কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৮৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4090186.html#pid4090186

🕰️ Posted on December 21, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 965 words / 4 min read

Parent
টিনার সঙ্গে অনেক কথা হলো, সেই কলেজ লাইফ থেকে, ও শুনতে চাইলো সেই দিনকার তাজ হোটেলের অসমাপ্ত কথা, আমি গল্পগুলো ওকে বললাম, ও হাসতে হাসতে সোফায় গড়িয়ে পরে। -তুমি এরকম দুষ্টু ছিলে। -দুষ্টু ঠিক নয়, বলতে পারো ওটা বয়সের একটা ধর্ম, তখন নতুন করে জগত সংসারকে চিনতে শিখছি, একটা লিডারশিপ পাওয়ার ইচ্ছে মনের মধ্যে সব সময় বাসা বেঁধে থাকতো। -তাই বলে এরকম হ্যারাসমেন্ট। যাক আমার ভাগ্য ভালো কালো বলে তোমার হাত থেকে রেহাই পেয়ে গেছি। -তুমি কালো বলে নিজেকে ছোট করছো কেনো। -না গো অনিদা, ঠিক বলছি। কথা ঘোরানোর চেষ্টা করলাম। -আচ্ছা টিনা তুমি য়ে পোষাকটা পরে আছো এটার নাম কি। -কেন? -এমনি ইচ্ছে হলো তাই জিজ্ঞাসা করলাম। -তোমার সব জিজ্ঞাসার মধ্যে একটা কারণ থাকে। খুব অড লুকিং লাগছে? -না বাড়িতে পরার ক্ষেত্রে ঠিক আছে। -সত্যি করে বলো না। এখন কিন্তু মেয়েরা এই পোষাক পরে বাইরেও বেরোয়। -তোমার কথা হয়তো ঠিক, কিন্তু আমার চোখে পরে না। -ওপরেরটা সাধারণ টপ, নিচেরটাকে বলে হারেম প্যান্ট। -সেটা আবার কি। -বলতে পারবো না, বাদশাহী আমলে হারেমে বাঁদীরা হয়তো এরকম পোষাক পরতো। হাসলাম। -হাসলে কেনো? ওর দিকে মিট মিট করে তাকালাম। -উঃ তোমার মাথা বটে, কি ইঙ্গিত করছো বুঝতে পেরেছি। আমি এখুনি ছেড়ে ফেলছি। -না না, আমার কথায় ছেড়ো না। সবার পছন্দতো সমান নয়। খাওয়া শেষ হলো, টিনা প্লেটগুলো তুলে নিয়ে গেলো, শরীরটা এবার ছেড়ে দিয়েছে। ঘুমতে পারলে ভালো হতো, গোটা পাঁচেক বড় বড় হাই উঠলো, একবার ভাবলাম, টিনাকে বলি তোমার ভেতর ঘরের খাটটা একটু ছেড়ে দাও। একটু ঘুমোই। তারপর ভাবলাম না বেশি বিরক্ত করা হয়ে যাবে, তার থেকে বরং এই সোফাটাই বেশ। কিগো তোমার চোখটা এরকম লাল কেনো। -ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। -চলো আমার খাটে শোবে চলো। আমি টিনার দিকে একদৃষ্টে তাকালাম, ওকে দেখে খুব খুশি মনে হচ্ছে, দেবাশিস ঠিক কথা বলেছে, মেয়েটা তোকে ভীষণ ভালোবাসে, হয়তো ঠিক কিন্তু সব ভালোবাসার পরিসমাপ্তি হয় না, আমি তো দেবাশীষের মুখ থেকেই প্রথম শুনেছিলাম, টিনা আমায় কলেজ লাইফে ভালোবেসেছিলো। এখনোকি ও ভালোবাসে? -কি ভাবছো। -তোমার খেতে চাইলাম, তুমি খেতে দিলে, আবার শুতে চাইবো, হয়তো শুতেও দেবে। মানুষের মন চাহিদার শেষ নেই ভুল করে যদি আর কিছু চেয়ে বসি, তখন কি করবে? -চেয়েই দেখো না দিতে পারি কিনা। টিনা মুখটা নীচু করে ফেললো। -চলো, তোমার খাটটা কয়েক ঘন্টার জন্য একটু দখল করি। উঠে দাঁড়াতে গিয়ে মাথাটা কেমন ঘুরে গেলো, টাল খেয়ে আবার সোফায় বসে পরলাম, টিনা আমার হাতটা ধরে ফেললো -অনিদা শরীর খারাপ লাগছে। ওর চোখে মুখে ভয়ের ছাপ। -না। ঠিক আছি। আমি ওর পেছন পেছন, ওর বেডরুমে ঢুকলাম, খুব ছিমছাম ডবল বেডের একটা খাট, মাথার শিয়রে ছোট টেবিলে কম্পিউটার, একটা চেয়ার একটা আলমারি, পায়ের দিকে একটা ওয়ারড্রব, একটা দেয়াল আলমারি। অবাক হলাম এইটুকু ফ্ল্যাটে দুটো বাথরুম, একটা এই ঘরের সঙ্গে আর একটা বসার ঘরের সঙ্গে, ডানদিকে ছোট একটা ব্যালকনি। শরীর আর বইছে না, শুতে পারলে বাঁচি। টিনা খুব তাড়াতাড়ি বিছানাটা গুছিয়ে দিয়ে একটা বালিশ বার করে দিলো। -প্যান্ট গেঞ্জিটা খুলে নেবে, আমার একটা কাপড় দিই। অনেকটা ফ্রি লাগবে। হাসলাম। -লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। অনেকটা ফ্রি লাগবে। টিনা আমার মনের কথা মনে হয় বুঝতে পারলো। আমি গেঞ্জি প্যান্ট খুলে ওর একটা কাপড় পরলাম, খালি জাঙ্গিয়াটা খুললাম না। টিনা পাখাটা হাল্কাভাবে খুললো। -তুমি শোও আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। টিনার দিকে বোকার মতো তাকিয়ে হেসে ফেললাম। সত্যি টিনা কি করে আমার মনের কথা পট পট করে বলে দিচ্ছে। আমি দেরি করলাম না, বিছানায় শুয়ে পরলাম, টিনা আমার মাথার শিয়রে বসে ওর শরু শরু নরম আঙুল আমার মাথায় রাখলো। যেনো পায়রার গায়ে আলতো করে কেউ হাত বোলাচ্ছে, টিনার গা থেকে একটা হাল্কা গন্ধ ভেসে আসছে, কিন্তু এটা কোনো সেন্টের গন্ধ নয়, এটা টিনার গায়ের নিজস্ব গন্ধ, আমায় মাতাল করে দিচ্ছে, আমার চোখে সারা রাজ্যের ঘুম মিহি কুয়াশার মতো ঝড়ে পরছে। এরপর জানিনা কি হয়েছে। হঠাত একটা বিশ্রী স্বপ্নে ঘুমটা ভেঙে গেলো। কিছুতেই মনে করতে পারছিনা, কার যেন শ্মশান যাত্রা হচ্ছে, সারা শরীর অবশ, নড়া চড়া করতে পারছি না, মাথা ঘুরিয়ে চারদিক চাইলাম, ঘরে আমি একা। বারান্দার দরজাটা হাট করে খোলা, বিকেলের নরম রোদ বিছানায় এসে পরেছে, আমার গায়ে ধব ধবে সাদা একটা বিছানার চাদর, প্রথম সেন্স আসতেই নিজের কাপড়টা দেখলাম, ঠিক ঠাক পরা আছে কিনা, যা ভেবেছি তাই, গিঁট খুলে সে বিছানায় লোটাচ্ছে, ভাগ্যিস জাঙ্গিয়াটা পরা ছিল, তা না হলে কি কেলোর কীর্তিটাই না হতো। কিন্তু টিনা গেলো কোথায়। শুয়ে শুয়ে চাদর ঢাকা অবস্থাতেই, আগে কোমরে কাপড়টা বাঁধলাম। তারপর চাদর সরিয়ে বিছানায় উঠে বসলাম। টিনা টিনা বলে তিন-চারবার ডাকলাম, না কেউ কোথাও নেই, এইবার একটু ঘাবড়ে গেলাম, উঠে বসে রান্নাঘর বাথরুম সব দেখলাম। না টিনা কোথাও নেই। তাহলে কি টিনা, কোথাও গেলো। বাথরুমে গিয়ে মুখ হাত ধুলাম। টিনার ঘরের ঘরিটার দিকে তাকালাম, সোয়া পাঁচটা বাজে। বেলটা বেজে উঠলো, গিয়ে দেখলাম, লক করা। আবার ঘরে এসে বসলাম। বেশ কিছুক্ষণ পর দেখলাম বাইরের দরজার লক খোলার শব্দ, বেরিয়ে এলাম। দেখলাম টিনা একটা ব্যাগ হাতে ঢুকছে, সেই ঘাঘরাটা পরা, দারুণ উজ্জ্বল রং, ভীষণ সুন্দর দেখতে। -কি হলো ঘুম ভেঙে গেলো। কাপড় খোলা অবস্থার কথাটা মনে পরে গেলো, লজ্জায় আমার মাথা প্রায় পায়ে ঠেকে যাবার অবস্থা। -আমি তো ভাবলাম, তুমি রাত এগারোটা বাজাবে। তাই এই ফাঁকে একটু বাজার সেরে নিলাম। আমি টিনার দিকে তাকিয়ে হাসছি। টিনা স্ন্টার টেবিলে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বসলো। -সত্যি করে বলোতো অনিদা তোমার কি হয়েছে। আমি সোফায় বোসলাম, টিনা আমার মুখো মুখি। -কেনো। -মিত্রাদির নাম করে ওরকম চেঁচাচ্ছিলে কেনো। অফিসে কি কোনো গন্ডগোল। -না সেরকম কিছু না। -ঘুমের ঘোরে তুমি যা বলছিলে জড়িয়ে জড়িয়ে তাতে তাই মনে হচ্ছিল। মল কে। কেন তাকে ছাড়বে না। বুঝলাম, আমার অবচেতন মন ঘুমের ঘোরে অনেক কিছু বকেছে। -তারপর জিতে গেছো। ব্যাপারটা কি। আমি সোফা থেকে উঠে ভেতরের ঘরের খাটে এসে শুয়ে পরলাম। টিনা আমার মাথার শিয়রে এসে বসলো। আমার মাথায় হাত রেখে বললো, তুমি কাউকে তোমার কথা বলতে পারো না। না। আমি টিনার মুখের দিকে তাকালাম, ও একদৃষ্টে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। -বলো না বলো, বললে একটু হাল্কা হবে। -না টিনা সব বলা যায় না। -জানি। -তবু যদি তোমায় কোনো হেল্প করতে পারি, ভালো লাগবে। -তোমার সঙ্গে দেখা হওয়ার পর থেকে শুধু নিয়ে গেলাম। -যখন চাইবো সুদে আসলে মিটিয়ে দিও। -আমার সে ক্ষমতা নেই। তোমার কতো ক্ষমতা আছে তা তুমি নিজেই জানো না। দাঁড়াও তোমার জন্য একটু চা বানাই।
Parent