কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ৩৬৫

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-4855466.html#pid4855466

🕰️ Posted on June 28, 2022 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 400 words / 2 min read

Parent
# অণুগল্প   শাশুড়ি মায়ের ফোনটা রাখার পর থেকেই মনটা খুব খারাপ লাগছে অমৃতার। শনি-রবি তো ছুটিই, আর মঙ্গলবার মানে আজ, ঈদ উপলক্ষ্যে ওর আর সুমিতের অফিস ছুটি ছিল। তাই সোমবারটা ছুটি নিয়ে একটা 'এক্সটেন্ডেড উইকএন্ড' বানিয়ে ওরা দুজন একটু ঘুরতে গেছিল। আজ দুপুরে ফিরেছে। ঘরে পা দিয়েই সুমিত ঢুকে গেল বাথরুমে। সেই ফাঁকে বাবা-মা কে ফোন করে পৌঁছনোর খবর দিয়ে শাশুড়ি মাকেও ফোন করেছিল অমৃতা। উনি "যাক বাবা, ঠিক মতো ঘুরেছিস তো?" জিজ্ঞেস - টিজ্ঞেস করে বললেন "আজ কিন্তু অক্ষয় তৃতীয়া, এতদিন বাড়ির বাইরে, একটু পুজো করিস... পারলে একটু মিষ্টান্ন ভোগ দিস ঠাকুরকে।" ও "হ্যাঁ" বলে ফোন রেখে দিয়েছে, কিন্তু তারপরেই মনটা কেমন খচখচ করছে! মা কে হ্যাঁ তো বলে দিল, কিন্তু এই এতদিন পরে বাড়িতে এসেছে... জানলা - দরজা সব বন্ধ ছিল, তাও কিভাবে যেন ধুলো ঢুকেছে ঘরে। ঝাঁট -টাঁট দিয়ে ঘর মুছে স্নানে যাবে ভেবেছিল - সুমিত সেই ফাঁকে সিদ্ধভাত বসিয়ে দেবে, এমনটাই প্ল্যান করেছিল। ক'দিন ধরে বাইরে খেয়ে খেয়ে আর ভাল লাগছে না কিছু। আবার খিদেও পেয়ে গেছে খুব - কিন্তু এখন ভোগ যে কি দেবে! এদিকে দুপুরবেলা - দোকানও তো কিছু খোলা নেই সামনা সামনি। সেই মোড়ের দিকের দোকানগুলো খোলা থাকতে পারে, কিন্তু একদম যেতে ইচ্ছে করছে না। এদিকে মা বললেন... ওর নিজেরও ইচ্ছে করছে... আজ একটা শুভদিন... ভাবতে ভাবতেই কলিংবেলের শব্দ। "এই ভরদুপুরে আবার কে এলো!" ভাবতে ভাবতে দরজা খুলল অমৃতা। আর, অবাক হয়ে দেখে ওদের ফ্ল্যাটের সিকিউরিটির দায়িত্বে থাকা ওসমান চাচা এসেছেন, হাতে একটা ছোট্ট টিফিনবাক্স! "দিদি, আপনারা আজ ফিরবেন মনে হচ্ছিল... তাই এলাম। এই এতে একটু চালের রুটি আর শেমাই আছে... আপনার আর দাদার জন্য।" "আমাদের জন্য! কী মজা! থ্যাংকইউ চাচা!" পিছন থেকে বলে উঠল সুমিত। "চাচা, আপনি আমাদের থেকে অনেক বড়, কদমবুশি তো করতে জানি না, এমনিই নমস্কার করছি আপনাকে। আচ্ছা চাচা, এই শেমাই আমরা ঠাকুরকে নিবেদন করতে পারব?" জিজ্ঞেস করে অমৃতা। "ঠাকুরকে? তা তো জানি না দিদি, তবে আমরা বুড়ো-বুড়ি গোস্ত খাই না। তাই মাংসের ছোঁওয়া নেই এই শেমাইতে..." একটু হেসে বলেন চাচা। "ব্যস, তাহলেই হবে। চাচা, আমার কিন্তু ঈদের উপহার চাই... আপনি আমাকে আর 'আপনি' করে বলবেন না! খুব রেগে যাব কিন্তু তবে!" বলে ওঠে অমৃতা। "তাহলে আমাকেও 'তুমি' করেই ডাকতে হবে চাচা" বলে ওঠে সুমিত ও। "আচ্ছা, আচ্ছা... বেশ বেশ " বলে হাসেন চাচা। চোখটা একটু জ্বালা জ্বালা করছে যেন... একটু পরে, যখন শেমাই প্রসাদ খাচ্ছিল সুমিত আর অমৃতা - ওদের মনে হচ্ছিল সাকার আর নিরাকার স্রষ্টা যেন এভাবেই মিলেমিশে গেলেন ওদের মধ্যে। যেভাবে খুশির ঈদ আর পবিত্র অক্ষয় তৃতীয়া মিলে যায়... আর ভরিয়ে দেয় অপার শান্তিতে আর ভালবাসায়...  
Parent