কাজলদীঘি শশ্মান ও পীরসাহেবের থান - অধ্যায় ২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-35234-post-3029273.html#pid3029273

🕰️ Posted on March 7, 2021 by ✍️ Troya A1 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 1155 words / 5 min read

Parent
তনু ভেতরে এলো। ওর পরনে আজ টাইট জিনস। কোমরবন্ধনীর একটু ওপরে বেল্ট দিয়ে বাঁধা। ওপরে একটা শর্ট গেঞ্জি পরেছে। তনুকে আজ দারুন দেখতে লাগছে। কাগজের অফিসের মেয়েরা এরকমই সাজগোজ করে। তায় আবার ও চিত্র সাংবাদিক। তনু পায়ে পায়ে ভেতরের ঘরে চলে এলো। কাঁধের ভারি ক্যামেরার ব্যাগটা খাটের ওপর নামিয়ে রাখলো। কখন ফিরলে? আধ ঘণ্টা। তনু আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি তনুর দিকে। এই তনুই একদিন মল্লিকদাকে নালিশ করেছিল। অনির সঙ্গে আমাকে এ্যাশাইনমেন্টে পাঠাবেন না। ওকে কেউ সাংবাদিক হিসাবে পাত্তাই দেয় না। এক কোনে গিয়ে ভেড়ুয়ার মতো চুপচাপ বসে থাকে। কারুর সঙ্গে আলাপ করতে চায় না। বলে, কি হবে আলাপ করে। ওর জন্য আমার প্রেস্টিজ নষ্ট। মল্লিকদা হাসতে হাসতে বলেছিল। যাই করুক, ওর লেখাটার তারিফ কর, ওই লেখার সঙ্গে তোর ছবি। মাইলেজটা কোথায় বুঝতে পারছিস। তনু নিজে থেকেই ব্যাপারটা রিয়েলাইজ করেছিল। যখন অনেকেই আমার লেখার ফটো এ্যাশাইনমেন্ট পাওয়ার জন্য মল্লিকদার কাছে হত্যে দিয়ে পরে থাকতো। তারপর থেকে ও আমার বন্ধু হয়ে গেল। কি ভাবছো? খাট থেকে ব্যাগটা নিয়ে ছোটো সেন্টার টেবিলে রাখলো। আমি চুপচাপ। কিছু খেয়েছো? মাথা দুলিয়ে বললাম, হ্যাঁ চাউমিন। জীবনে ওটা ছাড়া আর কিছু খেতে জান? খুব বেশি হলে ছেঁড়া পরোটা, জিলিপি। আমি চুপ করে রইলাম। এই ফল্যাটে ওর অবারিত দ্বার। ও ছাড়া এই ফল্যাটে আমার অফিসের দ্বিতীয় ব্যক্তির কোনও প্রবেশাধিকার এখনও পর্যন্ত হয়নি। তনু অগোছালো বিছানার দিকে তাকাল। সত্যি তোমার দ্বারা আর কিছু হবে না। একটা ঢপ। কেন! একটু বিছানাটা পরিষ্কার করতে পারো না? সময় কোথায়। ঘুম থেকে উঠে করবে। আমার দ্বারা হয় না। একটা মাসি ছিল। তা আমারই থাকার ঠিক নেই। মাসিকে রেখে কি করবো। বারন করে দিয়েছি। বড়োমা কখনও এই ফল্যাটে এসেছেন? না। সেই জন্য। তুমি ছাড়া দ্বিতীয় কেউ এখনও আসেনি। সত্যি! একবারে সত্যি। আমি খুব লাকি বলো। তা বলতে পারো। তুমি অফিসের কাউকে নিয়ে আসো নি? না। তোমার এ্যাশাইনমেন্ট হয়ে গেছে? হ্যাঁ। কয়েকটা ছবি তুলতে দিয়েছিল। তুলে নিলাম। জমা দিয়ে দিয়েছো? দিলেই তো আবার পাঠাবে। তারমানে তুমি কাজে ফাঁকি দিয়ে আমার কাছে…। ভালোলাগছে না। তোমার সঙ্গে গল্প করতে ইচ্ছে করছে। আমি জানি তনু কেন আমার কাছে বারবার আসে। কিন্তু আমি ওর ডাকে সারা দিই না। আমাদের হাউসে তনুর মতো মেয়েদের লুটেপুটে খাওয়ার লোক প্রচুর আছে। সব হাউসেই থাকে। শুধু একটু চোখ মেলে তাকালেই হলো। তনু আমার হাতের একবারে কাছে। চাইলেই ও আমার ডাকে সারা দেবে। আমি পারি না। কোথায় যেন বাধো বাধো ঠেকে। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। অনেক ঘাটে জল খেয়েছি। তার চেয়ে বেশ আছি। একটা জিনিস বারবার লক্ষ করেছি। আমি কোনও মেয়ের সঙ্গে একটু ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছি। সে আমাকে সেক্স পার্টনার হওয়ার অফার দিয়েছে। বেশ সন্তর্পণে সেখান থেকে সরে এসেছি। জানিনা ঈশ্বর আমার শরীরটায় কি মধু মাখিয়ে রেখেছে। কি ভাবছো? কিছু না। তুমি আমার সেই কথার উত্তর এখনও দিলে না। কোন কথা? দুজনে প্রথম যখন এ্যাশাইনমেন্ট নিয়ে বাইরে গেলাম। এক ঘরে থাকলাম। সেই সময় একটা কথা বলেছিলাম। সত্যি বলবো তনু। বলো। একটা ভুল করেছিলাম। ক্ষণিকের জন্য। এরজন্য তোমার থেকেও আমি নিজেকে অনেক বেশি অনুতপ্ত মনে করি। না। আমি তোমাকে একটু বেশি চেয়েছিলাম সেদিন। তুমি চেয়েছিলে আমি সারা দিয়েছিলাম। হ্যাঁ। তারপর আমার ভুলের জন্য তোমার কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। হ্যাঁ। যার বাপ-মার ঠিকানা নেই, তাকে তুমি ভালোবেসে কি করবে? তনু মাথা নিচু করে রইল। বুঝতে পারছি। ওর চোখ দুটো খুব ভারি ভারি। তনু। উঁ। আচ্ছা আমি তোমার খুব ভালো বন্ধু হতে পারি না। তনু আমার দিকে তাকাল। তুমি অন্য কারুর, এটা বলছোনা কেন? বিশ্বাস করো। আমি কারুর নই। আমি একা। কারুর সঙ্গে আমি নিজেকে জড়াতে চাই না। আমাকে অফিসে দেখেছো। আমার কোনও ভালো বন্ধু নেই। তোমার আর সন্দীপের সঙ্গে যা একটু কথা বলি। সন্দীপদার কাছে তোমার সম্বন্ধে অনেক কিছু জেনেছি। জানিনা সন্দীপ তোমায় কি বলেছে। যে টুকু বলেছে…., আশা রাখি আমার সম্বন্ধে তোমার জানার চাহিদা মিটে গেছে। তুমি এত ভালোছেলে, আমাদের হাউসে পরে আছো কেন। এখনও ভালো সুযোগ পাইনি বলে। পেলে হয়তো চলে যাব। তাছাড়া দাদা-মল্লিকদাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাব না। তোমায় আমি খুব বিরক্ত করি। একবারে না। তুমি এলে ভালো লাগে। আমার কথা বলার কেউ নেই। তনু আমার মুখের দিকে তাকাল। আমার কাছে এগিয়ে এল। আমার হাত দুটো ধরে বললো। আমি খুব হ্যাংলা তাই না। মোটেই না। তা হলে? কি জানি। তনু ঘণ্টা খানেক আমার কাছে থাকল। তারপর চলে গেল। যাওয়ার সময় ওর চোখের আর্তি আমার ভেতরটাকে ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়ে গেল। একবার ভাবলাম, মিত্রা আমার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। সেই জায়গায় তনুকে স্থান দিলে ক্ষতি কি? কিন্তু আমি যে মিত্রার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম। ওকে ছাড়া আমি পৃথিবীতে কাউকে আমার জীবনে স্থান দেব না। জামাকাপর পরে ব্যাগটা গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে এলাম। এইটুকু রাস্তা, ইচ্ছে করলনা বাসে যেতে। হাঁটতে হাঁটতে অমিতাভদার বাড়িতে চলে এলাম। সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে। গেটের মুখ থেকেই দেখলাম দাদা, মল্লিকদা বাইরের বারান্দায় পায়চারি করছে। বড়োমাকে দেখলাম না। ছোটোমা আমাকে দেখেই চেঁচিয়ে উঠল, ওই যে শ্রীমান এলেন এতক্ষণে। অমিতাভদা পায়ে পায়ে এগিয়ে এসে বললো, কি-রে শরীর খারাপ নাকি? আমি মাথা দুলিয়ে বললাম, না। চোখ মুখটা কেমন যেন লাগছে? তুমি ভুল দেখছো। মল্লিকদা বললো, কি বাবা আবার ঘুম? আমি মল্লিকদার দিকে তাকিয়ে বললাম, ছোটোমাকে বলব নাকি সকালের ব্যাপারটা। এই তো—আমাদের দুই কলিগের পার্শোনাল টক, সে তো অফিসেই হয়ে গেছে। আবার বাড়িতে কেন? কিরে অনি, কি হয়েছে? ছোটোমা চেঁচিয়ে উঠলো। আমি হেসেফেললাম। অফিসে এই ভদ্রলোকদ্বয়ের দাপট দেখলে অবাক হয়ে যেতে হয়। আর বাড়িতে ছোটোমা কিংবা বড়োমার কাছে অমিতাভদা, মল্লিকদা যেন কেঁদবাঘ। বড়োমা ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো। কিরে তোর কি হয়েছে! এত দেরি কেন? কোথায় দেরি হয়েছে। তোমাকে বললাম পাঁচটা নাগাদ আসব, এসেছি সাড়ে পাঁচটা। চল ভেতরে চল। সব গোছ গাছ করে নিয়েছিস। ছোটো একবার ওর ব্যাগ খুলে দেখে নে। সব ঠিক ঠাক নিয়েছে কিনা। আমি ভেতরে এসে খাবার টেবিলে বসলাম। দেখলাম তিনজনের জায়গা হয়েছে। বড়োমার দিকে তাকিয়ে বললাম, এখানে তিনজনের জায়গা দেখছি। আর দুজনের? খেয়ে নিয়েছে। এখন আমি তুই আর ছোটো খাব। তুমি কি আমার জন্য না খেয়ে বসে আছ? বড়োমার চোখ ছল ছল করে উঠল। তুই খেতে চাইলি, তোকে না খাইয়ে খাই কি করে। ছোটোমা? তোর জন্য না খেয়ে বসে আছে। শিগগির ডাকো, আমার ব্যাগ দেখতে হবে না। আমি সব ঠিক ঠিক গুছিয়ে নিয়েছি। বড়োমা চেঁচিয়ে উঠল, ছোটো চলে আয়। আগে খেয়ে নিই, তারপর না হয় ওর ব্যাগ গুছিয়ে দিস। একসঙ্গে তিনজন খেতে বসলাম। বড়োমা আজ দারুন দারুন সব পদ রান্না করেছে। চিংড়ি মাছের মালাইকারি। ট্যাংরা মাছের ঝোল। ভাপা ইলিশ। নিঃশব্দে তিনজন খাচ্ছিলাম। আমি একটা ট্যাংরা মাছ বড়োমার পাতে তুলে দিলাম। বড়োমা হেইহেই করে উঠল। আর একটা ইলিশ মাছ ছোটোমার পাতে তুলে দিলাম। ছোটোমা কপট গম্ভীর হয়ে বললো, অনি এটা কি হলো—সারাটা দুপুর ধরে আমরা দু-বোনে রান্না করলাম আর তুই যদি….। আমার যতটা খাওয়ার আমি ঠিক নিয়ে নিয়েছি। বারতিটা তোমাদের দিলাম। বড়োমা খেতে খেতেই বললো, হ্যাঁরে অনি দুপুরে কি হয়েছিল? তুই নাকি তোর দাদার সঙ্গে রাগারাগি করেছিস। তোমায় কে বললো? মল্লিক বললো। আমি ছোটোমার মুখের দিকে তাকালাম। ছোটোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেকটা বন্ধুর মতো। অনেক কথাই ছোটোমার সঙ্গে হয়, যা বড়োমার সঙ্গে হয় না। তবে দু-জনকেই আমি ভীষণ ভালোবাসি। বড়োমাকে আমি শ্রদ্ধাকরি। তাই বড়োমার কোনও কথায় আমি চট করে না বলতে পারি না। অনেক ভেবে চিনতে আমায় উত্তর দিতে হয়। তুমি বড়োমাকে বলেছো নাকি? ছোটোমার দিকে তাকালাম। কি! তোমাকে একদিন গল্পের ছলে বলেছিলাম। মিত্রার ব্যাপারটা? হ্যাঁ। আমি মাথা নিচু করে নিলাম। তোর গুণের কথা দিদিকে বলবো না! আজ ওই ব্যাপারটা নিয়ে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল। খেতে খেতে মাথা নিচু করেই কথা বলছিলাম। কিছুক্ষণ সবাই নিঃশব্দ। খাবার থালায় হাপুস হুপুস শব্দ। তুই জানিস না ও তোদের মালকিন? বড়োমা বললো।
Parent