কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - অধ্যায় ৯২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-42380-post-4131849.html#pid4131849

🕰️ Posted on December 23, 2021 by ✍️ MNHabib (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 817 words / 4 min read

Parent
টিনার বাড়ি থেকে যে মন নিয়ে বেরিয়ে এসেছিলাম, সেই মনে কিছুটা হলেও কালি লাগলো। মল্লিকদাকে ফোনে ধরলাম। -কি বাপ কোথায় হাওয়া খাচ্ছ। -বাইপাসে আছি, বাড়ির দিকে যাচ্ছি। -বলো কি অভিপ্রায়। -একটা সঠিক খবর দিতে পারবে। -বলো। -মিত্রা কোথায় জানো। -ফোন করো পেয়ে যাবে। -এর জন্য তোমায় ফোন করার দরকার আছে। -ঠিক। এতটা তলিয়ে দেখিনি। দাঁড়াও দাদাকে জিজ্ঞাসা করি। -আমি ফোন করে জানতে চাইছি, এটা বলার দরকার নেই, সেটা কি বলে দিতে হবে। -একেবারেই না। -কিছুক্ষণ ফোন ধরে রইলাম। -শোন, তুই বেরিয়ে যাবার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বেরিয়ে গেছে, দাদাকে বলে গেছে, আজ রাতে আমাদের বাড়িতে যাবে না। কোথায় গেছে দাদা জিজ্ঞাসা করে নি। -কার গাড়ি নিয়ে গেছে। ইসমাইল না রবীন। -ইসমাইল তো অফিসে রয়েছে, রবীনকে নিয়ে গেছে। -আচ্ছা। মিত্রাকে ফোনে ধরার চেষ্টা করলাম, দেখলাম স্যুইচ অফ। বড়মাকে ফোন করলাম। -বলুন ছোটো সাহেব। বুঝলাম ছোটোমা ধরেছে। -এই সম্বোধনে কবে থেকে ভূষিত হলাম। -কেনো মিত্রা বললো। -কখন। -তা তিনটে সাড়ে তিনটে হবে। -কি বললো। -সে ওর কাছ থেকে জেনে নাও। তুই কখন আসছিস। -ও কি আজ রাতে আসার কথা কিছু বলেছে। -আজ ওর অনেক কাজ পরে গেছে আসতে পারবে না। -বুঝেছি। -কি। -তুমি বুঝতে পারবে না। বড়মাকে একবার দাও। -ধর। -কি রে অনি। -শোনো চেঁচামিচি করবে না। আমার অনেক জ্বালা। বুঝেছো। -আবার কি হলো। -সে অনেক কথা। কাল সকালে তোমায় গিয়ে বলবো। -আসবি না। -সুযোগ পাচ্ছি কোথায়। -কি হয়েছে বল। ব-ললাম তো কাল সকালে গিয়ে বলবো। -সে কি রে আমি যে গাদা খানেক রান্না করছি। -করো না, কাল সকালে ঠিক পৌঁছে যাবো। -ওঃ তোকে নিয়ে মহা মুস্কিল। -তোমরা নিজেরাই তো আমায় মুস্কিলে ফেললে। -কেনো। -আমাকে এ সবের মধ্যে জড়ালে কেনো। চুপচাপ। -খাচ্ছিল তাঁতী তাঁত বুনে কাল হলো তার হেলে গরু কিনে। -হেলে গরু কে। -তুমি জিজ্ঞাসা করছো। -তুই উপমা দিলি আমি জিজ্ঞাসা করলেই দোষ। -মিত্রা। -তার আবার কি হলো। -সে অনেক কথা। -আমি তোদের ব্যাপার স্যাপার বুঝিনা বাপু। -কাল বুঝবে। ট্রেনটার অনেক বগি, বুঝলে, ডি রেইলড হয়ে গেছে। লাইনে তুলতে একটু সময় লাগবে। -তোর হেঁয়ালি আমি বুঝি না। -ঠিক আছে কাল সকালে গিয়ে বোঝাবো। -ঠিক আছে তাই হবে। রবীনের ফোন নম্বর আমার কাছে নেই খুঁজে দেখলাম, ইসমাইলের ফোন নম্বরও নেই। মল্লিকদাকে আবার ফোন করলাম। -দেখতো ধারে কাছে ইসমাইল আছে কিনা, থাকলে আমার ফোন নম্বরে ওকে একবার ফোন করতে বলো। -আচ্ছা। কিছুক্ষণের মধ্যে ইসমাইল ফোন করলো, বললাম তুমি রবীনের ফোন নম্বর জানো। -হ্যাঁ দাদা জানি। -দাও। ও রবীনের ফোন নম্বর দিলো। আমি বললাম ঠিক আছে। রবীনকে ফোনে ধরলাম। প্রথমে ও চিনতে পারে নি তারপর বলতেই বললো হ্যাঁ দাদা কি বলো। -তুই কোথায়? -পাক র্স্ট্রীটে। -ম্যাডাম কোথায়? -ক্লাবের ভেতরে। -কখন এসেছিস? -এই তো ঘন্টা খানেক আগে। -দুপুরে বেরিয়ে কোথায় গিয়েছিলি? চুপচাপ। -কথা বলছিস না কেনো? -ম্যাডাম বারণ করেছে। -ঠিক আছে। -না না বলছি। -বল। -প্রথমে গেলাম, নিউ মার্কেট, ওখান থেকে পেয়ারলেস ইন, তারপর এখানে। -সত্যি কথা বলছিস? -হ্যাঁ, অনিদা। -ভেবে বল? -মাঝে সাহেবের কাছে গেছিলাম। -কে সাহেব? -ম্যাডামের হাসবেন্ড। -ও। -পেয়ারলেস ইনে কে কে ছিলো? -ম্যাডাম আর সাহেব ছিলো। -সাহেব কি কোলকাতায়? -তাহলে উনি কোথায় থাকবেন। উনি তো কলকাতাতেই থাকেন। -কোথায় থাকে? -কেনো আপনি জানেন না! -আমি তোর মতোই। গ্রামের ছেলে, এতো খবর রেখে কাজ কি বলতো। -না অনিদা আপনি গ্রামের হলে কি হবে, গিয়ে দেখলাম তো। -কোথায় থাকে বললি না তো। -সিঁথির ওখানে। -তুই চিনিস? -অনেকদিন আগে একবার গেছিলাম। -কোথায় বলতো? -গোপাল লাল ঠাকুর রোডে একটা মন্দিরের পাশে। -সাহেবের এখানের চেম্বারটা কোথায়? -রক্সি সিনেমার পাশে। -ও। আর নার্সিং হোমটা? -ওটা সাহেবের না। -তাহলে! -ওটা ম্যাডামের সঙ্গে, আর একজন আছেন, চিনি না। -আজ কি সাহেব ম্যাডামের বাড়িতে যাবেন? -না, না। -কেন? -ম্যাডামের সঙ্গে তো সাহেবের ডিভোর্স হয়ে গেছে। -কবে! -সে তো অনেক দিন। -তাহলে যে ম্যাডাম গেছিলেন! -তা বলতে পারবো না। -আজ ম্যাডাম অনেকদিন পর ক্লাবে এলেন না? -হ্যাঁ, প্রায় দেড় মাস। -কি করে রে ক্লাবে। -কি আর বলবো অনিদা তুমি তো সব জানো। -এই দেখো, আমি জানলে তোকে জিজ্ঞাসা করবো। -তুমি ম্যাডামকে একটু বাঁচাও। -আমি বাঁচাবার কে। আমি তোর ম্যাডামের কাছে কাজ করি, এই যা। তু-মি ম্যাডামের সঙ্গে কলেজে পড়েছো। -সে তো বহুদিন হয়ে গেছে। একটু দাঁড়া। ট্যাক্সিটাকে রুবির কাছে ছেড়ে দিলাম। -হ্যাঁ, বল। -ম্যাডাম আজ বেহুঁস হয়ে ফিরবে। -কেনো? -তুমি জানো না এখানে আসে কেন মানুষ। -খালি মদ খেতে! -তা নয়তো কি। আজ আমার কপালে দুঃখ আছে। -কেনো? -ম্যাডাম বেহুঁস হয়ে ফিরবে। -তুই কি করবি? -আমি মাসিকে বলেছি থাকার জন্য। -কেনো মাসি কি রাতে থাকে না? -না ওরা সব রাতে চলে যায়। -ম্যাডাম একা থাকে? -হ্যাঁ। -অতো বড় বাড়িতে একা! -হ্যাঁ। তুমি জানতে না। না। -আমিতো বাইরে বাগানের ওই মালিদের কোয়ার্টারে থাকি। -রাতে আর কে থাকে? -দুজন মালি, দারোয়ান আর আমি। -এইভাবে কতদিন আছিস? -যেদিন থেকে আমি এলাম সেদিন থেকে। -তুই কত বছর আছিস? -ছ’বছর। -তোর ম্যাডামকে গাড়িতে কে তুলবে? -এখানে বারের মেয়েরা আছে ওরা তুলে দেবে ধরে ধরে, বাড়িতে মাসি। -ও। -আজকে অফিসে কোনো গন্ডগোল হয়েছে? -কি মিটিং ছিলো। সে তো তুমি ছিলে। -দূর ওই মিটিংয়ে থাকে নাকি কেউ। আমি রাগ করে চলে এসেছি। -সেই জন্যই ম্যাডাম তোমায় খুঁজছিলেন। আমাকেও বললেন তুই দেখেছিস। তুমি কোথায় অনিদা? -আমি বাইপাসে বাস ধরবো বলে দাঁড়িয়ে আছি। -তোমায় ম্যাডাম খুব ভালোবাসে। -এটা আবার তোকে কে বললে। -আমি জানি। না হলে তোমার কথায় আমাদের গ্রামে যায়। -ঠিক আছে সাবধানে ম্যাডামকে বাড়ি নিয়ে যাস। -আচ্ছা।
Parent