কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৫৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4009284.html#pid4009284

🕰️ Posted on November 26, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1882 words / 9 min read

Parent
বাসু হন হন করে চলে গেলো। আমি পকেট থেকে সিগারেট বার করে ধরালাম। অনেকক্ষণ ভাবলাম, একবার উঠে গিয়ে সামনের একটা চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে চলে এলাম, পাশ থেকে দুচারজন হেঁটে চলে গেলো। এটুকু আমার দৃঢ় বিশ্বাস খাতা কলমে পাওয়ার আমার হাতে, কোম্পানীর সম্বন্ধে আমারও কিছু বলার থাকতে পারে, হিমাংশুকে একটা ফোন করবো, না থাক। আমারও পছন্দ অপছন্দ বলে কিছু থাকতে পারে, এই কদিনে যা ঘটলো তাহলে কি সব মিথ্যে, মিঃ ব্যানার্জী, অমিতাভদার বাড়িতে আমার ঘরে দাঁড়িয়ে যা যা বলেছেন, তা অভিনয়, মিত্রা আমার শরীরে শরীর মিশিয়ে মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বললো, সেটাও অভিনয়, না আমি মনে হচ্ছে মনে মনে দুর্বল হয়ে পরছি, এ সব ফালতু চিন্তা করছি, মিত্রা জোর করে আমায় কোম্পানীর শেয়ার কিনিয়েছে, সত্যি যদি তাই হতো তাহলে আমার পেছনে মিত্রা ১৫০ কোটি টাকা খরচ করতো না, তাও আবার সাদা কালো মিশিয়ে। আমি চেষ্টা করলেও সারা জীবনে এত টাকা ইনকাম করতে পারবো না। একটা গুড নিউজ আমার মালিকানার খবর এখনও ওরা জানতে পারে নি। আমি যদি কোন ড্রস্টিক স্টেপ নিই মিত্রা নিশ্চই বাধা দেবে না। তবু মন মানছে না, সন্দীপ ঠিক কথা বলেছে, ওদের পয়সা আছে, প্রয়োজন ফুরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে, তবু জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি, আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। কাঁসর ঘন্টা বেজে উঠলো, রথ বের হচ্ছে, খুব ইচ্ছে করছিলো, কিন্তু ভালো লাগলো না, বাজি ফাটছে, মিত্রার আনা বাজি পোরানো হচ্ছে, সত্যি ছোট সময়ে এই বাজি ফাটাবার জন্য কতো আগ্রহ ছিলো, উনা মাস্টার এই মেলার প্রেসিডেন্ট ছিলো, কাকা সেক্রেটারি, একটা বাজি চেয়েছিলাম বলে একটা থাপ্পর জুটেছিল, তারপর থেকে আর কোনদিন বাজি ফাটাবার নাম মুখে আনিনি, লোকে ফাটিয়েছে, আমি দেখেছি, অনাদিরা বাজি ফাটাবার কথা বললে বলেছি আমার ভয় করে। দিবাকর মন্ডল আর আমার বন্ধু দিবাকর মন্ডল কি এক ব্যক্তি, এটা আমাকে জানতে হবে, কাকে দিয়ে খবরটা নেবো, তিনটে ছায়া মূর্তি আমার পাশে এসে দাঁড়ালো, চমকে তাকালাম, অনাদি, বাসু, চিকনা। ওরা আমার পাশে এসে বসলো। ভাবলাম ওদের কিছু বুঝতে দেবো না। ক্যাজুয়েল থাকার চেষ্টা করলাম। ওদের দেখে হাসলাম। -কিরে তোরা এই সময়। ফাংশন আরম্ভ হয়েছে। কোন কথার উত্তর নেই। চোখগুলো সব চিতা বাঘের মতো জ্বলছে। আমি এই চাঁদনী রাতেও ওদের পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। -কিরে কথা বলছিস না কেনো। মিত্রা কোথায়? -পায়ের তলাটা দেখেছিস। অনাদি বললো। আমি দেঁতো হাসি হেসে অনাদির দিকে তাকালাম, বিকেলের দেখা অনাদি আর এখনকার অনাদির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য, নিচের দিকটা একবার দেখে নিয়ে অনাদির চোখে চোখ রাখলাম, গনগনে আগুনের কয়লার টুকরো। -কেনো। -এই টুকু সময় কটা সিগারেট খেয়েছিস। -হ্যাঁ শেষ হয়ে গেছে। চিকনা একটা সিগারেট দিবি। -তুইতো এতো সিগারেট খাস না। -হ্যাঁ খাই না, আজ খেতে ভালো লাগছে। চিকনা প্যাকেটটা এগিয়ে দিলো। একটা সিগারেট বার করে নিলাম, তারপর আবার প্যাকেটটা ফেরত দিলাম। চিকনা বললো, তোর কাছে রাখ। আমি পাশে রাখলাম। ফোনটা বেজে উঠলো, সন্দীপ।   হ্যাঁ আমি তোকে পরে ফোন করছি। আমার কথা বলা শেষ হলো না, অনাদি ফোনটা ছোঁ মেরে আমার হাত থেকে নিয়ে নিলো, কানে তুলে বললো, আপনি কে বলছেন, এরই মধ্যে ও ভয়েস মুড অন করে দিয়েছে, রেকর্ডিং বটম টিপে দিয়েছে, -আমি অনির বন্ধু সন্দীপ বলছি। -এখুনি অনির গলা পেলাম, আপনি কে। -আমি অনাদি, অনির বন্ধু। -অনি নেই। -ধরুন। অনাদি ইশারায় কথা বলতে বললো। -হ্যাঁ বল। -শোন পাক্কা খবর, দিবাকর মন্ডল তোর বন্ধু। তোর সঙ্গে ও একসঙ্গে পড়েছে, এমনকি তোর ডিটেলস পর্যন্ত এখানে দিয়ে দিয়েছে, আর কি বলবো তোকে, কথাটা বলতে তোকে খুব খারাপ লাগছে, সুনীতদার মন পেতে বলেছে, তোর বাপ মার ঠিক নেই। এখন এখানে লাইভ রেকর্ডিং চলছে, ছেলেটি মনে হয় ম্যাডামের খুব কাছাকাছি আছে। এমন কি ম্যাডামের গলাও শুনতে পাচ্ছে এরা। -কোথায় চলছে রেকর্ডিং। -সুনীতদার ঘরে। -আর কে আছে। -যারা থাকার তারাই আছে। তুই এর একটা বিহিত কর অনি। -আমি অফিসে ঢুকছি। দেখি লাস্ট আপডেট কি হয়। -ঠিক আছে, তুই ফোন কর, আমার ফোন অন থাকবে। লাইনটা কেটে গেলো। অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে, চিকনা চেঁচিয়ে উঠলো, অনাদি তুই একবার পারমিশন দে, আমি ওকে কাল সকালের মধ্যে গাইপ করে দেবো। -ঘাউরামি করিস না। আমি বললাম। বাসু চুপচাপ, শুধু বললো, ওকে হাতে মেরে কিছু হবে না, ভাতে মারতে হবে। -ঠিক বলেছিস। -ও এখন কোথায় রে চিকনা। -উঃ তোরা থাম না। আমি বললাম। -থামার সময় এখন নেই অনি। মালটা আমি বুঝতে পেরেছি। -কিছুই বুঝিস নি। -তুই বোঝা। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলাম, চোখ দুটো কেমন জ্বালা জ্বালা করছে, জীবনে বাবা মাকে ঠিক মনে পরে না, কিন্তু জ্ঞনতঃ কোনদিন বাবা মাকে আমি অশ্রদ্ধা করি নি, কিন্তু আজ প্রথম বাবা মার সম্বন্ধে কোন খারাপ কথা শুনলাম, বুকের ভেতরটা ভীষণ যন্ত্রনা করছে, মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে আসবে। তিনজোড়া চোখ আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে, ওদের বুঝতে দেওয়া যাবে না, তাহলে একটা বিচ্ছিরি কান্ড ঘটে যাবে। আমি মাথা নীচু করে বসে আছি। -অনি শরীর খারাপ লাগছে। বাসু আমার পিঠে হাত দিলো। আমি বাসুর মুখের দিকে তাকালাম, হয়তো চোখটা ছল ছল করে উঠেছিলো। অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, আজ রাতেই কাজ হাসিল কর। কথা বলতে গিয়ে আমার গলা ধরে এসেছে, আমি অনাদির হাত চেপে ধরে বুকে জড়িয়ে ধরলাম, না এরকম করিস না। প্লিজ। -তোকে যে অপমান করে সে আমাদেরও অপমান করেছে। -ঠিক আছে। তার জন্য……. -তুই জানিস না এই গ্রামটাকে ও জ্বালিয়ে দিচ্ছে, খালি বন্ধু বলে ও পার পেয়ে যাচ্ছে। -দূর বোকা, হিংসার রাজনীতি করতে নেই। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর, সব ঠিক হয়ে যাবে। অনাদি একটু ঠান্ডা হলো। আমি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটু চা খাওয়াবি। চিকনা ছুটে চলে গেলো। অনাদি আমার হাত চেপে ধরলো, অনি তুই বল, তুই একা চাপ নিস না, আমি জানি তোর সমস্যা তুই একলাই সলভ করবি, আমরা যদি তোকে কিছুটা হেল্প করতে পারি, যেহেতু ব্যাপরটা আমাদের এখানকার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে, তুই এখান থেকে ১০ বছর ডিটাচ, এখানের আমূল পরিবর্তন হয়েছে, তুই দিন চারেকে তার কিছুই জানতে পারবি না, ওপর ওপর সবাই ভালো, ভেতর থেকে ছুঁরি চালাবর লোক প্রচুর, তুই অনেক কষ্ট করে এখানে এসে দাঁড়িয়েছিস, আমরা তোকে হারাতে চাই না। -মিত্রা কোথায়। -ও সামনে বসে ফাংশন দেখছে। -ছবিটবি তুলছে না। -সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। উনি আমাদের গেস্ট, তুই আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখ, ওনার কোন অসুবিধে হবে না। -দিবাকর কোথায়। -ওর ব্যবস্থা করছি। -এখন নয়। -ঠিক আছে তুই বল। চিকনা চা নিয়ে চলে এলো। আমি ওদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কথা বললাম। ওদের গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে গেলো। অফিসিয়াল ব্যাপারটা এত জটিল ওরা কিছুতেই ধরতে পারছে না। আমি চিকনাকে বললাম, মেলার মজাটা আজ করতেই পারলাম না। তুই এক কাজ করবি। -বল। -এমন কোন বিশ্বস্ত লোক আছে, যে দিবাকরকে ফলো করবে। -এই কাজ, তোকে চিন্তা করতে হবে না। তোকে আধঘন্টার মধ্যে ডিটেলস দিয়ে দিচ্ছি। -না, ওকে মনি টরিং কর, যেন কিছু বুঝতে না পারে, ফাংসন কখন শেষ হবে। -১২টা বাজবে। -মিত্রার আশে পাশে কারা আছে আমাকে একটু জানা, দিবাকরেরও কিছু লোকজন এখানে আছে, ওরা আমাকে খুঁজে বেরাচ্ছে নিশ্চই। -ঠিক আছে তোরা এখানে বোস। আমি যাচ্ছি। চিকনা চলে গেলো। -খুব সাবধান। -তোকে ভাবতে হবে না। -শোন মিত্রা যদি খোঁজ করে, বলবি আমার সঙ্গে তোর দেখা হয় নি। -আচ্ছা। -অনাদি ভীষণ খিদে পেয়েছে। -কি খাবি বল। -একটু ছোলা সেদ্ধ আর মুড়ি। -পাটালি। অনাদি হেসে বললো। -এখন ভালো লাগছে না। -বুঁচিকে ফোন করে দিচ্ছি দাঁড়া। -কে বুঁচি। -তুই চিনবি না পার্টি করতে গিয়ে অনেক কিছু রাখতে হয় শিখতে হয়। -থাম দাঁড়া। তুই একটা কাজ করতে পারবি। -বল । -তুই নিজে যা। ওদের নাচ কি শুরু হয়েছে। -হ্যাঁ প্রায় একঘন্টা হয়ে গেছে। -তার মানে এবার শেষের পথে। -হ্যাঁ। -মিত্রা নিশ্চই মেলা ঘুরতে বেরোতে চাইবে। তুই নীপা ওদের বন্ধুদের সঙ্গে ভিরিয়ে দে। -সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। বাসু বললো। -ঠিক আছে, শেষ হলে আমায় ফোন কর। আমি যাবো। আমার আর কিছু ভালো লাগছে না। -বুঁচিকে দিয়ে মুড়ি চা পাঠিয়ে দিচ্ছি, বাসু তুই কিন্তু অনিকে ছেড়ে যাস না। -আচ্ছা। বাসুর ফোনটা বেজে উঠলো। -চিকনা ফোন করেছে, তুই কথা বলবি। -দে। -হ্যাঁ। -হ্যালো। -বাসু। -না আমি অনি বলছি। -শোন সব ব্যবস্থা পাকা, শুয়োরের বাচ্চা মিত্রার সঙ্গে বসে জমিয়ে গল্প করছে। -ঠিক আছে, তুই ডিস্টার্ব করিস না, ওদের গল্প করতে দে। পরলে শোনার চেষ্টা কর। আমার ফোনে রিং কর আমি রেকর্ডিং করবো। মাথায় রাখবি এই কাজ যে করে সে খুব সেয়ানা ছেলে। -আচ্ছা। বাসু আমার দিকে তাকালো, তোর মাথায় কতো চাপ, তুই চলিস কি করে। -চলতে হয় বাসু। না হলে চলবে কি করে। -আমার তোর মাথাটা মাঝে মাঝে দেখতে ইচ্ছে করে। আমরা হলে এতোক্ষণ তো কোন অঘটন ঘটিয়ে দিতাম। -এই যে তুই কিছুক্ষণ আগে বললি হাতে নয় ভাতে মারবো। বাসু মাথা নীচু করে হাসলো। অনাদির ছেলেটা মুড়ি চা দিয়ে গেলো, দুজনে বসে বসে খেলাম, ভেতরে ভেতরে তোলপাড় চলছে, আমার মিত্রাকে নিয়ে কেচ্ছা, অন্য হাউস রসালো গল্প করবে, একদিন হয়তো উপন্যাসেও স্থান পাবো। ভাবতেই গা টা শিউরে উঠছে। চিকনার ফোন। বাসুকে দিলাম, ও ভয়েস মুডে দিয়ে রেকর্ডিং করছে। -আপনার সঙ্গে অনির অনেক মিল আছে। মিত্রার গলা। -না না কি বলছেন, অনি আপনার হাউসের একজন স্টার রিপোর্টার, ওর সঙ্গে আমার তুলনা। -আচ্ছা অনি কি আপনার সঙ্গে থাকে না অন্য কোথাও থাকে। -আমার সঙ্গে থাকবে কেনো, ওর নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে। -আমি তো শুনলাম কলকাতায় ওর থাকার জায়গা নেই বলে আপনার বাড়িতে থাকে। -আপনি ভুল শুনেছেন। -সত্যি আপনাদের নিগূঢ় বন্ধুত্ব দেখলে হিংসে হয়। -সত্যি কলেজ লাইফেও আমাদের অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বান্ধব আমাদের দেখে হিংসে করতো। -এখানকার সবাই কানাঘুষো করে আপনার সঙ্গে ওর একটা এ্যাফেয়ার আছে। -কারা বলে। -অনির বন্ধুরা। -আপনি বলছেন, না আর কেউ বলছে। -কেনো । অনাদি, বাসু কতজনের নাম করবো। -হতেই পারে না। -আমি সেদিন ওর কাকার অপারেশনের দিন যেতে পারলাম না, খুব খারাপ লাগছে। -হ্যাঁ সেদিনতো আপনাকে দেখতে পাই নি। -অনি আসে নি। -এসেছে। কোথায় ঘুরে বেরাচ্ছে। ও তো একটা ভবঘুরে। -পোষ মানাবার চেষ্টা করুন। -করছি তো পাচ্ছি কোথায়। -সত্যি ওর কোন রেসপনসিবিলিটি নেই। আপনার মতো একজন সেলিব্রিটি কে নিয়ে এরকম ছেলে খেলা করার। -কোথায় ও ছেলে খেলা করলো, আমিই তো এখানে আসতে চেয়েছিলাম, ও না করেছিলো, তবু এলাম, সত্যি না এলে আমার অনেক কিছু অদেখা থেকে যেতো। ফোনটা কেটে গেলো। বাসু আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। আমার ফোনটা বেজে উঠলো, দেখলাম মিত্রার ফোন। -হ্যালো। -কি রে তুই কোথায়। -আমি শ্মশানে। -শ্মশানে মানে! -শ্মশানে। -আবার ওখানে গেছিস। -হ্যাঁ। জায়গাটা আমায় খুব টানে রে। তুই যেনো কাউকে বলিস না। -কি বলছিস তুই, এখুনি আসবি। -কেনো। -আমাকে একা একা ফেলে যেতে তোর লজ্জা করছে না। -কই তোকে একা ফেলে এলাম, নীপা আছে, ওর বন্ধুরা আছে, অনাদি, বাসু, চিকনা আর কতজনকে তোর চাই। -তোর গলাটা ভারি ভারি লাগছে কেন রে। -ফাঁকে মাঠে বসে আছি কিনা, একটু ঠান্ডা লেগেছে বোধ হয়। -তুই এখুনি আয়। -ফাংশন শেষ। -আর একটু বাকি আছে। -ঠিক আছে আমি অনাদিকে বলে দিচ্ছি, তোকে সঙ্গ দেবে গিয়ে। -তোর এক বন্ধুর সঙ্গে আলাপ হলো। -কার সঙ্গে। -দিবাকর। দিবাকর মন্ডল। -কোথায় আলাপ হলো। -এই তো আমার সামনে বসে আছে। -তাই। -দে ওকে। -দিচ্ছি। -হ্যালো। -বল। -তুই এখন কোথায়। -পুরীকুন্ডী শ্মশানে। -মিথ্যে কথা বলছিস। -তুই চলে আয়। -কোথায়। -আমি যেখানকার কথা বললাম। -না আমার এতো শখ নেই। -তাহলে আর সত্য মিথ্যার যাচাই করে লাভ। -আমি তোর মতো পাগল নই। -তুই পাগল নয়, সেয়ানা। -কেনো একথা বলছিস। -তুই সেদিন বললি তোর কাজ আছে তাই নার্সিং হোমে যেতে পারবি না। -সত্যি তুই বিশ্বাস কর অনি একটা কাজ পরে গেছিলো। -ইন্টারভিউ কেমন হলো। -তোকে কে বললো। -সাংবাদিকের কাজ খবর সংগ্রহ করা। আমি নিশ্চয়ই মিথ্যে বলি নি। -না। এটা তুই সত্যি কথা বলেছিস। -কোন কাগজে ইন্টারভিউ দিলি। -এটাও কি জেনে ফেলেছিস। -না। জানতে পারি নি। দেখ সত্যি কথা বললাম। -মেলায় কখন আসছিস। তোর মিত্রা দেবিতো তোকে দেখার জন্য পাগল। -ওটা বড়লোকেদের খেয়াল। -কি বলছিস। -কেন বিশ্বাস হচ্ছে না। -একেবারে না। -তুই তো পাশে বসে আছিস, জিজ্ঞাসা কর। -এতটা ধৃষ্টতা দেখাতে পারবো না। -আমাদের কাগজে কার কাছে ইন্টারভিউ দিয়ে এলি। -কি পাগলের মতো বকছিস। -আরে আমি তো বদ্ধ পাগল। -সেটাই মনে হচ্ছে। -কেনো এটাও কি মিথ্যে বললাম। -পুরোটা। -মিত্রাকে ধর একটা হিল্লে হয়ে যাবে। -বলেছি। -বাঃ এই তো করিতকর্মা ছেলে। মেলায় থাক, আমি যাচ্ছি। -কতোক্ষণের মধ্যে আসবি। -এখান থেকে যেতে ঘন্টাখানেক তো লাগবে। -নারে আমি তাড়াতাড়ি ফিরে যাব। কাল সকালে একবার কলকাতা যেতে হবে। হাসতে হাসতে বললাম, জয়েনিং। -বোকা বোকা কথা বলিস না। ফোনটা কেটে দিলাম। বাসু আমার দিকে তাকিয়ে আছে, রেকর্ডিংটা সেভ করেই অনাদিকে ফোন করলাম
Parent