিস কেনো। আমি বললাম। -এই হলো কাল, তোর কথা ভাঙিয়ে কত কাজ বাগায় জানিস ও। -সে তো ভালো। -হ্যারে শালা আমি করি, তুই করিস না। সঞ্জীব হেসে বললো করি তবে কম। তবে একটা কথা কি জানিস তোকে সবাই বেশ ধসে। -কি রকম। -সেদিন ভানুর একটা ব্যাপারে বিডিওর কাছে গেছিলাম, শালা কিছুতেই করবে না, যেই বললাম ঠিক আছে আমার বন্ধুরে তাহলে একবার ফোন করতে হবে। -শালা তোর নাম শুনেই বলে কিনা, আপনি একটু ঘুরে আসুন আপনার কাজ হয়ে যাবে। শালা সত্যি বলছি অনি কাজটা হয়ে গেলো। তুই শালা এখন মিনিস্টার হয়ে গেছিস। সবাই হো হো করে হাসলো। সিগারেটের প্যাকেটে মাত্র দুটো সিগারেট পরে আছে। চিকনা একটা আমাকে দিয়ে বললো, এটা কাউন্টার হবে। ভানু বললো, আমি ফার্স্ট, চিকনা বললো, ইঁট পাতো। আমি হেসে ফেললাম।   বাসুকে আলাদা করে বললাম, নীপা তোর দোকানে আজ যাবে কিছু জামা কাপড় কিনতে তুই তো থাকবি না, তাহলে কি হবে, বাসু খিস্তি করে বললো তোকে চিন্তা করতে হবে না। সঞ্জীবকে বললাম, তোর দোকানে একটা ভাল টিভি যদি থাকে আজ একটু লাগিয়ে দেবার ব্যবস্থা কর। সঞ্জীব আমার দিকে তাকলো, গান্ডু।   সবাই চলে গেলো, ঠিক হলো এখান থেকে, বারোটার সময় বেরোব ওরা বাইক নিয়ে যে যার চলে আসবে। আমি ও বাড়িতে গিয়ে কাকার সঙ্গে সব আলোচনা করলাম, নীপা ,কাকীমা, সুর মাসিও ছিল, ওরা আমার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে আছে। আমি কাকাকে বললাম তুমি অনুমতি দাও আমি এখানে থাকতে থাকতে সব কাজ সেরে যেতে চাই। কাকা কেঁদে ফেললেন, চশমা লাগিয়েও আমি আবঝা দেখি বুঝলি অনি, যার চোখ নেই পৃথিবী তার কাছে অন্ধকার। তোর লেখা আমি পরতে পারি না, নীপা পরে পরে শোনায় ঘরে একটা টিভি নেই, মেয়াটা সারাদিন কি করে বলতো সন্ধ্যায় চিকনাদের বাড়িতে যায় একটু টিভি দেখার জন্য।   আমি গুম হয়ে কিছুক্ষণ বসে রইলাম। কাকীমার দিকে তাকিয়ে বললাম, পান্তা খেয়ে বেরোবো। -সে কি রে মেয়েটা তোর জন্য সেই সাত সকাল থেকে রান্না করলো। নীপার দিকে তাকালাম, ঠিক আছে, আমি স্নান সেরে আসি ওরা এসে পরবে এখুনি। আমি ওবাড়ি হয়ে পুকুর ঘাটে চলে গেলাম, স্নান সেরে ঘরে এসে দেখি নীপা দাঁড়িয়ে আছে খাটের কাছে, কি যেন করছে। আমাকে দেখেই মুখটা গম্ভীর করে নিল। আমি বললাম কি হলো আবার। -কি হয় নি তাই বলো। আমি ওর দিকে তাকালাম। -তুমি যে এরি মধ্যে এতো সব প্ল্যান ভেঁজেছো আমাকে জানিয়েছো। -সময় পেলাম কোথায়। -কেনো কাল থেকে সময় পাও নি। হাসলাম। ও এগিয়ে এসে আমার টাওয়েলটা চেপে ধরলো। -এই খুলে যাবে খুলে যাবে। -যাক খুলে, আমি কি তোমার কেউ নই। -কে বলেছে তুমি কেউ নও। -তাহলে। -আচ্ছা আচ্ছা ঘাট হয়েছে। ও টাওয়েল ছেড়ে দিয়ে আয়না চিরুনিটা এগিয়ে দিল। আমি চুল আঁচড়ালাম। আমায় একটা জিনসের প্যান্ট আর গেঞ্জি এগিয়ে দিল। আমি বললাম এটা নয় পাজামা পাঞ্জাবী দাও। এগুলো কলকাতার জন্য। -না। -কেন?। -এটা পরলে তোমাকে দারুন স্মার্ট লাগে। হাসলাম। দাও। জাঙ্গিয়াটা পরতে গিয়ে ওর দিকে তাকালাম। ও হাসছে। -পরো। -তুমি যাও। -না। ভেবেছিলাম তোমার সঙ্গে কথাই বলবো না। -সে কি। -লজ্জা করে না। -কেনো। -ঐ অবস্থায় একটা মেয়েকে কেউ ছেড়ে দিয়ে যায়। পাষন্ড। হাসলাম। -নীপা আমার জন্য ওদের একটু চা করে দাও। নীপা মুখ ভেঙচালো। আমি নীপার সামনেই জাঙ্গিয়া পরে ফেললাম, টাওয়েলটা মিটসেফের ওপর রেখে, প্যান্টটা পরতে গেলাম, নীপা এগিয়ে এসে আমাকে জাপ্টে ধরলো। আমি শুধু জাঙ্গিয়া পরে আছি। -নীপা ছাড় কেউ এসে যাবে। -আসুক। -গালটা দেখিয়ে বললো একটা দাও। হাসলাম। ওর মাইটা একটু টিপে দিয়ে চুমু খেলাম, নীপা আমার নুনু চেপে ধরলো। -এখন থাক ফিরে আসি। -না এখন। -এরকম পাগলামো করে নাকি কেউ। -আমাকে কে পাগল করেছে। হাসলাম। -হাসলেই সাত খুন মাপ। -ঠিক আছে আজ সারা রাত তোমার সঙ্গে…….। -থাক। নীপা আমাকে ছেড়ে সরে গেলো। আমি প্যান্ট জামা পরলাম, নীপা আমায় তাড়িয়ে তাড়িয়ে দেখছে। -কি দেখছো। -তোমাকে যত দেখছি হিংসে হচ্ছে। -কেনো। -আজ যারা এ বাড়িতে এসেছিল জানো তারা কেউ এই কয় বছরে আসে নি। -জানি, ওরা তা স্বীকার করেছে। -তাও ওদের সঙ্গে তুমি রিলেশন রাখবে। -পৃথিবীতে একটা মশারও কিছু না কিছু অবদান আছে। -রাখো তোমার তত্ব কথা। -এবার দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। নীপা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঝড় ঝড় করে কেঁদে উঠলো। তুমি কিছুদিন আগে আসোনি কেনো অনিদা। তাহলে আমাদের এই অবস্থা হতো না। -ঠিক আছে ঠিক আছে, আমি তো এসে গেছি। নীপার কান্না থামে না। আমি ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম, নীপা কাঁদুক, কিছুক্ষণ কাঁদলে ও বরং হাল্কা হবে, নীপার চোখের জলে আমার বুক ভিঁজেছে, আমি ওর চোখ মুছিয়ে দিলাম, কপালে একটা চুমু খেলাম, এবার চলো।   ওরা ঠিক সময়ে চলে এসেছে। আমি ওদের সঙ্গে বেরিয়ে পরলাম, আমি বাসুর বাইকে বসেছি, যেতে যেতে টুকরো টুকরো অনেক কথা হলো। এও জানলাম বাসুর দোকানে কাকার প্রায় হাজার পাঁচেক টাকা ধার আছে। বাসুকে বললাম এখানে এসবিআইএর এটিএম আছে রে। ও বললো আছে। আমি বললাম তুই প্রথমে ওখানে আমাকে একবার দাঁড় করাবি। তারপর নার্সিং হোমে যাব। ও বললো ঠিক আছে। এটিএম থেকে একবারে টাকা তুলতে দিল না। পাঁচবারে পঞ্চাশ হাজার টাকা তুললাম। নিয়ে এসেছিলাম দশ হাজার টাকা, অনেক টাকা খরচ হয়েছে, কি আর করা যাবে। নার্সিং হোমে পৌঁছলাম প্রায় দেড়টা নাগাদ। ওখানে সব কাজ মিটতে মিটতে প্রায় সাড়ে তিনটে বাজলো। অনাদির সঙ্গে বেশ চেনা পরিচয় আছে দেখলাম, আমার কোন পরিচয় এখানে দিলাম না, ওদেরও বারণ করে দিয়েছিলাম। নার্সিং হোমে পঁচিশ হাজার টাকা জমা দিলাম, এরপর ভানু গাড়ির ব্যবস্থা করলো, দুখানা টাটা সুমো, ওখানে টাকা মেটালাম, মোবাইলের টাওয়ারটা দেখলাম বেশ ভালো। অমিতাভদাকে ফোন করে সব জানালাম, অমিতাভদা বড়মাকে দিলেন, আমি বড়মার সঙ্গে কথা বললাম, বড়মার এক কথা, আমি যাব, তুই না করিস না, বহুবার বারণ করলাম, শুনলো না, বাধ্য হয়ে ঠিকানা পত্র সব দিলাম, এরপর মিত্রাকে ফোন করলাম, মিত্রাকে সব জানালাম, ওকেও বললাম, এসে কি করবি, শুধু শুধু এতদূরে আসবি, আবার ফিরতে হবে তো। কিছুতেই আমার কথা শুনলো না, বাধ্য হয়ে বললাম, বড়মারা আসবে, তুই বড়মার সঙ্গে চলে আয়, আর যখন আসবি আমার একটা উপকার কর, বল কি করবো, তুই আমার জন্য একটা মোবাইল কিনে আনিস, এই মোবাইলটা কাকার কাছে রেখে যাবো, আমি এখান থেকে একটা সিম কার্ড নিয়ে নিচ্ছি, আসার সময় মোবাইলটা ফুল চার্জ দিয়ে নিয়ে আসবি। এতোক্ষণ খেয়াল করিনি, দিবাকর, বাসু আমার পাশে দাঁড়িয়ে, ওরা অবাক হয়ে আমার কথা শুনছিল। দিবাকরের চোখে বিস্ময়, বাসু জিজ্ঞাসা করলো -হ্যাঁরে অনি বড়মা কে। ওকে সব বললাম, শুনে তো ওর মাথা খারাপ, দিবাকর জিজ্ঞাসা করলো, মিত্রা? বললাম সব কথা। দিবাকর হাসতে হাসতে বললো, তুই শালা তোর মালকিনকে তুই তুই করে বলছিস, কি করবো বল, ভাগ্যচক্রে ওর সঙ্গে আমি এক সাথে পড়াশুনো করেছি -উরি শালা তুই তো বড়গাছে মই বেঁধেছিস। আমি বললাম নারে, ও বিবাহিত ওর স্বামী এশিয়ার রিনাউন্ড একজন ডাক্তার। শুনেতো ওরা থ। কথাটা ভানু, অনাদি, সঞ্জীবের কাছে পোঁছতে বেশিক্ষণ সময় লাগলো না। ওরা তো এই মারে সেই মারে। অনাদি বললো তুই শালা কি করে, নীলকন্ঠ। আমি হাসলাম। সঞ্জীবকে বললাম, তুই তো ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করছিস আমায় একটা সিম জোগাড় করে দে না। -কেনো -দরকার আছে। -একখান তো আছে। -কাকাকে দিয়ে যাব। -সেট। -ঐ তো আনতে বলে দিলাম। কাল এসে যাবে। -তোরটা কি । -এন ৯৫ । -আরি বাবা এই তল্লাটে কারুর নেই। চল আমার বস, মগার দোকানে। -সেটা আবার কে ? -আমার মহাজন। আমি কলকাতা যাই না ওর কাছ থেকেই মালপত্র নিয়ে যাই। -কলকাতা থকে মাল নিয়ে এসে ব্যবসা করতে পারিস। আমি ঠেকগুলো সব চিনিয়ে দেবো। দেখবি দুটো পয়সার মুখ দেখতে পারবি। -বুঝলি অনি ক্যাপিটেল চাই। -সে তো মহাজন দেবে। -কি বলছিস তুই। -হ্যাঁ । তোকে মাল পাঠাবে তুই যদি ঠিক ঠিক বিক্রি করে পয়সা দিস, আর কোন অসুবিধা নেই। ধান্ধা ভালো। -ঠিক আছে তোর কাজ মিটুক বসে কথা বলা যাবে। ওর বস মগার দোকানে এলাম। সঞ্জীব প্রথমেই ট্রাম্প কার্ড খেললো। -মগাদা এই সেই বিখ্যাত অনি। উনি চেয়ার ছেড় উঠে দাঁড়ালেন। জোড় হাত করে নমস্কার করলেন। -বসুন, বসুন আপনার লেখাতো পড়িই, তাছাড়া সঞ্জীবের মুখ থেকে আপনার অনেক কথা শুনেছি। ভদ্রলোক একেবারে গদ গদ। সঞ্জীব বললো একটা সিম চাই অনির, আমাদের এখানে যার টাওয়ার সবচেয়ে ভালো সেটা দাও। -কার নামে হবে। -স্যারের নামে। -ওর যে কিছু কাগজপত্র চাই। -কি লাগবে। -ভোটার আইডি, এ্যাড্রেস প্রুফ। -সে তোমাকে অনাদি দিয়ে দেবে। -ঠিক আছে। -সেট। -কলকাতা থেকে আসছে। -কেনো। আমার কাছে তো আছে, কলকাতার দামেই…… -যে সেট ওর দরকার তা তোমার কাছে নেই। -কি। -ব্ল্যাক বেরি। -না। আমার কাছে নেই। -এ্যাকটিভেশন কি আজ হয়ে যাবে। আমি বললাম। -হ্যাঁ রাতের দিকে আপনি একটা ম্যাসেজ পাবেন। -ঠিক আছে।
Parent