কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৬৩

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4024346.html#pid4024346

🕰️ Posted on November 29, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 843 words / 4 min read

Parent
মিত্রা ডায়াল করতেই ও প্রান্ত থেকে সনাতন বাবুর গলা ভেসে এলো। -হ্যাঁ ম্যাডাম সবাই চলে এসেছেন। -সবার নাম নোট করেছেন। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -সুনীত বাবু, কাগজের খবর কি। -সব ঠিক আছে। -আমার কাছে সে রকম কোনো খবর নেই, বরং কাগজের বাইরের খবর নিয়ে আপনারা বেশ মাতামাতি করেছেন। -না ম্যাডাম। -সময় মতো কাগজ বেরোচ্ছে। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -কিন্তু আমার কাছে খবর আছে, গত কাল ছাড়া প্রতিদিন কাগজ সেকেন্ড ট্রেন ধরেছে। -কে বলেছে ম্যাডাম আপনি একবার তার নাম বলুন। -সনাতন বাবু। -হ্যাঁ ম্যাডাম, সুনীত বাবু যা বলছেন তা ঠিক নয় । গতকাল একমাত্র ঠিক টাইমে কাগজ গেছে। আর যায় নি। -আপনি কি করছিলেন। -এ্যাকচুয়েলি ম্যাডাম……. -আপনাকে কাজের জন্য পয়সা দেওয়া হয়। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -আপনাকে যে পাওয়ার দিয়ে এসে ছিলাম তা ইউটিলাইজ করেছেন। -এরা ঠিক…… -সুনীত বাবু। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -কজনকে চাকরির লোভ দেখিয়েছেন। -একজনকেও না। আমি দিবাকরের ফোন থেকে রিং করলাম। সুনীতদার ফোন বেজে উঠেছে। -ম্যাডাম আমার একটা ফোন এসেছে। -এই নাম্বার থেকে। -চুপচাপ। -কি সুনীতবাবু চুপচাপ কেনো, নম্বরটা ঠিক বললাম। কথা বলছেন না কেনো। -হ্যাঁ, ম্যাডাম। -আপনার মামা ব্যাপারগুলো জানেন। -না। -ওকে ফোন করুন, আর বলুন আমাকে এখুনি ফোন করতে। আর শুনুন আপনি আমার টেলি কনফারেন্স শেষ হলে অফিস থেকে বেরিয়ে যাবেন, শুক্রবার আমার ঘরে মিটিং, আপনি উপস্থিত থাকবেন, সেদিন যা বলার বলবো। এদের সামনে আর বললাম না। -ম্যাডাম, আমার কিছু কথা বলার ছিলো। -শুক্রবার বেলা এগারোটা, চম্পকবাবু। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -এ মাসের টার্গেট কতো ছিলো। -১৫ কোটি। -কত ফুল ফিল হয়েছে। -১ কোটি। -বাকিটা। -হয়ে যাবে। -গাছ থেকে পরবে। -চুপচাপ। -কি হলো চুপ করে আছেন কেনো। -না ম্যাডাম, বাজারের অবস্থা……..। -অন্য হাউস পাচ্ছে কি করে।আমার কাগজের কি হাল এতোই খারাপ নাকি। -না ম্যাডাম নিউজ কোয়ালিটি……. -সুনীতবাবু। -ম্যাডাম। -চম্পকবাবু কি বলছেন। -ম্যাডাম। -চম্পকবাবু। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -কত টাকা মাইনে পান। -চুপচাপ। যদি কাল আপনাকে দুর করে দিই, ওই মাইনে কলকাতার কোনো হাউস আপনাকে দেবে। আপনিও শুক্রবার অফিসে এসে দেখা করবেন, সমস্ত ডকুমেন্টস নিয়ে। -আচ্ছা ম্যাডাম। -কিংশুক বাবু। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -আপনাকে যা দায়িত্ব দিয়ে এসে ছিলাম তা পালন করেছেন, না সনাতন বাবুর মত অবস্থা। -চুপচাপ। -বুঝেছি। -চম্পকবাবু আপনার দায়িত্বগুলো কিংশুক বাবুকে বুঝিয়ে দিন। -ঠিক আছে ম্যাডাম। -সনাতন বাবু। -বলুন ম্যাডাম। -সার্কুলেশনের ভদ্রলোক এসেছেন। -হ্যাঁ ম্যাডাম আমি এসেছি। -গত ১০ দিনে কাগজের সার্কুলেশন ১ লাখ পরে গেছে কেনো। -না মানে। -দেরি করে বেরিয়েছে এই কারণ দেখাবেন না, সব বিটে কাগজ ঠিক সময় পৌঁছায় নি। -না ঠিক তা নয়। প্রেসে একটু প্রবলেম ছিলো। -আমি ১০ দিন অফিসে যাই নি, এতো দেখছি চারিদিকে খালি প্রবলেম আর প্রবলেম। -অতীশ বাবু আছেন ওখানে। -হ্যাঁ ম্যাডাম। -কি অতিশবাবু সাপের পাঁচ পা দেখেছেন। -চুপচাপ। -সুনীত বাবু। -বলুন ম্যাডাম। -দিবাকর মন্ডলকে চেনেন। -দিবাকর মন্ডল……… -অতীশবাবুর দিকে তাকাচ্ছেন তাই তো। চিনতে পারছেন না, একটু আগে আপনাকে ফোন করলো। -না ম্যাডাম ও তো ফোন করে নি। -এই তো এখুনি বললেন ওকে চিনি না। -না মানে। -আপনার গলার রেকর্ডিং শুনবেন। -না মানে….. -ত ত করছেন কেনো। -চুপচাপ। -পয়সা দিয়ে আমি গরু পুষবো ছাগল নয় এটা মনে রাখবেন। আমাকে নিয়ে হাউসে অনেক আলোচনা হচ্ছে, এটা আমার কানে এসেছে। একটা কথা মনে রাখবেন, আমার অনেক পয়সা আমার পক্ষে দুদশটা কেপ্ট পোষা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। এটা বড়লোক মানুষদের খেয়াল। আপনার মামাকে আমাকে ফোন করতে বলুন। -সনাতনবাবু। -বলুন ম্যাডাম ওখানে আর যারা আছেন, তাদের শুক্রবার আসতে বলুন, আমার কথা বলতে ভাল লাগছে না। আর শুনুন, আমি ইসমাইলকে বলে দিচ্ছি, গাড়িটা অমিতাভদার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন, আজ থেকে কাগজের দায়িত্ব, অমিতাভদার হাতে থাকবে, আমি কলকাতা না যাওয়া পর্যন্ত। -ঠিক আছে। -আর আপনারা সবাই শুনে নিন, অনি আপনাদের অনেক ক্ষতি করেছে। তাই না। -ঠিক বলেছেন ম্যাডাম। -ওকে আমি পানিশমেন্ট দিয়েছি। -এটা ভাল কাজ করেছেন ম্যাডাম। আমরাই বা শুধু ভুগবো কেনো। ওর জন্য জুনিয়র ছেলেরাও আমাদের কথা শুনতে চাইছে না। -ঠিক বলেছেন। আপনারা না এক একজন দিকপাল সাংবাদিক। এ্যাড ম্যানেজার, সিইও, এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজার, আরো কত কি। সব গালভরা নাম তাই না। -চুপচাপ। -আপনাদের জ্ঞাতার্থে একটা কথা জানিয়ে রাখি অনি বর্তমানে এই কাগজের ২০ পার্সেন্ট শেয়ার হোল্ড করছে। দু-এক দিনের মধ্যেই নোটিস বোর্ডে নোটিশ পরে যাবে। যাকে যা দায়িত্ব দিলাম সেই দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করুন। শুক্রবার ১১টার সময় দেখা হবে। সবাই চুপচাপ। আমি লাইনটা কেটে দিয়ে সেভ করলাম। মিত্রা আমার কাঁধে মাথা দিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। আমি সবাইকে ইশারায় বাইরে বেরিয়ে যেতে বললাম। সবাই চলে গেলো। নীপা বসেছিলো, আমি বললাম তুমি একটু গরম দুধ নিয়ে এসো। আর ওদের একটু চা-এর ব্যাবস্থা করো। নীপা ছুটে বেরিয়ে গেলো। মিত্রা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। -কাঁদে না। এতো ইমোশন্যাল হলে ব্যাবসা চালাবি কি করে। -আমি আর পারছি না অনি। -তোকে পারতেই হবে। ও আমার ঘাড় থেকে মাথা তুলছে না। এই দেখো। এখনো কত কাজ বাকি আছে, দাদাকে ফোন করতে হবে। কাগজটা বার করতে হবে তো। -তুই কর। নীপা ঘরে ঢুকলো। -কি বোকা বোকা কথা বলছিস। চোখ খোল, ওই দেখ নীপা তোকে দেখে হাসছে। মিত্রা আমার ঘার থেকে মাথা তুললো, নীপার দিকে তাকালো, নীপা গরম দুধ নিয়ে এসেছে, নে এটা খেয়ে নে, দেখবি ভাল লাগবে। -তুই খা। ওরা সবাই কোথায় গেলো! -আমরা প্রেম করবো, সবাই দেখবে এটা হয়। -ধ্যাত। তুই না। নীপা হাসছে। -মুখপুরী, তুই হাসছিস কেনো। নীপা মিত্রার কোলে মাথা দিলো। -তোর আবার কি হলো। -আমাকে তোমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ো না, আমি তোমার বাড়িতে রান্নার কাজ করবো। -কি পাগলের মতো কথা বলছিস। -ওঠ, তোকে তোর অনিদার মতো হতে হবে। -আমি পারবো না মিত্রা দি। -পারতেই হবে। -নে ফোন কর, দাদাকে। আমি বললাম। -কি বলবো। -স্পিরিটটা মাঝে মাঝে হারিয়ে ফেলিস না। -দে ।
Parent