কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৫৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-3998419.html#pid3998419

🕰️ Posted on November 24, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 814 words / 4 min read

Parent
অনাদির দিকে তাকিয়ে বললাম, কখন এলি। অনাদি হাসছে। চিকনা বললো, তোর সারপ্রাইজটা জব্বর দিয়েছিস, বলে চোখ মারলো। ঘাটের দিকে তাকালাম, নীপা মিত্রাকে নিয়ে শেষ ধাপিতে দাঁড়িয়ে। আমি বাড়ির ভেতরে এলাম, আমার পেছন পেছন ওরাও চলে এলো। বাইরের বারান্দায় এসে সবাই বসলাম, অনাদি বললো, তোর পেটে পেটে এতো কিছু ছিলো আগে জানাস নি কেনো। -জানালে মজাটাই নষ্ট হয়ে যেতো। -তা যা বলেছিস। তুই ম্যাডামকে পুকুরে নামাতে গছি, কাকীমা বারণ কোরলো, আমি বারণ কোরলাম, বললাম বালতি করে জল তুলে দিচ্ছি, না আমি নামবো, নাম। মাঝখান থেকে……. চিকনা চোখ মেরে হো হো করে হেসে ফেললো। -তোরা সবাই চলে এলি ওখানটা সামলাচ্ছে কে। -লোক আছে। -তোরা খবর পেলি কি করে বলতো। -চিকনা প্রথমে খবর পেয়েছে। -চিকনা। -হ্যাঁ। -বাসুর দোকানের ছেলেটা ফোন করেছিলো, চিকনাকে। -তোরা। -চিকনা নীপাকে নিয়ে রুদ্ধশ্বাসে বাইক নিয়ে বেরোল দেখে, বাসুকে ফোন করলাম, কি হয়েছে রে। ও সব বললো। সবাই চলে এলাম। -গান্ডু। বাসুর দিকে তাকিয়ে বললাম। বাসু হাসছে। -চিকনা আমার পা ধরে ফেললো, গুরু আর একবার বলো। -কি। -ওই যে যেটা বললে। -কি বলবি তো। -ওই যে বাসুকে বললে না। -ধ্যাত। -আর একটাতো এখনো বলি নি। বাসু বললো। -বাসুর দিকে কট কট করে তাকালাম। বাসু হাসছে। অনাদি বললো, কি রে বাসু। -ওটা এখন বলা যাবে না। -বলতেই হবে। -না। চিকনা বাসুকে দুহাতে জাপ্টে ধরলো, পাঁচু পচা ওর প্যান্টের বোতাম খুলতে আরম্ভ করছে, সঞ্জয় বাসুকে কাতাকুতু দিচ্ছে, বাসু মাটিতে পরে গিয়ে ছট ফট করছে, ওর প্রাণ যায়, বুঝলাম বাসু আটকে রাখতে পারবে না, সে এক হুলুস্থূলুস কান্ড। বাধ্য হয়ে বাসু অনাদিকে কানে কানে বলে দিলো। অনি ওই কোম্পানীর একজন মালিক। অনাদি ছুটে এসে, আমাকে কোলে তুলে নাচতে শুরু করেছে, ওদের পাগল প্রায় অবস্থা দেখে, কাকা ওদিক থেকে চেঁচিয়ে উঠলেন, ওরে তোরা করছিসটা কি বলতো, তোদের বয়স দিনে দিনে বারছে না কমছে। অনাদি আমাকে মাটিতে নামিয়ে রেখে, কাকার কাছে ছুটে গেলো, কানে কানে কাকাকে বলতেই, কাকা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, আবার বসে পরলেন। নীপা ভেতর থেকে ছুটে এসেছে, কি হয়েছে গো চিকনা দা। মিত্রাও নীপার পেছন পেছন এসেছে, তার পেছনে কাকীমা, সুরমাসি। চিকনা নীপার কানে কানে বললো খবরটা। নীপা ছুটে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো। কানে কানে বললো তোলা থাকলো। আমি হাসলাম, তারপর ছুটে গিয়ে মিত্রাকে জড়িয়ে ধরে ওর গালে চুমু খেতে আরম্ভ করলো। কাকা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ওরে ও হচ্ছে নীলকন্ঠ। আমি কাকার কাছে গিয়ে প্রণাম করলাম, তোমার অপারেশনের দিন হয়েছে। -আমি জানি রে জানি। নাহলে তুই ওই সময় আমাকে ছেরে যেতিস না। মিত্রা এবার ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে, ওর চোখে খুশির হাওয়া। ও আমার পাশে এসে দাঁড়ালো, কাকাকে প্রণাম করলো। কাকা আমাদের দুজনকে বুকে জরিয়ে ধরলেন। কাকীমা, সুরমাসি ব্যাপারটা ধরতে পারেন নি। তবে কিছু একটা ঘটেছে, সেটা জানতে পারলেন। অনাদি মিত্রার কাছে গিয়ে বললো, এর জন্য আমরা কালকে একটা পার্টি দেবো। মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে। পান্তা খাওয়া নিয়ে নীপার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বাক বিতন্ডার পর মিত্রা হাসতে হাসতে বললো, নীপা আমি অনিকে বলেছিলাম, ওটা খাবো। নীপা মিত্রার কথা শুনে ব্যাপারটায় ইতি টানলো, তবু বলতে ছাড়লো না, তুমি আমাদের বাড়িতে প্রথম এলে, তোমায় গরম ভাত না খাইয়ে পান্তা খাওয়াবো। মিত্রা হাসলো, আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি। এখন তো থাকবো কয়েক দিন। -তাই। -হ্যাঁ। এসেছি ওর ইচ্ছেয়, যাবো আমার ইচ্ছেয়। পান্তা খেতে বসলাম। মিত্রা বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে খেলো, তারপর সুরমাসির দিকে তাকিয়ে বললো, আর নেই। সুরমাসি লজ্জা পেয়ে গেলো, অভ্যাস নেই মা, বেশি খেলে শরীর খারাপ করবে। মিত্রা হেসে ফেললো। খাওয়া শেষে আমি উঠে বাইরের বারান্দায় চলে এলাম, অনাদিরা বসে চা খাচ্ছে, কোন ফাঁকে মিত্রা চা করে দিয়ে গেছে, বারান্দার ঘরিতে দেখলাম, চারটে দশ। আনাদির পাশে বসে বললাম, মিত্রা এক পেটি বাজি নিয়ে এসেছে। তুই সব ষড়যন্ত্র করেই ব্যাপারটা ঘটিয়েছিস।   বিশ্বাস কর, কাল শ্মশানে বসে মিত্রার সঙ্গে কথা হলো, ও আসতে চাইলো, বললাম আমি তো চশমা আনতে যাবোই তুই চলে আয়। বাজির ব্যাপারটা আমি আনতে বলেছি। কেনো? ছোট বেলায় এই মেলাতেই বাজি ফাটানোর জন্য কত কথা শুনেছি, তাই মিত্রাকে আনতে বলেছিলাম, এখানকার জন্য কিছু রেখে দে, বাকিটা মেলায় নিয়ে গিয়ে বাচ্চাদের দিয়ে ফাটা। সকলে চুপ করে গেলো। অনাদি চুপ করে আছে। না জেনে তোকে হার্ট করে ফেলেছি। -দূর পাগল। আমি এক সহজে হার্ট হই না। তবে বাঁচতে পারতাম না। -ঠিক আছে ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে। চিকনা। চিকনা কাছে এলো। অনাদি ওকে সব বুঝিয়ে দিলো। -হ্যাঁরে যেতে হবে তো। -মিত্রা, নীপা গেলো কোথায়। -ও বাড়িতে। পচা বললো। -কোনদিক দিয়ে গেলো। -পেছন দিক দিয়ে। -হ্যাঁরে নীপা নাচছে না কি করছে যেন। চিকনা বললো হ্যাঁ। -কটায় আরম্ভ। -বাঙালীর কথা ৬টা বলেছে, সাতটায় শুরু হবে। -শেষ হবে কখন। -রাত একটা ধরে রাখ। -শোব কখন। -শুতেই হবে তোকে। আমি চিকনার কথা শুনে হেসে ফেললাম। নীপা বারান্দা থেকে আমার নাম ধরে তারস্বরে চেঁচাচ্ছে। আমি পচার দিকে তাকিয়ে বললাম, দেখতো, কেনো চেঁচাচ্ছে। পচা গুম হয়ে ফিরে এলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, কি হলো। তোর জন্য ঝার খেলুম। -আচ্ছা তোরা কিছু বলতে পারিস না। -আমরা। -কেনো। চিকনা হাসছে। -হাসছিস কেনো। -এখানে যে কটাকে দেখছিস, সেগুলো ছাড়া, সবাই কম বেশি ওর কাছে ঝাড় খায়, দিবাকরকে তো একদিন থাপ্পরই কষিয়েছিলো। -কেনো। -সে অনেক ব্যাপার। -অনাদি গ্রামসভা ডেকে মিটমাট করে। নাহলে তো দিবাকরকে ও গ্রামছাড়া করে দিতো। -আনাদি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, এখনি এই সব কথা আলোচনা করতে হবে। থাক না। -আচ্ছা দাঁড়া আমি ঘুরে আসছি।
Parent