কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ২২০

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-4002508.html#pid4002508

🕰️ Posted on November 23, 2021 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 560 words / 3 min read

Parent
?**** টান *****? ড্রাইভার মিলন এসে বলল: বৌদি একটা বুড়ো এসেছে।বলছে দাদাবাবুর সাথে দরকার আছে। কে? নাম কি? কোথা থেকে এসেছে?   বলছে তো দাদাবাবুর গ্রামের লোক।খুব দরকার। দরকার তো আমি জানি।যত হাভাতে লোকগুলো আসে এ'ভাবে যখন তখন।তোদের দাদাবাবুকে ইনিয়ে বিনিয়ে দুঃখের কথা বলবে।সেও গলে যাবে আর কিছু টাকা খসবে আমাদের।ডিসগাস্টিং!বিদায় কর এক্ষুণি। আর শোন তোর দাদাবাবুর কানে যেন এ'সব কথা না যায়। আজ আমার একমাত্র ছেলে অত্রির জন্মদিন।সব নিমন্ত্রিতরা এসে যাবে একটু পরেই।এর মধ্যে একফাঁকে পার্লারে গিয়ে একটু তৈরী হয়ে আসব ভাবছি, তার মধ্যে এই উটকো আপদ এসে জুটল। একটু পরেই মিলন  ফিরে এল আবার;পিছন পিছন এক হাড় - হাভাতে চেহারার গেঁয়ো বুড়ো। আচ্ছা ঝামেলায় পড়েছি বৌদি.. মিলন মুখ খুলতে না খুলতেই শুনি: বৌমা... বুড়োটা বলছে...আমাকে তুমি চিনবে না মা, আমি বিশুর...  কথাটা শেষ করতে দিলাম না। হাত তুলে বললাম:দেখুন, আপনি কে তা আমি জানতে চাইনা,আমার বাড়ীতে আজ একটা অনুষ্ঠান আছে, আমার সময় নেই আপনার বাজে কথা শোনার।টাকা চাইতে এসেছেন তো!ঐরকম অনেকেই আসে আমার স্বামীর গ্রামতুত সম্পর্ক ধরে; আপনি এখন আসুন।আমার স্বামী বাড়ীতে নেই। অনেকদূর থেকে এসেছি মা।আমার বিশেষ দরকার। তাছাড়া বুড়ো হয়েছি, পথঘাট ঠাহর করতে পারব না রাতে।বিশুর সাথে কাজের কথা সেরে , কাল সকাল সকাল চলে যাব। নাছোড়বান্দা বুড়ো তো! মিলনকে বললাম: একটা কাজ করো।সার্ভেন্টস কোয়ার্টারে আজকের রাতটা থাকতে দাও একে।কাল দেখা যাবে। দারুণ হৈ- হুল্লোড় হ'ল পার্টিতে।আমার আর বিশ্বদীপের সব কলিগ, ওর বস, অত্রির বন্ধুরা ...সবাই এসেছিলেন।অনেক দামী দামী গিফট পেল অত্রি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে একটু দেরীই হয়ে গেল।অবশ্য অসুবিধে নেই তাতে।আজ সেকেন্ড স্যাটারডে।আমাদের তিনজনেরই ছুটি। মিনু চা নিয়ে এল, আর,আমার হাতে  ধরিয়ে দিল একটা খাম। কি এটা? ঐ বুড়ো ভদ্রলোক দিয়ে গেছেন বৌদি।বলেছেন, এটা আপনাকে দিয়ে দিতে। বাব্বা! ভদ্রলোক! মিনুর আদিখ্যেতা দ্যাখো একবার!! কি আছে এতে? দেখি তো খুলে। স্নেহের বৌমা তুমি আমার স্বর্গীয় দাদা -বৌদি রত্নদীপ আর তৃপ্তি ভট্টাচার্যের একমাত্র ছেলে বিশ্বদীপের বৌ।দাদা- বৌদি যখন গ্রামে এক অজানা রোগে মারা গেলেন, বিশুর তখন ছ'মাস বয়স।আমার স্ত্রী  সুধা ওকে বুকে তুলে নিল।আমি নিঃসন্তান।বিশুকেই নিজের ছেলের মত বড় করলাম আমরা। গ্রামের পড়া শেষ করার পর, কলকাতায় হস্টেলে রেখে ওকে পড়ালাম।তখন থেকেই ও বিশেষ যেত না গ্রামে।আমি আসতাম।দরকার মত টাকা-  পয়সা দিয়ে যেতাম।  ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হ'ল বিশু।আমি আর তেমন আসা যাওয়া করতে পারতাম না। মানি অর্ডার করতাম দরকার মত। বাইরে পড়তে গেল ও।তারপর ফিরে এসে জয়েন করল বিশাল চাকুরিতে।আমার দশটা চিঠির উত্তরে একটা উত্তর দিত ।বুঝতাম , কাজের চাপ।তাও আশায় ছিলাম, একবারের জন্যও যদি বুড়ো কাকা - কাকীমাকে এসে দেখে যায়! একদিন একটা পোস্টকার্ড পাঠাল বিশু, তোমাদের বিয়ের খবর জানিয়ে।মনকে সান্ত্বনা দিলাম, অন্তত খবরটুকু তো দিয়েছে।তারপর আর কোন খবর পাইনি। সুধা শয্যাশায়ী। ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছেন।আজকাল বাচ্চাদের মত বায়না করে, বিশুকে দেখবে বলে।কি করে পাই বিশুর ঠিকানা! কপাল ঠুকে ঐ অফিসের ঠিকানায় চলে এলাম।ওখানে গিয়ে শুনি আজ বিশু অফিসেই আসেনি।বাড়ীতে নাকি অনুষ্ঠান। রিসেপশনিস্ট মেয়েটিকে অনেক অনুরোধ করায়, আমাকে এই ঠিকানাটা দিল। কিন্তু শুধুমাত্র সুধার কথা ভেবেই আসিনি আমি। আমার আর দাদার দশ বিঘা জমি ছিল গ্রামে। যা ফসল আর ফল পাকুড় হত, তা বিক্রীর পয়সা ব্যাঙ্কে জমা করতাম আমি।এখন বয়স হয়েছে।আর চাষবাসের দেখাশুনো করত পারিনা ঠিকমত।তাই বসত- বাড়ীটুকু রেখে, বাকী জমি বিক্রী করে দিলাম। ফসল বিক্রীর আর জমি বিক্রী বাবদ ত্রিশ লাখ টাকার চেক আমি দিয়ে গেলাম।দায়মুক্ত হ'লাম আমি আজ। তোমরা ভাল থেকো।নাতিবাবুকে আমার আশীর্বাদ জানিও। ফিরে গিয়ে সুধাকে বলব যে, তোমরা বিদেশে আছ।আমি তোমাদের খুঁজে পাইনি।কাঁদবে জানি খুব।  আমি চললাম।আর কোনদিন আসব না বিরক্ত করতে। *চিত্রদীপ ভট্টাচার্য* ... ... বড় অহংকার ছিল আমার।সুন্দরী, উচ্চশিক্ষিতা, বর সুচাকুরে।পার্টিতে গেলে আমার সান্নিধ্য পেতে কত পুরুষ লালায়িত থাকে।..আজ ঐ বৃদ্ধ মানুষটি এক লহমায় আমার সব অহংকারকে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেলেন.....
Parent