কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৬৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4050367.html#pid4050367

🕰️ Posted on December 2, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1042 words / 5 min read

Parent
প্রচন্ড জোরে দরজায় ধাক্কা দেবার শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেলো, মিত্রাদি ও মিত্রাদি, অনিদা ও অনিদা, কি ঘুমরে বাবা। দেখলাম ঘরের ভেতরটা অন্ধকার ঘুট ঘুট করছে, বাইরে কোথাও বক্সে তারস্বরে গান বাজছে, একটা হৈ হৈ শব্দ। চোখে কিছু দেখতে পাচ্ছি না, আস্তে আস্তে বাইরের আলোয় ঘরটা আলোকিত হলো। মিত্রা আমাকে জাপ্টে ধরে শুয়ে আছে, ওর গায়ে একটা কাপড়ও নেই, আমিও উদোম অবস্থায়, ওর হাঁটু আমার নুনুর ওপর, যেন আমি ওর পাশ বালিশ। আমি মিত্রার চিবুক ধরে নাড়লাম, মিত্রা এই মিত্রা। -উঁ। -কেলো করেছে। -কি হয়েছে। -শোন না। -দূর ভালো লাগছে না। -আরে সবাই চলে এসেছে। -বেশ হয়েছে। -দূর বেশ হয়েছে। -ওঠ। -উঠবো না। -হায় রাম রাম, তুই নেংটো হয়ে। দিলাম ওর পুশিতে হাত, মিত্রা নড়ে চড়ে উঠলো। ওরে তুই উঠে আমায় বাঁচা, সব কেলোর কীর্তি হয়ে গেলোরে। মিত্রা চোখ চাইলো। জড়িয়ে জড়িয়ে বললো, কি হলো। -ওরে সন্ধ্যে হয়ে গেছে, সব্বনাশ হলো। দেখ সবাই চলে এসেছে। মিত্রা এবার তড়াক করে উঠে বসলো, কটা বাজে। মিত্রা নিজের দিকে তাকিয়ে ফিক করে হেসে ফেললো। আমিও উলঙ্গ। -এ মা দেখ তোরটা নেংটু ইঁদুরের মতে লাগছে। -লাগুক। তুই ওঠ আগে। ও আমার গলা জড়িয়ে আদো আদো কন্ঠে বললো, না। -ওরে দেরি করিস না, তাড়াতাড়ি কাপড়টা পর। ওদের মুখের কোনো ট্যাক্স নেই। -থাক, আজ নয় কাল সবাই জানতে পারবে। -যখন জানতে পারবে, তখন পারবে, তুই এক কাজ কর, কাপড়টা পরে নিচে গিয়ে দরজা খোল, নীপা ডেকে ডেকে গলা ফাটিয়ে ফেললো। -তুই। -আমি নীচে মাদুর পেতে মটকা মেরে শুয়ে আছি। মিত্রা হাসছে। আমি পাজামা পাঞ্জাবী গায়ে চাপিয়ে, মাদুরটা নীচে পেতে একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে পরলাম। মিত্রা আমার কথা মতো কাজ করলো। একটু পরে শিঁড়িতে দুপ দাপ শব্দ, বুঝলাম, নীপা-মিত্রা একলা নয় আরো কয়েকজন আসছে। -অনিদা ওঠে নি। -না ও এখনো ঘুমোচ্ছে। -সত্যি কি ছেলেরে বাবা। তুমি আলো জ্বালাও নি কেনো। -কোনটা কোন সুইচ জানি না। অন্ধকারে, দেয়ালে ধাক্কা খেলাম, কনুইটাতে কি লাগলো। -কোথায় দেখি। লাইট জ্বললো। বুঝলাম অনাদি আর বাসু এসেছে। -এমা অনিদা কি নীচে শুয়ে ছিলো নাকি। আগে জানলে বিছানা করে দিয়ে যেতাম। নীপা বললো। -তুইও আছিস, ছেলেটা কখন থেকে নীচে শুয়ে আছে, ঠান্ডা লেগে যাবে। অনাদি বললো। -আমিতো ওকে ওপরে শুতে বললাম। ও শুলো না। মিত্রা বললো। -তোর ঘটে একটুও বুদ্ধি নেই। -সত্যি অনাদিদা আমার ভুল হয়ে গেছে। -দেখ মিত্রার কনুইতে কোথায় লেগেছে, একটু জলটল দে। অন্ধকারে পড়েটরে গেলে একটা কেলোর কীর্তি হতো এখুনি। -দাঁড়াও আমি ছুটে গিয়ে ও বাড়ি থেকে মুভ নিয়ে আসি। -থাক । এখন যেতে হবে না। তুই ওকে ডাক। মিত্রা বললো। -না এখন ডাকিস না একটু ঘুমোক, বেচারার অনেক টেনশন, কাল থেকে ওর ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে গেছে, আমরা হলে তো, হাপিস হয়ে যেতাম। তুই বরং চা করে নিয়ে আয়। নীপা বেরিয়ে গেলো, বাসুরা ছোটো সোফাটাতে বসেছে। মিত্রা খাটে এসে বসেছে। -ওখান থেকে কোনো ফোন এসেছে। অনাদি জিজ্ঞাসা করলো। -হ্যাঁ, ও ফোন করেছিলো। আমি তো ঘুমিয়ে পরেছিলাম। -সত্যি সেই ছোট থেকে ও শুধু সবার জন্য করেই গেলো। মিত্রা অনাদির দিকে তাকালো। -সত্যি ম্যাডাম, আপনিতো ওকে কলেজ লাইফ থেকে দেখেছেন, আমরা ওকে সেই ছোটো থেকে দেখেছি। বাসুকে জিজ্ঞাসা করুন, এই গ্রামের একজনকেও আপনি পাবেন না, যে অনিকে ভালোবাসে না। -দেখছি তো তাই। -কালকে যা হয়েছিল, আপনি ওর মুখ চোখ দেখলে ভয় পেয়ে যেতেন। আমরাই ভরকে গেছিলাম, ছোট থেকেই ওর মাথাটা ঠান্ডা, ও রাগতে জানে না। -কিন্তু রেগে গেলে সাংঘাতিক। তোমরা সেই দৃশ্য দেখ নি। মিত্রা বললো। -না ম্যাডাম, সেই সৌভাগ্য আমাদের হয় নি। অনি, অনি ওঠ এবার, তোদের জন্য…….. আমি আড়মোড়া ভেঙে চোখ তাকালাম, খাটে মিত্রা বসে আছে, ও জুল জুল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, ওর চোখের ভাষা হাসবো না কাঁদবো। আমি উঠে বসলাম। -তাকিয়ে দেখ, তোর আগে আমি উঠেছি। ঘুম কাতুরে। মিত্রা বললো। মিত্রার দিকে তাকালাম, না কাপড়টা ঠিক ঠাক পরেছে, অনেকটা সাধারণ গেরস্ত বাড়ির মেয়ের মতো। আমি মাথা নীচু করে হাসলাম। তোরা কখন এলি। -এই তো কিছুক্ষণ আগে। নীপা চায়ের সরঞ্জাম নিয়ে ঘরে ঢুকলো। -বাবাঃ কি ঘুম রে বাবা, যেন কুম্ভকর্ণ। আচ্ছা তুমি যে নিচে শোবে আগে বলনি কেনো। আমি নীপার দিকে তাকালাম, ওর চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করলাম, না ও ধরতে পারে নি, -মালকিনের সঙ্গে এক ঘরে শুচ্ছি, এটাই অপরাধ, তুমি আবার এক বিছানায় শুতে বোলছো, তাহলে চাকরিটাই চলে যাবে। মিত্রার দিকে তাকালাম। ও মুচকি মুচকি হাসছে। -ঠিক আছে বাবা, আমার অপরাধ হয়েছে, এখন মুখে চোখে জল দিয়ে নাও। -জল দিতে হবে না, চা দাও, হাই তুললাম। -এ মাগো , ঘুমের মুখে, যাও মুখটা ধুয়ে এসো। আমি উঠে দাঁড়িয়ে মিটসেফের ওপর থেকে জলের মগটা নিয়ে বাইরে গেলাম, দেখলাম মিত্রাও শুর শুর করে আমার পেছন পেছন এলো, অন্ধকারে আমার পাঞ্জাবীটা চেপে ধরে আছে। -টানাটানি করলে পাঞ্জাবীটা ছিঁড়বে। আমি নীচে গিয়ে, খিড়কী দরজা খুলে বাইরে এলাম। -উঃ কখন থেকে হিসি পেয়েছে, তুই ওদিকে মুখ কর। -আমার পাঞ্জাবীটা ছাড়। -দাঁড়া। মিত্রা একহাতে কাপড় তুলে বসে পরলো। আমি এখানেই বসে পরি। -বোস। আমি অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। মিত্রার হিসির শব্দ শুনতে পাচ্ছি। -এতো শব্দ হয় কেনো। -শব্দ না হলে মেয়েছেলে বলে কেনো, তাহলে তো লোকে হিজরে বলতো। দে জলটা দে। -ধুইয়ে দেবো। -না তোকে এতোটা উপকার করতে হবে না। মিত্রা পুশি ধুলো, চোখমুখ ধুলো, হিসিতে একটু জল ঢেলে বললো, চল। -আমি মুখটা ধুই, তুই এবার পাঞ্জাবীটা ছাড়। -না । তুই মুখ ধো, বুঝতে পাচ্ছিস না অন্ধকার। ভেতরে এসে ছিটকিনি দিলাম, মিত্রা আমার গালে একটা চুমু দিয়ে বললো, তুই পারিসও বটে, আমি সেই সময় হাঁসবো না কাঁদবো। আমি ওর গালটা ধরে একটু নেরে দিলাম।   দুজনে ঘরে এলাম। নীপা চা ঢেলে দিলো। পাঁপড় ভাজা চা, বেশ খেতে লাগলো, এই সময়টায় নিপা চা টা ভালো বানিয়েছে। মিত্রা বাসুর দিকে তাকলো -বাসু সকালে তোমাকে বলতে পারি নি, আমার জিনিষ। বাসু বললো, এই রে , ম্যাডাম সত্যি বলছি একেবারে ভুলে গেছি, বিশ্বাস করুন। -না তুমি এখুনি নিয়ে এসো। দাঁড়াও তোমাদের কার কার এখনো পর্যন্ত হয়েছে। -তুই কথাটা ঠিক বলতে পারলি নি। -থাম তুই, তোকে আর বক বক করতে হবে না। -কার কার এখনো পর্যন্ত হয়েছে মানে। নীপা আমার মাথার চুলগুলো নিয়ে বিলি করছিল, -মিত্রাদি দেবো পিঠে একটা কিল। -জোরে দে। মিত্রা এমনভাবে দাঁত খিঁচিয়ে বললো, সবাই হেসে ফেললো। -আমার আর বাসুর ছাড়া কারুরি হয় নি। আমার দুটো বাসুর একটা। অনাদি বললো। -যাও তিনটে নিয়ে এসো, ওরা এখুনি আসবে আমি ওদের হাতে দেবো। -থাক না , কালকে দেবেন। -কাল কোথা থেকে দেব। -কালকে বাজার বার আছে, আপনি হাটে যাবেন ওখান থেকেই কিনে দেবেন। -আমি তো ওদের দেখতে পাবো না। -ঠিক আছে আমি সঙ্গে করে নিয়ে আসবো। হয়েছে তো। মনে হলো কথাটা মিত্রার মনে ধরলো। -ঠিক আছে। -তোমরা এবার তোমাদের শরীরটা গোছাবে তো। নীপার দিকে তাকিয়ে বললাম। -তোমাকে না পিট্টি। -দে না দে, মুখে বলছিস কেনো, আমি তো আছি। মিত্রা বললো। আমি বাসু অনাদি সবাই ওদের কথা শুনে হেসে ফেললাম।
Parent