কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ২২

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-2590903.html#pid2590903

🕰️ Posted on November 4, 2020 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 365 words / 2 min read

Parent
#অণুগল্প "বিশ্বনাথ দাদা, ও বিশ্বনাথ দাদা...বাড়ি আছো নাকি?" ডাক শুনে কপাট টা একটু খুলে দাঁড়ালো গীতা। এই সাতসকালে কে এলো রে বাবা! সাদা ধূতি আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরা, হাতে একটা থলি। এইরকম একজন মানুষের এখানে, এই বস্তিতে কি কাজ রে বাবা! "উনি তো ঘরে লাই.." কিন্তু কিন্তু করে বলল গীতা "বাড়ি নেই? কোথায় গেছেন? কখন ফিরবেন জানেন বৌদি?" "জানি না.." বলে চুপ করে থাকে গীতা। চেনে না শোনে না, একজন অচেনা মানুষকে কিভাবে বলবে যে, যে মানুষটার কাছে ফুচকা খাবার জন্য সন্ধ্যে থেকে পাড়ার মোড়ে ভিড় জমে থাকত...ও বেশ রাগ রাগ গলায় রোজ বলত "এত ছোঁড়িরা তুমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকে কেন রোজ?" আর বিশ্বনাথ পান্ডে, এই মল্লিকবাজারের বিখ্যাত ফুচকাওয়ালা হা হা করে হেসে উঠত শুনে...মাঝে মাঝে ওকে রাগিয়ে দিয়ে বলত "উ সানিয়াল বাবুর বেটি আছে না? রোজ আমার কাছে আসে...না হলে তার চলেই না...", সেই ফুচকাওয়ালার বাড়িতে চাল বাড়ন্ত! কি যে একটা রোগ এলো... শেষ করে দিল সব কিছু। রোজ দোকান সাজিয়ে বসছে পান্ডেজি...কিন্তু...লোক আর আসে না। হাত পরিষ্কার করার জন্য স্যানিটাইজার ও রাখা থাকে সামনে...কিন্তু... সবাই এখন বাড়ির খাবার খাচ্ছে...এখন নাকি অনেকে বাড়িতে ফুচকা বানিয়ে খাচ্ছে...তার ছবি দিচ্ছে মোবাইলে...পাশের ঘরের সোমুরা দেখিয়েছে গীতাকে। তাহলে ওদের কি হবে! "বৌদি, আমার নাম নরেশ। বিশ্বনাথ দাদা আমাকে চেনেন। আমি একটা দরকারে এসেছিলাম...আমার ঘরে অনেক জিনিস জমে গেছে...চাল ডাল এসব...তোমরা যদি একটু নাও, উপকার হয় খুব...নইলে সব নষ্ট হয়ে যাবে..." চাল -ডাল! ওরা নিলে সেটা উপকার হবে! অবাক হয়ে তাকায় গীতা। "বৌদি, না করো না...আমার বাড়িতে রাখার জায়গা নেই...আমি ওই 'মা শীতলা স্টোর্সে' যে ছেলেটা কাজ করে, তাকে বলব দিয়ে যেতে...আমি তো ভারি তুলতে পারি না, অভ্যেস নেই..." বলতে বলতে চলে যান উনি, গীতাকে কিচ্ছু বলার সুযোগ না দিয়ে। চলেই যাচ্ছিলেন, হঠাৎ চেনা একজন ডেকে বললেন "কি দাদা, গঙ্গায় যাচ্ছেন নাকি? তর্পণ করতে?" শুনে থমকে তাকালেন একবার উনি... যিনি একটু আগেই শীতলা স্টোর্স থেকে কিছু জিনিস কেনার সময় শুনেছিলেন বিশ্বনাথ পান্ডে ধারে চাল কিনতে গেছে. দোকানদার দিতে রাজি হন নি, তাই মাথা নিচু করে চলে গেছেন, বোধহয় অন্য কোনো দোকানের দিকে...আর তখনই ঠিক করে নিয়েছিলেন...নিজের আসল নাম না বলে, যে নাম মুখে আসে বলে কিছু সাহায্য করবেন ওঁদের পরিবারকে। চটকা ভেঙে এবার উনি তাকালেন প্রশ্নকর্তার দিকে, তারপর একটু হেসে বললেন "না...তর্পণ করে এলাম..." কঠিন সময়ে অন্যকে সাহায্য করলেও তো পূর্বপুরুষকে শ্রদ্ধা জানানো যায়...তাই না? (সম্পূর্ণ সত্যি ঘটনা অবলম্বনে)
Parent