কিছু মনের সত্যি কথা - অধ্যায় ৩৯৯

🔗 Original Chapter Link: https://xossipy.com/thread-30209-post-5064647.html#pid5064647

🕰️ Posted on December 17, 2022 by ✍️ ddey333 (Profile)

🏷️ Tags: None
📖 805 words / 4 min read

Parent
আমার মায়ের ফিরে পাওয়া জীবন ও আমি  ---- ( কাল্পনিক নাম ,  সত্যি  ঘটনা )   আমার লেখা নয় । ভাল লাগল তাই।  ------------------------------------------   প্রায় তিন বছর  আগে আমি আমার মায়ের বিয়ে দিয়ে আমার  কর্মক্ষেত্র হায়দ্রাবাদে   ফিরে এসেছিলাম । শুনতে কেমন একটা লাগছে তাই তো !  আমার ভীষণ ভালো লাগা থেকে এই কাহিনীর অবতারণা ।   মায়ের জীবনের শেষ  পর্যায়ে মা তাঁর  প্রাপ্য সুখের অন্তত কিছু টা  হলেও নিজের চেষ্টায়  ফিরে  পেয়েছে ,  সেটাই  আমার ভালো লাগার কারণ ।মায়ের জীবন হারিয়ে যেতে বসেছিল আমার অজ্ঞতার জন্য ।  বিয়ের পরদিন,  মা আর  মায়ের স্বামী কোলকাতা এয়ারপোর্টে  আমাদের বিদায় জানাতে এসেছিল । এত দিনের দেখা মা কে সেদিন একদম অন্য মা  বলে মনে হচ্ছিল ।  এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে দেখলাম -- আমার মা সৌমেন বাবুর সাথে হেঁটে  যাচ্ছে।  মুখে এক আকাশ হাসি ,  মনে বিশ্বাস  ,আস্থা, ফিরে পাওয়া প্রেম,ভালো ভাবে  বাঁচার আকুতি নিয়ে  মা এগিযে যাচ্ছে  সৌমেন বাবুর হাত ধরে । মনে হলো    মা গাইছে মায়ের হারিয়ে যাওয়া  প্রিয় গান -   " কুঁড়ি মোর ফুটে ওঠে তোমার হাসির ইশারাতে, দখিন - হাওয়া দিশেহার আমার ফুলের গন্ধে মাতে ॥"   ফ্লাইটে বসে মন টা কখনও  বিষন্ন কখনো প্রসন্ন । ঠিক যেমন টা ফ্লাইটের জানালা দিয়ে দেখা মেঘের  আলো আঁধার নিয়ে  খেলা । এই  ঘটনার আগে   মায়ের ইচ্ছে ,মায়ের জীবনের একাকীত্বের  যন্ত্রণা আমাকে তেমন ভাবে  কোনদিনই ভাবাই নিই৷   সারা টা জীবন নীরবে  কোনো এক মুহূর্তের  ভুলের মাশুল দিয়ে  যাচ্ছিল আমার মা । সেই ভুলের   সুফসল আমি । আমি আজ  সুপ্রতিষ্ঠিত শুধুমাত্র   আমার মায়ের আত্মত্যাগের জন্য।  আজ বলতে দ্বিধা নেই,  মায়ের জীবন যে  ভাবে চলছিল,  সেটাই স্বাভাবিক মনে হোত । মায়েরও  একটা মন  , ভালবাসা পাওয়ার ইচ্ছে থাকতে পারে  বা একটা আত্মা ও নিজস্ব সত্তা থাকতে পারে , এসব কোন দিন ভাবি নিই৷   এখন মনে হচ্ছে ,  মা তার জীবনের হারিয়ে যাওযা় প্রেমের কিছু টা  হলেও  ফিরে পেয়েছে ।  আমার বিয়ে আজ থেকে পাঁচ  বছর আগেই  হযে গেছে ।আমার এক পূত্র সন্তান ও আছে ।  শুধু সুন্দরী বলে আমার মায়ের রূপ বর্ণনা করা যাবে না ।  আমার মা এখনও  অপ্সরা সুন্দরী । দুধে - আলতা গায়ের রঙ , প্রায় পাঁচ ফুট নয়   ইঞ্চি লম্বা ,জোড়া ভুরুর নিচে  টানা টানা চোখ, ঢেউ খেলানো ঘন কেশরাশি।   আমার মায়ের গলায় রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে শুনতে আমি  ছোট থেকে বড় হয়েছি ।  আমার লেখাপড়ার খরচের  জন্য মা কে টিউশন করতে দেখতাম । ভালো ইংলিশ মিডিয়াম  কলেজে পড়তাম । তারপর ভালো রেসাল্ট  করে  খড়গপুর  আই আই টি  থেকে বি টেক করে আজ আমি হায়দ্রাবাদে একজন প্রতিষ্ঠিত ইঞ্জিনিয়ার ।  বাবার কথা বলছি না কেন,  সেটা ভেবে হয়ত অনেকে  অনেক কিছুই   ভাবছেন ।  আমার যখন এক বছর বয়স তখনই  আমার বাবা তার  ভালো লাগার অন্য বাসা খুঁজে চলে যান।  শুনেছি মা প্রেম  করেই  বিয়ে করেছিল। খুব  অল্প বয়সের প্রেম ছিল । মা ক্লাস নাইনে  পড়ত । যার দেয়া উপাধি নিয়ে আমার পরিচয়,    তিনি নাকি   হিরোদের মত মোটর বাইকে ঘুরে বেড়াতেন।   চেহারা ও নাকি হিরোদের মত ছিল।  "হিরো অন বাইকের " সাথে মায়ের প্রেম হয ।   প্রতাপ আদিত্য রোডের বনেদী মুখার্জি  বাড়ী আমার দাদুর  । মা নাকি খুব সন্তপর্নে  লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করত । বাড়ীর একমাত্র  মেয়ে ছিল  আমার মা ।ভীষণ আদুরে ছিল বাড়ীর সবার ।ডাক নাম ছিল তুলতুল । কমলা  গার্লসে পড়ত মা । হিরো অন বাইকের সাথে কলেজে যেতে যেতে  প্রেম ,  দক্ষিণী তে গান শিখতে যাওয়ার পথে প্রেম ,  হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করার পরে  যোগেশ চন্দ্র কলেজে যেতে যেতে প্রেম । হটাৎ একদিন কাউকে না বলেই মা বাড়ী থেকে উধাও । তারপর বিয়ে । একটা ভাড়া বাড়ীতে  সংসার শুরু হল । "হিরো অন বাইকের "রোজগার খুবই  সামান্য।  দক্ষিণ কলকাতার এক  সিনেমা হলের  লাইট ম্যানের  চাকরি । অসম প্রেমের  ব্যর্থ সংসার । আমার আগমনে সংসারে  আরো বিপর্যয়  ঘনিয়ে  এল ।  অভাব অনটন কে সঙ্গে নিয়ে চলার মানুষ আমার মায়ের তৎকালীন প্রেমিক ছিলেন না ।কারণ তিনি  যে ছিলেন "হিরো অন  বাইক ।"  নতুন সঙ্গীনীর   সন্ধান নাকি আমার জন্মানোর  এক বছরের  মধ্যে তিনি পেয়ে গিয়েছিলেন ।  উনি উড়ে গেলেন অন্য এক সুখের নীড়ে। মায়ের দু বছর চার  মাসের দাম্পত্য জীবনের ইতি হযে গেল৷  মা কে আর আমাকে বাড়ীতে ফিরিয়ে আনলেন দাদু  ।  দাদু দিদিমার   আদরে  বড় হতে লাগলাম ।  আমার বারো বছর বয়সে  দাদু মারা  গেলেন । ঠিক তার  এক বছরের মাথায় দিদু ও চলে গেলেন । আমাকে নিয়ে মায়ের জীবন সংগ্রাম শুরু হল । তারপর আমিও  বড় হলাম ,চাকরি পেয়ে বিয়ে করলাম ।আমিও মা কে ছেড়ে হায়দ্রাবাদে পাড়ি দিলাম । মা একাই ওই বাড়ীতে তে থাকত । রোজ রাতে একবার ফোনে কথা হোত । কোনদিন মাকে কোনো ব্যাপারে  অভিযোগ  করতে শুনি নিই৷  মা ফেস বুক করে , এটা জানতাম।  যাইহোক ,পরে জানা গেল ,  সৌমেন চট্টোপাধ্যায়  নামে একা ভদ্রলোক মায়ের ফেসবুক ফ্রেন্ড । প্রায় একাত্তর  ছুই ছুই বয়স । সৌম্যদর্শন পুরুষ ।উনি মার্কিন মুলুকে  সায়েন্টিস্ট  ছিলেন । বিপত্নীক , নিঃসন্তান ।    বালিগঞ্জের  ফার্ন রোডের বাড়ীতে একা থাকেন । বিজ্ঞানী  হলেও সাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্য ও  সঙ্গীত প্রেমিক এবং  এক বাস্তব বাদী সংবেদন শীল  মানুষ । জীবনের উপান্তে  এসে "ফেস বুকের" মাধ্যমে  একজন আরেক জনের কাছাকাছি আসতে শুরু করেছিলেন  সবার অলক্ষে।   হটাৎ এক সন্ধায়  একটা  আননোন  নম্বর থেকে ফোন আমার কাছে ।
Parent