কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৮১

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4081506.html#pid4081506

🕰️ Posted on December 10, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 779 words / 4 min read

Parent
টিনার কাছ থেকে উঠে চলে এলাম, টিনা নীচ পযর্ন্ত এগিয়ে দিয়ে গেলো। লাকিলি নিচে একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেলাম, উঠে পরলাম। অমিতাভদার বাড়িতে যখন এলাম রাত দশটা বেজে গেছে। পা দিতেই দেখলাম, তিনজনে বসে গল্প করছে আর হাসাহাসি করছে। আমি ঢুকতেই ছোটমা বললেন, আসুন স্যার, আপনার কথাই হচ্ছে। আমি বড়মাকে, ছোটমাকে প্রণাম করে বড়মার পাশে বসলাম। মিত্রা একটা সোফা দখল করে আছে, ছোটমাও একটা সোফা দখল করে আছে। -দাদারা আসে নি। -বলল তো অফিস থেকে বেরিয়েছে। বড়মা বললেন। -হ্যাঁরে তুই কি রে। -আমি মানুষ। খুব সাধারণ মানুষ। -দাওনা দাও ওর কানটি মূলে। ছোটমা বললেন। মিত্রা চোখবন্ধ করে হাসছে। -তোর কীর্তি কলাপ শুনছিলাম মিত্রার মুখ থেকে। মিত্রার দিকে তাকালাম -আমার! সে আর নতুন কি আছে। -একটা মেয়েকে নিয়ে গেছিস, থাকার জায়গা পযর্ন্ত ঠিক করিস নি। -আমি নিয়ে যাবার আগে কন্ডিশন করে নিয়েছিলাম, জিজ্ঞেস করো। -মিথ্যুক একেবারে বাজে কথা বলবি না। তুই আমায় বলেছিলি, ওখানে বাথরুম নেই। -সেটা আবার বলতে হয় নাকি, গ্রামে আলাদা বাথরুম থাকে নাকি, পুরো গ্রামটাই বাথরুম। সবাই হো হো করে হেসে ফেললো। -বাঁচা গেলো, তোমরা আর বিরক্ত করবে না। যাবার জন্য। -বিরক্ত করবো না মানে, এক মাসের মধ্যে বাথরুম ঠিক করবি অতো সুন্দর জায়গা খালি একটা বাথরুমের জন্য যেতে পারবো না। ছোটোমা বললেন। -একটু চা খাওয়াবে। -মিত্রা ফ্লাক্সটা নিয়ে আয়তো। মিত্রা উঠে চলে গেলো। রান্নাঘরের দিকে। বুঝলাম, মেয়ে করিতকর্মা হয়ে উঠেছে এই কদিনে। -অনি পীর সাহেবের গল্পটা একবার বোলবি। বড়মা বললেন। -কেনো শোনো নি। -মিত্রা ঠিক মতো বলতে পারে নি। -যখন যাবে তখন দেখিয়ে দেবো। মিত্রা ফ্লাস্ক আর কাপ নিয়ে এলো। টেবিলের ওপর তিনটে কাপ রেখে চা ঢাললো। বাইরে গাড়ির হর্ন বাজলো। -এই রে এলেন সব। ছোটমা বললেন। মিত্রা আরো দুটো কাপ নিয়ে এলো। আমি উঠে খাওয়ার টেবিলের ওখান থেকে দুটো চেয়ার নিয়ে এলাম। মল্লিকদা ঢুকলেন। -আসুন আপনার জন্য জায়গা খালি আছে এবং কাপে চাও রেডি। ছোটমা বললেন। মল্লিকদার সে কি হাসি -এতো সৌভাগ্য আমার। বলতে বলতেই অমিতাভদা ঢুকলেন -সুপার্ব নিউজ, তুই কোথা থেকে খবর পাস বলতো। সবাই আমার দিকে চাইলো। এমনকি মল্লিকদা পযর্ন্ত। -তোর নিউজটা ফলোআপ কোরলো সন্দীপ, তারপর ওরা সত্যি সত্যি প্রেস রিলিজ করলো। -তুমি ওটা ছেপেছো! -কেনো। -ওটা উইথড্র করো। ওই নিউজ কেউ ছাপে নাকি। -তুই কি করে বুঝলি। -আমি বলছি, পরে সব কথা বলবো, তুমি আগে তোলো ওই নিউজটা। -কাগজ ছেপে বেরিয়ে গেলো। -দাঁড়াও আসছি, বলে বাইরে এলাম। ওরা একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। ইসলামভাইকে ফোন করলাম, সব কথা বললাম, ও বললো ঠিক আছে, তুই বেটা সবেতেই ঘাবরে যাস, আমি নিজের ঘারে দোষ না নিয়ে অন্যের ঘারে চাপিয়ে দিয়েছি। বেশ করেছে ছাপুক। আমার বরং ভালো হবে। আবার নিজের জায়গায় এলাম। -কি হয়েছিলো। -কিছু না। -কিছু না বললে হবে, তুই উঠে চলে গেলি, কার সঙ্গে ফুসুর ফুসুর গল্প করলি। মল্লিকদা বললো। -আর একটা নিউজ আসার কথা ছিলো তাই জানলাম এসেছে কিনা। -কি নিউজ? -এখানে বলতে হবে। -বল না। -বললে আপত্তি কোথায় আমরা কি নিউজের বাইরের লোক। অমিতাভদা বললেন। -মধুচক্রে মন্ত্রীপুত্র। অমিতাভদা আমার দিকে তাকালেন -কোন মন্ত্রী রে। -তোমায় জানতে হবে না। -তুই নিউজ দিলেই আমি ছেপে দেবো নাকি। -আজকেরটা ছেপেছো কেন। নাও চা খাও। -দেখেছিস মল্লিক কেমন সাসপেন্স। বড়মা মুচকি হেসে মাথা দোলাতে দোলাতে বললেন -যেমন বুনো ওল তেমনি বাঘা তেঁতুল। সবাই মুখ নিচু করে হাসছে। আমি গম্ভীর। -তুমি চেয়ারে গিয়ে বোসো। অনি এখানে বসুক। বড়মা ঠেলে অমিতাভদাকে উঠিয়ে দিলেন। আমি বড়মার পাসে গিয়ে বসলাম। -কি ঠিক বলিনি বলো, সব একদিনে হয়ে গেলে চলবে কি করে। বড়মার দিকে তাকিয়ে বললাম। -একেবারে দিবি না। তুই আসার পর থেকেই তোকে অফিস থেকে ঠেলে বার করে দিয়েছে, না। -না। আমি বললাম। -না! বড়মা বললেন। -হ্যাঁ আজ আমি স্ব ইচ্ছায় বেরিয়েছি, কিছু কাজ ছিলো। অমিতাভদা কাপটা রেখে হাততালি দিয়ে উঠলো - কি এবার বলো। খালি আমি না। এই দেখে মিত্রার কি হাসি ফুলে ফুলে উঠছে। -ওরে থাম থাম, বিষম লেগে যাবে। ছোটমা বলে উঠলেন। -নাও রেডি হয়ে নাও খেতে বসে আবার সেকেন্ড ইনিংস শুরু করবো। -তার মানে। -আরে বাবা সবে টস করে ফার্স্ট ইনিংস খেললাম, এবার সেকেন্ড ইনিংসটা খেলতে হবে না। আমি নিজের ঘরে চলে এলাম। জামাকাপড় ছেড়ে, বাথরুমে গেলাম, দেখলাম ঘরটা আজ বেশ পরিষ্কার। মনে হচ্ছে কোনো মহিলার হাত পরেছে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিচে চলে এলাম। দেখলাম সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। -তুই মেয়েদেরও বেহদ্দ। ছোটমা বললেন। মিত্রা মুচকি হাসলো। আমি কথাটা গায়েই মাখলাম না, এমন ভাব করে বড়মার পাশে এসে বসলাম। ছোটমা খাবার পরিবেশন করছেন। আমি বললাম, একসঙ্গে নিয়ে চলে এসো। -তারপর বলবি আজকের খাওয়াটা ঠিক জোমলো না। মল্লিকদা শুরু করে দিয়েছেন। আমিও হাত লাগালাম। -তুই তাহলে নিউজটা দিবি না। -সন্দীপকে ফলোআপ করতে বলো। মল্লিকদা হো হো করে হেসে উঠলো। -কি তেঁয়েটে দেখেছিস। নিউজটা ভালো নিউজ। যদি কেউ তোর আগে করে দেয়। -দেবে। -তাহলে আমাদের কাগজের ক্রেডেনসিয়াল কমে যাবে। -অনি দিয়ে দে অতবার করে বলছে। বড়মা বললেন। হাসলাম। -সাতদিন পরে পাবে। ছবি হোক। -কাকে পাঠাবি। -কি? -ফটোগ্রাফিতে? -আমাদের হাউসের? -হ্যাঁ। -তুমি সত্যি আমাকে জেলে পুরবে নাকি। -তুই সঠিক নিউজ করলে জেলে পুরবে কেনো। -ঠিক আছে তোমায় ভাবতে হবে না। বড়মা যখন বলেছে, ঠিক সময়ে পেয়ে যাবে।
Parent