কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৭৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4061773.html#pid4061773

🕰️ Posted on December 7, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 898 words / 4 min read

Parent
ওরা যে যার অফিসে চলে গেলো, আমি ওদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম, সবাইকেই একটা কথা বললাম ভুলে যেও না যেন। ওরা কথা দিয়েছে এক সপ্তাহের মধ্য সমস্ত ব্যাপারটা ফাইন্যাল করবে শুধু আমার মুখের দিকে তাকিয়ে, অন্য কেউ হলে ওরা পরিষ্কার না বলে দিতো। আমি হাসতে হাসতে বললাম, কাজটা হলে আমি তোমাদের কাছে ঋণী থাকবো। -একি বলছো আনিদা অদিতি বললো, তাহলে আমরা কেউ তোমার কাজ করবো না। তোমাকে আগে উইথড্র করতে হবে। আমি অদিতির কাঁধটা ধাঁকিয়ে বললাম, ওটা কথার কথা। তোমাদের অনিদার কোনো পরিবর্তন হয় নি, দেখতে পেলে না। ওখান থেকে বাসে করে এলাম গঙ্গার ধার, আমার পরিচিত জায়গা। ঠিক জায়গায় এসে বসলাম, চারিদিক শুনশান। আমি জানি কখন আমার দূত এসে আমার পাশে বসবে। একটা সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছিলো, কিন্তু খেলাম না, ইসলাম ভাই জানে আমার কোনো নেশা নেই। ইসলাম ভাই-এর সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলো, দামিনী মাসি, সোনাগাছিতে যার কাছে আমি একসময় কাটিয়েছি। এখনো গেলে মাসির হাতে এটা ওটা গুঁজে দিয়ে আসি। মাসি প্রথম প্রথম নিত না, একদিন বললাম, তোমার তো কোন সন্তান নেই মাসি, আমি যদি তোমার ছেলে হতাম তুমি কি নিতে না। মাসি কেঁদে ফেলেছিলো, তারপর থেকে মাসি আর না বলে না। প্রথম মোবাইল হাতে আসার পর, মাসিকে নম্বর দিয়ে এসেছিলাম, যদি কখনো প্রয়োজন হয় আমাকে ডেকে নেবে।   কেন জানি না আজ সকাল বেলা অফিস থেকে বেরোবার পর থেকেই মনে হচ্ছে যেনো আমাকে কেউ ফলো করছে। ইসলাম ভাইকে ব্যাপারটা বলতে হবে, কিন্তু আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। কাউকে সেই ভাবেও দেখতে পাচ্ছি না। তবু কেন মনে হচ্ছে। অনেক লোক আশপাশ দিয়ে হেঁটে চলে যাচ্ছে, কাউকেই সেই ভাবে মনে পরছে না। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর আবিদ এলো, এই ছেলেটি খুব ভালো, বাদাম বিক্রি করে, কিন্তু খদ্দের চেনে কারা ওর কাছ থেকে নেশার দ্রব্য কিনবে। ওই যে কথায় আছে না রতনে রতন চেনে শুয়োরে চেনে কচু। আমার কাছে এসে বললো, তুমি বসে বসে বাদাম খাও, দাদার আসতে দেরি হবে। -কেনো। -দাদা একটা কাজে গেছে। -বলবি না। -তোমায় না বলার কি আছে। তুমি দাদার খাস লোক। হাসলাম। -তোমার কি খুব জরুরি দরকার আছে। -না। অনেক দিন আসিনি, তাই এলাম। -তোমার নম্বরটা দাও, দাদা এলে ফোন করতে বলবো। -আচ্ছা। আমি বাদাম খেতে খেতে হাঁটতে আরম্ভ করলাম। সনাতনবাবুকে একটা ফোন করলাম, সনাতন বাবু প্রথমে ঠিক বুঝতে পারেন নি, না বোঝাই স্বাভাবিক, আমার নম্বর ওনার কাছে নেই, পরিচয় দিতেই বললেন, আরে অনিবাবু যে, ওঃ আজ মিটিংএ যা দিলে না আমার শরীর জুড়িয়ে গেলো। -কেনো দাদা। -জানো এই কদিনে ব্যাপারটা আমার রক্তচাপ বাড়িয়ে দিয়েছিলো। -এবার আপনি শান্তিতে কাজ করতে পারবেন। -আচ্ছা অনি তোমাকে যদি ছোটবাবু বলি খুব অন্যায় হবে। -আপনার ছেলেক যদি আপনি ছোটবাবু বলে খুশি হোন আমার আপত্তি নেই। -এই তো তুমি একটা ছোট্ট লেজুর জুড়ে দিলে। -ঠিক আছে যে জন্য ফোন করেছিলাম। -বলো। -আপনার হাতের কাছে কাগজ কলম আছে। -আছে। -লিখে নিন। -কামিং সিক্স মান্থের বাজেট, ইনকাম এ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার, বিশেষ করে এ্যাড কত টাকার এসেছে এবং এ্যাড ডিপার্টমেন্টর পেছনে আমাদের কত খরচ হয়েছে। -ঠিক আছে। -এবার সার্কুলেসন এটারও ডিটেলস। -নেক্সট। -আমাদের কতগুলো নিজস্ব গাড়ি আছে। -২৫টা। -এদের ডিটেলস এবং এছাড়া কতো গাড়ি ভাড়ায় আছে তার কত খরচ হচ্ছে তার ডিটেলস। -আচ্ছা। -প্রেসের স্ক্র্যাপ কারা কেনে, কত দামে কেনে, কত টাকার স্ক্র্যাপ বিক্রি হয় তার কোন বাজেট আছে কিনা। এমনকি প্রেসের পেছনে আমাদের কতো খরচ হয়। -ঠিক হ্যায়। -এই কয়েকটা জিনিস কাল ১২টার মধ্যে মিত্রার টেবিলে পৌঁছে দেবেন। -ম্যাডাম কাল কখন আসবেন। -বলতে পারবো না। -তাহলেকি ম্যাডাম এলেই দেবো। -তাই দিন। ফোনটা কেটে দিলাম। ময়দান পেরিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে আসতেই, দূর থেকে চম্পকদাকে প্রেস ক্লাবের লনে দেখলাম। লোকটাকে দেখে মনে হলো না, এর সঙ্গে চম্পকদার কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে। আমি আড়ালে চলে গেলাম, একটু ফলো করলাম। চম্পকদা কিছু টাকা দিলেন। ফোনটা বেজে উঠলো। টিনার নামটা ভেসে উঠেছে। এরি মধ্যে টিনার ফোন। এই তো কয়েক ঘন্টা আগে দেখা হলো। -হ্যালো। -বলো টিনা। -তুমি কোথায়। -মনুমেন্টের তলায়। -তাই এতো চেঁচা মেচি। তুমি কি এখন ফ্রি আছ। -কেনো গো। -তাহলে আমার অফিসে আসতে পারবে একবার। যদিও তোমাকে বলা উচিত নয়। -প্রথমে বলো উচিত নয় কেনো। -তুমি একজন ওই রকম বিগ হাউসের ওয়ান অফ দেম ডিরেক্টর। -এই সংকোচ থাকলে তোমাদের সঙ্গে কথা বলা যাবে না। -রাগ কোরো না। তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে হয়তো ফোনই করতাম না। -এই তো ঠিক কথা বলেছো। আমার যে কতগুলো ছোটো খাটো কাজ আছে। তুমি কটা পযর্ন্ত অফিসে থাকো। আমি যদি পাঁটচার পর যাই অসুবিধে আছে। -একেবারে না। -ঠিক আছে, আমি চলে আসবো। কিন্তু তোমার অফিসটা যে চিনি না। -শান্তি নিকেতন বিল্ডিং, থারটিনথ ফ্লোর, রুম নং ফোর। -ঠিক আছে। রাস্তা পেরিয়ে ওয়াই এম সিএর গেটে এলাম। কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম। আবার ফোনটা বেজে উঠলো। দেবাশিস। -কি হলো রে। -গুরু তোমার গপ্পগুলো দারুন। তুমিযে এতটা তিলুয়া হারামী ছিলে জানতাম না। তুমি আমার বৌয়ের পাছা টিপে দিয়ে বলেছিলে, মা আমাদের কলেজে, অনেক বড় বড় মনীষীরা পরেছেন, তোমার এই পোষাক যদি তারা দেখতেন, লজ্জা পেয়ে যেতেন। তারপর থেকে ও কোনো দিন আর অড লুকিং জামা কাপড় পরে কলেজে আসেনি। হাসলাম। -আচ্ছা গুরু, মুতে কখনো নিজের নাম লেখা যায়। -হো হো করে হেসে ফেললাম। কে বলেছে নির্মাল্য। -সত্যি গুরু তোমার জবাব নেই। তোমার কাছে গিয়ে ক্লাস করতে হবে। -চলে আয়। -মিলিরটা ক্লাসিক। আমরা মালটাকে এখনো চুমু খেতে পারলাম না, আর তুমি ওই সময়, অতো লোকোর সামনে আবার সাক্ষী রেখে। গুরু তোমার পায়ের ধুলো একটু দিও মাদুলী করবো। -তোর সামনে কে আছে। -কেউ নেই। আমি একা। বাই দা বাই তোমার কাজ করে দিয়েছি। কবে আসবে বলো। -হঠাৎ তুই থেকে তুমিতে চলে গেলি। -না গুরু এবার এটা মেনটেন করবো। পারলে অনিদা বলবো। -হারামী। দেবাশিস হাসলো। -কালকে তোমার নামে অফিসে একটা চিঠি পাঠাবো। -না। আমি গিয়ে তোর কাছ থেকে কালেকসন করবো। -কবে আসছো। -দেখি যদি পারি আগামীকাল যাবো, তবে সেকেন্ড হাফে। যাওয়ার আগে একটা ফোন করে নেবো। -আচ্ছা।
Parent