কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ১৬৮

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-3819330.html#pid3819330

🕰️ Posted on October 12, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 501 words / 2 min read

Parent
- Sir, আপনার order টা নিয়ে location এ দাড়িয়ে আছি।  - দাড়াও ভাই, আসছি।    দরজা খুলে অনীশ মুখার্জী গেটের বাইরে এসে সাইকেল করে আসা  Zomato-র ছেলেটার কাছ থেকে তার খাবারের ব্যাগটা নেয়।    - Thank you,  Sir,  please 5 star দিয়ে দেবেন।  - Ok, দাড়াও একটু, দেখে-নি সব ঠিক আছে কিনা!    ব্যাগের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে অনীশ দেখেতে থাকে। Zomato র ছেলেটা মনে মনে অবাক হয়, ভাবে, এখন আবার প্যাকেট খুলে খুলে দেখবে না তো, ভেতরে সব ঠিকঠাক খাবার দিয়েছে কিনা! এইটাই লাস্ট delivery ছিল, ভিষণ খিদে পেয়েছে,ভাবলাম এবার বাড়ি গিয়ে খয়ে নেব, এখন এ আবার কতো দেরী করায় কে জানে!  এদিকে অনীশ ব্যাগের থেকে একটা খাবারের প্যাকেট বের করে নিয়ে বলে,  - এই একটা প্যাকেট নিয়ে যাও, আর একটা রাখলাম। - না.. মানে Sir, আপনি যা order দিয়েছিলেন, তাই এনেছি, আপনি দুটো চাউমিনের order করেছিলেন।  - হ্যাঁ, দিয়েছিলাম তো। এখন প্রায় রাত নটা-সাড়ে নটা বেজে গেছে, একলা মানুষ, দুটো প্যাকেট নিয়ে কি করব? তুমি একটা নিয়ে যাও।    Zomato র বাইশ-তেইশ বছরের ছেলেটা ভাবছে (এতো মহা ঝামেলায় পড়লাম, তাহলে order-টা দিলে কেন বাবা!) যথাসম্ভব মাথা ঠান্ডা রেখে বললো,  - Sir, আমি তো on time-এই নিয়ে এসেছি। আপনার ফুল পেমেন্টও হয়ে গেছে। আপনাকে cancell  করতে হবে order টা। অসুবিধা হবে। এইভাবে একটা প্যাকেট নিয়ে আরেকটা ফেরত দিতে গেলে অসুবিধা হবে।    Zomato র app খুলে অনীশ ছেলেটির নামটা দেখে নিয়ে বললো,  - তপন, থাকো কোথায়? কে কে আছেন বাড়িতে? এখানে তো দেখাচ্ছে, তোমার ওপর দুজন dependent, তুমি ই একমাত্র  earning member   তপন ভাবে, এতো আমার ঠিকুজি নিয়ে পড়লো, আবার complain করবে না তো! স্টার পাওয়া আমার মাথায় উঠলো, এবার বক্ বক্ করো এর সাথে, কোথায় ভাবলাম তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে একটু খাবো! তপন একটু মাথা নীচু করে বলে,  - কাছেই থাকি Sir, সাহেব বাগান, মা-বাবা আর আমি। অনেক রাত হলো তো Sir, আর ফেরত দেবেন না। ফ্রিজে রেখে দিন, কাল নাহয় খেয়ে নেবেন, এক্ষুনি বানিয়েছে, নষ্ট ও হবে না। এটাই আমার last order ছিল,  না হলে....    একটু স্মিত হেসে, অনীশ বলে,  - এই প্যাকেটটা তোমার বাড়ি নিয়ে যেতে বলছি। দোকানে তো ফেরত নিয়ে যেতে বলিনি।    এবার তপনের অবাক হওয়ার পালা,  - মা.. নে, ঠিক বুঝতে পারলাম না।    অনীশ হেসে বলে,  - দেখো ভাই তপন, আমি একা থাকি, ইচ্ছে করেই দুটো প্যাকেট order দিয়েছি। তোমাকে খাওয়াবো বলে। এই পরিস্থিতি না থাকলে তোমাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে  বসিয়ে খাওয়াতাম। তুমি যদি নিয়ে যাও, আমার খুব ভালো লাগবে। আমি যখনই order দি, একটা বেশি order করি... নিয়ে যাও ভাই।    অনীশের অমায়িক কথা শুনে, তপনের চোখটা ছল্ ছল্ করে ওঠে। যা রোজগার করে, কোনরকমে চলে যায় তিন জনের। রোজই এখান থেকে ওখানে খাবার বয়ে নিয়ে যায়, ইচ্ছে থাকলেও কখনো পকেটের টান ওকে  দোকানের খাবার কিনতে দেয়নি।    আবার ভাবে, এইভাবে ভিক্ষার জিনিস নেওয়া উচিত হবে কিনা!   অনীশ যেন তপনের মনের কথা শুনতে পায়, সঙ্গে সঙ্গে বলে,  - ভেবো না ভাই, আমি তোমায় ভিক্ষে দিচ্ছি। আসলে, একা থাকি তো, কেউ খেলে ভালো লাগে। নেবে?..    তপন আর কথা না বলে প্যাকেট-টা নিয়ে, তার চোখের ভাবেই ধন্যবাদ জানিয়ে সাইকেলের প্যাডেলে চাপ দেয়। এইরকম মানুষ-ও এখনকার এই কঠিন পরিস্থিতিতে পৃথিবীতে আছে.... এরাই মনে হয় মানুষ রূপী ঈশ্বর.. সাহেব বাগানের দিকে এইসব ভাবতে ভাবতে চলতে থাকে তপন। 
Parent