কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৭৭

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4061338.html#pid4061338

🕰️ Posted on December 7, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 871 words / 4 min read

Parent
-তখন সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি, ইলেভেনের মেয়েগুলো সবে ছেলেদের কলেজে ভর্তি হয়েছে, ওরা যেন উড়ে উড়ে বেরাচ্ছে, আমি মিত্রা একদিন ক্লাস করে লবিতে এসে দাঁড়িয়েছি। তখন জিনসের প্যান্টের সেরকম প্রচলন ছিল না, তার ওপর মেয়েরা পরবে, এটা ভাবতেই পারি না। দেখলাম একটা মেয়ে গেট দিয়ে জিনসের প্যান্ট আর গেঞ্জি পরে গট গট করে ঢুকছে, মিত্রাকে দেখিয়ে বললাম, দেখতো মালটা কেমন, মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, চোখ পরে গেছে, আমি বললাম হ্যাঁ। তোর থেকেও বেশ ডাঁসা। মিত্রাকে নিয়ে এগিয়ে গেলাম, মেয়েটি সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠছে, আমি সামনে মিত্রা আমার পেছনে……. অদিতি খেতে খেতে বিষম খেলো। সবাই ওর দিকে দৃষ্টি ফেরালো, আমি মুখ নীচু করে হাসছি, অদিতি কাশতে কাশতে হাসতে হাসতে বললো, প্লীজ অনিদা আর নয়, এটা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ জানে না। প্লীজ তুমি বলো না। -কেনো অদিতি, গল্পটা শুনবে না। -না। -কি রে দেবা তোর বউ গল্পটা শুনতে চাইছে না কেনো। দেবা আমার দিকে বিষ্ফোরিত চোখে তাকিয়ে। তুই শালা। -ঠিক আছে অদিতি আমি আর বলবো না, তুমি বরং শেষটুকু এদের বলে দাও। -না, আমি বলবো না। -কেনো। আমি অদিতির দিকে জিভ বার করলাম। দেখো দেবা ভাবছে কি শালা আমার বউকে। -না না ও কিছু ভাবছে না। তুমি থামো। -শালা তুই তো বড় খলিফা। -তাহলে আর একটা গল্প বলি। এটা একটু অন্য ধরনের। অদিতি বললো বলো। -এটা শেয়ালদা স্টেশনের ঘটনা, মেয়েটা মোস্ট প্রোবাবলি নৈহাটি কিংবা ওই অঞ্চলে থাকতো... -প্লীজ অনিদা ওই গল্পটাও তুমি বোলো না। -কেনো মিলি। -আচ্ছা তোমার কি সব কথা মনে আছে। মনে ছিলো কিন্তু মুখগুলো শ্যাডো হয়ে গেছিলো। তোমাদের কাছে পেয়ে সেই মুখগুলো আবার মনে পড়ে গেলো। তখন দেবা ভদ্র ছেলে ছিলো, আমি মা-বাপ হারা অনাথ ছেলে, চালচুলো হীন, কলকাতায় হোস্টেলে থাকি লোকের দয়ায় চলে। ও আমার এ ঘটনাগুলো জানে না। একমাত্র মিত্রাই আমার সাক্ষী এই সব ঘটনার। ওর সঙ্গে বাজী ধরে এসব করতাম। বড়লোকের মেয়ে, পড়াশুনার খরচ চলে যেতো। -নির্মাল্য তোমরটা কি বলবো। মুখ নীচু করে খেতে খেতেই কথা বলছিলাম। -তার মানে ওরও আছে। দেবাশিস বললো। -হ্যাঁ, তোরই মতো তবু ওরটা একটু  র। -শালা তুই একটা জিনিস রে। -সেই জন্যই মিত্রা মনে হয় কর্মচারী থেকে মালিক বানিয়েছে। সকলে চুপ করে গেলো। -জানিস দেবা নিজেকে নিয়ে আমি গর্ব করি না। তবে একটা কথা বলি অন্য ভাবে নিস না, নাতো খুব খারাপ লাগবে। -বিনয় করিস না। -কোনো কাগজ কোম্পানীর মালিক এইভাবে তোদের মতো কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে বসে খেয়েছে কোনো দিন। -একেবারেই না। -আমি কিন্তু তোদের কাছে এসেছি। কেনো জানিস? -কেনো। -তোরা কেউ আমার বন্ধু কেউ আমার জুনিয়র। তোদের কাছ থেকে শিখবো, সাহায্য নেবো বলে। -আমার ব্যাপারটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। ওদের ব্যাপরটা বলতে পারবো না। তুই ওদের সঙ্গে কথা বল। -তুই তো পরিচয় করিয়ে দিলি না। -শালা এখানেও জুতোটা মারলি। -কোথায়। -এরপর আর পরিচয় করিয়ে দেবার ব্যাপার থাকতে পারে। -ওরা কে কোথায় আছে কি করে জানবো? -ও সেই কথা বল, টিনা টাটাতে, অদিতি এয়ারটেল, মিলি ভোদাফোনে…… -অনিদা আমি আছি ওগিলিভিতে। -তোমাদের হাত তুলে নমস্কার করছি না। -খাওয়া শেষ হোক তারপর তোকে এর উত্তর দেবো। দেবাশিস বললো। তোদের কিছু বলার থাকলে বলতে পারিস। -আমাদের আলাদা করে কিছু বলার নেই। টিনা বললো, আমাদেরটা এখান থেকে কন্ট্রোল হয় না। তোমাকে আমার সঙ্গে একবার বম্বে অফিসে যেতে হবে। -আমি কিছু জানি না, তুমি নিয়ে চলো আমি নিশ্চই যাবো। তবে তোমাকে একটা কোটেশন করতে হবে। -তুমি নিজেই করে দাও, আমি অফিসের প্যাডে করিয়ে দেবো। -সে কি করে হয়। তোমাদের একটা রেট চার্ট আছে তো। -সে তো তোমাদের কাছেই আছে। নিশ্চই অফিস থেকে পাঠিয়েছে। -তা আছে, সেই দেখে তোমরাই একটা করো। আশা রাখবো তোমরা আমাকে ঠকাবে না। -এ কি বলছো অনিদা। -কাল একবার সবাই আয় না মিত্রার ঘরে একটু আড্ডা মারবো। -হ্যাঁরে মিত্রাকে দেখতে কেমন হয়েছে রে। দেবাশিস বললো। -তোর পছন্দ হবে। -না, এখন যাবো না। আগে তোর কাজ হোক, তারপর মিত্রাকে বলবো একটা পার্টি দিতে। দেবাশিসকে বললাম, আমার ডেবিট কার্ড আছে, এখানে ওইটা দিয়ে পেমেন্ট করা যায়। দেবাশিস আমার দিকে এমনভাবে তাকালো যেন আমি ভস্ম হয়ে যাবো। -তুই ওই ভাবে তাকাস না। -তুই যে বললি তোর কাছে পয়সা নেই। -টিনা, অদিতি আমার খুব কাছেই বসেছে, ওরা মুখ টিপে হেসে ফললো। -পয়সা মানে ওই কার্ডটুকু সম্বল। -তুই কি জানিস এখানে তোর একটা সইয়ের কতো দাম? -না জানা নেই। -চুপচাপ থাক নাহলে শোর মাচাবো। -ক্ষমা কর ভাই, আর বলবো না। আলাদা করে আর কাউকেই বলতে হোলো না, ওরা বললো এ মাসে বাজেট আছে আমরা ফাইন্যাল করবো। তোমায় চিন্তা করতে হবে না, ডিলটা ডাইরেক্ট যখন তোমার সঙ্গে, কাজ করতেও সুবিধে হবে। আমি বললাম, ওদিককার রেসপনসিবিলিটি আমার তোমাদের চিন্তা করতে হবে না। টিনাকে বললাম, তুমি প্রোগ্রাম করো, যদি আমার প্রয়োজন হয় যাবার আমি নিশ্চই যাবো। -আমি আজই একটা ফ্যাক্স করে দেবো, তোমায় কাল পরশু আশা করি জানাতে পারবো। আমি এইটুকু সময়ের মধ্যে খুব ফ্যামিলিয়ার হয়ে গেলাম, বুঝতেই পারলাম না ওদের সঙ্গে এতদিন বাদে দেখা হলো। -এখন কোথায় যাবি। -একটু গঙ্গার ধারে যাবো। -কেনো। -ইসলাম ভাইয়ের কাছে। -সেটা আবার কে? -চরস, গেঁজা কোকেন বিক্রী করে, আমায় প্রচুর নিউজ দেয়। দেখি কিছু পাই কিনা। ওরা সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। -ভাবছিস মালিক হয়ে। -হ্যাঁ। -এটাই তো আমার জীবন, আমাকে বসিয়ে রাখলে অসুবিধে আছে। আমি নিজেকে নিজে কখনো ধরে রাখতে পারি নি। দেবাশিস বললো তোর কোনো গাড়ি নেই। -আছে অফিসে রেখে এসেছি। আমার গতিবিধি কাউকে জানতে দিই না। এটা আমার সিক্রেট ব্যাপার। এমনকি তুই যদি এখন আমার সঙ্গে যাস ইসলাম ভাই আমার কাছে আসবেই না। ও জানে আমি সাংবাদিক, কিন্তু ওর চেলুয়ারা জানে না। -সত্যি অনি তোকে দেখে হিংসে হচ্ছে। -কেনো। -তুই কি সুন্দর সব কিছু মেনে নিস। মানিয়ে নিস। আমরা হলে পারতাম না। -পারবি পারবি সব পারবি সময় হোক।
Parent